সংশপ্তক – শহীদুল্লাহ কায়সার

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

……….নিঃশঙ্ক ঔদ্ধত্যে দাঁড়িয়ে আছে মেয়েটি যেমনটি প্রথমেই এসে দাঁড়িয়েছিল। ওসব হুমকি ধমক বুঝি বহু শোনা আছে তার, পরোয়া করে না সে। শুধু একবার ডান পা থেকে বাঁ পায়ে নিয়ে এল দেহের ভারটা। অবস্থান পরিবর্তনের আচমকা আলোড়নে ওর অন্তর্বাসহীন দুটি স্তন উত্তাল তরঙ্গের ফণার মতন মাথা তুলে কেঁপে কেঁপে আবার স্থির হয়ে যায়। ডান পায়ের উপর ভর রেখে ছেঁড়া আঁচলটাকে এবার খুব সেঁটে পিঠের এলোমেলো ছড়ানো চুলের উপর দিয়ে পেঁচিয়ে আনল মেয়েটি। তারপর গলার কাছটিতে দোপাট্টা করে বেঁধে নিল। আর সে বন্ধনে ওর ফালি-বাঁশ দেহটি নাভি অঞ্চল থেকে ঈষৎ বেঁকে এল ছিপের আগার মতো। পুষ্ট অথচ ধারালো দেহের ওই বঙ্কিম ভঙ্গিটিই যেন বিদ্রোহের প্রকাশ্য ঘোষণা।…………

 

……….শেষ রাতের বিশীর্ণ চাঁদটা চুপি দিয়ে যায় জানালার ফাঁকে। এক চিলতে ম্লান জ্যোৎস্না নিথর অবশতায় শুয়ে রয়েছে রিহানার খোলা বুকে। প্রকৃতির মতোই। নিরাবরণ শুভ্রতায় উদ্ধত রিহানার উদলা বুক।

আশ্চর্য। হঠাৎ বিস্ফোরণের তোলপাড় তুলে এখন কেমন অঘোরে ঘুমুচ্ছে রিহানা। আর কী ঠাণ্ডা ওর গাটা। ওর দিকে আর একটু সরে এল মালু।

আর একটু নিবিড়তায়, আর একটু ঘন হয়ে স্পর্শ করা যায় না রিহানাকে? রক্তে আদিমতার স্বাদ তুলে, দেহে আত্মায় লীন হয়ে ঠিক আগের কোনো রাত্রির মতো, চমৎকার একটি অনুভূতিকে রাঙিয়ে তোলা যায় না?

না।

কঠিন একটি ধাক্কা খেয়েই যেন ফিরে এল মালুর হাতখানি। গানের রাজ্যে সুরের পাখায় ভর করে উড়ে এসেছিল যে মেয়ে রিহানা, বুঝি এক রাতেই সরে গেছে অনেক দূরে। সেখানে গান নেই। প্রেম নেই।

আর একবার, আর একবার ওকে স্পর্শ করতে চাইল মালু। চাইল বুকের উষ্ণ তাপে, দুবাহুর নির্মম পেষণে ওকে ছিন্নভিন্ন করে দিতে। আশ্চর্য। মালু পারল না। মালুর হাত সরল না।……….

Leave a Reply