পরস্পরের অন্বেষণে ভ্রমণ করতি করিতে তােমরা উভয়ে যখন মিলিত হইবে, এবং সম্ভাষণ দ্বারা উভয়ে উভয়কে পরিজ্ঞাত হইলে, প্রথমে আলিঙ্গন, পরে চুম্বন, তৎপরে নখাঘাত, কামাভিব্যক্তি, সংভ্রম এবং রসাবেশে রতিক্রিয়ায় যখন প্রীতিলাভ করিবে, তখন সেই অন্ধকারে দম্পতির লজ্জামিশ্রিত কি অপূর্ব রসই না উদ্ভূত হইবে।
– জয়দেব, শ্রীগীতগােবিন্দ
……….জয়দেবের কবিতার সূত্রে আমরা কাম’ শব্দের নিকটে এলাম। কাকে বলে কাম? তা একই সঙ্গে বাঞ্ছা, অভিলাষ, কামনা, লালসা, অনুরাগ, সম্ভোগবাসনা। ইংরেজি ‘sex’ শব্দটির বঙ্গানুবাদ কাম’ হতেই পারে না। তাে নায়িকা আমাদের কামনার-বাঞ্ছার-অভিলাষ-লালসা-অনুরাগ-সম্ভোগবাসনার সঙ্গিনী। সেই নায়িকা তাে শুধু বিছানায় থাকে না, পুষ্পে-পত্রে-অন্তরীক্ষেও থাকে।…..
……..মেয়েটির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে অর্জুন সেনের মনে হল, এই মেঘ অনন্তশয্যার কমলিনী। যৌন শৃঙ্গারের চূড়ান্ত রমনীয়তা।…….
……..পদ্মবৃন্তের মতাে দুই হাত তার, যেন নতুন পাতায় শােভিত গাছের শাখা। কঠিন দুই স্তন পদ্মের মতাে শােভিত, আর সেখানে দুই কালাে মৌমাছি বসবাস করে। সদ্য মন্থন করা মাখন তাে তুমি দেখেছ। তেমনই নিম্ননাভিপ্রদেশ তার। সেই নাভির দিকে তাকালে আর চোখ ফেরানাে যায় না। যেন জলের ওপরে উড়ছে কালাে ভ্রমর। সেই নাভির হ্রদে আমি আজও ডুবে যাই।……..
……..এই রাতেঠাণ্ডা হাওয়ার স্রোত ঘুরছে ফিরছে। সেই হাওয়া ধরে ধরে সারা মুখে মাখতে থাকে অর্জুন সেন। হাওয়ার ভিতরে ঠোট, জিহ্বা, স্তনবৃন্ত, চুল, গ্রীবা উড়ছে…পাহাড় থেকে পাহাড়ে উড়ে যাচ্ছে।………..
………..মেয়েটির ফরসা পিঠ দেখা যাচ্ছিল। ব্লাউজের কাট এমনই যে তার পিঠের বিস্তৃত অঞ্চল অনাবৃত। মেরুদণ্ডের কাছে গভীর খাঁজ। খুব বেশি মেয়ের পিঠে এমন খাজ দেখা যায় না। বিন্দু বিন্দু ঘাম, খোপা উপচে ছড়িয়ে পড়া চুলের সরীসৃপ চলন। সেই পিঠের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে হঠাৎ একটা শব্দ মনে পড়ে গেল আমার। পীঠস্থান। পিঠ নয় পীঠস্থান। মেয়েটির পীঠস্থানে হাত বােলাতে ইচ্ছে করল আমার। কী আশ্চর্য! কতদিন পরে……….
………নগ্ন মঞ্জরী তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে, আচ্ছন্ন, অন্তর্গত। অভ্রের দ্যুতি ছড়িয়ে যাচ্ছে। মঞ্জরী চাপা স্বরে বলল, শাওয়ার চালিয়ে দাও।”
আর বর্ষা নামল। মঞ্জরী মাথা নিচু করে ভিজছে। একসময় মঞ্জরী তাকে কাছে টেনে নিয়ে সব আবরণ খুলে দিতে থাকল। জলের ভিতরে মেতে উঠল নখ, দাঁতের হিংস্র খেলায়। কোনারকের ভাস্কর্যের মতােই মঞ্জরী দাঁড়িয়ে তার সর্বস্ব গ্রহণ করল, তারপর আবার মাথা নিচু করে ভিজতে থাকল। অর্জুন সেন ডাকল, ‘তারানা
মঞ্জরী দুই স্তন দুই হাতে ধরে অভিনিবেশে দেখছিল। জলধারায় তা আরাে মাংসময়। সে অস্ফুটে বলল, ‘কাছে এসাে অর্জুন।’ সে মঞ্জরীর স্তনে মুখ রাখল। সঙ্গে সঙ্গে কেকাধ্বনি শুনতে পেল অর্জুন সেন। তার মানে ময়ূর পেখম মেলেছে। ………
………মঞ্জরী আপনমনে হেসে উঠে অর্জুন সেনকে জড়িয়ে ধরে। হাসতে হাসতে তার গলায় মুখ ঘষতে থাকে।
-কী হল? —সেদিন যেমন বলেছিলে।—মঞ্জরী হাসতেই থাকে। অর্জুন সেন অনুভব করে, তার বুকের ভিতরে মঞ্জরীর স্তন ফোয়ারার মতাে ফেটে যাচ্ছে।………
…….একটা নিঃসঙ্গ ব্রা পড়ে আছে। অর্জুন সেন সেটি দু’হাতে নিয়ে মুখে ঘষে। শুধু ন্যাপথলিনের গন্ধ। অর্জুন সেনের মনে পড়ল, তখন তার বয়স তেরাে কি চোদ্দো, তরুদিদের বাড়িতে গেলে যখন সে তরুদির ঘরে বসে থাকত, একা-একা, তরুদি হয়তাে কোথাও গেছে। সে আপনা থেকে তরুদির ব্রা নিয়ে গন্ধ শুকত, কালােজিরের মতাে সুবাস ছড়িয়ে থাকত দুই অদৃশ্য স্তনের ভিতরে। সেই মুখ, সেই শরীর, তরুদির, আজ কোথায় ? দুর আকাশে ওড়া পাখির ছায়ার মতােও আজ পড়ে নেই।……..
………..এবার তােমার মুখ ধীরে ধীরে নেমে এল আমার গ্রীবায়, আঃ, যেন ঠোট দিয়ে তুমি একটা ঝরনাকে বাজাচ্ছ, আর ঝরনাটি কত ভুলে যাওয়া সুর গুনগুনিয়ে উঠছে, সেই সুর শুনতে শুনতে তুমি এবার উপত্যকায় পৌছলে, ভালাে করে দেখাে, হারিয়ে যাওয়া হরিণীর পদচিহ্ন খুঁজে পেতে পারাে, জিভ দিয়ে লেহন করাে এই উপত্যকা, তােমার দুই ঠোটের পুরােনাে গল্পগুলি এখানে লিখে রাখাে, এরপর আমি তােমাকে মেঘের দুই পর্বত ও মধ্যবর্তী স্রোতােধারা দেখাব, এই মেঘপর্বতদ্বয়কে তুমি ধ্বস্ত করাে, তাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা বৃষ্টি মাখাে দুই হাতে, আমাকে জননীর মতাে গ্রহণ করাে, তােমার মুখ ভরে যাক দুধের সৌরভে, আর তারপর মৃদু রেখাটি ছুঁয়ে ছুঁয়ে এগিয়ে যাবে তােমার দুই ঠোট, নাভিকে ঘিরে বৃত্ত আঁকবে, তােমার জিহ্বা, সমুদ্রের গভীরে লাল শৈবালের ঝড়ে হারিয়ে যাচ্ছে তােমার মুখ, এবার তােমার জিভ খেলা করছে বীজগ্রহণ ও জন্মসূচনার দ্বারে, তুমি আমার পশ্চাতে হাত রাখাে, দুই হাতে তুলে ধরাে আমাকে……….ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জেগে উঠেছে কন্যাদের শরীর, যেন এই মহাবিশ্বের কামনায় থরােথরাে তারা, যেন তারা শীৎকার করে ওঠে, হে অনন্ত, তুমি আমাতে প্রবেশ করাে, গর্ভবতী করাে কন্যার শরীর ও মন, দেখাে এইসব মিথুনমগ্নদের, তাদের স্তন, যােনি, লিঙ্গ ও ওষ্ঠের সংগীত, দেখাে এই জীবন, যেমন সমুদ্রের তলায় আদিপ্রাণ, পরস্পরকে দেওয়া-নেওয়ার খেলায় মেতে আছে, আমি এই মন্দিরের নির্মাণ তােমাকে দেখাতে এসেছি……….তারা দেখছে, সমুদ্রের ঢেউ একের পর এক এসে ভেঙে পড়ছে বেলাভূমিতে, সেইসব নরনারী যাদের কোনাে নাম নেই, শুধু এক সৃষ্টির ভিতরে তারা প্রমত্ত উন্মাদনায় ঝাপিয়ে পড়েছিল, পাথরের পর পাথর সাজিয়ে আকাশের মুখােমুখি গড়ে তুলছিল তাদের নশ্বর সৃষ্টি, তাদের বীণাবাদন, ফুল ফুটে ওঠা, তাদের পাখিদের গ্রীবাভঙ্গি, তাদের স্তনসুর্যবন্দনা, তাদের লিঙ্গলেহনমােহ, দুটি নারীর পরস্পরের দিকে তাকিয়ে থাকার বেদনা ও আততি, তারানা, কোনাে কথা নয়, এই অর্কক্ষেত্রে আজ তােমাকে সন্তান উপহার দিতে চাই আমি।…………