নবজাতক – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

………এগারাে জনের মধ্যে দু’জন মেয়ে। এর মধ্যে এক জনের নাম মিসেস সেন। সে যেহেতু মালিকের পি.এ., তাই কেউ তার প্রথম নাম ধরে ডাকে না। এর শরীরটি বড় বিচিত্র, রােগা রােগা হাত-পা, মুখখানি অস্পষ্ট, পেনসিলে আঁকা ছবির মতাে চোখ-নাক, কিন্তু এর দুই বুক আর নিতম্ব বেখাপ্পা রকমের পৃথুলা। হাঁটাচলার সময় ওই সব স্থান কাপে। মিসেস সেন বড়ই ছটফটে, বেশিক্ষণ সুস্থির হয়ে বসে থাকতে পারে না চেয়ারে। ঘন ঘন মালিকের ঘরে যায়, যখন তখন একটা দেয়াল আলমারি খােলে এবং অন্য কর্মচারীদেব টেবিলের সামনে এসে ঝুকে দাঁড়িয়ে অর্ধেক নগ্ন স্তন দেখিয়ে কথা বলে। সকলেই জানে, এই মিসেস সেন মালিকের সন্ধ্যা-সঙ্গিনী, এর মধ্যে কোনও লুকোছাপা নেই, কোনও লজ্জার ব্যাপার নেই।…….

………ক্যাচ করে শব্দ হল, মালিকের ঘর থেকে দরজা ঠেলে বেরিয়ে এলেন মিসেস সেন। দুই স্তনের ঠির মাঝখান দিয়ে সরু করে পাকানাে আঁচলটা সুবিন্যস্ত করে সে জিজ্ঞেস করল, তারপর কী হল?……….

………..গত চার মাস ধরে তিনি কৃষ্ণার শরীরের ঘাম বা নখের ধুলাের মতাে তার মধ্যে লীন হয়ে আছেন। তিনি এই সুস্বাস্থ্যবতী যুবতীর সুঠাম স্তনে চোখ ঘষেছেন পাগলের মতাে। তিনি এর যযানিতে যােনি-কীট হয়ে থেকেছেন। কৃষ্ণার নগ্ন মূর্তির সামনে হাঁটু গেড়ে বসে তিনি দেখেছেন পাহাড়, সমুদ্র থেকে জেগে-ওঠা ডুবাে পাহাড়। এর নিতম্বে দুই সুমেরু পর্বত। এর কোমরের খাঁজে, নিম্ন নাভিতে সাগরের ঢেউ। আলুলায়িত চুলে বনকুসুমের গন্ধ, উরুতে অবিরাম ভূমিকম্প। তিনি ওকে দাঁত দিয়ে কামড়েছেন, জিভ দিয়ে চেটেছেন, পৌরুষ দিয়ে বিধেছেন। তিনি উন্মত্ত হয়ে, নিজের শরীরের চেয়েও প্রকাণ্ড হয়ে আথালি-পাথালি খেলা খেলেছেন ওকে নিয়ে। তিনি ওর সারা শরীরে বার বার ঘষেছেন নিজের চোখ, তবু তার বুকের মধ্যে দাউ দাউ করে জ্বলে রূপদাহ।………..

………..বােধিসত্ত্বকে হারাবার চিন্তাতেই কৃষ্ণার সারা শরীরটা একবার কেঁপে উঠল। এই দুর্বোধ্য মানুষটিকে আরও দৃঢ় বন্ধনে বাঁধবার জন্য সে তক্ষুনি আঁচল সরিয়ে, ব্লাউজের বােতাম খুলে ফেলল। তারপর মা যেমন শিশুকে ডাকে, সেই রকম নিজের স্তন দেখিয়ে বলল, এসাে।

এক দিন মাঝ রাত্রে কৃষ্ণা নিজেই ডেকে তুলল বােধিসত্ত্বকে। আনন্দব্যাকুল স্বরে বলল, এই, দ্যাখাে, দ্যাখাে! সে বােধিসত্ত্বের একখানা হাত টেনে নিজের শায়া খােলা তলপেটের ওপরে চেপে ধরল।………

Leave a Reply