রাধারমণ – অভিজিৎ চৌধুরী

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  ›› পৌরাণিক কাহিনী  

…..শোকাতুরা রমণীরা এমনকী শতপুত্রহারা সাধ্বী নারী গান্ধারীও যখন বিলাপে আকুল, কৃষ্ণ শোকক্ষেত্র থেকে দূরে দাঁড়িয়ে মেসেজ বক্স খুলে দেখে নিয়েছিলেন বার্তা, ‘তুমি কেমন আছ? আমাকে কি ভুলে গেছ?’ বার্তা প্রেরণকারিণী একদা প্রেমিকা রাধিকা। যার স্তনদ্বয়ের নিন্মতল কৃষ্ণের বড় প্রিয়সুখের ছিল। অভিমানবশত প্রেমিকার কোনো ঠিকানার উল্লেখ ছিল না। বিচলিত হয়ে উঠেছিল চিরপ্রেমিক কৃষ্ণের হৃদয়। তিনি এখনও রমণীমোহন। বহু গোপিনীর সঙ্গসুখ তখনও তাঁর স্মৃতি থেকে অপসৃত হয়নি।…..

…..কালের বিপরীত গতি দেখে কৃষ্ণ নিজেও নিশ্চিত যে, যাদবদের বিনাশ এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। তিনিও যেন সেই নারীকে প্রত্যহ প্রত্যক্ষ করেছেন যাঁর নাম মৃত্যু। তাঁর কেষ্ঠীতে রয়েছে, ভূমিতে যখন তিনি শয়ন করবেন, তখন জরা নামক এক ব্যাধ তাঁকে বাণে বিদ্ধ করবে। ঈশান কোণের দিকে যাত্রা করতে ইচ্ছে হয় তাঁর। সেখানেই তো বঙ্গদেশ– রাধার। দেশ। দীর্ঘাঙ্গী, আয়তনয়না রাধা। নিতম্ব কিঞ্চিৎ ভারী হলেও অসাধারণ বক্ষদেশ। সুলভিত বঙ্গভাষা। কোকিলের ধ্বনির মতোই মিষ্টতা। সেই দেশের মেয়েদের ভঙ্গি অসাধারণ। রন্ধন-কুশলাও তারা। মৎস্য, মাংস অতি উত্তম রান্না করে তারা। আজীবন নিরামিষ আহার গ্রহণকারী বাসুদেব গোপন অভিসার কালে সেই সুস্বাদু আমিষ আহারও গ্রহণ করেছেন। খুব শ্যামলিমা সেখানকার প্রান্তরে। বায়ু সুখদায়ক, ভূমিও নদীমাতৃক । সৌপ্তিকপর্বের অন্তিমে রাধার এসএমএস সত্যিই তাঁকে আন্দোলিত করেছিল, তিনি উদবেল হয়ে উঠেছিলেন। মহাভারতের মহাক্ষয়ে তিনিও নিমিত্তমাত্র। গান্ধারী বিশ্বাস করেননি তাঁর এই কপটতা। যুদ্ধ প্রত্যক্ষ করার অভিলাষ কৃষ্ণের ছিল। তিনি আত্মগর্বী হনন-উন্মুখ দুই প্রধান গোষ্ঠীকে সত্যিকারের নিরস্ত্র করার চেষ্টা করেননি। সকল জনমানসে তিনি ভাবগ্রাহী জনার্দন কিন্তু নিজের মনের লক্ষ্যদেশ তাঁর নিয়ন্ত্রণের অধীনে নেই। অন্ত্যজ প্রজাদের প্রতিনিধি তিনি, তাই প্রকৃত পাকল। প্রেমিক যাবতীয় ভূমিকাকে অগ্রাহ্য করে নির্বাচন করেছিলেন ব্যক্তিগত উত্থান। সেই। উচ্চাভিলাষ রাষ্ট্রকে বিপন্ন করেছে। তিনিও আর যাদবকুলের নয়নের মণি নন। অনুগত সংশপ্তক বাহিনীর সংহারও তাঁর প্ররোচনায় হয়েছে। রাজ্য পুরুষশূন্য। তিনিও বর্তমানে যৌনমিলনে অপারঙ্গম।…..

……শ্রীরাধা রতিক্রিয়ার হৃদয়ে যে-আনন্দের রেশ উৎপন্ন হয় সেখান থেকে বললেন, ‘হে যদুনন্ধন! চন্দনাপেক্ষাও সুশীতল তোমার করদ্বারা মদনের মঙ্গলকাসতুল্য আমার এই পয়োধরে মৃগনাভি পত্রলেখা অঙ্কিত করো।’ স্বাধীনভর্তৃকা রাধা। তিনি সব দূরত্ব আড়াল করে কৃষ্ণের কোলে এসে বসেছেন। যমুনায় নৌকাবিহার চলেছে। মাঝি ক্রুদ্ধ, সে তো আর যদুনন্দনকে চেনে না। বইঠা হাতে নিয়ে সে অন্য দিকে তাকিয়ে রয়েছে। চুম্বনে চুম্বনে রাধার চোখের কাজল মুছে গেছে। ভ্রমরসাদৃশ অবস্থা চূর্ণকুন্তলের। এবার সরস সুন্দর জঙ্ঘাদেশে কৃষ্ণের হাত খেলা করছে। রতি উন্মুখ রাধার জঙ্ঘাদেশে যে ঘর্ম রয়েছে তা তিনি জিহ্বা দিয়ে লেহন করছেন। আরও আরও শিউরে উঠেছে রাধা। একসময় মনে হয়েছিল, কথিত সময় তো অতিক্রান্ত হল, কই তিনি তো এলেন না। সখিগণ বোধ হয় বঞ্চনাই করেছে। কৃষ্ণের কাছে কোনো সংবাদই পৌঁছোয়নি। আসলে তখন তো চলভাষ ছিল না। ক্ষণে ক্ষণে তাঁর অদর্শনে মনে হত ‘মম বিফলমিদমমলমপি রুপযৌবনম’। সখী কলহান্তরিতা এসে বলেছিল, ‘রাতিসুখসারেগতমভিসারে মদনমনোহরবেশম্’। হে সখী, তোমার হৃদয়েশ্বর মদনমনোহর বেশে রতিসুখসারভূত অভিসারে গমন করেছেন। নিতম্বিনী তুমি গমনে বিলম্ব কোরো না। পীনপায়োধর-পরিসর মর্দন চঞ্চল করযুগশালী। তোমার পীনপয়োধর পরিসর মর্দনের জন্য তাঁর করযুগল চঞ্চল হয়ে উঠেছে। সখী খন্ডিতা যোগ করল আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ‘ধীরসমীরে যমুনাতীরে বসতি বনে বনমালী।’ ধীর সমীর সেবিত যমুনাতীরে সেই বনমালী বনান্তে অপেক্ষা করছে। রাধার তখনই মনে হয়েছিল তোমার অভিসারে যাব অগম পারে। তাঁর হাড়-মজ্জার ভেতর দিয়ে বাজতে থাকত সেই আহ্বান। ……

…..খুব ভোরে প্রতিটি বারাঙ্গনা পল্লিতেই এক ধরনের পবিত্র আলো এসে পড়ে। কৃষ্ণের প্রতিনায়িকার নাম চন্দ্রাবলী। গোপনে তার কুঞ্জে বহু রাত অতিক্রান্ত করেছেন কৃষ্ণ। রাধার উদবিগ্ন এসএমএস-এর কারণে একটা পালটা উদ্‌বেগ কৃষ্ণের মন জুড়ে রয়েছে। চন্দ্রাবলী ছিল খন্ডিত। ওর গৃহে রাত্রি যাপন করেন বলে রাধার প্রবল অভিমান হত। কৃষ্ণেরও গত রজনির জাগরণের কারণে লোহিত চক্ষু আলস্যে নিমীলিত থাকত। সেইসব পূর্বকথা।…..

…..সেই মৃত্যুদীর্ণ গহন অন্ধকারের স্তর থেকে কৃষ্ণের চিন্তায় আবার উঠে আসছেন শ্রীরাধিকা। প্রথম মিলনে যথেষ্ট ভীত ও সন্ত্রস্ত ছিল সে। কৃষ্ণ তাকে সম্পূর্ণ নগ্ন করলেন। হয়তো তিনি স্বয়ং অবলোকন করলেন সৃষ্টির রহস্যের পরিপূর্ণতাকে। রাধিকার গায়ের রং ছিল তাম্রাভ, একটু কালোর দিকেই। শরীর সর্বদাই উত্তপ্ত থাকত। স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সৌন্দর্যচর্চায় তার কখনো কোনো রকমের অলসতা ছিল না। রাতের পর রাত আয়ান। ঘোষের পুরুষাঙ্গটির শিথিলতা না কাটলেও রাধিকা যৌনাঙ্গের কেশগুলি সযত্নে কর্তন করে রাখত। মাথার কেশরাশিতে দীর্ঘদিনের সুগন্ধিতেলের ব্যাবহারে কিঞ্চিৎ কুঞ্চন ও বাহার এসেছিল। স্তন দুটি ভরন্ত এবং নিতম্ব অত্যন্ত আকর্ষণের। ওর শরীরের সবচেয়ে কামার্ত অংশ ছিল পা দুটো। চোখের পাতা দুটো ঘন কৃষ্ণবর্ণের, আয়তনয়না এবং নাসিকা দীর্ঘ। ঠোঁট অপেক্ষাকৃত ভুল, এটি শরীরের একমাত্র অনুজ্জ্বল অংশ যদিও রক্তিম। দন্তরাশি উজ্জ্বল শ্বেতবর্ণের, রতিক্রিয়ায় অসম্ভব পারঙ্গমা। অপাঙ্গ দৃষ্টিতে বুদ্ধির তীক্ষ্ণতা, আবেগের অভিনয় নিখুঁত। অক্ষিদ্বয় থেকে নির্গত অশ্রুবারি স্ফটিকের মতোই স্বচ্ছ এবং বিশ্বাসযোগ্য। নীলাম্বরি শাড়িই ছিল শ্রীরাধিকার প্রিয়। দু-পায়ে রাঙিয়ে থাকত আলতা।…..

……ব্যাসদেব এখন রয়েছেন লৌহিত্য নদের তীরে। এই নদের বৃত্তান্ত রয়েছে কালিকাপুরাণে। ব্রহ্মা একবার পৃথিবী প্রদক্ষিণে বেরিয়ে মহর্ষি শান্তনুর আশ্রমে এসে উপস্থিত হলেন। শান্তনুর স্ত্রী ছিলেন অসম্ভব সুন্দরী। ওকে দেখে একেবারে মোহিত হয়ে গেলেন ব্রহ্ম। শান্তনু অনুপস্থিত জেনে এমন নির্জন পরিবেশে আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারলেন না। কামনা করে বসলেন অমোঘাকে। স্বাভাবিকভাবেই এই অশালীন আচরণে অসন্তুষ্ট হলেন অমোঘা। ওঁর রুদ্রমূর্তি দেখে ব্রহ্মা আর কাছে যাওয়ার সাহস পেলেন না। তবে যাওয়ার আগে আত্মনিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে স্খলন করে গেলেন তার বীর্য দ্বারপ্রান্তে। শান্তনু ফিরে এসে সবটা জানতে পেরে অসন্তুষ্ট হলেন। ব্রহ্মাকে তৃপ্ত করাই ছিল সনাতন ধর্ম। অমোঘা তখন ব্রহ্মার বীর্য ধারণ করে গর্ভবতী হলেন। জলপিণ্ডবৎ এক পুত্রের জন্ম হল। ……

…..শয্যায় সেদিন ছিল শুক্লপক্ষের চাঁদের আলো। রাধার আয়তপক্ষ্ম নিমীলিত। চোখের তলায় কালি। অনাবৃত বাহুতে চোখের জলই বোধ হয় লেগেছিল। কৃষ্ণ ঘোষণা করেছিলেন শ্রীরাধিকাকে বিবাহ করা তাঁর সম্ভব নয়। আয়ান ঘোষ তো নপুংসক ছিলেন। ওর বীর্য সন্তানক্ষম ছিল। কিন্তু কৃষ্ণের বীর্যে রাধার গর্ভে সন্তান আসা তো স্বাভাবিক। কী পরিচয় হবে ওর? এইরকমই সংশয়ে দীর্ণ ছিল রাধা। এই প্রাণের জন্ম দেওয়া সম্ভব নয়। প্রয়োজন হলে দক্ষ বৈদ্যকে ডেকে আনতে হবে। গর্ভপাত ঘটাতে হবে রাধার। কৃষ্ণ অবশ্য রাধাকে আশ্বস্ত করেছেন, এই অবৈধ। প্রেমই শাশ্বত হবে। আহত হবে কাল। রাধাকৃষ্ণ প্রেমলীলা জগতে অক্ষয় হয়ে থাকবে এই তাঁর অভীপ্সা। সুচতুর ক্ষমতাবান কৃষ্ণ যা খুশি করতে পারেন। মুহূর্তে আত্মস্বার্থে হত্যা করতেও তিনি নিবৃত্ত হবেন না। অবশেষে চোখের জলে সম্মত হয়েছিলেন রাধা। সেই অশ্রুজলের দাগ বাহুতে লেগে ছিল।…..কেশব, আপনি কি জানেন পুরুষেরা অধিকাংশ নিবীর্য? আপনার সখা পার্থ, সেও এই রোগের শিকার। রতিক্রিয়ায় পারঙ্গমা নারীরা উদ্দীপ্ত পুরুষের অপেক্ষা করতে করতে এখন উন্মাদিনী। দম্পতিদের রাত্রির শয্যা শান্ত। সঙ্গমে অশক্ত পুরুষ কেবলমাত্র ভর্ৎসনা করে নারীকে। সন্দেহ আর ভর্ৎসনা থেকেও এক ধরনের সুখ জন্মায়। গৃহে গৃহে এখন। সেই করুণাহীন সুখ।……

…..বিশেষ করে উজ্জ্বলতা প্রকাশ পাচ্ছিল কৃষ্ণপুত্র শাম্বের মধ্যে। তিনি রূপবান। ছিলেন এবং দিবসের অধিকাংশ সময়ে নারীদের সঙ্গে বিবিধ আমোদ প্রমোদে ব্যস্ত থাকতেন। মাতৃস্থানীয় কৃষ্ণের প্রিয় গোপিনীরাও তার বিভিন্ন আকার-ইঙ্গিতপূর্ণ সম্ভাষণ থেকে রক্ষা পেত না। মহর্ষি নারদের আগমনেও তাঁর এই হীন রুচির সাময়িক পরিবর্তন ঘটল না।…..রাজ্যে বারাঙ্গনাপল্লির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াতে গৃহে যেমন সঙ্গমের আকর্ষণ নেই তেমনি বিপ্রতীপভাবেই রতিক্রিয়া পারঙ্গমাদের পণ্যগৃহে অপুষ্ট অসফল বীর্যপাতে প্রেমের বদলে শারীরিক ক্ষুধা নিবৃত্তির ব্যাপক আয়োজন বৃদ্ধি পেয়েছে। যুবকদের মধ্যে শ্রদ্ধার বর্ষণ নেই। এ যেন বৃঞি, অন্ধক ও ভোজবংশীয়দের সমূহ সংহারকাল উপস্থিত।……

…..রাত্রিকালে বহুকাল পর সত্যভামা নগ্ন করলেন নিজেকে। ওঁর পৃষ্ঠপ্রদেশে কৃষ্ণ যখন আদরপূর্বক জিহ্বা লেহন করছেন, কামতাপিত সত্যভামা হঠাৎ উন্মত্তা ব্যাঘ্রীর মতোই কৃষ্ণকে আক্রমণ করলেন বাক্যবাণে।
–কী হয়েছে তোমার, স্বামী? নিজের পুত্রকেও ভয় পেলে?
–শাম্ব সীমা অতিক্রম করেছিল।
-কীসের সীমা?
–শালীনতার।
–গোপিনীদের বস্ত্রহরণ করে তুমি একদা এর চেয়েও গুরুতর অশ্লীলতায় অভিযুক্ত ছিলে।
–গোপিনীরা সকলেই আমার ভক্ত। তারা ত্রিসন্ধ্যা আমার নাম জপ করতেন।
–তাই তুমি ওদের বিবস্ত্র করেছিলে, এ কি কোনো ঈশ্বরের কর্ম?
–আমারই প্রেমলীলার রূপ।
–আর রাধা? চমকে উঠলেন কৃষ্ণ। আবার প্রশ্ন করলেন সত্যভামা, তোমার অমর প্রেমকাহিনির সঙ্গিনী?…..

……শাম্বের মাতা জাম্ববতীর মুখোমুখি এখনও হননি কৃষ্ণ। শাম্বের স্ত্রী লক্ষ্মণাও নিশ্চয় তাঁকেই শাপশাপান্ত করছে। অভিশাপ অমোঘ। প্রেমের মতো তার থেকেও মুক্তি নেই মানুষের। হায় পুত্র শাম্ব, কৃষ্ণের চিন্তা আবার ধাবিত হল সেই দিকে। জাম্ববতী, সত্যভামা ও রুক্মিণী ব্যতিরেকে তার অগণিত রক্ষিতারাও সেইদিন ভৎসিত হয়েছিল। রমণীদের তিনি জলক্রীড়ায় আমোদিত করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সহবাসের ক্ষমতা তো তিনি প্রায় হারিয়ে ফেলেছেন। শাম্বের অনিন্দ্যসুন্দর রূপ তাদের অনেকের মধ্যেই গোপন অভিসার আকাঙ্ক্ষার জন্ম দিয়েছিল। অতি প্রেমোচ্ছ্বাস প্রকাশের কারণে ওদেরও শাস্তি দিয়েছেন তিনি। ষোলো সহস্র রমণীকে উপভোগ করার অপারগতা তাঁকে অভ্যন্তরে যন্ত্রণায় ক্লিষ্ট করে তুলেছে।…..

…..এখানকার প্রতিটি গৃহই অপ্রশস্ত। অঞ্চলটিও জনপদ থেকে বহুদূরে। গৃহগুলিতে প্রদীপশিখার রং থাকে সামান্য লালাভ। নারীটি ঘোর কৃষ্ণবর্ণা। স্বাস্থ্য মধ্যম। আলুলায়িত কেশ। অশ্বারোহী যুবা বীটকে কয়েকটি রৌপ্যমুদ্রা হাতে দিয়ে চলে যেতে বলল। বীট চলে গেলে গৃহের একমাত্র ক্ষুদ্র বাতায়নটি বন্ধ করা হল। ইতিমধ্যে নারীটি ফুলের গয়নায় সেজে এসেছে। অনাবৃত স্তন, উরু থেকে পুষ্পগন্ধ উঠে আসছে। সে কাছে এসে যুবাপুরুষটিকে কঠিন আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে। অদ্ভুতভাবে গণিকাটির আঁখিতারায় নিমীলিতভাব এবং ওষ্ঠাধর রসসিক্ত হয়ে উঠল ও দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে স্তনদ্বয়ের পেষণে সে বেশ সুখানুভূতি প্রকাশ করল।

সচরাচর ক্রেতাদের রতিক্রিয়ার পর বেশ শীত করে। দীর্ঘকেশ রাখতে হয় যাতে খদ্দের আকর্ষণ করে সামান্য প্রহার করতে করতে শয্যায় নিয়ে ফেলে। এখানে শৃঙ্গার আসলে ধর্ষণেরই নামান্তর। কিন্তু আজ এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা হল। যিনি এসেছিলেন তিনি যেন নিজে তৃপ্ত হতে আসেননি, সামান্য গণিকাকে তৃপ্ত করতেই আসা। রাজপুরুষ তো হবেনই যত ছদ্মবেশ ধারণ করে থাকুন-না কেন। কয়েকটি স্বর্ণমুদ্রাও রেখে গেছেন। একটি কথাও বলেননি। বৃন্দাবনের গোপিনীদের মতোই নিজেকে মনে হচ্ছে। যাবতীয় পাপের মুক্তি ঘটল যেন আজ।…..

……মানুষের শ্রেষ্ঠত্ববাচক এই শব্দগুলি যিনি উচ্চারণ করেন, তাঁর নাম কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস। এ জগতে মানুষের চেয়ে শ্রেষ্ঠতর কিছু নেই। সেই কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাসের সাক্ষাৎপ্রার্থী হতে চলেছেন রাধারমণ কৃষ্ণ। যোগপ্রভাবে ঘন নীহার সৃষ্টি করে মহর্ষি পরাশর মিলিত হলেন মৎস্যগন্ধা সত্যবতীর সঙ্গে। মহাঋষির ক্ষণিক ইচ্ছায় এবং ক্ষণিক মিলনে অচিরেই সত্যবতীর সদ্যোগৰ্ভ প্রকাশিত হয়েছিল। ……

…..শস্ত্রহীন, লগ্ন, অপবর্গ আবেগে মুহ্যমান কিন্তু পরম শক্তিমান রাধারমণ রাধার শরীর-অরণ্যে মৃগয়াযাত্রা শুরু করলেন। ক্রমাগত দংশনক্ষতে ছিন্নভিন্ন করছেন রাধাকে। রাধার চক্ষুদ্বয় আবেগে নিমীলিত, দেহ কামাক্রান্ত। উত্তালভাবে শায়িত রাধা ওর ডান পা বাম উরুর মূলে স্থাপন করল। বিপরীতক্রমে বাম পা ডান উরুর উপর স্থাপন করে তার পদ্মযোনি উন্মুক্ত করল। এভাবে শৃঙ্খলিত রাধার চরণে চুম্বন করে কৃষ্ণ ওর যোনিমধ্যে উদ্যত তরবারিসদৃশ লিঙ্গ প্রবেশ করালেন। বার বার লিঙ্গ আঘাতে রাধাও ক্রমশ উন্মাদিনী হয়ে উঠল। সঙ্গমসুখের যন্ত্রণায় সেও তখন মুহ্যমানা প্রায়। এইভাবে এক বার মিলনের পরও রাধারমণ ক্লান্ত হলেন না। আবার নতুন করে শুরু হল স্তনদ্বয়ের মর্দন। চুম্বনপর্বে রাধার ওষ্ঠ প্রেমিকের দন্তস্ফুটনে রক্তাক্ত হয়ে ওঠে। যন্ত্রণায় শিউরে ওঠে রাধা। এক আবরণহীন লজ্জার প্রকাশ ঘটে। একটু কপট কোপ প্রকাশ করেন কৃষ্ণ। রাধা তখন কৃষ্ণের সুরতক্রিয়ায় অলীক হয়ে ওঠা মুখমন্ডল বক্ষমধ্যে স্থাপন করে। আত্মা ও শক্তির নিতান্ত আবরণ উন্মুক্ত করে পুরুষশ্রেষ্ঠ রাধারমণ লিঙ্গ ও যোনি সংবদ্ধ রেখে রাধার কটিদেশে মৃদু অঙ্গুলি সঞ্চালন অব্যাহত রাখেন। তাঁর বীর্যরস লিঙ্গশীর্ষে এসে স্তব্ধ হয়ে যায় মুহূর্ত, পল অতিবাহিত হয় কিন্তু নিসৃত হয় না। লিঙ্গ-যোনি যুক্ত অবস্থায় তিনি রাধাকে দুই বাহু দিয়ে উত্তোলিত করলেন। রাধার যাবতীয় ধ্বনি তখন স্তব্ধ, হয়তো প্রাণবায়ুও স্তব্ধ রাধারমণের বক্ষমধ্যে আশ্রিত হয়ে। সেই কঠিন নৈঃশ্বব্দ্যের প্রহরে হঠাৎ রাধা আর্তনাদ করে ওঠে, ‘প্রিয়সখা, আমায় ত্যাগ করবে না কোনোদিন –কথা দাও, প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হও।’ অশেষ লিপ্সা চরিতার্থ করে রাধারমণের লিঙ্গ রাধার যোনিপথে দ্বিতীয় বার পুনর্গমন করে। সঙ্গমশেষে তিনি বলেন, রাধা, এই আমার জীবনের শেষ সঙ্গম।…..

…..রাধার দুই চোখে অশ্রু সঞ্চারিত হল। তবে কৃষ্ণের কাছ থেকে এই প্রতারণা অনুমানের বাইরে ছিল না। তবুও চোখের জলে স্নাত হচ্ছে মুখমন্ডল। লবণাক্ত সেই জলধারা গন্ডদেশ প্লাবিত করছে। কৃষ্ণের দক্ষিণ কর এই সময় সন্ধান করছে রাধার বাম স্তন। বক্ষবন্ধনী ত্যক্ত খোলসের মতো লুটিয়ে পড়ল। আবার স্তনমর্দন, দীর্ঘ চুম্বন। এটা সত্যি রাধার শরীর ওঁর সঙ্গমে ঋদ্ধ হয়েছে, তবে সেই অলৌকিক স্বাদ এখন লবণাক্ত। চতুর কৃষ্ণ পূর্ণ সম্ভোগের পর বিদায় নিচ্ছেন। আর প্রত্যাবর্তন করবেন না। চকিত, চপল আনন্দের মুহূর্ত হারিয়ে যাচ্ছে। প্রখর দিনে আর বৃষ্টিপাত হবে না। বীর্যবান রাধারমণকে ভালোবাসতে গিয়েও কপটতার জন্য ক্ষমা করা হল না রাধার। প্রেমিকার সেই অভিশাপের কারণেই বোধ হয় এই নির্জন, বিস্তীর্ণ অরণ্যে কৃষ্ণের চান্দ্রদশা শুরু হল।…..

…..ঘরের দেওয়ালের টিকটিকি কখনো রাধার ছায়ার কাছে এসে বসে। তখন আবার স্মৃতি লন্ডভন্ড করে দেয় বর্তমান সময়কে। সম্পূর্ণ বাধ্য, অধীন কৃষ্ণ নারীর বশীকরণ শক্তির কাছে পরাভূত। সব খ্যাতির পথ তখন এসে আশ্রয় খুঁজছিল রাধার স্তনতটে। রাধা তখন ঘাতিকা। কৃষ্ণ মহার্ঘ্য মালিশ মৃদুভাবে লাগিয়ে দিচ্ছেন ওর স্তনে। চুম্বনে চুম্বনে চোখের কাজল লুপ্তপ্রায়। শয্যায় নিজেকে সম্পূর্ণ অনাবৃত করার আগে করজোড়ে নতজানু কৃষ্ণ।…..

…..আর মনে পড়ছে সেই নদীর কথা। যমুনা। কৃষ্ণজল তার। সেই নদীর তীরবর্তী একটি ছায়াঘন মায়াকুঞ্জের কথাও মনে পড়ছে। গোপিনীদের শরীরে কামনার বহ্নি। কৃষ্ণের চিত্তজয়ী দুর্বার আকর্ষণে তারা নিজেদের স্বজনদের ভুলে গিয়ে তাঁর কাছেই থাকে। গোপরমণীরা কৃষ্ণের সঙ্গে মিলনের ক্ষেত্রে অনেক স্বাধীনচেতা। পীনবক্ষ, ক্ষীণকটি, গুরুনিতম্বের রমণীদের উপভোগকাল কখনো বিস্মৃত হওয়া যায় না। কৃষ্ণের গলায়ও তখন থাকত কবচযুক্ত মুক্তহার, কানে কুন্ডল আর বাঁশরিতে চাতুর্যপূর্ণ আহ্বান। রমণীরা মক্ষিকার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ত অফুরান মধুভান্ডের অধিকারী কৃষ্ণের বক্ষে। অতি প্রার্থিনীদের অনেক সময় কোনো অবগুণ্ঠন ছাড়াই তৃপ্ত করেছেন কৃষ্ণ। চুম্বন সহযোগে ভরিয়ে রাখতেন ওদের অধর।…..

……–মুহূর্তিকা, এই রাতটা আমি ক্রয় করতে চাই।
–ইতরজনের এত স্পর্ধা! এই শরীর রাজপুরুষদের জন্য সংবর্ধিত।
–আমি আজকে তোর রাজপুরুষ।
–ছি, তোর গাত্রের উৎকট গন্ধ আমার অসহ্য লাগে।
–মুদ্রা দিয়ে আমি তোর সেই কষ্ট লাঘব করে দেব।
–কত কাহ্নপন দিবি আমায়?
–কয়েকটি স্বর্ণমুদ্রা।
–রাজকোষ থেকে চুরি করেছিস? তবে তো এখনই নগরদ্বারকে খবর দিতে হয়।
–উৎকোচ পেয়েছি।
–কোনো ভয়ংকর কান্ডে ব্যপৃত হয়েছিস নিশ্চয়! দূর হবি এক্ষুনি।
–বিশ্বাস কর মুহূর্তিকে, আমি তেমন কোনো কাজ করিনি।
–তবে স্বর্ণমুদ্রা কোথায় পেলি?
–তোর শরীরটা দিবি তো?
–স্বর্ণমুদ্রার বিনিময়ে তোর যাবতীয় যৌনতৃষ্ণা মিটিয়ে দেব। কিন্তু তুই কি পারবি?
–আমি কি বীর্যহীন পুরুষ?
–এই পেলব পা দিয়ে তোর পুরুষাঙ্গে সামান্য চাপ দিলেই যাবতীয় বীর্যরস মুহূর্তে নির্গত হয়ে যাবে। কত রাজপুরুষ এই ক্রিয়ায় পরাভূত হয়েছেন। তবে কিছুক্ষণ টিকিয়ে রাখার কৌশলও আমার জ্ঞাত আছে।
–তবে তাই করিস।
–আগে বলবি কোথায় পেলি?
–আরও একটি সুখ তোর কাছে প্রত্যাশা করি।
–আমার সন্তানের পিতা হবি?
–আমি তো তোরই অন্নদাস। প্রতিপালনও তো সেই তোকেই করতে হবে।
–তবে কী চাস?
–আমার পুরুষাঙ্গটি তোর মুখগহ্বরে প্রবেশ করাব।
–শিথিলতা দূর করার ঔষধি চাইছিস।
–হ্যাঁ, মুহূর্তিকে।
–দন্ত বসিয়ে একটু রক্ত নির্গত করব।
–মূত্রত্যাগে জ্বালা করবে না?
–তার ঔষধ আমার কাছে আছে।
–জিহ্বা দিয়ে লেহন করে দিবি তো?
–তোর বির্যরসে খিদে মেটাব। তরলীকৃত হয়ে যায়নি তো?
–না, এখনও বেশ ঘন।
মহাপার্শ্ব মুহূর্তিকাটির কেশ উন্মুক্ত করে দিল।
দুটি স্বর্ণমুদ্রা ওর হাতে দিতেই রমণীটি বলল, ‘তোর উপায়ের সূত্র জেনে আমার প্রয়োজন নেই। তবে দ্বাররক্ষীদের কোনো কারণে আগমন ঘটলে আমি তোর কথা জানিয়ে দেব।’

কেশরাশির অতুলনীয় গন্ধে মহাপার্শ্বের আরামে নিদ্রা চলে আসছিল। মুহুর্তিকাটি নগ্ন হতেই মহাপার্শ্ব নিম্নাঙ্গটি ওর মুখগহ্বরে প্রবেশ করিয়ে চাপ দিতেই থাকল।……

…….কৃষ্ণ শ্রীরাধিকার গলার মালা ছিন্নভিন্ন করে ফেললেন। ওর শরীরটা দু-হাতে তুলে নিয়ে শয্যার সমীপে চলে এলেন। কক্ষের প্রদীপ তখন নিভে গেছে। শুধু শয্যাপারে আরেকটি দীপ ক্ষীণশিখা নিয়ে কম্পমান ছিল। কৃষ্ণ রাধিকাকে শয্যায় ন্যস্ত করে ত্বরিত গতিতে যাবতীয় বস্তু ছিনিয়ে নিয়ে বিবসনা করলেন। তারপর রাধার উপর শায়িত হয়ে স্তন দুটি মর্দন করতে লাগলেন। মুহূর্তে উন্মাদিনী হয়ে ওঠা রাধা কৃষ্ণের যাবতীয় বস্ত্র ছিঁড়ে ফেলল। দন্ত বসিয়ে দিয়ে এক আশ্লেষ চুম্বনে কৃষ্ণ ভরিয়ে দিলেন রাধাকে। এবার রাধারমণ শ্রীরাধিকার অপূর্ব জঘার উপর অশ্বারোহীর মতো চেপে বসলেন। ঈষৎ ঘর্মাক্ত রাধা যোনিদ্বার বিস্ফোরিত করল। কৃষ্ণ তখন ওষ্ঠ দিয়ে যথাক্রমে ওর স্তন, নিতম্ব, জঘায় চুম্বন করতে থাকলেন। তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ একত্রিত করে যোনিগহ্বরে আলতো প্রবেশ করলে এবং কয়েক বার সামান্য উত্থিত হয়ে যোনিতে লিঙ্গের স্পর্শ লাগাতে থাকলেন। তারপর শ্রীরাধিকা সত্যিই যেন দেবীভঙ্গিমায় জেগে উঠল। ওর বিস্ফারিত যযানি কৃষ্ণের লিঙ্গের উপর স্থাপন করলে কৃষ্ণ আরও বেশ কয়েক বার জিহ্বা দিয়ে লেহন করলেন। তখন যৌন উন্মাদিনী রাধা কৃষ্ণের লিঙ্গটি মুখগহ্বরে গ্রহণ করল। রাধা তখন কৃষ্ণের উপর আরোহন করেছে। এবং পুরুষোত্তম ভগবান নব্যযৌবনপ্রাপ্ত পুরুষের মতো কাতর আহ্বান করছেন যে, তিনি আর বীর্যধারণ করতে পারছেন না, এবার যেন সে সঙ্গমে লিপ্ত হতে দেয়। অবশেষে রাধিকার যোনিদ্বারে প্রবিষ্ট হল পুরুষোত্তমের পুরুষাঙ্গ। তিনি আপ্লুত কণ্ঠে ডেকে বললেন, ‘রাধে, জয় রাধে।‘ আর শ্রীরাধিকা তখন যোনি-জঙ্ঘা-নিতম্ব সর্বস্ব সমর্পণ করে কেশবের লিঙ্গদেশ সম্পূর্ণ গ্রস্ত হতে দিলে।

রতি সম্পূর্ণ হতেই কৃষ্ণ আছড়ে পড়লেন রাধার দেহে। ঠিক তখনই আরেক বার রাধা বললে, ‘হে যদুনন্দন, আমি যদি গর্ভবতী হই?’…..

……শীতের রাত্রি এমনিতেই দীর্ঘতর। তার অন্তিম চরণ যেন আসতেই চায় না। নগরের বাতিস্তম্ভগুলি নির্বাপিত হয়ে গেছে। প্রৌঢ়া রাধার এই রাতের অভিসারে যাওয়ার কারণে আর কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। শুধু প্রতিবন্ধক শরীর। যে-শরীর পুরুষোত্তম ভোগ করেছেন, বীর্যরসকে লিঙ্গশীর্ষে স্তব্ধ রেখে তিনি মিলনকে করে তুলেছেন অপার্থিব সেই শরীর এখন খুব ক্লান্ত। এই ক্লান্ত, যৌবনের উপান্তের শরীর নিয়ে রাধা বিপরীত বিহারের কথা ভাবছে, যেন কৃষ্ণকে রমণ করছে। কৃষ্ণের পুষ্ট স্তনযুগল মর্দন করতে করতে রাধার যোনিদ্বারে লিঙ্গশীর্ষের অবতারণা হল। আর স্বয়ং পুরুষ রাধারমণ বিপরীতক্রমে যোনিদ্বার উন্মুক্ত করলেন। হেমন্তের উষ্ণ রাত্রি পৃথিবীও প্রত্যক্ষ করল এক বিপরীত রমণবিহার। কৃষ্ণের ত্বক এমনিতে নির্লোম, কিন্তু আর ত্বকের অভিসন্ধি থেকে গুপ্ত লোমরূপের প্রতিটি কণায় কণায় রমণ হতে থাকল। উপভোগ্য কৃষ্ণের শরীর ভোগ করছে রাধা।

রমণ এবং ক্ষরণহীন পলের পর পল রাধাকে উন্মাদিনী করে তুলেছে।…..