মরুস্বর্গ – আবুল বাশার

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

…….আক্কাদ বলল— রিবিকা ! আজ দোলের রাত ! আমি যৌন-বিহারের জন্য পাঁচটি উট চাষার ছেলেদের ভাড়া দিয়েছি। উটের দোলনে রতিমােচন আনন্দদায়ক। একজন বুড়ােলােকও এই রাতে বালিকাদের দিয়ে গা লেহন করায়। ওই দ্যাখাে,..

একটি চালার নিচে দৃশ্যটি দেখা গেল। এক বৃদ্ধকে দুটি নগ্ন নারী চাঁদের ছায়ায় লেহন করে চলেছে। সমস্ত বুক এবং যাবৎ অঙ্গ লালায় মথিত হচ্ছে। বুকের পাঁজর দ্রুত প্রকম্পিত হচ্ছে কামনাতাড়িত বাতাসে। শিঙা বেজে উঠল মন্দির চাতালে । বৃদ্ধের মুখ দিয়ে রক্ত উথলে এসে গলা ভিজে যাচ্ছে। বুড়ােটি রােগগ্রস্ত। এই রােগ ছোঁয়াচে অথচ দুটি তরুণী বধু তাকে লেহন করছে।

মৃত্যু এবং যৌনতা এত ঘনিষ্ঠ যে সহ্য হয় না। কাম এবং পুনর্জীবন তাে ইস্তারের উপাসনা মাত্র। ফসলের জন্ম আর মৃত্যু আর জন্মই জীবন।….

……..কিছুই থাকে না সেপাই। নানভী (নিনিভে) নগরীও ধ্বংস হবে ! আর তােমার নরম ক্ষুদ্র প্রাণী শখের প্রজাপতিও বেঁচে নেই। আমার মত মেয়ের স্তনে মধু পড়লে তা বিষ হয়ে যায়, অত নরম প্রাণ কি বাঁচতে পারে ! এই দ্যাখাে … কিছুই থাকে না ! যা দেখছ সব !

বলে অশ্বের কাছে এগিয়ে এসে ব্লিবিকা গায়ের কাপড় দু’ হাতে সরিয়ে পিঠে মেলে দু হাত দু পাশে প্রসারিত করে দিলনাও দেখে নাও। আমি আমনের (সুর্যদেব) বউ, আমার তাে কোন লজ্জা নেই! হায়েনাও আমাকে খেতে পারে না। সাত বছরের দুর্ভিক্ষেও আমি মরিনি। নাঙা মেয়ের চুলে নীল ফিতে বাঁধা—তাই দেখে কবিতা লিখবে এমন মানুষ নােহের সন্তানরা জন্ম দিতে পারে না। আর তােমার মত সৈনিক জীবনেও কাঁদতে জানে না। নাও, দ্যাখাে ।

সাদইদ যা গাছের আড়াল থেকে চুরি করে দেখছিল কিছুক্ষণ আগে, তা অতি নিকটে উদ্ভাসিত হতে দেখল। এমন রূপ সে কখনই দেখেনি। ……..রিবিকার বুকের দিক থেকে সে চোখ ফেরাতে পারছিল না। তার কুসুমকলিকার মত রাঙা আঙুল স্তনের প্রলিপ্ত প্রজাপতির ডানাকে ছুঁয়ে তুলে ফেলে উড়িয়ে দেবার আকাঙক্ষা করে—এই মুহূর্তে। …….

……..সাদইদের দিকে চোখ মেলে চাইল রিবিকা। তার বুকের কাপড় সরে গেছে। লােকটি তার দিকে গভীর আগ্রহে চেয়ে আছে। হঠাৎ কী খেয়াল হওয়াতে সাদইদ রিবিকার বুকের কাপড় সাবধানে তুলে রিবিকাকে ঢেকে দেয়। রিবিকা পুরুষের এই আচরণ ভাবতে পারে না। নারী যখন সংজ্ঞাহীন, পুরুষ তখনও নারীকে গমন করে। মিশরে সমকামী পুরুষের অভাব ছিল না। পুরুষ এমনকি মৃতাকেও গমন করে। নারীর এসব সুযােগ নেই । দেবতা আমন নারীকে এসব সুযােগ থেকে বঞ্চিত করেছেন। ফলে সে সুন্দর হয়েছে ।…….

……অত্যন্ত কম বয়েসী পাঁচটি মেয়েকে দেখা যাচ্ছে একটি ছােট মন্দিরের সামনে। পাথরের পাটাতন পাতা বসবার ঠাঁই, একে বলা হয় দীঘল কেদারা। এখানে বিশ-পঁচিশজন সেপাই মাথা নিচু করে বসে রয়েছে। | মাথা নিচু করে বসে থাকার কারণ যে সাইদ, ক্রমে বুঝতে পারে রিবিকা। কচি মেয়েগুলি দাঁত বার করে হাসছে । বুকের জামা খুলে একটি কুঁড়ি দেখিয়ে জামার তলে ঢুকিয়ে রাখছে একটি পাজি মেয়ে। ক্রমাগত এই-ধারা করছে।

সাদইদ ঘােড়া নিয়ে গিয়ে ওখানে থেমে গেল। সুন্দরী রিবিকার দিকে সবাই ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইল কিছুক্ষণ। কচি সেই পাজি মেয়েটি ক্লিবিকাকে বুকটা দেখিয়ে জিভ ভেংচে বললনতুন নাগরী বুঝি ! তা বেশ। ক’খানা ভেড়া দিয়ে খরিদ করল তােকে !

সাইদ ঘােড়া থেকে লাফ দিয়ে নেমে শিশুটাকে রিবিকার কোলে ছুঁড়েই দিল একপ্রকার। তারপর সটান কচিটার দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল—কনানী ভাষাটা তাে বেশ মজবুত করে বলতে পারাে—কিন্তু এইসব আদিখ্যেতা কেন ? সহবত বােঝাে না ?

বলেই গালে একটা চটাস করে চড় মারল সাদইদ । তারপর ধমক দিয়ে উঠল—বেয়াদব ! শরীর সামলে রাখাে!

—আ বাপ! তিন ভেড়ার খরিদানা মাগী আমি, তুমি মিনসে হলে বতই—হবা নাকি ভিস্তির পাে? জানি তুমি লােকটা অতি মন্দ নও, শুদু। হিতেনের পেটোয়া টো । আমায় একবার হারেমে দাও দিকিনি, ঘুরে আসি । আঙুর চটকালে মদ, মাগী চটকালে বদ-তা বুঝি জানাে না !……….

…..এক আশ্চর্য ছবি। বালির ঢিবির উপর বসে রয়েছে একটি একহাত কাটা ভয়ানক রূপসী মহিলা, ফুলের মত বুক খুলে সে একটি কালাে কেঁদো বাচ্চাকে স্তন্যদান করছে। দু’হাত তফাতে ঘাড় নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে একটি লােক। ঘাড়ে গামছা, কিন্তু হাতে একখানা লাঠি । কে ওরকম দাঁড়িয়ে রয়েছে ? ও যে চেনা চেনা কেউ।….

……….রিবিকার বুকের কাপড় বাতাস যেন আকুল হয়ে অতি সন্তর্পণে খসিয়ে দিয়ে চলে যায়। পাথরে শায়িতা রিবিকা । চোখ মুদিত । হাত দুটির একটি মাথার দিকে এলিয়ে শ্লথ আবেশে পড়ে রয়েছে। অন্য হাতটি পাথর ছাড়িয়ে শূন্যে ঝুলে পড়েছে। নাভিমূলের একটি-দুটি রেখার নিচে কাপড় বিস্ত। একটি পা পাথরের উপর সটান, অন্যটি পাথর গড়িয়ে ঝুলছে। রিবিকা কি পড়ে যাবে ?…..

….সাদইদ রিবিকার পায়ের উপর আছাড় খেয়ে পড়ে গেল। রিবিকার নগ্ন বুকে মুখ রেখে ডুকরে উঠল। গলার স্বর থরথর করে কেঁপে উঠল । ভাঙা অর্ধস্ফুট স্বরে সাদইদ বলল— আমি আর বাচব না রিবিকা !…… শিশুর মুখকে নারী অত্যন্ত আদরে যেমন করে বুকের সঙ্গে চেপে ধরে,রিবিকা। বক্ষলগ সাইদের মাথাটিকে তেমনি সমাদরে নিবিড়তম আশ্লেষে চেপে ধরল।…….

Leave a Reply