স্পুটনিক প্রেয়সী – হারুকি মুরাকামি

›› অনুবাদ  ›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

অনুবাদঃ তপােব্রত দাস

……আমাদের বন্ধুত্ব থাকাকালীনই আরও দু-তিনটে মেয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক হয়েছিল। তাদের সঠিক সংখ্যাটা আমার মনে নেই এমন নয়। দুই, তিন- এত আপনি কেমন করে গণনা করবেন তার উপর নির্ভর করে। এর সঙ্গে যােগ করুন সেই মেয়েদের যাদের সঙ্গে আমি দু-একবার বিছানায় গেছিলাম, তাহলে তালিকাটা দীর্ঘতর হবে। সে যাই হােক, তাদের সঙ্গে বিছানায় থাকাকালীনও আমি কিন্তু সুমিরের কথাই ভাবতাম। অন্ততপক্ষে, তার ভাবনা মনের কোনাে কোণা ছুঁয়ে তাে থাকতই। আমি কল্পনা করতাম যে আমি তাকেই ধরে আছি। এমন কাজে হয়ত সেসব মেয়েদের সম্মানহানিই ঘটত, কিন্তু আমি অপারগ ছিলাম।….

……যন্ত্রণাকে সহনীয় করে তােলার অভিপ্রায় এবং সুমিয়ে আমার মধ্যে যৌন টানাপােড়েনের সম্ভাবনাকে নির্মূল করার আশা নিয়ে আমি অন্য মহিলাদের সঙ্গে বিছানায় যেতে শুরু করলাম। মহিলাদের কাছে গ্রহণযােগ্যতা দারুণ ছিল এমন কথা আমি বলব না। নারীদের জন্য নিবেদিত পুরুষ বলতে যা বােঝানাে হয় আমি তা মােটেই ছিলাম না এবং আমার কোনো বিশেষ আকর্ষণ ছিল এমন কোনাে দাবীও আমি করব না। তবে যেকোনাে কারণেই হােক না কেন, কিছু মহিলা আমার প্রতি আকৃষ্ট বােধ করত এবং আমি আবিষ্কার করেছিলাম যে ঘটনা পরম্পরাকে নিজের মতাে চলতে দিলে সেই মহিলাদের বিছানায় নিয়ে যাওয়াটা খুব একটা কঠিন কাজ নয়। এসব ছোটখাটো উদ্দামতাগুলাে আমার মধ্যে কখনােই তীব্র আবেগ জাগিয়ে তুলতে পারেনি, খুব বেশি হলে তারা ছিল একপ্রকারের আরাম এটুকুই বলা যেতে পারে।…..

…..কোনাে কথা না বলে সুমিরে আমার হাতটা নিজের হাতে নিয়ে আস্তে করে চাপ দিল। তার ছােট্ট, নরম হাতে ঘামের হালকা পরশ ছিল। আমি কল্পনা করার চেষ্টা করলাম তার হাত আমার পাথরের মতাে শক্ত পুরুষাঙ্গে ধীরে ধীরে টোকা দিচ্ছে। আমি সেই কল্পনাকে মাথা থেকে দূর করার চেষ্টা করলাম, কিন্তু পারলাম না। সুমিরের কথানুযায়ীই, আর কোনাে উপায় ছিল না। আমি কল্পনা করতে লাগলাম যে আমি তার টি-শার্ট, তার শর্টস, তার প্যান্টি ধীরে ধীরে খুলে নিচ্ছি। তার দৃঢ় স্তনবৃন্তকে আমি আমার জিভের ডগায় অনুভব করছি। তার দুই পা ফাক করে মেলে দিয়ে সেই সোঁদা আদ্রতার মধ্যে প্রবেশ করছি। ধীরে, অতি ধীৰে সেই গহীন আঁধারের গভীরে আমি সেঁধিয়ে যাচ্ছি। সে আমায় প্রলুব্ধ করে মিমি-যাচ্ছে অন্দরে, আশ্লেষে আলিঙ্গন করছে, তারপর আমায় ঠেলে বের করে দিচ্ছে এই বিভ্রম আমায় চেপে ধরল এবং তার হাত থেকে আমি কিছুতেই রেহাই পেলাম না। আমি আবার চেপে চোখ বন্ধ করলাম এবং সময়ের পিন্ডকে আমার উপর দিয়ে বয়ে চলে যেতে দিলাম। আমি মুখ নিচু করে ধৈর্যসহকারে অপেক্ষা করল্টে লাগলাম কখন সেই অতি উত্তপ্ত বাতাস আমার মাথার উপর দিয়ে বয়ে চলবে দূরে।…..

.…..হােটেলে আমরা আলাদা আলাদা ঘরে থাকি। মিউ এই ব্যাপারটার উপরে বরাবরই খুব জোর দেয়। কেবল একবারই, ফ্লোরেন্সে, আমাদের ঘর সংরক্ষণে কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় আমরা এক ঘরে থাকতে বাধ্য হয়েছিলাম । ঘরে দুটো খাট ছিল, কিন্তু তার সঙ্গে এক ঘরে ঘুমাতে পারব এইটুকু ভাবতেই আমার বুক ধকধক করছিল। আমি তাকে স্নানঘর থেকে গায়ে তােয়ালে জড়িয়ে বেরােবে পােশাক বদলাতেও দেখেছিলাম। স্বাভাবিকভাবেই আমি ভান করেছিলাম যে সেদিকে তাকানাের বিন্দুমাত্র স্পৃহা আমার নেই এবং আমি বই পড়াতেই মগ্ন আছি, কিন্তু একটা চোরা চাউনি দিয়ে এক ঝলক ঠিক দেখে নিয়েছিলাম মিউয়ের শারীরিক গঠন সত্যিই অসাধারণ। সম্পূর্ণ নগ্ন সে ছিল না, তার পরনে খাটো অন্তর্বাস ছিল, তবুও তার শরীর আমার দম বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে অথষ্ট ছিল। খুব ছিপছিপে, আঁটসাঁটো নিতম্ব, আপাদমস্তক একজন অসম্ভব আকর্ষনীয় মহিলা।…….

….আজিয়ান সাগরতটের দুধসাদা বালিতে আমরা দু’জন শুয়ে আছি, দু’জোড়া সুন্দর স্তন আকাশের দিকে মুখ করে রয়েছে, পাইন ও রজনের গন্ধযুক্ত মদে চুমুক দিচ্ছি ও অলস ভঙ্গিতে ভাসমান মেঘেদের দিকে তাকিয়ে রয়েছি। শুনে অসাধারণ বলে মনে হচ্ছে না?…..

……এই দুইটি ফোনের মধ্যবর্তী সময় আমি আমার বিদ্যালয়ের ফুটবল অনুশীলনে  একদিন প্রশিক্ষকের ভূমিকা পালন করলাম ও আমার বান্ধবীর সঙ্গে একবার সঙ্গমে লিপ্ত হলাম। বালিতে স্বামী ও দুই সন্তানসহ ছুটি কাটিয়ে সদ্য সদ্য ফেরায় তার ত্বকে একটা ভারি সুন্দর তামাটে ভাব এসেছিল। তাকে জড়িয়ে ধরে থাকার সময়ে আমার মনে গ্রিক দ্বীপে ভ্রমণরতা সুমিরের ছবি ভেসে উঠতে লাগল। তার শরীরে উপগত থাকাকালীনও সুমিরের শরীরকে আমি আমার কল্পনা থেকে দূর করতে পারলাম না ।

আমার যদি সুমিরের সঙ্গে পরিচয় না থাকত তাহলে আমার থেকে সাত বছরের বড় এই মহিলার (যার ছেলে আবার আমার ছাত্র) প্রেমে আমি সহজেই পড়ে যেতে পারতাম। সে ছিল সুন্দরী, উদ্যমী ও সহানুভূতিশীল । প্রসাধনটা সে আমার পছন্দের চেয়ে একটু বেশিই করত বটে, কিন্তু তার পােশাকের রুচি ছিল ভারি চমৎকার। ওজন সামান্য বেড়ে যাচ্ছে বলে সে দুশ্চিন্তা করত, কিন্তু আমি তার চিন্তা করার কোনাে কারণ খুঁজে পেতাম না। তার শরীরের উত্তেজক গড়ন নিয়ে আমার কোনােই অভিযােগ ছিল না। সে আমার সমস্ত আকাঙ্খগুলাে জানত, আমি কি চাই বা চাই না সব। সে জানত যে বিছানায় বা বিছানার বাইরে ঠিক কতদূর যাওয়া যাবে ও কখন বা কোথায় থামতে হবে। ফলত আমার মনে হতাে যে সময় ভালােই কাটছে।

“প্রায় বছর খানেক হয়ে গেল আমি আমার স্বামীর সঙ্গে কিছুই করিনি,” একদিন সে আমার আলিঙ্গনাবদ্ধ হয়ে থাকাকালীন বলল, “তুমিই হলে একমাত্র ।”……

…..সুমিরে পাজামার নিচে কোনাে প্যান্টি পরেনি। মিউ একটা তােয়ালে নিয়ে এসে তার গা থেকে ঘাম মুছে দিল। প্রথমে তার পিঠ, বগল ও বুক। তারপর তার পেট এবং অবশেষে খুব দ্রুততার সঙ্গে কোমর থেকে উরু পর্যন্ত অংশ । সুমিরে খুব নেতিয়ে পড়েছিল, কোনােরকম বাধা দেওয়ার ক্ষমতা তার ছিল না। তাকে দেখে অচেতন বলেই মনে হচ্ছিল, কিন্তু মিউ তার চোখে তার বােধশক্তির ঝলক দেখতে পেল।

মিউ এর আগে কখনাে সুমিরের নগ্ন শরীর স্পর্শ করেনি। তার ত্বক শিশুর ত্বকের মতােই টানটান ও মসৃণ। সুমিরের শরীরটাকে তুলতে গিয়ে মিউ টের পেল যে তা তার অনুমানের থেকে বেশিই ভারী। সুমিরের গা থেকে ঘামের গন্ধ বের হচ্ছিল। তার শরীর থেকে ঘাম মুছতে গিয়ে মিউ টের পেল যে তার নিজের হৃদপিন্ডও ধকধক করছে। মিউয়ের মুখে লালা জমছিল এবং তাকে সেটা বারবার গিলে নিতে হচ্ছিল। 

চাঁদের আলােয় সুমিরের শরীর চীনামাটির তৈরী কোনাে প্রাচীন দ্রব্যের মতাে চকচক করছিল। তার স্তন ছােট কিন্তু সুডৌল এবং স্তনবৃন্ত সুগঠিত। তার কালাে যৌনকেশ ঘামে ভিজে সকালের শিশিরভেজা ঘাসের মতাে চকচক করছিল । সমুদ্রতীরে তীব্র সূর্যালােকে দেখা সুমিরের শরীরের থেকে তার এই এলানাে নগ্ন শরীর সম্পূর্ণ আলাদা বলে মিউয়ের মনে হলাে। বালিকাসুলভ উপাদান ও ক্রমপ্রস্ফুটিত পরিণতির এক অনবদ্য মিশ্রণে গঠিত সুমিরের শরীরকে সময়ের যন্ত্রণাদায়ক প্রবাহ যেন এক অন্ধ মােচড়ে উন্মুক্ত করে দিয়েছে।…..

…..সুমিরের আঙুল মিউয়ের পাজামার বােতাম খুলতে শুরু করল। মিউ তাকে থামানাের চেষ্টা করল। কিন্তু সুমিরে থামবে না। “একটুখানি.” সে বলল । অল্প একটুখানি- এটা আমার অনুরােধ।”

মিউ আর বাধা না দিয়ে শুয়ে রইল । সুমিরের আঙুল অতি ধীরে মিউয়ের স্তনের পরিধি বরাবর ঘুরতে লাগল । সে তার নাক দিয়ে মিউয়ের গলায় উপ্র-নিচে ঘষতে লাগল । সে মিউয়ের স্তনবৃন্ত স্পর্শ করল, তাতে আলতাে করে টোকা দিল এবং তারপর তাকে দুই আঙুলের মাঝে ধরল। প্রথমে সঙ্কোচ সহকারে, তারপর সাহসের সাথে।……

…..আমার কখনাে কোনাে সমকামী অভিজ্ঞতা হয়নি এবং এরকম কোনাে প্রবণতা আমার আছে বলেও কখনাে মনে হয়নি। কিন্তু এটাই যদি সুমিরের প্রকৃত আকাঙ্খ হয়ে থাকে তাে আমার মনে হলাে যে আমি তাকে তুষ্ট করতে পারি। আমার কাছে ব্যাপারটা অন্ততপক্ষে বিরক্তিকর বলে মনে হলাে না। যতক্ষণ ঘটনাটা সুমিরের সঙ্গে ঘটছে ততক্ষণ ঠিক আছে। সুতরাং সে যখন আমার সারা শরীরে হাত বােলাতে শুরু করল বা আমার মুখের মধ্যে তার জিভ ঢুকিয়ে দিল, আমি বাধা দিলাম না। ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগল ঠিকই, কিন্তু আমি তার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলাম। আমি তাকে সে যা চায় তাইই করতে দিলাম। আমি সুমিরেকে পছন্দ করি এবং সে যদি এতে খুশি হয়, তাহলে সে আমায় নিয়ে কি করল তা নিয়ে আমি কিছু মনে করব না।

“কিন্তু আমার শরীর ও আমার মন দুটো পৃথক অস্তিত্ব। সুমিরে আমায় এত ভালােবেসে আদর করছে এই ভেবে আমার একটা অংশ খুশি হচ্ছিল। কিন্তু আমার মন যতই খুশি হােক না কেন, আমার শরীর প্রতিরােধ করছিল । সে তার ডাকে সাড়া দিল না । আমার হৃদয় ও মস্তিষ্ক উত্তেজনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল, কিন্তু অবশিষ্ট আমি নিরেট, শুকনাে পাথরের মতাে পড়ে রইলাম। ব্যাপারটা দুঃখজনক অবশ্যই, কিন্তু আমার কিছু করার ছিল না। অতি অবশ্যই সুমিরে সেটা অচিরেই টের পেল। তার শরীর উত্তেজিত হয়ে ওঠায় সামান্য ভিজে গিয়েছিল, কিন্তু আমি তার আহ্বানে সাড়া নিতে পারলাম না ।…..

…..আমি ভালােবাসি মিউয়ের পশ্চাদ্দেশের বাক। তার কাজলকালে যৌনকেশ ও তুষারশুভ্র মাথার চুলের মধ্যে অতুলনীয় বৈপরীত্য, ছােট্ট কালাে পাটিতে ঢাকা তার সুগঠিত নিতম্ব। যৌনােদ্দীপক কথাবার্তা। তার কালাে প্যান্টির ভিতরে ইংরেজি টিআকৃতির নিকশ কালাে যৌনকেশ।…..

……মিউ দূরবীনটাকে বারবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ঠিক করে দেখার চেষ্টা করল। কিন্তু যতবারই সে দূরবীনে চোখ লাগাল ততবারই সে ঘরের ভিতরে নিজেকেই দেখতে পেল। তার পরনে এখন যা যা আছে ঠিক সেসব পােশাক পরেই সে ঘরের ভিতরে পঁড়িয়ে রয়েছে। ফের্দিনান্দো তাকে আলিঙ্গন করল ও বিছায় তুলে নিয়ে গেল। সে তাকে চুম্বন করল ও ধীরে ধীরে তাকে পােশাকের আবরণওথকে মুক্ত করে ফেলল। ফের্দিনান্দো তার ব্লাউজটা খুলে নিল, বক্ষবন্ধনীর বেঈম খুলে দিল, তার স্কার্টটা টেনে নামিয়ে ফেলল এবং স্তনে হাত বােলাতে বােলাতে তার ঘাড়ে চুমু খেতে লাগল । একটু পরেই সে একহাত দিয়ে তার প্যান্টিটাকে টেনে খুলে দিল, যে প্যান্টি সে এখন পরে আছে অবিকল সেই এক প্যান্টি। মিউ আর শ্বাস নিতে পারছিল না। এসব কি হচ্ছেটা কি?

সে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ফের্দিনান্দোর পুরুষাঙ্গ ডান্ডার মত শক্ত হয়ে খড় হয়ে উঠল । এত বড় পুরুষাঙ্গ মিউ আগে কখনো দেখেনি। সে মিউয়ের হাতটা নিয়ে নিজের পুরুষাঙ্গের উপর রাখল। মিউয়ের গায়ে হাত বােলাতে বােলাতে সে তার মাথা থেকে পা পর্যন্ত জিভ দিয়ে চাটতে লাগল। সে নিজের ইচ্ছামতাে সময় নিতে লাগল, মিউ তাকে বাধা দিল না। মিউ- যে মিউ অ্যাপার্টমেন্টে ছিল- ক্ৰমজাগরুক উত্তেজনাকে চেটেপুটে উপভােগ করতে করতে তাকে তার মনমতাে কাজ সারার সুযােগ দিল। মাঝে মাঝে সে হাত বাড়িয়ে ফের্দিনান্দোর পুরুষাঙ্গ ও অন্ডকোষে হাত বােলাচ্ছিল এবং তাকেও তার শরীরের সর্বত্র হাত বােলানাের সুযােগ দিচ্ছিল।…..

……আমি সুমিরের কথা ভাবতে লাগলাম । মনে পড়ে গেল সুমিরে যেদিন নতুন বাড়িতে গেল সেদিন তার পাশে বসে থাকার সময় আমার কি অসামান্য লিঙ্গোত্থান ঘটেছিল। পুরুষাঙ্গ ওরকম পাথরের মতাে শক্ত হয়ে ওঠার অসাধারণ অভিজ্ঞতা আমার আগে আর কখনাে হয়নি । যেন আমার গােটা শরীরটাই ফেটে চৌচির হয়ে যাবে। সেই মুহূর্তে, আমার কল্পনায় অনেকটা সুমিরের লেখা স্বপ্নের জগতের মতােআমি তার সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছিলাম। সেই সঙ্গমের উন্মাদনা আমার বাস্তবের যেকোনাে যৌন অভিজ্ঞতার উন্মাদনার থেকে অনেক বেশি বাস্তব ছিল।…..

Leave a Reply