নর্তকী – প্ৰণয়কৃষ্ণ গোস্বামী

›› রম্যরচনা  

কবি কালিদাসের বাস উজ্জয়িনী নগরীতে। সেখানকার অনন্ত রূপযৌবনবতী শ্রেষ্ঠ নর্তকী বসন্তলতিকা । 

একদিন বসন্তলতিকার মনে সাধ জাগল, কবি কালিদাসের সঙ্গে সাক্ষাত আলাপ করতে হবে। কিন্তু কী করে তা সম্ভব ? তাঁর কাছে আসেন শ্রেষ্ঠীগণ, নৃপতিগণ, কিন্তু কবিরা তো আসেন না ! তাই বসন্তলতিকা ঠিক করলেন, কবি ব্রাহ্মমুহূর্তে সরোবরে স্নান করতে যান, তিনি স্নান সেরে উঠলেই তাঁকে দেখা দেবেন।

বসন্তলতিকা প্রস্তুত হয়ে ব্রাহ্মমুহূর্তে যাত্রা করেছেন। দূরে দেহরক্ষী ও পরিচারিকারা অপেক্ষা করছে। বসন্তলতিকা এগিয়ে এসেছেন। কবি স্নান সেরে সূর্য প্রণাম করছেন। সূর্যোদয়ের আগেই সূর্যপ্রণাম। সূর্য এবারে উদিত হবে। কবি প্রণাম সেরে সরোবরের সিঁড়ি বেয়ে শ্বেতপাথরের বাঁধানো ঘাটে উঠে এলেন। বসন্তলতিকা কবিকে হঠাৎ আলিঙ্গনে আবদ্ধ করলেন। আচম্বিতে এমন ঘটনায় কবি কিঞ্চিৎ বিমূঢ় হয়ে পড়লেন। তিনি, পেছনদিকে মুখ ঘোরালেন ।

বসন্তলতিকা আলিঙ্গন শিথিল করে সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, শুনেছিলাম মহাকবি কালিদাস পরম রসিক ব্যক্তি। এখন দেখছি আর পাঁচজন সাধারণের সঙ্গে তাঁর কোনোই প্রভেদ নেই।

নিজেকে তক্ষুনি সামলে নিয়ে কালিদাস বসন্তলতিকাকে বললেন,—সুভগে, সুনিতম্বিনী, আদৌ তা নয়। আমি শুধু একবার পেছন ফিরে দেখে নিলাম, তোমার সমুচ্চ সুগোল কুচদ্বয় আমার বক্ষ ভেদ করে পৃষ্ঠদেশে বহির্গত হল কি না?