রূপান্তর: নিয়াজ মােরশেদ
…..দারুণ মেয়ে বুঝলে! স্নেহের সুরে বলল মিলস। বন আর পাহাড় চষে বেড়ানাের জন্যেই ওর জন্ম হয়েছে যেন। কই নেমে এসাে।’
লাফ দিয়ে মাটিতে পড়ল মেয়েটা। পর মুহূর্তে ধরা দিল মিলস-এর বাহু বন্ধনে। হাঁটু পর্যন্ত ঝুলে পড়া বাকল-কাপড়ের ঘাগরা ওর পরনে। লম্বা ঘন চুলরাশি নেমে এসেছে নিরাবরণ বুকে, কাঁধে। মিলস দু’হাতে ধরে যতটা দূরে সরানাে যায় সরিয়ে প্রশংসার চোখে তাকাল ওর দিকে।…..
…..ব্র্যান্ডির তাত এর মধ্যে মেয়েটার মগজে পৌছেছে। দ্বিতীয়বার সাধতে হলাে না তাকে। উঠে দাঁড়াল। হাঁটুর ওপর চাপড় মেরে দ্রুত লয়ে তাল দিতে লাগল লােকগুলাে । নাচ শুরু করল প্রুডেন্স। উন্মুক্ত বাহু ঘুরিয়ে, কোমর দুলিয়ে, প্রত্যেকটা পুরুষের সামনে পালা করে থেমে কটাক্ষ হেনে নাচল সে কিছুক্ষণ। তারপর হঠাৎ খিলখিলিয়ে হেসে ছুটে গেল এক ঝােপের আড়ালে।
বিকেল অনেক দূর গড়িয়েছে। সন্ধ্যার বেশি বাকি নেই। পশ্চিমে পাহাড়টার ছায়া ওদের ওপর দিয়ে চলে গেছে দূর পুবে । কিন্তু সেদিকে খেয়াল নেই কারও। হৈ-হল্লা করতে করতে বােতলে চুমুক দিয়ে চলেছে ওরা। প্রুডেন্সও একটু পরপরই এসে মিলস-এর গলা জড়িয়ে ধরে খেয়ে নিচ্ছে এক ঢোক । তারপর আবার গিয়ে শুরু করছে না। এখন আর সাধতে হচ্ছে না ওকে। নিজে থেকেই নাচছে সে মনের আনন্দে। যত সময় যাচ্ছে, তত ব্র্যান্ডি পেটে পড়ছে আর ততই উদ্দাম হয়ে উঠছে ওর লীলায়িত দেহ ভঙ্গিমা। ঘাের লেগেছে ওর মনে। চাহনিতে স্পষ্ট আমন্ত্রণ। ক্ষণে ক্ষণে উন্মুক্ত করে দিচ্ছে চুল ঢাকা স্তন। সবাই উপভােগ করছে ওর এই উদ্দামতা কেবল মিলস ছাড়া। ওর মুখ একটু একটু করে গম্ভীর হচ্ছে।……
…..ক্রিশ্চিয়ান আর ইয়ং ঝােপটা পেরিয়ে যেতে না যেতেই ঘন ফার্নের পাতা সরিয়ে ওদের অপসৃয়মান মূর্তিদুটোর দিকে তাকাল হুটিয়া। উনিশ কুড়ি বছর বয়েস মেয়েটার। সুন্দরী। সুগঠিত স্তন আর হাঁটু পর্যন্ত ঝুলে পড়া ঘন কালাে চুলের অধিকারী। সতর্ক হরিণীর মত দেখল ও ক্রিশ্চিয়ান আর ইয়ং-এর চলে যাওয়া। তারপর ঘুরে তাকালপেছনে কারও দিকে।
‘ক্রিশ্চিয়ান?’ ফিসফিস করে বলল ও। ক্রিশ্চিয়ান আর এটুয়াটি!’ ফার্নের বিছানায় হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে আছে উইলিয়ামস, মাথার নিচে হাত। ‘তাে কী হলাে? তাচ্ছিল্যের সঙ্গে জবাব দিল ও। এসাে, বসাে এখানে।
হাত ধরে সে হ্যাচকা টানে বুকের ওপর নিয়ে এল মেয়েটাকে। মেয়েটা মৃদু ধস্তাধস্তি করে ছাড়িয়ে নিল নিজেকে। হাসল একটু।
বিকেলের শেষ সময়টুকু স্নানের হ্রদটা সংরক্ষিত থাকে শুধুমাত্র মেয়েদের গােসলের জন্যে।
প্রতিদিন ওই সময় ওরা দল বেঁধে আসে। নিরাবরণ হয়ে নেমে যায় হ্রদের স্ফটিকস্বচ্ছ পানিতে। লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে সাঁতরে জল ছিটাছিটি করে প্রাণভরে স্নান করে। স্নান শেষে পাথরের ওপর বসে ওরা গা শুকায়, চুল শুকায়। অনেকে রােদের দিকে পিঠ দিয়ে সঙ্গে আনা ফুল লতাপাতা দিয়ে মালা বানায় মাথায় পরার জন্যে। সঙ্গে চলে গল্প প্রাণখুলে।
পাশে বসে আছে প্রডেন্স । সামনে এক বােঝা প্যানডানাস পাতা। পাতা থেকে কাট খসাচ্ছে সে। খুব বেশি হলে যােলাে হবে ওর বয়েস। ছােটখাট গড়ন, কিন্তু দারুণ দেহসৌষ্ঠব । শরীরের কোন অংশে মাংসের একটু কমতি বা বাড়তি নেই । ফিরে সােনালী ত্বক, মাথায় তাম-লাল চুল।