লাবিয়ার মাকড়ি – মলয় রায়চৌধুরী

›› গল্পের অংশ বিশেষ  

…..তারপর জজ সাহেব জানতে চেয়েছিলেন, নারীদের অপছন্দ করেন কেন?
যা সত্যি তাই বলেছিলুম আমি, পোশাক খুললেই ম্যানেক্যুইন বেরিয়ে পড়ার ভয়ে, মি লর্ড ; আর তাছাড়া, স্ত্রীলোকদের গোপনাঙ্গকে বড়ো গ্রটেস্ক স্থাপত্যের ব্যাপার মনে হয় । শোবার ঘরের চারটে দেয়ালে যদি আয়না লাগানো থাকে তাহলে প্রেমকর্মকে কি হাস্যকর মনে হবে না ? বলুন আপনি !….

….আমি সত্যি কথাটাই বলেছিলুম ওনাদের যে, ধোয়া সত্য, লালচে তুলসী পাতায়, নতুন ঝকঝকে মোটর সাইকেল দেখলে আমার লিঙ্গোথ্থান হয়, কিন্তু কোনো যুবতী আমাকে জড়িয়ে চুমুখেলেও আমার দেহে কোনো প্রতিক্রিয়া হয় না ; মনে হয় পাঁঠার মাংসের কার্টিলেজ চুষছি, আমি মেয়েদের স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে সিটি বাজাইনি কখনও, শোরুমের সামনে দাঁড়িয়ে নতুন মোটর সাইকেলের দিকে ঠায় তাকিয়ে হুইসল দিয়ে গান করি ।…..

….একথা ঠিক যে মোটর সাইকেলেও ছিদ্র থাকে যার ভিতরে পেটরল নামের ধাতুরস ফেললে তা উত্তেজিত হয়, এবং কেবল সেকারণেই তাকে নারীছিদ্রের সঙ্গে তুলনা করা যায় না । নারীছিদ্রে পৌরুষের পেট্রল ফেললেই যে তা উত্তেজিত হয়ে উঠবে, তার প্রমাণ নেই । পুরুষ হলেই যে তার পৌরুষ থাকবে তা অকাট্য নয় । …..

….. খুনিকে বউ বলব না তরুণী না যুবতী না মহিলা বুঝতে পারতুম না, কেননা বুক দেখে না পাছা দেখে না কোমর দেখে না মাথার চুল দেখে কেমন করে যে ঠাহর করতে হয় তা তখন জানতাম না,…..

….যখন আমরা ফুটপাথে বসা আরম্ভ করলুম, ছোঁয়াছুঁয়ির দূরত্ব কমে এলো, মেয়েটি বললে, ঠিক আছে, আমি তোমাকে ৬১৪ বলে ডাকবো আর তুমি আমাকে ৩৯০ বলে ডেকো, যেমনটা আমাদের কেস নম্বর । প্রস্তাবে সঙ্গে-সঙ্গে ঘাড় নাড়িয়ে সায় দিয়েছিলুম মনে আছে, আমার দরকচা বয়সে নম্বরদার খুনি বন্ধুনী পাওয়া চোদ্দোপুরুষের ভাগ্য, তাও এরকম চুলবুলে তরতাজা স্তন ফোলানো, খোঁপা নামানো, পিঠে বাংলা আঁচল-ফেলা মেয়ে, কোনো কোনো দিন ডেনিম জিনসে, পায়ে রঙিন কেডস, হাতে প্লাসটিকের বালা । খুনি মেয়ের স্টাইল স্টেটমেন্ট বেশ ভালো লাগত, দিল খুশ করে দিত ।…..

…..অর্ধেক ফাঁকা জায়গায় শাদা শর্টস আর লাল টিশার্ট স্পোর্টশ শু, যুবক বসল, ইউ ডি কোলোনিত একহাতি গামছা পকেট থেকে বের করে মুখ মুছে, তাকালো আগে থাকতে বসে থাকা যুবতীর দিকে, যুবতীর পাছার দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে চাইছিল যুবক, তার আগেই যুবকের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে যুবতী কথা বলা আরম্ভ করল, এমন ঢঙে যেন মৃত্যুর উনি মালকিন ।
এই বোকাচোদার মরণ, জানিস না যে মেয়েদের দিকে একনাগাড়ে তাকানো অশ্লীল, তাকে দখল করে যৌনতায় কয়েদ করার ইচ্ছে…তখন থেকে দেখছি…কুমিরের কুতকুতে চোখ মেলে স্টকিং করছিস…আর মেয়েমানুষ পাসনি…যা না…ওই তো অতো কচি কচি মেয়েরা মাই দুলিয়ে পোঁদ নাচিয়ে জগিং করছে…ওদের পেছন পেছন গিয়ে দৌড়োতে পারিস না বানচোদের মরণ…আমার পাশে এসে বসার কি দরকার…আমার চোখ দুটো বড়ো আমার ঠোঁট বেশ পাতলা… আমার স্কিন বেশ ঝকমকে…আমার মাই দুটো হইচই মার্কা…এইসব এক ফাঁকে বলবি বলেই তো পেছু নিয়েছিস…নাকি…আর ইউ ডেফ…ইউ মরণের মাদারফাকার…হোয়াই ডোন্ট ইউ স্টপ স্টকিং…এছাড়া… আর কোনো কারণ আছে তো বল…শুতে চাস এক্ষুনি…নাকি…রাস্তায় চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ি আর তুই চাপ আমার ওপর…আমি শাড়ি তুলে ধরি আর তুই তোর কম্মো করে কেটে পড়…এই চাইছিস তো…কি রে… মুখে কথা সরছে না যে…রাসকেলের মরণ…হাঁ করে তাকিয়ে আছিস…মাই টিপবি…চল তাহলে পার্কের ঘাসে গিয়ে বসি…ছাতা-টাতা এনেছিস…আড়াল করার জন্য…যত্তো বোকাচোদাগুলো আমার পেছনেই লাগে…ক্ষমতার কেন্দ্রে জরায়ু থাকবেই…
যুবক নিঃশব্দে নিজেকে কানে কানে বলল, একজন মেয়ের সঙ্গে প্রথমবার শোবার কথা ভাবলেই বুক ধড়ফড় করে ; সাজগোজ করে সময় নষ্ট করার মানে হয় না, সেই তো চটচটে ঘাম, যতো সব আঠালো ক্লান্তি, জখমের খোসা, প্রথমবার পাতপাড়ার মতন বসে হলে সবদিক থেকে ভালো । কিন্তু মানতে হবে, এই মেয়েটা শ্রোতার সন্মানহানির কায়দা আলজিভে রপ্ত করে ফেলেছে ।…..

…..যুবতী : তা সে তুমি যতই নায়কের মতন হাবভাব করো…চলো…চলো…যাও…যাও…কী ভাবছ…আমি ভার্জিন কিনা…হ্যাঁ…আমি ভার্জিন…কারোর সঙ্গে শুইনি…আগে ম্যাস্টারবেট করতুম… এখন অটোমেটিক অরগ্যাজমের টেকনিক রপ্ত করে ফেলেছি…লাবিয়ায় মুক্তো লাগানো একটা মাকড়ি লাগিয়ে নিয়েছি…এই যে দুই কানে যেমন দেখছিস, তেমনই…সেই মাকড়িটা….পার্কে এক পাক হাঁটলেই…বুঝেছিস তো…কিছুক্ষণের ঘষটানিতে আপনা থেকেই অরগ্যাজম হতে থাকে…সেটাই এনজয় করি পার্কের বেঞ্চে বসে…কোনো মরণের কুত্তাপুরুষের দরকার হয় না…হাঃ হাঃ…কি বুঝলি…মাকড়ি তো…দুই কুঁচকিতে উল্কিও করিয়েছি…প্রজাপতি উড়ছে…উল্কি জানিস তো…ট্যাটু…অরগ্যাজমে উড়তে থাকে প্রজাপতি দুটো…বুঝলি…কি হাঁ করে তাকিয়ে আছেন যে…বিশ্বাস হচ্ছে না…ভাবছিস কে কে আছে আমার যে এই সব মজা নিই লাইফের…আছে রে দু দুটো বাপ…একজন অন্ধ…পিটুনির চোটে অন্ধ হয়ে গেছে…আরেকজন অ্যালঝিমার রুগি…ভাবছিস মাটা কমনে আছে…সে বেটি পালিয়েছিল আরেকজন কচি কচকচের সঙ্গে…ছোঁড়াগুলোর টেস্টও বলিহারি…টিভিতে মাকে দেখে প্রেম করে বসল এক ছোঁড়া…মা তার সঙ্গে লিভ-টুগেদার বেঁধেছে…টিভির গল্পটাকেই নিজের জীবনে অ্যাডপ্ট করে নিয়েছে…তুই এখনও তাকিয়ে আছিস যে…কুঁচকির প্রজাপতি দেখতে চাইছিস নাকি…তাহলে তোকে বলি যে আমার বুকের খাঁজে কাঁকড়ার উল্কি আছে…তোরা তো হাজার হাজার বছর আগে গুহায় যেমন থাকতিস এখনও তেমনই আছিস…তুই কি ভাবছিস আমি কারোর সঙ্গে শুতে চাই না…চাই…চাই…চাই…স্ট্যালিনের সঙ্গে শুতে চাই…মাওয়ের সঙ্গে শুতে চাই…হিটলারের সঙ্গে শুতে চাই…সিরাজউদ্দৌলার সঙ্গে শুতে চাই…লর্ড ক্লাইভের সঙ্গে শুতে চাই…আর এন ট্যাগোরের সঙ্গে শুতে চাই…রামকিঙ্কর বেইজের সাথে শুতে চাই…এক এক রাতে এক এক স্বপ্নে শুতে চাই…ফর মি লাভ ইজ ইনসারেকশান…স্টকিং হল প্রতিবিপ্লব…….

…. হাঁটতে বেরিয়ে এই পার্কে কেবল বুড়িদেরই শাড়িতে দেখেছে যুবক, বা চুড়িদার পরে আসতে । যুবতীরা টপ আর ডেনিম জিন্স, কানে গান, অনেকে ব্রেজিয়ারহীন, মাই থলথলে, কুছ পরোয়া নেই গর্ব । এই যুবতীকে জগিং করতে দেখেনি যুবক, হাত দুলিয়ে হাঁটে, স্রেফ এক পাক, মানে আধ কিলোমিটার , তারপর গিয়ে ওই নির্দিষ্ট সিমেন্টের সিটে । ….

…..স্পিড নিয়ে এঁকে বেঁকে মেয়েটাকে ফেলে দেবার কথা মনে এসেছিল যুবকের, তখনই যুবতী আবার দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরল যুবককে, নিজের বুক যুবকের পিঠে চেপে ধরে । ডান হাত এগিয়ে যুবকের কুঁচকিতে রেখে মেয়েটি বলল, কেমন যুবক আপনি, হার্ড ডিক এক সেকেন্ডেই সফ্ট চিক হয়ে যায়, বাঁ হাতে পুরিয়া খুলে নিজের ঠোঁটে মাখিয়ে যুবতী বলল, এদিক ফের, এদিক ফের, তোকে একটা চুমু খাই । ….

…..লাবিয়ার মাকড়িটা আমি নিজে হাতে খুলে দেবো, তোমাকে খুলতে তো হবেই, স্যানিটারি ন্যাপকিন বাঁধার জন্য । সেই সুযোগে প্রজাপতি দুটোকেও দেখে নেবো, আমি অমন প্রজাপতি জীবনে দেখিনি, লাবিয়ার মাকড়িও জীবনে দেখেনি, পুরুষ্টু লাবিয়ার ঠোঁটই দেখিনি তো তার মাকড়ি আর কোথ্থেকে দেখবো। ব্যাস, মাকড়ি খুলব, আর কোনো আগ্রহ নেই, বলেছি তো আপনাকে, মেয়েদের চেয়ে নতুন মোটর সাইকেলের বডি আমাকে বেশি টানে, কতো মসৃণ হয় মোটর সাইকেলের ত্বক ।…..

…..যুবক : বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যে কথা বলে চলেছি…মিথ্যে কথা বলার একটা আনন্দ আছে…দশকর্মের জিনিসপত্তর বেচতে গিয়ে এইটাই সবচেয়ে জরুরি অভিজ্ঞতা….প্রেমের কথা আউড়ে সময় নষ্ট করা উচিত নয়…মরার জন্যে আর সেক্স করার জন্যে ভালো নরম বিছানা খুবই দরকার…সেক্স বাইরে বেরোয়…প্রেম ভেতরে ঢোকে…দুটো উলঙ্গ দেহের মিশ খাওয়া জরুরি…দীর্ঘ জীবনের জন্যে…এর আগে সব বানিয়ে বলেছি…বাপি আঙ্কল…ড্যাডি আঙ্কল…দীর্ঘক্ষণ ধরে চুমুখাওয়া অত্যন্ত কষ্টকর…প্রেমেও মাঝে মাঝে গ্যাপ দিতে হয়…সেক্স হল দুটো উলঙ্গ শরীরের সবচেয়ে উচ্চাঙ্গের নাচ…কোনো মিউজিকের দরকার নেই…শরীরই সঙ্গীত……..

….. এতক্ষণ ধরে নেশার ঘোরে আছি ? তোমার স্ল্যাক্সের তলায় লনজারি নেই তো ? থাকলে অসুবিধা হবে কি ? জিগ্যেস করল যুবতীকে । তারপর যোগ করল, আচ্ছা, সারাদিন জানলায় বসে শাহ জাহান কী করতেন, শুধু একটা দেহই কি ভেসে উঠত ওনার চোখে ? আরও যাদের সঙ্গে শুতেন, তাদের মাংসের স্মৃতি কি কিছুই ছিল না ? তাদের বুকের মাপ, মাইয়ের বোঁটা, উরুর তাপ, চুলের মুঠি, বগলের গন্ধ, ফোরপ্লের অরগ্যাজম, মনে পড়ত না ? তাদের দুই পা কি জাহাঁপনার কাঁধে উঠে গহ্বহের নিশিডাক দিত না ?…..

…..—কিন্তু লাবিয়ার মাকড়ি খুলিনি যে এখনও ? তোমাকে ফেলে পালাতে পারব না ।
যুবতী তাড়াতাড়ি নিজের পোশাক খুলে মেঝেয় ফেলে দিল ।
যুবক বেশ কাছ থেকে তারিয়ে দেখে নিয়ে মাকড়িটা খুলল, খুলেই, মাকড়িতে চুমু খেল, মাকড়ির জায়গাতেও জিভ বুলিয়ে বলল, স্বর্গ যদি থাকে তা এইখানে, নরক যদি থাকে তা এইখানে ।
যুবতী বলল, যথেষ্ট কাব্যি হয়েছে, পরে ওসব নাটুকেপনার অনেক সময় পাবে, এখন যা করা জরুরি, তা-ই করো ।
যুবক দাঁড়িয়ে জড়িয়ে ধরে বলল, লাবিয়ার মাকড়িই ছিল তোমার তিন বাপের বীশ্ববীক্ষা, বাস্তবের ব্যাখ্যা । এখন এই নাও, রেখে নাও মাকড়ি, পরে দরকার হতে পারে ।…..