নানা – এমিল জোলা

›› অনুবাদ  


 

অনুবাদঃ ইন্দুভুষণ দাস

….কি সুন্দর ঠোঁট দুখানি !
স্বল্প পোশাকের আস্তরণ ভেদ করে উচ্ছল যৌবনের কি দীপ্তিময়ী শোভা ! মোহাবিষ্ট হয়ে পড়লো দর্শকের দল।……
…..ফ্রান্সিস যখন সেই ঘরে এলো, নানা তখনও বিছানায় শুয়ে। তার দেহ প্রায় অনাবৃত বললেই হয় । তার মসৃণ বক্ষের সুপুষ্ট স্তন দুটি সম্পূর্ণভাবে খোলা ।…..
……কাউন্টেসের বয়স প্রায় পঁয়ত্রিশ। কিন্তু এত বয়স হলেও কাউন্টসের দেহ থেকে রূপ আর সৌন্দর্য তখনও বিদায় নেয় নি। তাঁর পরিপুষ্ট অঙ্গ- প্রত্যঙ্গগুলো সবই যেন যৌবন-লাবণ্যে ভরপুর ।……
……এদিকে যখন এইসব কথাবার্তা চলছে, ওদিকে ব্যাঙ্কার স্টিনার তখন নানার রূপসুধা পান করে এমনই বে-সামাল হয়ে পড়েছে যে, টেবিলের উপর গ্লাসে যে আসল সুধা পড়ে রয়েছে, সে দিকেও আর খেয়াল নেই তার ।
ড্যাবডেবে চোখ দুটো দিয়ে নানার মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেহের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের প্রতিটি রেখা, প্রতিটি ভঙ্গিমা, প্রতিটি খাজ, বন্ধুরতা —সব কিছুই যেন গিলছিল সে।…..
সবাই তখন মত্ত।
সম্পাদক মশাই কিন্তু কাজের লোক ৷
রোজির বেশ একটু নেশা হয়েছে বুঝতে পেরে, সে তার সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করতে সুরু করে দিল !…..
……নানা তখন লজ্জার ভান করে বললো—বেশ ! আমি তাহলে এই অবস্থাতেই বের হচ্ছি। প্রিন্স যেন আমাকে ক্ষমা করেন।
প্রিন্স বললেন—সুন্দরী! ত্রুটি তোমার নয়, ত্রুটি হয়েছে আমাদের। কিন্তু একমুহূর্তের জন্য হলেও একবার যখন তোমার ঐ অনুপম দেহ-সৌন্দর্য দেখবার সুযোগ আমাদের হয়েছে, তখন সে সাধ আমাদের ভাল করেই মেটাতে দেবে আশা করি।
প্রিন্সের কথা শেষ হইতেই পর্দার আড়াল থেকে বের হয়ে এল নানা ৷
তার দেহ প্রায় অনাবৃত বললেই হয় ।
পরনে যে সিল্কের পায়জামাটা ছিল, সেটা এতই সূক্ষ্ম যে, নানার দেহের প্রত্যেকটি খাঁজ পর্য্যন্ত দেখা যাচ্ছিলো তার ভিতর দিয়ে। তার সুঠাম উন্নত স্তনযুগল সম্পূর্ণ উন্মুক্ত।
প্রিন্স তো অবাক্ !
এ কী চোখ ঝলসানো রূপ !
এই অনুপম রূপরাশি যে একমাত্র রাজা-রাজড়াদেরই ভোগের উপযুক্ত !
বুড়ো মাকুইস আর বিগতযৌবন কাউণ্টের অবস্থাও তখন রীতিমত কাহিল ৷
অভিনেত্রীর প্রসাধন-কক্ষে কাউণ্ট মাফাতের এই বোধ হয় প্রথম পদাৰ্পণ !
নানার নগ্নসৌন্দর্য দেখে কাউন্টের শিরায় শিরায় উষ্ণ রক্তের স্রোত বইতে লাগলো ৷
তাঁর মনে তখন একমাত্র চিন্তা—“কি করে একে হাত করা যায়! এই সৌন্দর্য ! একে যেমন করেই হোক, উপভোগ করতেই হবে।”
ওদিকে বুড়ো মার্কু ইসের অবস্থাও তখন রীতিমত সঙ্গীন ।
লম্পটরা নাকি বুড়ো হলেই বেশি কামুক হয় । মাকু ইসের দশাও তাই ৷ এদিকে যবনিকার অন্তরালে যখন এই দৃশ্যের অভিনয় চলেছে, অন্যদিকে প্রেক্ষাগৃহের শত শত দর্শক তখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছে নানার জন্য । এই অঙ্কেই নানার পার্ট, তাই দেরি করবার উপায় নেই তার ৷ সে তখন বাধ্য হয়ে ওঁদের সামনেই সাজ-পোশাক পরতে সুরু করলো।…….
…….এইরকম অপ্রত্যাশিতভাবে কিশোর জর্জকে শয্যা-সঙ্গী পেয়ে খুশীই হলো নানা। এই কিশোরের ভালবাসায় ছিল একটা মধুর আবেগ ।
সারারাত নানার সঙ্গে এক বিছানায় কাটিয়ে শেষরাত্রে বাড়ী চলে গেল জর্জ । বাড়ীতে ফিরে সে আবার সেই দড়ি ধরে নিজের ঘরে ঢুকেই একেবারে লেপের তলায় ।…….
……নানার উরু দু’খানিকে তিনি সজোরে চাপতে লাগলেন নিজের বুকের সঙ্গে । নিজের মুখখানা নানার দুই উরুর মাঝখানে ঘষতে লাগলেন তিনি ৷ বহুদিন পর নানার কোমল দেহ স্পর্শ করতে পেরে কাউন্ট যেন দিশেহারা হয়ে গেলেন। উপরের পাতলা পোশাকের আস্তরণের নীচেই আছে নানার ভেলভেটের মত মসৃণ দেহবল্লরী।…
আরো জোরে—আরো জোরে কাউণ্ট নানাকে চাপতে লাগলেন ৷ যেন নানার সঙ্গে তিনি এক হয়ে যেতে চান ।……
নানা তখন উঠে এসে কাউণ্টের কোলের উপর বসে তার ঠোঁটের নীচে নিজের ঠোঁট দুখানি তুলে ধরে বললো—তুমি তা হলে আমাকে ভালবাসো না। সেই জন্যই তো বললাম যে, টাকা দিয়ে ভালবাসা কেনা যায় না ।
কাউন্টের মাথা ঘুরে গেল । নানার উষ্ণ নিঃশ্বাস লাগছে তাঁর সুখে। তিনি তখন নানাকে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে তার ঠোঁট দু’খানিকে সজোরে চেপে ধরলেন নিজের ঠোঁট দিয়ে। নানাও প্রতিদান দিল কাউন্টের এই চুম্বনের ৷ নানার গাঢ় চুম্বনের আবেশে চোখ দু’টি বুজে এলো কাউণ্টের ।…..
…..তীর্থক্ষেত্রে যেমন বাপ-ছেলে, দাদা-ছোটভাই সবাই একসঙ্গে মাথা মুড়ায়, নানার বাড়ীতেও সেই অবস্থা। নানার দেহতীর্থে ফিলিপি আর জর্জ দু’ভাই-ই মাথা মুড়ালো ৷….
…..ঐ রাত্রেই ‘মেবিল’এ এক বিরাট অভিনন্দন দেওয়া হ’লো নানাকে । প্যারীর অভিজাত মহলের প্রায় সবাই উপস্থিত হয়েছিল সেই অভিনন্দন-সভায় ৷ মহিলা সমাবেশ ও হয়েছিল অনেক। প্যারীর সুন্দরীর দল তাদের উন্নত ও উন্মুক্তপ্রায় বক্ষ শোভা দেখিয়ে ইতস্ততঃ ঘুরে বেড়াচ্ছিল ।…..
….বল-রুমে নাচ শুরু হয়ে গেল।
পানোন্মত্ত নরনারী একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে নাচ শুরু করে দিল।
নাচের ঘরে এত বেশি নরনারীর সমাবেশ হয়েছিল যে, ঘরের আবহাওয়া অচিরেই উত্তপ্ত হয়ে উঠলো ।……