রাসপুটিন – সুব্রত চক্রবর্তী

›› বই এর অংশ / সংক্ষেপিত  

…..একদিন তুয়ামেন থেকে ফেরবার পথে এক সন্দরী মেয়েকে একটি পোশাক-নির্মাতার দোকানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তার ঘোড়াটাকে সে রাস্তার ধারে দাঁড় করাল। রাসপুটিনের বয়স তখন ষোল। সবে যৌবনের গণ্ডীতে পা রেখেছে সে। বাড়ী থেকে দূরে নিজেকে বড় স্বাধীন মনে হোল তার। এই প্রথম সুন্দরী মেয়ে দেখে তার ভাব করবার ইচ্ছে জাগল । হয়ত সে চলেই যেত, কিন্তু তার হাতে সময় অজস্র। তাই গাড়ীতে বসে মেয়েটিকে আড়চোখে দেখতে থাকল । প্রেম-ভালবাসার ‘প’ ও সে জানত না। কিন্তু বয়ঃসন্ধিতে দাঁড়িয়ে তার রক্তের অন পরমাণুতে অজ্ঞাতসারেই হানা দিয়ে বসে আছে নারী সৌন্দর্যের প্রতি আসক্তি অনভব করা। ভগবানকে জানবার পথে আছে অসংখ্য বাধা। রাসাটিন তার কতটুকু জানে । প্রথম বাধা হচ্ছে নারীদেহের প্রতি আসক্তি অনভব করা ৷ আর সেই আসক্তি তো অনেকক্ষেত্রেই কাঁটা হয়ে বেধে। যন্ত্রণায় যন্ত্রণায় ক্ষত-বিক্ষত হয় মন। মানুষ যায় হেরে। তবে ভবিষ্যতের অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী রাসপটিন যদি এখনই তার পরবর্তী পদক্ষেপগুলির বিদ;-বিসর্গও টের পেত তবে প্রেম-ভালবাসা নিয়ে প্রথমেই কোন ভুল করে বসত না।
এই নির্জন স্থানে ঘোড়া দাঁড় করিয়ে হতবাক, রাসপটিন দু’চোখ ভ’রে পরিপূর্ণ -নারী সৌন্দর্য পান করতে থাকল। কি সুন্দর গঠন মেয়েটির। সিল্ক গাউনটা তার গায়ে এেঁটে বসে গেছে একেবারে। খাঁজে খাঁজে ফুটে উঠেছে অপরূপ শোভা । তার জামায় হাতায় গলায় লেসের ঝালড় তার কোমল সৌন্দর্য যেন দ্বিগুণে বাড়িয়ে তুলেছে । মেয়েটির সন্দের সোনালী কোঁকড়ানো চুল তার মুখের আংশিক ঢেকে ফেলে তাকে রহস্যময়ী করে তুলেছে। রাসাটিন ভাবছে কি ভাবে তার সঙ্গে সে আলাপ জমাবে ৷
এর মধ্যেই মেয়েটিকে নিয়ে সে ভাবতে শুরু করেছিল। মনে মনে তাকে পূজো করতে শরণ করেছে, ভাবছে এরকম অপরূপে দেবী মূর্তি তার জন্য কিছতেই হতে পারে না। পনরায় ভাবছে একে যদি সম্পূর্ণ রূপে নিজের করে পাওয়া যেত তবে বাঝি তার সবকিছুই পাওয়া হয়ে যেত ৷ মূহ, তৈই উদগ্র কামনা-বাসনা তার মধ্যে দলা পাকাতে থাকল ।……

……ইরিনা রাসপুটিনের দুর্বলতার ব্যাপারটা সহজেই অনুধাবন করল। সে তার হাত দু’টো জড়িয়ে ধরল আহ্বানের ভঙ্গীতে। রাসপুটিন এবারে বুঝল এ তাকে আমন্ত্রণ ছাড়া আর কিছ, ই হতে পারে না। সে ধীরে ধীরে কাছে এগিয়ে এল। ইরিনার সংবিস্তৃত আলিঙ্গনে সহজেই ধরা দিল। সহসা সে বরুল নারীর স্পর্শ ও সম্মোহনী শক্তি কি। ইরিনার নারীদেহের একটা বিশেষ সগন্ধ, পোশাকের মদ, নরম ঘর্ষণু মাথার চুলের পাগল করা আয়াণ রাসটিনকে পাগল প্রায় করে তুলল। সে ভুলে গেল নিজের অস্তিত্বের কথা। সে ধীরে ধীরে তার হাত দুটো দিয়ে তার সর, কোমর জড়িয়ে ধরল । ইরিনা জড়িয়ে ধরল রাসপুটিনকে। ভাবল, যৌবনের সন্ধিক্ষণে পরষরা নারীকে এ ভাবেই তোষামোদ করে। ভেতরে ভেতরে সে অধীর আনন্দে শিউরে শিউরে উঠল পরবর্তী ছকে বাধা ঘটনার কথা ভেবে ।
রাসপুটিন অনভিজ্ঞের মত ইরিনাকে আলতো করে ধরে চুপচাপ দাঁড়িয়েছিল । কারণ সে সত্যিই জানত না তারপরে কি । ইরিনা জানে তার জালে যে ধরা দিয়েছিল সে হচ্ছে নিতান্তই আনাড়ী এক খেলোয়ার, যাকে নিয়ে তার নিজেকেই খেলা করাতে হবে। এর পূর্বে মঙ্গেকার কোন অফিসারের সঙ্গে তাকে এ ধরনের কোন ঝামেলার পড়তে হয়নি। এই ছোট্ট নাটকে তাকেই যে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করতে হবে সে ব্যাপারে কোনই সন্দেহের অবকাশ ছিল না। ইরিনা তার হাত রাসপুটিনের টাউজাসের সম্মুখভাগে নিয়ে এল। উম্মত্তের মত তাকে জড়িয়ে জড়িয়ে ধরতে লাগল, যার ফলে রাসপুটিনের মধ্যে থমকে থাকা উত্তেজনা নড়াচড়া খেয়ে উঠল। মূহূর্তের মধ্যে তার মধ্যে গলিত লাভা যেন পাহাড় ফেটে বেরিয়ে এল। রাসপুটিনের মুখের ওপর রঙ ফিরে এল, তা হচ্ছে কামনার রঙ। অভিজ্ঞ ইরিনা তারপরের টুকু খুব সদরভাবে অভিনয় করল। সেও যেন কামাশক্তিতে দুর্বল হয়ে পড়েছে এইভাব দেখাতে থাকল । যেন এই বিরাট হলঘর সে কাজের উপযুক্ত পরিবেশ নয়। সে তাই পাশের একটা ঘরে প্রবেশ করল, রাসাটিনকে বলল তার পোশাক খুলে ফেলে শোবার ঘরে চলে আসতে।
কামোত্তেজিত রাসপুটিন পরবর্তী ঘটনা সম্পর্কে কিছু, ভাবল না। সমস্ত পোশাক ইরিনার কথামত খুলে নিরাবরণ হয়ে পড়ল। থরথর ক’রে সে কাঁপছে তখন। পাশের অন্ধকার ঘরে ঢুকে পড়ল । এ যেন সেই স্বর্গের দ্বার, যেখানে প্রবেশের জন্য সমস্ত মানবকূল চিরটা কাল অপেক্ষা ক’রে থাকে। ঢুকেই সে ঘাবড়ে গেল, একী ইরিনা তো পোশাক খোলেনি এখনও, সে সোফার ওপর অর্থ শায়িতাও মনুদিত নেত্র। সে প্রথমে ভাবল হয়ত ইরিনা নারীস লভ লজ্জা পেয়েছে যাতে রাসপার্টিন পরবর্তী কাজ নিজেই সমাধা করে, কিংবা এও অভিজাতদের কোন প্রথা হতে পারে। তা সত্ত্বেও একজন নিখনত পোশাকে সজ্জিতা অপরিচিতা এক সন্দরী নারীর সম্মুখে নিজের নগ্নতায় তার লজ্জা লাগল । কিন্তু ঘরের আধো অন্ধকার তাকে লজ্জা তাড়াতে সাহায্য করল । তার মস্তিষ্কের প্রজ্জ্বলিত আগুনের শিখা তাকে যারপরনাই সাহসী ক’রে তুলল। সে অগ্রসর হয়ে ইরিনার পোশাক নিজের হাতে খুলে দেবে ভাবল এবং সে এগিয়ে গেল তাই করবার জন্য । সে সবে ইরিনার গায়ে হাত রেখেছে আর তৎক্ষণাৎ ইরিনা জোরে চে’চিয়ে উঠে মাত্র একটা শব্দ উচ্চারণ করল, “তেপার’ অর্থাৎ ‘এখন। আচমকা ভয়ে ছিটকে সরে গেল রাসপার্টিন।
আর এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ঘরের বিরাট বিরাট চারটে জানালার মোটা মোটা পর্দাগুলো সরে গেল অকস্মাৎ । এবং দেখা গেল চার জানালায় চার মূর্তি দাঁড়িয়ে, ইরিনার পরিচারিকাবৃন্দ । হঠাৎ আলোর ঝলকানি এবং আরো চারজন পোশাক পরা স;সজ্জিত মহিলার উপস্থিতি দেখে সে ঘাবড়ে গেল । যেখানে এইম হতে এক নগ্ন নারী ও নিজেকে নিয়ে সে পরিবেশ রচনা করে বসেছিল, সেখানে এদের হঠাৎ উদয়ে তার কল্পনার জগৎ ভেঙ্গে খান খান, হয়ে গেল । মহর্তে তার মাথা পরিষ্কার হয়ে ধীরে ধাঁরে তার কাছে সব দিনের আলোর মত স্বচ্ছ হ’য়ে গেল। সে বুঝতে পারল একটা সাজানো পরিকল্পনার অন্তর্গত সে একটা পাতুল ছাড়া আর কিছু নয়। তার নিজস্ব নগ্নতা তাকে তখন ভেঙচি কাটছে। ইতিমধ্যে ইরিনা তার দ্বিতীয় হকুম দিয়ে বসে আছে, ‘যাও, দ্দ বালতি জল নিয়ে এসো। দিনের পর দিন একটা বন্ধের সঙ্গে নির্জনতায় পরিচারিকা সমভিব্যহারে কাটিয়ে তার নিজস্ব যৌন আকাঙ্ক্ষা এক বিকারগ্রস্ততার রূপ পরিগ্রহ করেছে। তার অবদমিত কামনা-বাসনার বিস্তৃতির উৎকট প্রকাশ হতে চলেছে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় রাসপুটিন যখন ভাবছে কিভাবে পালাবে, সেইম হতে পঞ্চম পরিচারিকা এক বালতি ঠাণ্ডা জল এনে তার গায়ে ঢেলে দিল। সে কুকড়ে ছোট হয়ে গেল শীতে। যখন সে ছিটকে সরে যেতে গেল, তখন আর একজন পরিচারিকার ঘাড়ে গিয়ে পড়ল ।
রাসাটিন মেঝের ওপর পড়ে যেতেই চকিতে পাঁচজন তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল যেন নেকড়ে-বাঘ ছাগশিশুকে আক্রমণ করেছে। ষষ্ঠ জন কিছু দূরে দাঁড়িয়ে ছিল, সে কি করবে ভেবে পাচ্ছিল না। এই অল্প বয়সী সদ্যনিযুক্ত পরিচারিকাটির নাম দুনিয়া বেকেয়েসোভা । তাঁর কাছে এসব ভাল লাগছিল না। তুয়ামেনেই তার বাস । তার কাছে এ ধরণের কুশ্রী অভিজ্ঞতা জীবনে এই প্রথম। ইরিনা দূরে সরে হাত তালি দিয়ে তার পরিচারিকাদের উৎসাহিত করতে করতে খিললিল করে হাসতে থাকল । রাসপু টিনকে পেয়ে এরা যেন এতদিন পর হাতে একটা কাজ পেল। তাদের উদগ্র কামনার জ্বালা তারা নানাভাবে প্রয়োগ করতে থাকল । অনেকটা দীর্ঘদিন উপোস থাকবার পর কোন ভিখিরি যেমন ভেক্ষ, হয়ে ওঠে সেইরকম। বিশেষ করে রাসপুটিনের উত্থিত পরেষাঙ্গের প্রতি তাদের আসক্তি চূড়ান্ত হয়ে দাঁড়াল। এরকম শোনা যায় যে রাশিয়ায় ফসল তোলার সময় একঘেয়েমিতে ক্লান্ত মেয়েরা এরমকই কোন পুরষকে নিয়ে খেলা করে । এবং কোন অভিজ্ঞ পুরুষ সহজেই অধিকসংখ্যক নারী পরিবেষ্টিত হয়ে আনন্দিত হতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে রাসাটিন ইরিনার প্রেমে পড়ে কল্পনার জাল বদনেছিল ও তার বিলপ্ত ঘটল অতি অপমানজনক ও বীভৎসভাবে ৷ দূরে দাঁড়িয়ে নিষ্ঠার ইরিনা অত্যন্ত পলঙ্কিত বোধ করতে থাকল। দীর্ঘদিনের একঘেয়েমি ও উপোসে ক্লান্ত নারীর দল খেলার ছলে তাকে প্রায় মাংস ছিড়ে খাবার যোগাড় ক’রে ফেলল । একদিকে দূরে দাঁড়িয়ে দানিয়া এ জঘন্য অত্যাচার দেখতে দেখতে রাসপুটিনের প্রতি করণা অনভব করতে থাকল আর ভাবতে থাকল ইরিনার কথা । যে কতটা নৃশংস হ’তে পারে তার আচরণে । অন্যদিকে রাসপুটিন একবার ছিটকে পড়ল ইরিনার পায়ের কাছে আর ইরিনা প্রায় লাথি মেরে ঘৃণায় সরে গেল, বলল, “নিয়ে যাও ওকে বাইরে। একটা চাষীর ছেলে, তার সাহস কত, বামন হয়ে চাঁদে হাত বাড়াতে চায় !’
রাসপুটিন তখন অত্যাচারে অত্যাচারে মচ্ছা যাবার যোগাড় হয়েছে। পরিচারিকারা তাদের লালসার আগুনে আহুতি দিয়েছে এক নির্বোধ যাবককে। সে তখন টলছে । ইরিনা আবার ফাসে উঠল, ‘এই নোংরাটাকে বাইরে ফেলে দিয়ে এসো এবার । তারপর তারা তাকে পাঁজাকোলা ক’রে তুলে এক বাণ্ডিল অপ্রয়োজনীয় বস্তুর মত বাইরে তার ঘোড়া ইভানের পাশে ঠাণ্ডার মধ্যে উলঙ্গ দেহে ফেলে রেখে এল । ততক্ষণে জ্ঞান হারিয়েছে সে।
কিছুক্ষণ পর চুপিচুপি দানিয়া রাসাটিনের জামা-কাপড়গুলো নিয়ে বাইরে এলে দেখল রাসাটিনকে ঐ অবস্থায় পড়ে থাকতে । তার পাশে দনিয়া বসল। আজে আস্তে অতি মমতায় হাত বালিয়ে দিতে থাকল রাসপ টিনের নগ্নদেহে। অশ্র তে ভিজে উঠল তার চোখের দ’পাতা। ঝংকে পড়ে চুম্বন করল রাসপুটিনের ঠোঁটের ওপর।
তারপর যেমন এসেছিল তেমন চলে গেল নিঃশব্দে, কারণ কেউ দেখতে পেয়ে যাবে এই আশকার।
জ্ঞান ফিরে এলে রাসপুটিন আস্তে আস্তে চোখ খুলল। কিছুক্ষণ পরে ঘোর কাটলে সব তার চোখের সামনে দঃসম্বপ্নের মত ভেসে উঠল। আতঙ্কিত হয়ে ঘণার শরীরে হাত বালোতে গিয়ে দেখল কচকীর কাছে খুব ব্যথা । সমস্ত দেহ অসাড় এবং সে নগ্ন হয়ে পড়ে আছে । পাশে হাত রাখতে গিয়ে কিসের স্পর্শ পেয়ে দেখল তার পরনের পোশাক তার পাশে পড়ে আছে।……

……নাতালিয়া পেত্রোনা স্তেপানোভা খুব অল্প বয়সে বিধবা হয়েছিল। বয়সের যাবতী নারীর পক্ষে নির;ত্তাপ থাকা খুব কঠিন। সঙ্গত কারণেই গ্রামের উঠতি বয়সী ছেলে-ছোকরার দল তাকে নিয়ে কানাকানি করত। এবং তারা বলত বে নাতালিয়ার সঙ্গে প্রেম করবার লোকের কখনো অভাব হয় না । এ ধরনের কথাবার্তার ক্তিযুক্ত কিছু কারণ ছিল। গ্রামের প্রায় সবাই তুরানদীতে স্নান করত। এবং নাতালিয়াও কিছু, ব্যতিক্রম ছিল না। বেলাভূমিতে রোদ পোয়াবার সময় বা ভুরাতে স্নান করবার সময় তার নিজের দেহের প্রতি কোন খেয়াল থাকত না। সত্যি বলতে তার নিয়ন্ত্রণবিহীন দৈহিক উত্তেজক অংশগুলো যে অপরের দেহ বা মনে প্রভাব ফেলতে পারে তা তার ধারণায় ছিল না ৷…..
……তারপর নাতালিয়ার দিকে ঘুরে বললেন, ‘নাতালিয়া পেত্রোভনা, তুমি যে গাপ করেছ তার বিরুদ্ধে তোমার কিছু বলার থাকতে পারে না। তুমি পাপী তাই তোমার শাস্তি আমরা বাভাবিক নিয়মেই পালন করব। তোমাকে বেশী শান্তি আমরা দেব না, শদে তোমাকে সাবধান করে ছেড়ে দেওয়া হবে। প্রথমে তোমাকে সম্পর্ণে উলঙ্গ করে বেত মারা হবে আর তারপরে তোমাকে এই গ্রামের বাইরে দূর করে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।’
এ ঘোষণার পরেই গ্রামবাসীরা নড়েচড়ে উঠল। তাদের মধ্যে একটা গঞ্জন শোনা গেল। রাসপুটিনের বাবা এফিম আকো লেভিচ, নাতালিয়ার সম্মুখে এগিয়ে এলেন এবং তার বলিষ্ঠ হাতের এক টানে নাতালিয়ার একমাত্র পোশাকটি ছিড়ে ফেললেন। জড় হওয়া গ্রামবাসীদের সামনে এভাবে বিবস্ত্র হয়ে লজ্জায় অপমানে সে ধূলোর সঙ্গে মিশিয়ে গেল যেন। তার হাত দুটো লোক ধরে আছে, তার ফলে তার ঊর্ধ্বাংশ উম্মত্তে হয়ে পড়লে হাত দিয়ে তাও সে ঢাকতে পারল না। গ্রামের বয়স্করা তার চীৎকারে কোন কর্ণপাত করল না, উপরন্তু আকণ্ঠ এই নগ্ন-সৌন্দর্য পান করতে থাকল। একজন একটা কাঁচি নিয়ে এল, এফিম, আকোভ লেডি, তার সংন্দর কেশরাশি কচকচ করে কেটে ফেললেন ।
নাতালিয়া বলল, ‘বুঝিনি তুমি কি বললে। কিন্তু, আমি মনে করি এ দেছ তোমারই দান। আমি নবজন্ম লাভ করেছি তোমারই পশে। সতরাং এ দেহ সম্পূর্ণ তোমারই।’ এভাবে সে কখনো কাউকে বলেনি। কারণ কোন নারী এভাবে বলতে পারে না। দেহ-সংক্রান্ত প্রশ্নে তাদের বরাবরই সঙ্কোচ থাকে। কিন্তু নাতালিয়ার লজ্জা করল না এইজন্য যে এই পুরষ মাতৃস্নেহে তার নগ্নদেহ পরিচর্যা করেছে। তার . কাছে তার গোপন লজ্জা বলে তো কিছু থাকতে পারে না। তাই সে বলল, ‘তোমাকে আমি তো শব্দ আমার সব দিয়েই আনন্দ দিতে পারি। আর তাতেই আমার জীবন হবে সার্থক।’
ইরিনা দানিলোভার নিষ্ঠুরতার কথা মুহূর্তে রাসাটিনের মানসপটে ভেসে উঠল। হ্যা, সত্যি বলতে সে তো যৌন উন্মাদনায় পাগল হয়েই ইরিনার পাতা ফাঁদে পা দিয়ে বসেছিল। আর কতকগুলো নারীর একঘেয়েমি কাটাবার জন্য দম দেওয়া জীবন্ত একটা পাতুলের মত তাদের চিত্তবিনোদনের জন্য তাদের বিকৃত কামনার শিকার হয়েছিল। আর এখন এইম হতে ব্যাপারটা সম্পূর্ণ ভিন্ন খাতে বইছ। নাভালিয়া পেত্রোনা তাঁকে বিলিয়ে দিতে চাইছে সেই কাম চরিতার্থ করবার এক অনায়াস সহজলভ্য পথ যার সাহায্যে সে এক্ষণি ভুলে যেতে পারে তার পরানো দখ ঘায়ের জলদীন। নাতালিয়ার প্রস্তাবে তার মনে হোল এভাবেই বোধহয় মানষের জীবনের চাকা ঘুরতে থাকে। রাসাটিন জানে তার মধ্যে যে চুম্বক শক্তি অহরহ কাজ করছে তার সাহায্যে অনেককিছুই সে আকর্ষণ করতে পারবে। কিন্তু এত শীঘ্রই যে পতঙ্গ তার আগুনে ঝাঁপ দেবার জন্য তৈরি হবে সে তা ভাবতে পারেনি। তার ধিকি ধিকি আগুনের মত প্রজ্জ্বল্যমান যৌনেচ্ছা যেন সহসা মাথা চাড়া দিয়ে উঠল । চোখের সামনে ভেসে উঠল নাতালিয়ার নিরাবরণ দেহটা। স্নান ক’রে আসবার পর রাসপুটিনের মধ্যে প্রেমের শিখা জ্বলে উঠেছিল। কি সুন্দর ডোল স্তন গল । নিটোল জান প্রদেশ। কিন্তু না, এ সে কি ভাবছে এখন। নাতালিয়ার নগ্নদেহের ওপর গতদিনের অমানষিক অত্যাচারের ভয়াবহ স্মৃতি তার মন থেকে এখনও লুপ্ত হয়ে যায় নি। নাতালিয়ার সন্দের সংগঠিত তদর ওপর প্রত্যেকটি আঘাত তাকে মূহ্যমান ক’রে দিয়েছিল। তাই এখন সে চমকে উঠল নাতালিয়ার কথায়। মেয়েটি এত ভাল যে কিভাবে তাকে সন্তুষ্ট করবে ভেবে পাচ্ছে না। কোথায় ইরিনা আর কোথায় নাতালিয়া ! সে বলল, ‘তোমার কি মাথাটা একেবারেই খারাপ হয়ে গেছে ? আমি কি মানষ, না কষাই ? তোমার এ দূর্বল শরীরে তুমি কি ক’রে মনে কর যে তোমাকে নিয়ে আনন্দ উপভোগ করব ?’ ব’লে রাসাটিন তাকে কোলের মধ্যে টেনে নিল। মাথায় গায়ে হাত বুলিয়ে আদর করতে লাগল ।
তাকে দেখে মনে হ’ল সে কুয়োর পাড় থেকে কিছুতেই ঘরে ফিরে আসবে না । সে বালতি করে জল তুলল, তারপর যেন খুব জরুরী এইভাবে সে গায়ে-ম,খে-হাতে হাত করে জল দিয়ে ভেজাতে থাকল। মাঝে মাঝেই সে ঘরের দিকে তাকাচ্ছিল। অবশ্যই তার মানে সে দেখতে চাইছিল রাসপুটিন কি করছে। রাসটিন নড়াচড়া করছিল। স্ত্রীলোকটি ঘরের দিকে মুখ করে দাঁড়াল যাতে রাসপু টিন তার দৃঢ় উন্নত বক্ষস্থল দেখতে পায়। তারপর সে তার পোশাক পরোপরি খুলে ফেলল। এবং জল দিয়ে স্তনদ্বয় পরিষ্কার করতে থাকল। আসলে সে ধীরে ধীরে সময় কাটাতে থাকল। তার উদ্দেশ্য হচ্ছে রাসপুটিনকে বাইরে নিয়ে আসা। এবং স্ত্রীলোকটির উদ্দেশ্য প্রায় সফল হতে চলেছিল। কারণ রাসপুটিনের মনের মধ্যে কামনার আগ;ন ধিকিধিকি জলতে শর, করেছিল ।
এই সময় তার কানে বনের নানাবিধ শব্দের সঙ্গে অন্যরকম এক শব্দ ভেসে এল । এ শব্দ নারী কন্ঠের এবং তা তাদের ক্রীড়ায় উৎফুল্ল হবার শব্দ। তারা যেন খেলা ক’রে হাসতে হাসতে একে অপরের অঙ্গে ঢলে পড়ছে। বিস্মিত রাসপ টিন চতুর্দিকে ঘুরে তাকাল। এখানে এই বনের মধ্যে মেয়েরা এল কোথা থেকে! যদিও সাইবেরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে নদী বা বনাঞ্চলের সরোবরে মেয়েদের স্নান করা নতুন কোন ঘটনা নয় ।
সবিস্ময়ে সে দেখল পকুরের মধ্যে তিনটি মেয়ে উম্মুক্ত দেহে সাঁতার কাটছে আর নিজেদের কথাবার্তায় নিজেরাই হাসি-ঠাট্টায় মগ্ন হয়ে পরস্পরে জল ছোঁড়াছড়ি করছে। অবাক হয়ে তাদের দেখতে থাকল রাসপার্টিন। ঠিক দেখে মনে হচ্ছে যেন কতকগুলো রাজহংসী জলক্রীড়া করছে। দৃষ্টি সে ফেরাতে পারল না। উপরন্তু, গতরাতের কাম-শক্তি প ুনরায় পনোদ্যমে আক্রমণ ক’রে বসল। যদিও সে কর্তব্য বিমূঢ় হয়ে পড়েছিল কিছু ক্ষণের জন্য, কিন্তু; সেই ভাব তার বেশীক্ষণ থাকল না। নগ্ন শরীর তাকে যেন আহ্বান করছে। সে তার হারানো ধন খুজে পেয়েছে এইভেবে পুকুর পাড়ে পোশাক খুলে রেখে লাফাতে লাফাতে পুকুরে নেমে এল ।
মেয়েগুলো তাকে দেখে হৈ-হৈ ক’রে উঠল । তারাও অবাক হয়েছে নির্জন বনের মধ্যে তাদেরই মত এক নগ্ন পুরুষ দেখে। তারা মোটেও ভয় পেল না। তারা তাকে স্বাগতম জানাল। এ তাদের আশার অতীত। তারা তাকে তাদের সঙ্গে সাঁতরাতে বলল। এ যেন শর, হ’ল আদম আর ইভের নতুন ধরনের সংস্করণ। রাসাটিন এই অচেনা তিন যাবতীর সঙ্গে খেলায় মেতে উঠল একেবারে। একইসঙ্গে তিনজনে মিলে তাকে ক্ষণে ক্ষণে জড়িয়ে ধরতে থাকল । মনে হ’ল সে যেন তাদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত । স্নানের পর তারা পাড়ে উঠে এল । ছোটখাট গল্প করতে থাকল। কিন্তু, আলাপ ক’রে পরিচিত হবার প্রয়োজন কেউ অনভব করল না। মেয়েরা তাকে তাদেরই একজন ব’লে ভাবতে থাকল। কিন্তু, নগ্ন নারী-পুরষে কতক্ষণ পরপর থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে পারে ! তারা রাসপুটিনের যৌনাঙ্গের প্রতি বিশেষ কৌতূহল অনভব করতে থাকল। এবং কিছু ক্ষণের মধ্যেই চিরকালের সেই আদিম লীলাখেলা শরে হ’ল তাদের মধ্যে। একে একে তিনজনকেই আনন্দ দিল সে। এবং এতদিন পরে সত্যি বলতে রাসপার্টিনের মনের অশান্তি যেন ধায়ে মছে পরিষ্কার হয়ে গেল।
আজ সে একটা জিনিস পরিষ্কার বুঝতে পারল যে আধ্যাত্মিক উন্নতির সঙ্গে যৌনাবেগের ঘোরতর এক সম্পর্ক আছে। কারণ মনের মধ্যে যখন কামের উদয় হবে, যদি তার চাহিদাকে পুরোপরি পূর্ণ না করা হয় তবে মন সারাক্ষণ চঞ্চল থাকবে। আজ তিনটি মেয়ের সঙ্গে যৌনক্রীড়া করার ফলে রাসাটিনের মন অনেকদিনের অবদমিত কামেচ্ছা পরিস্ফুটনের পথ খাজে পেয়েছিল। ঈশ্বর যেমন মানষের মধ্যে কামনার বীজ পাতে দিয়েছেন, তেমনি তার প্রকাশের পথও বাতলে দিয়েছেন ; বলেননি তা দমন ক’রে রাখতে ।
পরোনো কার্পেট পাতা ছিল, দেয়ালে ঝুলছিল অনেকগুলি লণ্ঠন। লণ্ঠনের আলোর আলোকিত ঘরে রাসপুটিন দেখল জনা দশ-বারো মানুষ। তার মধ্যে সাতজনই স্ত্রীলোক। প্রত্যেকে নিজেদের মধ্যে গল্প গুজব করছিল।
দলপতি দূরে দাঁড়িয়েছিল । তার পরনে ছিল ক্লোক জাতীয় লম্বা পোশাক । সে রাসাটিনকে সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল। তারপরেই দলপতি বা দলের হোতা প্রত্যেককে প্রার্থনা করবার জন্য তৈরি হ’তে বলল। বাইবেল থেকে সে পড়ে যেতে লাগল, প্রত্যেকে তা মন দিয়ে শনল। অবশেষে প্রার্থনা শেষ হ’ল। এবারে তার নিজস্ব কিছু উপদেশে সে সবাইকে উদ্দেশ্য ক’রে বলল, ‘তোমরা এ’কথা সর্বদাই মনে রাখবে যে আমরা প্রত্যেকেই ঈশ্বরের সস্তান । আমাদের প্রত্যেকের দেহের মধ্যেই ঈশ্বর বিরাজমান। তিনি বলেছেন, পরস্পরকে ভালবাসতে। আর পরস্পরকে ভালবাসলেই তাকেও ভালবাসা হবে। ভালবাসার দ্বারাই তাঁকে পাওয়া যায়। এখন তোমরা প্রত্যেকে প্রত্যেককে ভালবাসবার জন্য তৈরি হও । তার আগে আমাদের নতুন সদস্যের “শপথগ্রহণ’ হবে।’
শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শেষ হ’ল। এবং দলপতির নির্দেশে সবাই সবাইকে ভাল বাসবার জন্য তৈরি হ’ল। দলপতি সবার মাঝখানে এসে দাঁড়াল। সবাই হাত ধরাধরি ক’রে তাকে ঘিরে দাঁড়াল। এদের মধ্যে একজন সবাইকে মদ পরিবেশন করল। মদ্য পান করতে করতে তাদের মধ্যে আবেশ ও ঘোরের সংষ্টি হ’ল। তারা সবাই এবারে ধীরে ধীরে নৃত্যে মেতে উঠল। নৃত্যের গতিবেগ ক্রমশঃ বাড়তে থাকল। তারপর দ্রুততা থেকে সেই নৃত্য অবশেষে উদ্দামতায় পৌঁছল। এবারেও দলনেতা প্রথমে তার পাদ্রীর পোশাক অর্থাৎ কালোরঙের লম্বা রোবটি খুলে হাড়ে ফেলে দিল । একে একে প্রত্যেকেই দলপতির দেখাদেখি তাদের পোশাক খুলে ফেলতে লাগল । রাসাটিনও তাদেরই মত আচরণ করল। এতগুলি উলঙ্গ নরনারী ইতিমধ্যে এক বন্য উন্মাদনায় অদ্ভুতভাবে পাগলের মত নাচতে নাচতে চরমে পৌঁছে গেছে।
এরপর সব প্রতি ঘটতে থাকল। একটি নারী দলছট হয়ে উম্মাদের মত দলপতির দেহের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। রাসপ টিন দেখল সেই দলপতি এবং মেয়েটি দলের বাইরে গিয়ে ঘরের এককোনায় পরস্পরকে নানাভাবে জড়িয়ে ধরে চুম্বন করতে করতে গভীর আশ্লেষে যৌনক্রীড়ায় লিপ্ত হয়ে পড়ল। তারপর একে একে প্রত্যেকেই এক- একজন পরষ এক একজন নারীকে নিয়ে সঙ্গমে লিপ্ত হ’ল । রাসপ টিরনের মনের মধ্যে তখন কামনা বাসনা উথাল-পাথাল করতে শর, করে দিয়েছে। এভাবে নির্বিকার নির্লজ্জের মত অনেকগুলি নারী পুরুষের পরস্পর অবাধ আলিঙ্গন ও যৌন ক্রীড়া দেখে তার আদিম অন্ধকার ইচ্ছা তার মনের গহনে সড়সাড়ি দিতে থাকল। রাসপুটিনের দুধারে দা’জন স্ত্রীলোক ছিল ৷ তাদের মধ্যে একজন ছিল সেই কাঠরের স্ত্রী। গত দুদিনে এই স্ত্রী-লোকটি সম্পর্কে তার কোন ধারণাই গড়ে ওঠেনি। বরংচ স্ত্রীলোকটিকে সে একট; চাপা ধরণের মনে করেছিল । এখন দেখল মহিলাটি তার দিকে চেয়ে মদ, মদ, হাসছে। সে হাসিতে আছে আবেদন । রাসপটিনও তখন যেন কোন স্বর্গের বাধা বন্ধনহীন আনন্দ সাগরে অবগাহন করছিল। মদের ঘোরে এই সমস্ত ব্যাপারটাই তার কাছে স্বপ্নের মত মনে হচ্ছিল। সে স্ত্রী-লোকটির হাসি দেখে শিউরে উঠল। কেমন এক সতীর যৌন ইচ্ছা তার মধ্যে আকুলি-বিকুলি করে উঠল ।
মহিলাটি তাকে হাত ধরে টানল ! তখনও যেন রাসপুটিন নিজেকে পরিবেশের সঙ্গে তেমন করে খাপ খাইয়ে নিতে পারেনি। সে শখ, নিষ্পলক চেয়ে দেখছিল তার ডোল ভারী স্তনদুটি। নিজেকে বেশীক্ষণ আটকে রাখতে পারল না সে। রাসপুটিন তাকে জোরে চেপে ধরে নিজের বাকের মধ্যে নিষ্পেষিত করতে থাকল আর অনভব করতে থাকল তার কোমল নরম বুকের গভীর স্পর্শ’। সে তারপর তার একটা হাত স্ত্রীলোকটির নিতম্বের উপর রেখে ধীরে ধীরে চাপড় দিতে থাকল । এই সময় স্টীলোকটি বলল, ‘তোমার কি আমাকে পছন্দ হয়েছে ?’
‘হত্যা, হয়েছে।’ রাসপুটিন অনেক কষ্টে বলল ।
‘না, ওভাবে নয়। বল, তুমি আমাকে নিয়ে চূড়ান্ত উপভোগ করবে, যাতে আমি এই মহুর্তে এই জগৎ সংসার ভুলে যেতে পারি !’
‘বোকা। রাসপুটিন বলল, আমি যখন তোমার সঙ্গে লেপ্টে গেছি, আর তোমার দেহ যখন আমার সঙ্গে একাত্ম হতে চলেছে তখন তো তোমার আর কোন ভয় থাকা উচিত নয়।’ তারপর এইকথা ব’লে রাসপুটিন তাকে আরো কাছে আকর্ষণ করল আর মহিলাটি আনন্দে অস্থির হয়ে বলে উঠল, ‘আমার লাগছে সোনামনি ।’
রাসপার্টিন তার চেতনার দ্বার খুলে দিল । এরকম বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা সে জীবনে ধারণাতেও আনতে পারেনি। স্ত্রীলোকের সংখ্যা যেহেতু বেশী তাই তাকে আরো দু’একজনের চাহিদা পূরণ করতে হ’ল। আশ্চর্যভাবে কামকলার অভিজ্ঞ রাসাটিনের সে ক্ষমতা ছিল। সে আগে স্বপ্নে এরকম ধরনের পরিবেশের কথা চিন্তা করত। এখন দেখা যাচ্ছে বাস্তবের ঘটনা স্বপ্নকেও হার মানায়। রাসপার্টিন অত্যন্ত আনন্দ লাভ করল। কিন্তু আনন্দের জোয়ারে ভাসতে ভাসতে প্রত্যেকেই একসময়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ল ।
দলপতি অবশেষে ‘ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করল ‘হত্যা, আজকের মত আমাদের অননুষ্ঠান শেষ হ’ল ৷ তোমরা শান্ত মনে যে যার কাজে যাও।’……

……এই রকম ভাবেই খিস্তির এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে দেশের অন্য প্রান্তের আর এক খিল, স্তি দলপতির সাক্ষাত হয় । এবং পদমর্যাদা অননুসারে সে রাসপ টিনের চেয়ে উচ্চপদস্থ ছিল। এবং এরপরে তারা উভয়েই একসঙ্গে এই অনষ্ঠানগুলি চালাতে থাকল। এই উচ্চপদস্থ নতুন দলপতিটি তখন প্রধান দলপতির আসন অলংকৃত করত। কিন্তু তার আচার-আচরণে অনেক খাত ধরা পড়তে থাকল ! ভগবানকে লাভের জন্য ও তাকে সন্তুষ্ট করার জন্যই এই অননুষ্ঠান হ’ত। তাই ধারা এতে যোগদান করত তারা এ সমস্ত ক্রীয়াকলাপকেও তাদের উন্নতির সহায় ব’লে ভাবত। তাই অনষ্ঠান শেষে প্রত্যেকেই যে যার ঘরে ফিরে তাদের নিত্যকার কাজকর্ম’ স্বাভাবিক ভাবেই করত। কারো মনেই কোন পাপবোধ থাকত না । সংসারের নিত্যকার ভূমিকা তারা সচার রূপেই পালন করত। কিন্তু এই নতুন দলপতিটি অনষ্ঠানটিকে অনষ্ঠান ব’লে ভাবত না। শরতেই সে বেছে বেছে সন্দরী মেয়েগ লিকে বিৱস্থা ক’রে ফেলত আর তার কামোত্তেজনা প্রশমনের জন্য তাদের ভোগে লাগাত। সুতরাং অনষ্ঠানের সম্মেলনের উদ্দেশ্য প্রথম থেকেই ব্যাহত হ’ত । যেহেতু রাসপু টিন নিজেই তাদের থেকে বেশীমাত্রায় কামকে ছিল, তাই সব বুঝতে পারলেও অননুষ্ঠানের মোহ ত্যাগ করতে পারছিল না। কিন্তু ধীরে ধীরে তার মনে ক্ষোভ ও তার সঙ্গে আত্ম-অননুশোচনা বাসা বাঁধছিল।…….

…..তারপর লিলি রাতে ঘুমোতে যাবার সময় তার বাবাকে শিভ্র রাত্রি’ জানাল । মারিয়া চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল। লোক্টার নজর তখন মারিয়ার দিকেই। কারণ সারাক্ষণ ঘোরের মাথায়ও আড়চোখে মারিয়াকে লক্ষ্য রেখেছে। সে আচমকা মারিয়ার কোমরে হাত জড়িয়ে তাকে কাছে টেনে আনল। একেবারে তার দেহে লেপ্টে ধরল। সে মারিয়াকে জিজ্ঞেস করল, ‘তুমি কি তোমার বাবাকে কখনও শাস্ত্র-রাত্রি জানাও না খুকী ? আমি কি একেবারেই তোমার বাবার মত নই ?’
মারিয়া বুঝতে পারল এ শয়তানটার হাত থেকে নিস্তার পাবার একটাই সোজা রাস্তা আছে। তাকে তাড়াতাড়ি শুভরাত্রি জানানো। তাই মারিয়া তার গালে একটা চুবন করল। কিন্তু লোকটা অত সহজে তাকে ছাড়ল না। জিব দিয়ে ঠোঁটটা ভিজিয়ে নিয়ে তাকে সজোরে চুম্বন করল, তারপর তার সমস্ত দেহের গোপন স্থানগগুলতে হাত বালোতে লাগল। মারিয়া কিভাবে তার হাত ছাড়াবে বুঝতে পারল না। কিন্তু লিলির মা ঝাঁপিয়ে পড়ল, ‘কি হচ্ছে এটা? অসভ্য কোথাকার ?”
লোকটা সামান্য চমকে উঠল, ‘কেন, কি অন্যায় করেছি আমি? পরব মানষেরা কি বলে মেয়ে মানষদের সঙ্গে একটু ইয়ে করতেই পারে।’
‘জানোয়ার কোথাকার! যাও, তুমি তোমার মেয়েমানষদের কাছে। এ তোমার সেই মেয়েমান,ষ নয় ।’ বলে লিলির মা মারিয়াকে আড়াল করে দাঁড়াল। কিন্তু মত্ত অবস্থায় লোকটা টলতে টলতে উঠে দাঁড়াল। বলল, ‘তুই ওকে ছাড়বি কিনা শয়তানী?
‘না তুমি ওকে পাবে না । আমার মাথার দিব্যি রইল। তুমি এখান থেকে বেরিয়ে যাও।’
মারিয়া তখন থরথর ক’রে কাঁপছে।
তাকে হাতের কাছে না পেয়ে লোকটা উম্মত্তের মত লিলির মার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তার চোয়ালে প্রচণ্ড জোরে একটা ঘষি মারল । আর্তনাদ করে ভদ্রমহিলা দেওয়ালে ছিটকে পড়ল। মেয়ে দু’জন তখন বাঙ্কে উঠে পড়েছে শোবার জন্য। দু’জনে মিলে একটা বাঙ্কেই জড়াজড়ি করে শয়ে পড়ল ।
তারপরের দৃশ্য আর সহ্য করা যায় না। লোকটা জন্তুর মত আওয়াজ করতে থাকল, ‘তবে শালী, তোকেই আমি পেড়ে ফেলব।’ ব’লে ছটে গিয়ে লিলির মা’র সামান্য পোশাক হাত দিয়ে টেনে ছিড়ে ফেলে তাকে তাদের দৃষ্টির সম্মুখে বিবস্ত্রা করে ফেলল । বেচারী লিলির মা লজ্জায় আরো বিবর্ণ হয়ে গেল ।
লোকটা তার মাকে টেনে-হিচড়ে মেঝের মাঝখানে নিয়ে গেল। তারপর নিজেরও সমস্ত পোশাক দ্রুত খুলে ফেলে সেই ভয়ঙ্কর কাজটা দ্রুত সমাপন করল। এই সম্পূর্ণ ঘণ্য ও বীভৎস ব্যাপার মারিয়া স্বচক্ষে দেখল ৷ কারণ সে মন্ত্রমুগ্ধের মত চেয়েছিল, চোখ ঘোরাতে পারছিল না। শখে কানে আসছিল লিলির ফোঁপানোর শব্দ।
অবশেষে ক্রিয়াজনিত পরিশ্রমে লিলির মা-বাবা উভয়েই ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। আর লিলিও ফোঁপানি থামিয়ে একসময়ে নিদ্রার কোলে ঢলে পড়ল। কিন্তু মারিয়া ঘুমোতে পারেনি। এ সব কিছুই তার কাছে দুঃস্বপ্নের মত ।….