সহস্র এক আরব্য রজনী – ১

›› আরব্য রজনী  ›› ১৮+  

আরব্য রজনী বা আলিফ লায়লার গল্পগুলি পৃথিবীর প্রায় সব দেশে প্রায় সব ভাষাতেই কোন না কোনভাবে প্রকাশিত হয়েছে। বাংলা ভাষাতেও প্রচুর সংখ্যক  আরব্য রজনী প্রকাশিত হয়েছে। কোনটা শিশু ও -কিশোরীদের জন্য আবার কোনটা শুধুমাত্র বড়দের জন্য। সামগ্রিকভাবে আলিফ লায়লা বা আরব্য রজনী কেবলমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের পাঠোপযোগী।

ইংরেজী ভাষায় অনুদিত আরব্য রজনী গ্রন্থগুলির মধ্যে স্যার আর বার্টন, ডঃ জে, সি মাদ্রুস এর গ্রন্থগুলোকেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হলেও এর বাহিরে আরো অনেকেই গল্পগুলিকে নিজের মত করে বর্ননা করেছেন। আমাদের সাইটে যেহেতু শুধুমাত্র বড়দের উপযোগী বিষয়কে উপস্থাপন করা হয় তাই আমরা এখানে আরব্য রজনীর সকল গল্প প্রকাশ না করে বড়দের উপযোগী গল্পগুলিকেই ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করব।  বাংলা ভাষায় অনেকগুলি অনুবাদের মধ্যে দেবাশিস সরকার অনুদিত “সহস্র এক আরব্য রজনী” বইটির গল্প বিন্যাস ঠিক রেখে আমরা এখানে গল্পগুলি প্রকাশ করব যদিও কিছু কিছু জায়গায় মৌসুমী প্রকাশনী এর “সহস্র এক আরব্য রজনী” ও অন্য কিছু ইংরেজী অনুবাদ থেকে অংশ জায়গা মত সংযোগ করা হয়েছে। বলাইবাহুল্য সেই অংশগুলি অবশ্যই কঠোর ভাবে বড়দের উপযোগী।

 

বাদশাহ শারিয়ার এবং বাদশাহ শাহজামানের কিস্সা

প্রচার সুলতানিয়তের শাসক শাহেনশাহ, শসন বংশের শাসক। দীর্ঘাকৃতি, সুদেহী, দোর্দণ্ড প্রতাপশালী এবং দুর্ধর্ষ যোদ্ধা শাহেনশাহ সমগ্র প্রচ্যের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা ছিলেন। তার দুই পুত্র ছিলেন। বড়টি ছিল সুঠামদেহী ও যুদ্ধবিদ্যায় বিশেষ পারদর্শী। আর ছোটটি অপেক্ষাকৃত খর্বকায় তবে বিচক্ষণ।

শাহেনশাহ-র দুই পুত্ৰই যুদ্ধের কলাকৌশল সম্বন্ধে যেমন বিচক্ষণ ছিলেন তেমনি ঘোড়ায় চড়াতেও তাদের সমতুল্য কেউ ছিল না।

ছোট ভাইয়ের তুলনায় বড় ভাই যেমন দেহে অমিত শক্তি ধরতেন তেমনি বুদ্ধিও ছিল অতুলনীয়। দুই ভাই যে কেবলমাত্র যুদ্ধবিদ্যায়ই বিশারদ ছিলেন তাই নয়।। প্রজাদের প্রতি তাদের দয়া-মায়া-মমতাও ছিল অপরিসীম। আবার প্রজাদের কাছেও তাঁরা ছিলেন চোখের মণির মতই ভালবাসার পাত্র। প্রজারা তাদের পিতৃতুল্য জ্ঞান করতেন। বড় ভাইয়ের নাম ছিল বাদশাহ শারিয়ার। আর ছোট ভাইকে সবাই বাদশাহ শাহজামান নামে চিনত।

শাহজামান ছিলেন সমরখন্দ্রের অন্তর্গত আল-আজম নামক অঞ্চলের শাসক। তিনি ছিলেন প্রজাদের খুবই হিতাকাঙ্গী। শাসক হিসাবে তার ছিল আকাশছোঁয়া খ্যাতি।

প্রজাপালন, শাসন এবং প্রতিপত্তিতে উভয় ভাই-ই উন্নতির চরম শিখরে উন্নীত হতে পেরেছিলেন।

বাদশাহ শারিয়ার এবং শাহজামান-এর মধ্যে অভাবনীয় হৃদ্যতার সম্পর্ক বর্তমান ছিল। কেউ, কাউকে চোখের আড়াল করতে পারতেন না। দীর্ঘদিন উভয় ভাইয়ের মধ্যে এ হৃদ্যতার সম্পর্ক অক্ষুন্ন ছিল। বছর কুড়ি উভয় ভাইয়ের মধ্যে দেখা নেই। তাই তাঁকে একবারটি চোখের দেখা দেখার জন্য বাদশাহ শারিয়ার-এর মন-প্রাণ কেঁদে উঠল।

বাদশাহ শারিয়ার একদিন উজিরকে ডেকে বললেন—তোমাকে একবারটি বাদশাহ শাহজামান-এর কাছে যেতে হবে। তাকে বলবে, তাকে দেখার জন্য আমার মন বড়ই উতলা হয়েছে। আর যত শীঘ্র সম্ভব তাকে আমার কাছে নিয়ে আসবে।

বাদশাহের নির্দেশে উজির উপযুক্ত প্রহরী নিয়ে ঘোড়ায় চড়ে যাত্রা করলেন সমরখন্দের অন্তর্গত আল-আজম প্রদেশের উদ্দেশ্যে দু’দিন আর দু’রাত্রি নিরবচ্ছিন্নভাবে ঘোড়া ছুটিয়ে চললেন প্রৌঢ়।

উজির যথা সময়ে শাহজামান-এর দরবারে উপস্থিত হলেন। বাদশাহকে কুর্নিশ করে তার বড় ভাই বাদশাহ শারিয়ার-এর ঐকান্তিক আগ্রহের কথা ব্যক্ত করলেন।

বড় ভাইয়ের অভিপ্রায়ের কথা শুনে শাহজামান তো মহা খুশি। তিনি উজিরকে বললেন- ‘যত শীঘ্র সম্ভব আমি যাত্রার প্রস্তুতি নিয়ে নিচ্ছি। আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। আমি আজই যাত্রা করব। বাদশাহের নির্দেশে বেছে বেছে উট, খচ্চর ও কিছু গাধা নেওয়া হ’ল। আর পথে বিশ্রামের জন্য সঙ্গে নেওয়া হ’ল কয়েকটি দামী তাঁবু।

দেশের কয়েকজন বাছাই করা মল্লবীর আর গাট্টাগোট্টা কয়েকজন ক্রীতদাসকে প্রহরী হিসেবে সঙ্গে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হল।

যাত্রার প্রস্তুতি সম্পন্ন হ’লে প্রবীণ উজিরের ওপর রাজ্যরক্ষার ক্ষমতা অর্পণ করে বাদশাহ শাহজামান সুসজ্জিত উটের পিঠে উঠলেন। যাত্রা করলেন বড় ভাইয়ের অভিলাষ পূর্ণ করতে।

রাত্রির দ্বিতীয় প্রহরের মধ্যে বাদশাহ শাহজামান নিজ রাজ্য থেকে বেশ কিছু দূরবর্তী অঞ্চলে পৌছে গেলেন।

অকস্মাৎ বাদশাহ সবাইকে থামতে বললেন। সর্বনেশে কাণ্ড,  ভয়ানক একটি ভুল করে ফেলেছেন তিনি। বড় ভাইকে যে মূল্যবান জিনিসটি উপহার দেবেন বলে বেছে রেখেছিলেন সেটিই ব্যস্ততার জন্য সঙ্গে নিতে ভুলে গিয়েছেন। ও অনন্যোপায় হয়েই উটের মুখ ঘুরিয়ে আবার নিজ রাজ্যের দিকে যাত্রা করেন তিনি! ও প্রাসাদে ফিরে বাদশাহ শাহজামান সোজা হারেমের উদ্দেশে পা বাড়ালেন। সেখান থেকে সোজা চলে এলেন তার পেয়ারের খাস বেগমের কামরায়।

বেগমের কামরার দরজায় পৌঁছেই বাদশাহ শাহজামান আচমকা থমকে দাঁড়িয়ে পড়লেন। সর্বাঙ্গ থরথরিয়ে কেঁপে উঠল। নিজের চোখ দুটোর ওপরও যেন আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। বাদশাহ শাহজামান-এর খাস বেগম সম্পূর্ণ বিবস্ত্রা। দেখলেন, এক কুচকুচে কালো নিগ্রো ক্রীতদাস যুবকের সঙ্গে তিনি আলিঙ্গনাবদ্ধ হয়ে গভীর ঘুমে মগ্ন। বাদশাহ শাহজামান চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আর্তনাদ করে উঠলেন–“হায় খােদা, এ কী দৃশ্য দেখছি! তবে কি আমার এতদিনের পেয়ার মহব্বত সবই মিথ্যে, কাচের স্বর্গে বাস করেছি আমি। মাত্র  তো কয়েক ঘণ্টা আগেই আমি প্রাসাদ ছেড়েছি। এটুকু সময়ের মধ্যেই এমন অবিশ্বাস্য অপ্রীতিকর জঘন্য কাণ্ড ঘটে গেল! যদি বড় ভাইয়ের রাজ্যে কিছুদিন থাকতাম তবে  তো কত কাণ্ডই না জানি ঘটত। অস্থিরচিত্ত বাদশাহ শাহজামান অতর্কিতে কোষবদ্ধ তরবারিটি টেনে হাতে তুলে নিলেন। শরীরের সর্বশক্তি নিয়োগ করে কোপ বসিয়ে দিলেন।

উভয়ের দেহ দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেল। সব খতম। ব্যস, আর মুহূর্তমাত্রও দেরী না করে উটের পিঠে চেপে বসলেন অস্থিরচিত্ত বাদশাহ শাহজামান। যাত্রা করলেন বড় ভাইয়ের রাজ্যের উদ্দেশে। দুদিন দু’রাত্রি নিরবচ্ছিন্নভাবে উটের পিঠে বসে বাদশাহ শাহজামান বড় ভাইয়ের প্রাসাদে পৌছে গেলেন।

দীর্ঘদিন পর দু’ভাইয়ের মিলন ঘটল। ছোটভাইকে এতদিন পর কাছে পেয়ে বাদশাহ শারিয়ার আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়লেন। তাকে বুকে জড়িয়ে বহুভাবে আদর করলেন। লাভ করলেন পরম তৃপ্তি।

শাহজামান-এর মনে কিন্তু এতটুকুও শান্তি নেই। মুখের হাসি নির্বাসিত। চোখের তারায় হতাশার ছাপ। তাকে নিয়ে বড় ভাই যে আনন্দে মেতেছেন তাতে যোগদান করতে তিনি কিছুতেই উৎসাহ পাচ্ছেন না। সাধ্যমত সংক্ষেপে তার কথার উত্তর দিয়ে কেবল দায়মুক্ত হবার চেষ্টা করছেন।

একই প্রশ্ন ও নিরবচ্ছিন্ন চিন্তা শাহজামান-এর ভেতরটিকে কুরে কুরে খেতে লাগল—এ কী করে সম্ভব হ’ল। যাকে আমি মন-প্রাণ। দিয়ে পেয়ার মহব্বত দিলাম, সে কিনা তাকে দু’ পায়ে মাড়িয়ে পরপুরুষের সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হ’ল! এমন জঘন্য মনোবৃত্তি কি করে তার হ’ল! আমার ফুলের মত পবিত্র মহব্বতের মূল্য সে কি না এভাবে দিল ! তবে কি পেয়ারমহব্বতের কোন মূল্যই তামাম। দুনিয়ার কোথাও নেই? সবই কি মিথ্যা? সবই কি ভূয়ো?

শাহজামান সর্বক্ষণ একান্তে মুখ গোমড়া করে বসে নিজের। নসীবের কথা ভাবেন আর থেকে থেকে চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলেন।

বাদশাহ শারিয়ার এর মানে কিন্তু ছােট ভাইয়ের ব্যাপারটি সন্দেহের উদ্রেক করল। ভাবলেন, নিজের রাজ্য আর বেগমকে ছেড়ে এসে হয়ত শান্তি-স্বস্তি পাচ্ছে না। তাই তার চোখে-মুখে নিরবচ্ছিন্ন উদ্বেগ উৎকণ্ঠার ছায়া, মনে অন্তহীন হাহাকার। কারো সঙ্গে যেচে কথাবার্তা বলা তো দূরের কথা খানাপিনাও ছেড়ে দিয়েছে। একেই বলে মহব্বত আর বিবির চিন্তা।

এক সময় বাদশাহ শারিয়ার ছােট ভাইয়ের কাছে এসে সমবেদনার স্বরে বললেন—“ভাইয়া, এখানে আসার পর থেকে  তোমাকে কেমন বিষন্ন দেখাচ্ছে। হতাশা আর হাহাকার সম্বল করে প্রহর কাটাচ্ছ। ব্যাপার কি, আমার কাছে খােলসা করে বল।

শাহজামান চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন—“ভাইজান আমার বুকের ভেতরে আগুন জ্বলছে, তারই জ্বালায় আমি প্রতিনিয়ত দগ্ধে মরছি।

—সে কী কথা ভাইয়া! হঠাৎ এমন কি ঘটল যার জন্য  তোমার মনের কোণে এমন অশান্তি দানা বেঁধেছে! বল, সব কিছু খুলে বল আমাকে।

শাহজামান অপ্রতিভ মুখে, হতাশ দৃষ্টিতে ভাইজানের দিকে তাকিয়ে ক্ষীণকণ্ঠে উচ্চারণ করলেন আমাকে ক্ষমা করবে, আমি কিছুতেই আমার অশান্তি আর হতাশার কথা মুখ ফুটে  তোমার কাছে প্রকাশ করতে পারব না। আমার গোসতাকি মাফ কর ভাইজান।

বাদশাহ শারিয়ার ব্যাপারটিকে নিয়ে আর ঘাটাঘাটি করতে উৎসাহী হলেন না। ভাবলেন, নিতান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। পীড়াপীড়ি করে কাজ হবে না, উচিতও নয়। মুহূর্তকাল নীরবে ভেবে বললেন-“ঠিক আছে, চলো আমরা দু’ ভাই শিকারে যাই। এতে কিছুক্ষণের জন্য হলেও মনটা হাল্কা হবে।”

-“ভাইজান, শিকারে যেতে আমি ভেতর থেকে কোনো রকম তাগিদ পাচ্ছি না। তুমি বরং একাই ঘুরে এসো। আমি সঙ্গে থাকলে আমার হতাশা আর নিরানন্দ তোমার শিকারের আনন্দকেই বরবাদ করে দেবে। তার চেয়ে বরং তুমি একাই ঘুরে এসো। আমি প্রাসাদেই, থাকি।

বাদশাহ শারিয়ার আর পীড়াপীড়ি করলেন না। একাই লোক লস্কর নিয়ে শিকারে বেরিয়ে পড়লেন।

যে-ঘরে শাহজামান-এর থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল তার দক্ষিণদিকের জানালা খুললেই সুন্দর এক বাগিচা। কত সব দেশী বিদেশী ফুল আর ফলের গাছের বিচিত্র সমারোহ সেখানে। জানালা খুললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে মনলোভা বাগিচাটি। সে রাত্রে শাহজামান জানালার ধারে দাঁড়িয়ে উদাস ব্যাকুল দুষ্টিতে বাগিচার ফোয়ারাটির দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। এমন সময় সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত এক দৃশ্য তার চোখের সামনে ভেসে উঠল।

অকস্মাৎ প্রাসাদের পিছনের দরজাটি খুলে গেল। ব্যস, হুড়মুড় করে বাগানে ঢুকে গেল কুড়িটি ক্রীতদাস ও কুড়িটি ক্রীতদাসী। পরমুহুর্তেই দেখ গেল স্বয়ং বেগম সাহেবাকে। তিনিও তাদের সঙ্গে যোগ দিলেন। সবাই নগ্ন, সম্পূর্ণ বিবস্ত্র। বাগিচার বিভিন্ন প্রান্তে, নিরালায় গিয়ে বসল তারা জোড়ায় জোড়ায়।

ক্রীতদাস-ক্রীতদাসীর জোড়াবেধে যে যার পছন্দমত জায়গায় চলে যাওয়ার পর বেগম সাহেবা গলা ছেড়ে হাঁক দিলেন—‘মাসুদ, মাসুদ। বেগম সাহেবার আহ্বান কানে যেতে না যেতেই বিশালদেহী এক নিগ্রো যুবক লম্বা লম্বা পায়ে বেগমের কাছে ছুটে এল। তাকে পুতুলের মত কোলে তুলে নিয়ে পরম আনন্দে বার কয়েক ঠোটে চুম্বন করল।

পুলকে-আনন্দে অভিভূত করে তুলল বেগম সাহেবার দেহমন। চোখের তারায় দেখা দিল কাম-তৃষ্ণার সুস্পষ্ট ছাপ। বিবস্ত্রা প্রেমাকুল বেগম সাহেবাকে কোলে করে নিগ্রোটি বেগমের মুখে, গলায়, কাধে চুম্বন করতে লাগল। পুলকে আবেশে বেগম তার দুহাত উপরে তুলে তার অসামান্য সুগঠিত গোল গোল বড় বড় স্তন জোড়াকে নিগ্রোর মুখের দিকে এগিয়ে দিল। নিগ্রো তার জিব দিয়ে স্তনজোড়াকে পাগলের মত লেহন করতে লাগল। কখন স্তনের বোটা কামড়ালো কখনও বেগমের বোগল লেহন করল, লেহন করতে করতে মুখ নামিয়ে বেগমের নাভির ফুটোয় জিব দিয়ে সুড়সুড়ি দিল। তারপর কয়েক পা এগিয়ে সবুজ ঘাসের আস্তরণের ওপর আলতো করে শুইয়ে দিয়ে বেগমের দুপায়ের মাঝে বসে কিছুক্ষন বেগমের যোনি চুসতে লাগল। বেগমতো সুখে পাগলের মত ছটফট করতে করতে বেহুসের মত অবস্থা। তারপর নিগ্রো যোনি থেকে মুখ উঠিয়ে তার কালো আখাম্বা লিঙ্গটিকে যোনির মুখে সেট করে এক ধাক্কার পুরো লিঙ্গটিকে বেগমের ভিতর প্রবেশ করাল। তারপরই শুরু হয়ে গেল দৈত্যাকৃতি নিগ্রোটির বল্গাহীন পেষণ। সে সঙ্গে বেগম-সাহেবার কুসুম-কোমল দেহ পল্লবটিকে দলন -পেষণে সে বার বার পিষ্ট করতে লাগল। আবেশে জড়ানো তার আঁখি দুটো পুকানন্দে বার বার অর্ধনিমিলিত-নিমিলিত হতে লাগল। আর মনের মধুর আবেগ আর নিরবচ্ছিন্ন রোমাঞ্চ বার বার উপচে পড়তে লাগল। এ যেন এক অনাস্বাদিত আনন্দকে হঠাৎ হাতের মুঠোয় পেয়ে উভয়ে পুরো পুরি উপভোগ করে নিচ্ছেন। সারা রাত্রি ধরে দৈত্যাকৃতি নিগ্রো যুবকটি বেগম সাহেবার কুসুম কোমল দেহটিতে বার বার আলিঙ্গন, চুম্বন, দলন আর পেষণের মাধ্যমে রোমাঞ্চ জাগিয়ে তুলল, নিজের যৌবনক্ষুধাকেও পুরোপুরি নিবৃত্ত করে নিল।

বেগম সাহেবা আর নিগ্রো যুবকের ব্যাভিচারের দৃশ্যটি প্রত্যক্ষ করে শাহজামানের মন একটু শান্ত হ’ল। প্রবোধ পেল। তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে আপন মনে বলে উঠলেন—“হায় খােদা! আমার বড় ভাইয়ার নসীব দেখছি আমার চেয়েও মন্দ!

বাদশাহ শাহজামান-এর বুকের ওপর থেকে বিশালায়তন পাথরটি সরে যাওয়ায় যেন বেশ হাল্কা মনে হ’ল এবার। সরাবের বোতলটি হাতে তুলে নিলেন। গলায় ঢেলে দিলেন। ঢগটগ করে সবটুকু সরাব গিললেন। তার দেহে হৃত বলশক্তি ফিরে এল। ফিরে পেলেন মানসিক স্বস্তি। শাহজামান ভোররাত্রে শয্যা নিলেন। কখন যে জানলা দিয়ে সূর্যের আলো ঘরে ঢুকে মেঝেতে লুটোপুটি খেতে শুরু করেছে, বিন্দুমাত্রও হুঁস তার নেই। বাদশাহ শারিয়ার বেশ বেলায় শিকার সেরে প্রাসাদে ফিরে এলেন। ছােটভাইয়া শাহজামান তখন আরামকেদারায় শরীর এলিয়ে দিয়ে চেখবুজে রাত্রির ঘুমের ঘাটতিটুকু পূরণ করছেন। তিনি তাকে ডাকলেন। কুশলবার্তাদি নিলেন। ভাইকে একটু বেশ হাসিখুশি দেখে বাদশাহ শারিয়ার বিস্ময় বোধ করলেন। কৌতুহল নিবৃত্ত করতে গিয়ে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন— ‘ভাইয়া, এক রাত্রির মধ্যে এমন কী তাজ্জব কাণ্ড ঘটে গেল যার ফলে তবিয়ত সুস্থ দেখছি, মেজাজ মর্জিও কেমন বদলে গেছে,  তোমার ব্যাপার কি বল  তো?

শাহজামান এবার মুখ খুললেন—বলছি শোন, উজিরের মুখে  তোমার আকুল আহ্বানের কথা শুনে আনন্দে আমার মন-প্রাণ চনমনিয়ে উঠেছিল একটি দিন দেরী করতেও আমার মন সরছিল না। কতক্ষণে  তোমার সঙ্গে মিলিত হব সে ভাবনা আমার মনকে পেয়ে বসল। লোক-লস্করসহ উজিরের সঙ্গেই পথে নামলাম। কিছুটা পথ পেরোতে না পেরোতেই হঠাৎ মনে পড়ে গেল ব্যস্ততার জন্য একটি দরকারী জিনিস আনা হয়ে ওঠে নি। বাধ্য হয়ে আবার প্রাসাদে ফিরে যেতেই হ’ল। কিন্তু প্রাসাদে খাস বেগমের ঘরের দরজায় গিয়েই আমার নসীবের করুণতম পরিণতির মুখােমুখি হলাম। যার ফলে মুহূর্তে তামাম দুনিয়া আমার কাছে মূল্যহীন হয়ে পড়ল। আমাকে মুহূর্তের জন্যও যে-বেগম চোখের আড়াল করতে পারে না সে-ই কিনা বিবস্ত্র অবস্থায় এক ধুমসো নিগ্রো যুবকের আলিঙ্গনাবদ্ধ হয়ে পরম শান্তিতে বিভোর হয়ে ঘুমোচ্ছ। তার চোখে-মুখে প্রসন্নতার সুস্পষ্ট ছাপ। এক নজরে দেখেই মনে হ’ল সারা জীবনে আমার বেগম এই বুঝি প্রথম শান্তি ও তৃপ্তির স্বাদ পেল। বাস, আমার শিরায় শিরায় খুন টগবগিয়ে উঠল। শরীরের সবটুকু খুন যে শিরে চেপে গেল। নিজেকে আর সংযত রাখতে পারলাম না। ব্যস্ত-হাতে কোমর থেকে তরবারীটি টেনে নিলাম! দু’টুকরো করে দিলাম আমার শান্তি-সুখ কেড়ে নেওয়া শয়তান দুটোকে। মুহূর্তকাল নীরবে কাটিয়ে শাহজামান আবার মুখ খুললো-“ভাইজান, কেন আমার শান্তি সুখ অন্তর্হিত হয়েছিল, বললাম। কিন্তু কিভাবে এবার হত-শান্তি ফিরে পেয়েছি সে-কথা জানতে চেয়ে আবার পীড়াপীড়ি করলে আমি কিন্তু বড়ই বিব্রত বোধ করব। ছােট ভাইয়ের কথার গুরুত্ব না দিয়ে কৌতূহলী ও উৎকণ্ঠিত বাদশাহ শারিয়ার তবুও তাকে বার বার বলতে লাগলেন—হায় খােদা! এত করে বলা সত্ত্বেও তুমি আমার অশান্ত মনকে শান্ত করতে এতটুকুও উৎসাহী হচ্ছ না! কেন  তোমার এত দ্বিধা সঙ্কোচ? আমি আর সইতে পারছি না: বল, সবকিছু খুলে বলে আমার উৎকণ্ঠা দূর কর ভাইয়া।

শাহজামান আর মুখে কুলুপ এঁটে থাকতে পারলেন না। দ্বিধাসঙ্কোচ কাটিয়ে গতরাত্রে যে-অবিশ্বাস্য নক্কারজনক ঘটনাকে চাক্ষু করেছেন সবই সবিস্তারে তার কাছে ব্যক্ত করলেন।

সবকিছু শুনে বাদশাহ শরিয়ার কিছুমাত্রও বিশ্বাস করতে পারলেন না।

ম্লান হেসে শাহজামান বলেন–আমি কিছুমাত্র মিথ্যা আশ্রয় না নিয়ে যা পুরোপুরি সত্য সে-ছবিই  তোমার চোখর সামনে তুলে ধরেছি মাত্র। এক তুমি সেই-অবিশ্বাস জঘন্যতম দৃশ্যটির প্রতিচ্ছবিও মনে করতে পার। আমি  তোমাকে হাতেনাতে প্রমাণ করে দেখাতে পারি। তবে তোমাকে আবার শিকারে যাবার ছলনার আশ্রয় নিতে হবে। ভাইজান, প্রচার করে দাও, তুমি আবার শিকারে যাবে, ব্যস, সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে আসার আগেই গোপনে আমার ঘরে এসে আত্মগোপন করে থাকবে। তারপর নিজের চোখের সামনেই তাদের চোখে দেখতে পাবে। চাক্ষুস করার এমন অপূর্ব সুযোগ হাতের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও মিছে কেন আমার কথায় আস্থাবান হয়ে নিজেকে কষ্ট দেবে ভাইজান? আজ রাত্রেই  তো সে পরিকল্পনা করতে পার।

ব্যস, বাদশাহ শারিয়ার এর নিদের্শে সর্বত্র প্রচার করে দেওয়া হ’ল, তিনি গত রাত্রের মত আজও শিকারে যাবেন। আবার সাজসাজ রব উঠল।

যথা সময়ে বাদশাহ শারিয়ার উটের পিঠে চেপে শুধু সাঙ্গোপাঙ্গোদের নিয়ে মহাধুমধাম করে শিকারের উদ্দেশে যাত্রা করলেন। বনের এক চিলতে সমতল প্রান্তরে বাদশাহ শারিয়ার-এর তবু পড়ল। সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে আসার কিছু পরে তিনি তার দুই বিশ্বস্ত নোকরকে ডেকে বললেন—“আমি কিছু সময়ের জন্য তাঁবু ছেড়ে অন্যত্র যাব কেউ, এমন কি উজির এলেও কলাবে আমার তবিয়ত বিগড়েছে। কারো সঙ্গেই দেখা করা সম্ভব নয়। রাত্রি একটু বাড়তে বাদশাহ শারিয়ার কালো বোরখায় নিজেকে ঢেকেঢুকে তাবু থেকে গোপনে বেরিয়ে অতি সন্তর্পণে প্রাসাদে শাহজামান-এর ঘরে এসে আশ্রয় নিলেন।

প্রাসাদে দক্ষিণদিকের জানলা খুলে, ফুল-ফলের বার্ণিচার দিকে মুখ করে দু’ভাই অন্ধকার ঘরে বসে রইলেন: উভয়ের চোখেই অনুসন্ধিৎসার ছাপ। কারো মুখে কোন কথা নেই। ও বাদশাহ শারিয়রকে বেশী অপেক্ষা করতে হল না’ এক সময় প্রাসাদের পিছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে এল বিবস্ত্র কুড়ি ক্রীতদাস আর কুড়িজন ক্রীতদাসী। তারপরই দেখা গেল বাদশাহ শারিয়ার-এর খাস বেগম সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায় বাগানে এসে দাঁড়ালেন। অস্বস্তিতে ভরপুর। অনুচ্চ কণ্ঠে ডাকলেন মাসুদ!মাসুদ! মুহুর্তের মধ্যেই যুবক-নিগ্রোটি আড়াল থেকে চোখের সামনে এসে দাঁড়াল : বিবস্ত্রা বেগম সাহেবার কাছে গেল। তারপরই চুম্বন, দলন, পেষণ আর সম্ভোগের মাধ্যমে পুলকানন্দ লাভ করতে লাগল সারারাত্রি ধরে। বেগম সাহেবা যেন এই প্রথম পুরুষের মধুর আলিঙ্গনে পরম তৃপ্তি লাভ করলেন। বাদশাহ শারিয়ার নিজের চোখ দুটোর ওপরও যেন আস্থা হারিয়ে ফেলেন। লজ্জায়, ঘৃণায় তার অপমানে তার অঙ্গে বিশ্রী এক অনুভূতি দেখা দিল।

বাদশাহ শারিয়ার-এর মন থেকে সংসারের মোহ চিরদিনের মত নিঃশেষে মুছে গেল। দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাইয়া শাহজামানকে বলল ‘ভাইয়া, আর নয়। এ পাপের নরকপুরীতে এক মুহূর্তও আর নয়। যেখানে প্রেম মূল্যহীন, মহব্বতের আপমৃত্যু ঘটেছে পাপাচার, ব্যভিচার আর বিশ্বাসঘাতকতা সবার উর্ধে স্থান পেয়েছে সেখানে থেকে নিজেকে আর বঞ্চিত করতে চাই না। চল, আজই আমরা প্রাসাদ, রাজৈশ্বর্য আর বিবির মায়া কাটিয়ে বেরিয়ে পড়ি। যেদিকে দু’ চোখ যায় চলে যাই। খুঁজে দেখি, আমাদের মত নসীব বিড়ম্বিত আর কেউ আছে কি না।

ভোরের আলো ফোটার আগেই শারিয়ার ছােট ভাইয়া শাহজামানএর হাত ধরে প্রাসাদ ছেড়ে বেরিয়ে পড়লেন। নসীব সম্বল করে তারা হারা উদ্দেশ্যে হাঁটতে লাগলেন। এক সময় সমুদ্রের উপকূলে উপস্থিত হলেন। একটি গাছের ছায়ায় বসে তারা ক্লান্তি অপনোদন করতে লাগলেন।

প্রায় এক ঘণ্টা কাল দু ভাই গাছে হেলান দিয়ে, পাশাপাশি গা ঘেষাঘেষি করে বসে বিশ্রাম নিলেন। এক সময় তারা দেখলেন, সমুদ্রের মাঝখানে ধোঁয়ার একটি কুন্ডলি আকাশের দিকে উঠে যাচ্ছে। দু ভাইয়া অতর্কিতে সোজা হয়ে বসে পড়লেন। বিস্ময়, বিস্ফারিত চোখে অলৌকিক দৃশ্যটির ওপর নজর রেখে চলতে লাগলেন। এক সময় দেখলেন ধোঁয়ার কুণ্ডলিটি থেকে অতিকায় একটি আফ্রিদি দৈত্যের উদ্ভব ঘটেছে; অভাবনীয় দৃশ্যটি দেখে ভাইয়া যেন কুঁকড়ে যাওয়ার উপক্রম হলেন। তাড়াতাড়ি গাছের ডালে উঠে বসলেন।  কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই অতিকায় আফ্রিদি দৈত্যটি উপকূলের নিকে ফিরল। তারপর বাতাসে ভর করে এগিয়ে আসতে লাগল বিশ্রামরত দু’ভাইয়ার দিকে। ব্যাপার দেখে তাদের  তো আত্মারাম খাঁচাছাড়া হবার উপক্রম। আফ্রিদি সামান্য এগোতেই আরও অবিশ্বাস্য এক দৃশ্য তাঁদের নজরে পড়ল। দেখলেন তার মাথায় রয়েছে পর্বতপ্রমাণ এক বাক্স।

কয়েক মুহুর্তের মধ্যেই আফ্রিদি গাছটির তলায় হাজির হল। বিশালায়তন বাক্সটিকে নামাল। তার ভেতর থেকে একটি বেশ বড়সড় ও ভারি সিন্দুক বের করল। ব্যস, তার ভেতর থেকে বেরিয়ে এল এক রূপসী। পরমা সুন্দরী তন্বী যুবতী! বেহেস্তের পরীদের সৃষ্টি করার পর অবশিষ্ট সৌন্দর্যটুকু যুবতীটির গায়ে লেপে দেওয়া হয়েছে। নতুবা বেহেস্তের পরীদেরই একজন এই রূপসী তন্বী তরুনীটি তার রূপের আভায় চোখ দুটো যেন ঝলসে দিচ্ছে। বেহেস্ত্রের পরীটির আলোকচ্ছটায় যেন গাছের তলা ও তার চারদিকে অনেকখানি অংশ উদ্ভাসিত।

আফ্রিদি বিস্ময় মাখানো দৃষ্টিতে রূপসী পরীটির রূপ সৌন্দর্য দেখতে লাগল। তারপর আবেগ-মধুর সম্ভাষণে বলতে লাগল মেহবুবা, আজ তোমার শাদী হবার কথা ছিল। আমি পেয়ারের সাহজাদীকে শাদীর আসর থেকে ছিনিয়ে নিয়ে এসেছি। ব্যস, তারপর থেকেই আমার আঁখির নিদ উবে গেছে। অবসাদে আজ আমার তবিয়ত কাহিল হয়ে পড়েছে। এখন আমি নিদ যাব তোমার কোলে শির রেখে নিদ যাব।

রূপসী তন্বী যুবতীটির কোলে মাথা রেখে অতিকায় আফ্রিদি দৈত্যটি ঘুমিয়ে পড়ল। মুহূর্তেই গভীর ঘুমে বেহুস হয়ে পড়ল। রূপসী তন্বী যুবতীটি এদিক-ওদিক দৃষ্টি ফেরাতে গাছের ডালে অবস্থানরত দু ভাইয়াকে দেখতে পেল। অতি সন্তর্পণে ঘুমন্ত আফ্রিদির মাথাটিকে কোল থেকে নামিয়ে দিল। দু’ভাইকে ইসারা করে বুঝিয়ে দিল দৈত্যের ঘুম সহসা ভাঙবে না।  তোমরা নির্ভয়ে নেমে এসো! রূপসী তন্বী যুবতীটির কাছ থেকে অভয় পেয়ে দু’ভাইয়া কিছুটা নিশ্চিন্ত হতে পারলেন বটে। তবু তাদের ফ্যাকাসে মুখ অধিকতর ফ্যাকাসে হয়ে গেল। চোখের তারার ভীতিও হতাশাটুকু গাঢ়তর হ’ল।

রূপসী এবার অভয় দিতে গিয়ে বল—“আল্লা তাল্লার নামে হলফ করে বলছি,  তোমাদের কোন অনিষ্টই হবে না। আমার কথায় ভরসা রেখে গাছ থেকে নেমে এসো। আর যদি নেহাৎই আমার হুকুম তামিল না কর তবে  তোমাদের নসীবে দুঃখ আছে। দৈত্যকে জাগিয়ে দেব। গলাটিপে মেরে ফেলবে তোমাদের এখনও সময় আছে, নেমে এসো, আমার কলিজাটাকে শান্ত কর। কলিজার আগুনে পানি ঢেলে আমাকে শান্তি দাও, তৃপ্ত কর! তোমরা ভোগ কর আমাকে।

বাদশাহ শরিয়ার আর তার ভাইয়া গাছের ডালে বসে পরস্পরের মুখের দিকে তাকাতে লাগলেন। দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে কয়েক মুহূর্ত কাটিয়ে আল্লাতাল্লার ওপর নিজেদের নসীবকে অর্পণ করে তারা দুরুদুরু বুকে অপরুপার মুখােমুখি এসে দাঁড়ালেন। রূপসী তন্বী যুবতীটি মুহূর্তের মধ্যে তার পরিধেয় সমস্ত পোশাক খুলে ফেলে হাত পা ছড়িয়ে চিৎ হয়ে ঘাসের ওপর শুয়ে পড়ল। আবেশ জড়ানো কামাতুর চোখ দুটো মেলে দু’ ভাইয়ার দিকে তাকাল। দুহাত মাথার উপর তুলে তার নিটল দৃঢ় বড় বড় স্তনদুটিকে ঝাকিয়ে ভাবালুত কণ্ঠে বলল—“ তোমরা এক এক করে আমার কলিজার জ্বালা নেভাও। চুম্বন, দলন, পেয়ণ আর সম্ভোগে সম্ভোগে। আমাকে উতলা করে তোল। অন্তজ্বালায় দগ্ধে মরছি আমি। আমাকে তৃপ্ত কর, শান্তি দাও। এই বলে দু পায়ের হাটু ভাজ করে দুদিকে ছড়িয়ে আর অপুর্ব সুন্দর যোনিকে দু ভাইয়ের দিকে মেলে দিল। দু ভাইয়া পরস্পরের চোখ চাওয়া-চায়ি করতে লাগল। সামনের এই দৃশ্য দেখে তাদের দুজনের অবস্থা কাহিল, তাদের লিঙ্গগুলোও লাফালাফি শুরু করে দিল। কে আগে যাবে?

রূপসী তন্নী যুবতী অস্থিরকণ্ঠে বলে উঠল—‘দেরী কোরো না, চলে এসো ; কলিজার জ্বালায় আমি জ্বলেপুড়ে খাক হচ্ছি ! দেরী করলে কিন্তু আমি আফ্রিদিকে ডাকতে বাধ্য হ’ব, বলে দিচ্ছি। দু ভাইয়া এমনিতেই যথেস্ট কামুক ছিলেন, তাদের হারেমে বিবি ছাড়াও শত শত দাষী বাদি ছিল তাদের কামনা মিটানোর জন্য। তার উপর কিছুদিন যাবদ নারিসঙ্গ হাড়া। তাই তাড়া আর দেরি না করে একের পর এক রূপসী যুবতীকে সম্ভোগের তৃপ্তি দানে লিপ্ত হলেন।

তার কলিজা ঠাণ্ডা না হওয়া পর্যন্ত তারা কামাতুরা যুবতীকে সঙ্গম করতে লাগলেন। কখন যুবতীর স্তনদুটোকে দুহাতে দলাই মলাই করে চুসতে লাগল, কখনও যোনিতে মুখ দিয়ে চুসতে লাগল, একখনও এক ভাই যোনি চুসে তো আরএক ভাই স্তন টিপে, কখনও একভাই সঙ্গম করে তো আরএক ভাইএর লিঙ যুবতী মুখে নিয়ে চুষে, কখনও চিৎ করে, কখনও উপর করে উল্টে পাল্টে যুবতীকে চুদতে লাগল। এইভাবে তারা নানা ভাবে নানা কায়দায় যুবতীকে তৃপ্তি দিল। নিজেরাও কম তৃপ্তি পেলেন না।

পরিতৃপ্তি লাভ করে রূপসী যুবতীটি ঠোটের কোণে হাসির রেখা ফুটিয়ে তুলে বলল—নারীর কামজ্বালা নির্বাপিত করে তৃপ্তিদানের কৌশল  তোমাদের দু’জনেরই দেখছি খুব ভাল রপ্ত আছে!

রূপসী যুবতীটি এবার একটি থলির ভেতর থেকে একগোছা আঙটি বের করে তাদের চোখের সামনে ধরল। মিষ্টি-মধুর স্বরে উচ্চারণ করল—এগুলো কি বলতে পার?’ দু’ভাইয়ার চোখের তারায় জিজ্ঞাসার ছাপ এঁকে নীরবে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো। রূপসী যুবতীটিই মুশকিল আসান করতে গিয়ে বলল—ইতিপূর্বে আফ্রিদির চোখের আড়ালে যাদের দিয়ে আমি সম্ভোগের মাধ্যমে তৃপ্তি লাভ করেছি তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে একটি করে আঙটি নিয়ে এখানে গেঁথে রেখেছি। এ গোছাটিতে একশ’ সত্তরটি আঙটি রয়েছে। এগুলো আমার কাজের স্মৃতিস্বরূপ।  তোমরা দু’ জনেও আমাকে একটি করে আঙটি দাও স্মৃতির গোছায় গেঁথে রাখি। ভবিষ্যতে আঙটি দুটো দেখলেই আজকে তোমাদের দ্বারা যে সম্ভোগের তৃপ্তি পেয়েছি সে কথা আমার মনের কোণে ভেসে উঠবে।

বিস্ময়ে অভিভূত শারিয়ার আর তার ভাইয়া কথা না বাড়িয়ে নিজ নিজ অঙ্গুলি থেকে আঙটি খুলে রূপসী যুবতীর হাতে তুলে দিলেন। রূপসী যুবতী ঠোটের কোণে পরিতৃপ্তির হাসির রেখা ফুটিয়ে তুলে এবার বলল-এ হতচ্ছাড়া দৈত্য আফ্রিদি আমাকে শাদীর আসর থেকে জবরদস্তি ভাগিয়ে নিয়ে এসেছে। তারপরই ওই লোহার সিন্দুকটায় বন্দী করে দেশ-দেশান্তরে, বনবনান্তরে আর পাহাড়ে-মরুতে মাথায় করে হরদম ঘুরে বেড়িয়েছে। আমাকে নিয়ে তার হরকত ডর, যদি হাতছাড় হয়ে যাই তাই সমুদ্রের অতল গহ্বরে রেখেছে আমাকে। কিন্তু হতচ্ছাড়া শয়তান দৈত্যটা  তো একটা আস্ত আহাম্মক। লেড়কিদের চরিত্রের কথা  তো তার বিলকুল অজ্ঞাত। আসলে আমরা, লেড়কিরা শরিরের তৃপ্তির জন্য যা চাইব যে করেই হোক লাভ না করে শান্ত হব না। লেড়কিদের আটকে রেখে সতর্কতার সঙ্গে চোখে চোখ রেখেও কেউ তাদের লক্ষ্যচ্যুত করতে পারেনি। ভবিষ্যতেও কোনদিন সক্ষম হবে না।

বাদশাহ শারিয়ার এবং তার ভাইয়া শাহজামান তার কথায় যেন সম্বিৎ ফিরে পেলেন। ভাবলেন,—“বিশালদেহী, অমিত শক্তিধর ও দোর্দণ্ড প্রতাপশালী দৈত্যের এত সতর্কতা সত্ত্বেও রূপসী যুবতীটি কেমন করে তাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে নিজের উদ্দেশ্য সিদ্ধ করে চলেছে তা বাস্তবিকই বিস্ময়কর  তো বটেই, রীতিমত অবিশ্বাস্যও। আর তারা দু’ ভাইয়া তাদের বিবিকে রক্ষা করার জন্য কতটুকুই বা সতর্কতা অবলম্বন করেছেন? কিছুমাত্র না। বিশ্বাসঘাতকতা  তো তারা করবেই।

রূপসী যুবতী ও দৈত্য আফ্রিদির কিসসা শুনে এবং তাঁর ভাইয়া শাহজামান কিছুটা অন্ততঃ স্বস্তি পেলেন। তারা এবার নিজ নিজ প্রাসাদে ফিরে গেলেন।

বাদশাহ শারিয়ার প্রাসাদে ফিরেই উদ্ভ্রান্তের মত তাঁর খাস বেগমের কামরায় হাজির হলেন। তরবারির আঘাতে বেগমের শিরচ্ছেদ করে ফেললেন। আর হারেমে যত ক্রীতদাস আর ক্রীতদাসী ছিল সবাইকে খতম করার নির্দেশ দিলেন। বাদশাহ শারিয়ার উদ্ভাস্তের মত চেঁচিয়ে উজিরকে তলব করলেন। বৃদ্ধ উজির দুরুদুরু বুকে ছুটে এসে কুর্নিশ করে আদেশের অপেক্ষায় বাদশাহের সামনে দাঁড়ালেন।

বাদশাহ মুখের গাম্ভীর্যটুকু অক্ষুন্ন রেখেই বললেন—“উজির, আমার হুকুম শোন, আজ থেকে প্রতি রাত্রে একটি করে কুমারী লেড়কি আমার ঘরে হাজির করবে। আমি সারা রাত্রি তাকে নিয়ে সম্ভোগে লিপ্ত থাকব। আর পূর্ব-আকাশে রক্তিম ছােপ ফুটে ওঠার আগেই তাকে নিজে হাতে খতম করব। সে যাতে তার কলঙ্কিত দেহ পবিত্র বলে অন্য কোনো পুরুষকে দান করে প্রতারণা করতে না পারে। মনে রেখাে, আমার হুকুম তামিল না করলে  তোমার শিরটা গর্দান থেকে নেমে যাবে। যাও, হুকুম তামিলের কথা ভাব গে।’

বৃদ্ধ উজির আর কিছু না হোক অন্ততঃ জানের মায়ায় তিন তিনটি বছর এক নাগাড়ে প্রতিরাত্রে একটি করে কুমারী লেড়কি বাদশাহের শোবার ঘরে হাজির করে চললেন।

ব্যাপার দেখে রাজ্য জুড়ে মানুষের, বিশেষ করে কুমারী লেড়কি এবং তাদের আব্বাদের মনে অন্তহীন হাহাকার আর হাহুতাশ সম্বল হয়ে দাঁড়াল। অনেকে লেকিকে নিয়ে রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে গেল।

প্রজারা একদিন যে বাদশা শারিয়ারকে অন্তর থেকে শ্রদ্ধা করত আজ তিনিই তাঁদের চোখে সাক্ষাৎ শয়তানে পরিণত হয়েছেন। চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে খােদার কাছে তারা নালিশই শুধু নয়, প্রতিনিয়ত তার মৃত্যু কামনা করে।

বাদশাহ শারিয়ার-এর কোনদিকেই বিন্দুমাত্র ভূক্ষেপ নেই। বেহেস্ত বা দোজাকেরও পরোয়া করেন না। কিন্তু এদিকে যে দেশে কুমারী লেড়কির আকাল পড়ে গেছে সে  তো উজিরের ভালই জানা আছে। তিনি পড়লেন মহাফাপরে। কোথায় পাবেন নবাবের বাঞ্ছিত কুমারী! আবার সন্ধ্যায় খালি হাতে তার সামনে গিয়ে দাঁড়ালে জ্ঞান নিয়ে ফিরে আসতে হবে না। উজিরের নিজের অবশ্য পরমা সুন্দরী দুটো মেয়ে রয়েছে। উভয়েই কুমারীও বটে। রূপে গুণে একেবারে চৌখস। বড়টির নাম শাহরাজাদ আর ছােটটির নাম দুনিয়াজাদ। বড়টির ইতিহাসে অগাধ পাণ্ডিত্য। আবার গান বাজনায় বিশেষ পারদর্শিনী। সে আব্বাজানের বিষণ্ণতা লক্ষ্য করে তার মনের আকস্মিক ভাবান্তরের কারণ জানতে চাইল। বৃদ্ধ উজির বেটিকে সব কথা খুলে বললেন। আব্বাজানের মুখে সব বৃত্তান্ত শুনে শাহরাজাদ তাকে প্রবোধ দিতে গিয়ে বল—“আব্বাজান, কেন তুমি সামান্য একটি ব্যাপার নিয়ে একেবারে আসমান-জমিন ভেবে মরছ! আজ রাত্রেই বাদশাহ শারিয়ার-এর সঙ্গে আমার শাদী দিয়ে দাও। আমার নসীবের কথা ভেবে উতলা হয়ো না। আমার দেহে যদি সাচ্চা মুসলমানের খুন থেকে থাকে তবে দেখবে আমি অাবার জান নিয়ে  তোমার কাছে ফিরে আসবই। আর যদি নেহাৎই বাদশাহের হাতে জান দিতে হয় তবে এমন কোন কাজ করে মরব যেন ভবিষ্যতে তামাম দুনিয়ার কোন লেড়কিকে আর শয়তানটার শিকার হতে বা রাজ্য ছেড়ে ভোগে যেতে না হয়। পুরো ব্যাপারটা আমার হাতে ছেড়ে দিয়ে তুমি নিশ্চিন্ত থাকতে পার।……….

………….তার লেড়কি শাহরাজাদ বলল—“আব্বাজান, আমার অভিপ্রায় তাে অনেক আগেই তােমার কাছে বক্তি করেছি। বৃদ্ধ উজির আর কথা না বাড়িয়ে ধেটিকে শাদীর সাজে সাজতে বলেন।

বৃদ্ধ উজির লাঠি ভর দিয়ে বাদশাহকে খবর দিতে ছুটলেন আজ রাত্রের জন্য তার বাঞ্ছিতা কুমারী লেড়কি সংগ্রহ করতে পেরেছেন।

এদিকে শাহরাজাদ তার ছােট বহিন দুনিয়াজাদকে বল্ল–শােন, আমি এক রাত্রের জন্য বাদশাহের বেগম হতে চলেছি। আমি সময়মত তােকে ডেকে পাঠাব। তুই কিন্তু যবি। শাদী হয়ে গেলে আমাকে নিয়ে বাদশাহ যখন শোবার ঘরে যাবার জন্য উদ্যোগ নেবেন তখন তুই আব্দার করবি- দিদি কিসসা শােনাও—দিদি কিসসা শােনাও। নইলে আমার চোখে নিদ আসবে না। প্রয়ােজনে একটু-আধটু কান্নাকাটিও করবি। আমি তখন কিচ্ছা শুরু করব। ব্যস, এতেই বাদশাহকে কুপােকাৎ করতে হবে। দেখবি, চালটা কেমন জব্বর হয়।

কিছুক্ষণের মধ্যেই বৃদ্ধ উজির ফিরে এলেন। বধূবেশে সজ্জিত বড়মেয়ে শাহরাজাদকে নিয়ে বিষগ্নমনে বাদশাহ শারিয়ার-এর প্রাসাদের দিকে পা বাড়ালেন।

বাদশাহ শারিয়ার তার রাত্রের খােরাক রূপসী যুবতীটিকে দেখে উল্লসিত হলেন। আপন মনে বলে উঠলেন—খুবসুরৎ! জবরদস্ত পাত্রী যােগাড় করেছ উজির! তােমার নজর আছে বলতে হবে!

বাদশাহের মুখের দিকে চোখ পড়তেই শাহরজাদ-এর মুখ খড়িমাটির মত ফ্যাকাসে হয়ে এল। বুকের মধ্যে ধড়াস্ ধড়া করতে লাগল। মুহূর্তে নিজেকে সামলে নিয়ে জোর করে মুখে হাসির রেখা ফুটিয়ে তুলল। যথােচিত ভঙ্গিতে বাদশাহকে কুর্নিশ করল!

বাদশাহ শারিয়ার এবার রূপসী শাহরাজাদ’কে আদরে-আহ্লাদে অভিভূত করে তােলার চেষ্টা করলেন। কাধে হাত দিয়ে তাকে নিয়ে গেলেন শােবার ঘরে। দরজার খিল বন্ধ করে দিলেন,পাশে বসালেন। শাহরাজাদ ওড়নায় মুখ ঢেকে ফুঁপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে লাগলেন।

বাদশাহ তাঁর গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে প্রবােধ দিতে গিয়ে বললেন– ‘সুন্দরী, কাদছ কেন? আমার বেগম হয়েছ,  তােমার কাছে এ-তো সৌভাগ্যের কথা ভয়ের কি-ই বা আছে, বুঝছি না তাে। তুমি আমার পেয়ারের জান–আমার কলিজা। কি চাও তুমি, নির্দ্বিধায় আমাকে বলতে পার। তােমার কোন আশাই অপূর্ণ রাখব না। মুখফুটে একবারটি শুধু বল, কি চাও তুমি!

শাহরাজাদ চোখ মুছতে মুছতে বলল জাহাপনা, ‘আমার একটা ছােট্ট বহিন রয়েছে। আমাকে ছাড়া এক মুহূর্তও সে থাকতে পারে না। আমাকে ছাড়া সে হয়ত ঘুমােতেই পারবে না। নির্ঘুম অবস্থায় রাত্রি কাটাবে। কেঁদেকেটে আকুল হবে। তাকে একবারটি চোখের দেখা দেখবার জন্য আমার কলিজাটা উথালি পাথালি করছে।

বাদশাহ শারিয়ার মুখে তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটিয়ে তুলে বললেন—ব্যস, এটুকুই তােমার আব্দার। আর এই জন্য তুমি এমন করে চোখের পানি ফেলছ! আমি নােকরকে পাঠিয়ে তােমার বহিনকে এখানে আনানাের ব্যবস্থা করছি।

এক কর্মচারীকে পঠিয়ে বাদশাহ শারিয়ার তার বিবির বহিন  দুনিয়াজাদকে আনালেন। ঘরে ঢুকেই দুনিয়াজাদ তার দিদিকে জড়িয়ে ধরে, হাউহাউ করে কেঁদে উঠল। সে কী কান্না। কে বলবে, এর মধ্যে পরিকল্পনা রয়েছে?

শাহরাজাদ তাকে নানাভাবে প্রবােধ দিয়ে, আদরে-আহ্লাদে শান্ত করলেন। এবার বিছানায় শুইয়ে দিয়ে তার গায়ে-মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলেন।

বাদশাহ শারিয়ার এতক্ষণ পাশ ফিরে শুয়েছিলেন। চোখের পাতায় একটু তন্দ্রা এসেছিল। দুনিয়াজাদ-এর কান্না আর শাহজাদএর নানা প্রবােধ বাক্যে তার তন্দ্রা টুটে গেল। তারপর হিংস্র জানােয়ারের মত হাত দুটো বাড়িয়ে দিয়ে সাঁড়াশীর মত আঁকড়ে ধরলেন ফুলের মত পবিত্র কুমারী শাহরাজাদকে।

শাহরাজাদ এখাদা তাল্লার কাছে মিনতি জানাল—হে খােদা, হিংস্র জানােয়ারটার অত্যাচার সহ্য করার মত শক্তি-সাহস আমায় দাও।

বাদশাহ দেখলো যে ভয়ে তার সাদা মুখ আরও সাদা হয়ে গিয়েছে। সে ওকে ঝাপটে ধরে বিছানায় ফেলল। এরপর সব শাহরাজাদের সকল জামা কাপর খুলে ওর হাত মাথার উপর উঠিয়ে চেপে ধরে মুখে, গালে, ঠোঁটে, ঘাড়ে, বগলে চেটে চুষে একাকার করে দিল। শাহরাজাদ ভয়ে ছটফট করতে লাগল। শাহরাজাদের আতংক উপভোগই করছে বাদশাহ। ধবধবে সাদা এক জোড়া স্তন। কতো টাইট। বুঝাই যাচ্ছে আগে কারোর হাত পড়েনি। তার উপর হাত রাখলো বাদশাহ। ভীষণ নরম, যেন মাখনের ডেলা। সে তার ফোলা ফোলা বোঁটা আর তার আশেপাশের লালচে বৃত্তাকার অংশ দেখে পাগল হয়ে গেলো। সে ডান স্তনে মুখ লাগিয়ে তা বাচ্চাদের মতো চুষতে লাগলো। আর বাম স্তনটা টিপছে। কিছুখন পর সে বাম পাশের টায় মুখ লাগলো। ওদিকে শাহরাজাদের আতংক আস্তে আস্তে ভাল লাগায় রূপ নিয়েছে। বাদশাহ মুখ উঠালো স্তন থেকে। তার কামড়ে লাল হয়ে গেছে স্তন জোড়া। আর বাঁ স্তন এর বোঁটার নীচে লালচে কামরের দাগও পড়েছে। তার লালায় ভেজা বোঁটাজোড়া আলোয় চমকাচ্ছে। সে এবার উপরের ঠোঁট চেটে নীচেরটা কামড়ে ধরলো। এরপর তার গালে একটা কামড় দিয়ে পুনরায় বুক চাটতে লাগলো। এরপর নীচের দিকে নামতে লাগলো। তার ফর্সা ও ধবধবে পেটে হালকা চর্বি। সে তার সাদা চর্বিস্তর কামড়ে নীলচে লাল করে ফেলল আর গভীর নাভীতে নাক দিয়ে সুঁকে এরপর তা চাটতে আর জিভ দিয়ে চুষতে লাগলো। তার তলপেটে হালকা সরু লোমের স্তর দেখে তার উপর জিভ বোলালো বাদশাহ।

তার সামনে শাহরাজাদের নগ্ন সম্পদ। কচি যোনি। ধবধবে সাদার মাঝে হালকা কালচে অংশ। হালকা হালকা লোম। আঠালো রসে ভেজা। বাদশাহ জামা খুলে উলঙ্গ হলো, তার গর্বের বড় মোটা তামাটে পুরুসাঙ্গ ফস ফস করছে। বাদশাহ শাহরাজাদের যোনিতে মুখ দিলো। চেটে চুষে একাকার করলো। নির্দয়ের মতো কামড়াচ্ছে। কচি মেয়ের যোনির মিষ্টি গন্ধ তার উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিলো। বাদশাহ ওর খোলা মুখের সামনে তার পুরুসাঙ্গটি নিয়ে চোষার জন্য বলল। শাহরাজাদের গোলাপী টসটসে ঠোঁট আর উষ্ণ লালা ভেজা জিভের ছোঁয়ায় পুরুসাঙ্গটি আরও টন টনিয়ে উঠলো। এরপর শাহরাজাদের যোনিতে  পুরুসাঙ্গটির লালচে মুন্ডী ঘষতে লাগলো। ঘষে ঘষে এক পর্যায়ে তা জোরে ঢোকানোর চেষ্টা করতে লাগলো। প্রচন্ড টাইট যোনি। মুন্ডির অগ্র ভাগ ঢুকে আটকে গেলো। বাদশাহ জোরে ঠেলতে লাগলো শাহরাজাদের পিচ্ছিল যোনিতে তার পিচ্ছিল পুরুসাঙ্গটি। কিন্তু ঢুকছে না। এরপর আস্তে আস্তে পুরুসাঙ্গটি সম্পূর্নটা যোনির পর্দা ফেটে ঢুকে গেল। ব্যাথায় একটা অস্ফুট চিৎকার করে উঠল শাহরাজাদ। বাদশাহ তার পুরুসাঙ্গটি আস্তে আস্তে  ভেতর বাহির করে ঠাপাতে শুরু  করাতে শাহরাজাদেরও ভাল লাগতে লাগলো। এরপর অনবরত ঠাপের পর ঠাপ আর পাশাপাশি শাহরাজাদের বুকের উপর শুয়ে তার স্তন এর বোঁটায় জীব দিয়ে চুষে চুষে আদর করতে লাগলো। এক সময় তাদের এই ঝড় থামার পর দুজনেই ক্লান্ত হয়ে এলিয়ে পড়লো বিছানায় ।

কিছুক্ষণ বাদে জানোয়ারটার কবল থেকে দেহটা মুক্ত করে বোন দুনিয়াজাদের পাশে গিয়ে ধুঁকতে লাগলো শাহরাজাদ।  টুকরাে টুকরাে কথা আর ধস্তাধস্তিতে দুনিয়াজাদ-এর ঘুম ভেঙে গেল। দিদিকে জড়িয়ে ধরে বলল-“আজ তুমি আমায় কিস্সা শােনাবে না? শােনাও কিস্সা।

শাহরাজাদ হাঁপাতে হাঁপাতে বললেন—শােনাব বহিন। নিশ্চয়ই শােনাব।

রােজ রাতে তুমি যেমন কিসসা বলে ঘুম পাড়াও, তেমনি আজও বল। তােমার মুখের কিসসা কেবল আমি কেন, যেকোন মানুষই মুগ্ধ হয়ে শুনবে। বল, কিসসা বল, শুনি।

—’বহিন, রােজ রাত্রের সঙ্গে আজকের রাত্রের যে ফারাক। তবে অবশ্য, বাদশাহ যদি শুনতে আগ্রহী হন তবে অবশ্যই কিস্সা বলব।’

দু’ বােনের কথায় বাদশাহ শারিয়ার-এর কৌতূহল হল। বললেন—বেগম শােনাও তােমার কিস্সা। দেখি, তােমার কিসসা আমায় কেমন মুগ্ধ করতে পারে। কিন্তু খেয়াল থাকে যেন, সুবহ হবার আগে কিস্সা যেন খতম হয়।

Leave a Reply