কলকাতার বট তলার বই
জোনাবেতে * বাদসার বেটির নাম ছিল জোহুরবান ॥ সিঙ্গার ছামান করি খেছেৱে পাঠান * কন্যার ছুরতের খুবি কি কব জবানে ফজরেতে ভানু জেমন উঠেছে আছমানে * বুকেতে নুতন কুচ কি কব বাহার ৷ কুন্দে বানাইছে জেমন ঢেপুওা শোনার * আখির জোড় ভুঙা যেন দুই কামানি ॥ মুখের বচন যেয়ছা কুকিলার ধনি * দিগল মাথার চুল যেন মেঘ কালি ॥ হাঁসিতে চমকে জেয়ছা মেঘের বিজলি * মুখের ছুরত রঙ্গ জিনি জবা ফুল ॥ মুখ দেখে চেহে চেহে করেন বুল বুল * হাটিতে ফেলায় পাঁও খঞ্জন চলন ৷৷ দেখিলে বিবীর রূপ ভুলে মনির মন * চন্দ্র সূর্য্য সরমিন্দা দেখিয়া বিবিরে ॥ হুর পরী সরমেতে পলাইয়া ফিরে *
জোহরা বানুর
ছুরতে সকলে মগন * সকলে তাজিম করে জোহুরা। বাদুরে শোনার খাটেতে বসায় অতি সমাদরে * রঙ্গ রঙ্গ খানা পিনা আনে ভাতে ভাতে ৷ সকলেতে খায় খানা বৈসে এক সাতে * ক্রপুল তাম্বুল খায় খোসবয় কাফুরি॥ নাজে সাজে নারী সবে হাসি খুসি করি * এই মতে আধা রাত কাটে রঙ্গে ঢঙ্গে ৷৷ আসিয়া ছুফিয়ানি বাদসা আপনা পালঙ্গে * খাওাছিন দাই সবে সেখানে
আছিল ৷ বাদসা আইল ঘরে মালুম করিল * জোহুরবানু সাতে লিয়া দুই খাওাছিনে । বসাইয়া দিল গেয়া বাদসার বিছানে * দেখিয়া বিবীর রূপ বাদসায় পাগল ॥ কোলে উঠাইয়া লিয়া হাসে খল২ * টিকিতে না পারে দোন কামের জালায় || সংসারের রিত জেয়ছা মিলিল দোহায় * খুসি খোসালিতে দোনর হইল ছহবত।।
বেউনীর আগায় গাথিছে রতণ২ ৷৷ কমরে ঝুলিয়া পড়ে, নজর নাহি ঠাহরে, দেখে সাহা পাগল উচাটন * ছাতি দোন ডালিম্ব আকার২ ৷৷ যেন নয়। পদ্ম কলি, যেমন চালের ফুলি, যেন দুই ঢেপুয়া সোণার * চিকন মাঞ্জা পাতলি কমর২ ।।
বাদসা করিল হুকুম উজিরে ডাকিয়া ॥ রঙ্গমহলে সাহাজাদা দেও রাখিয়া * জৌসনের ক্যা আর ছয়ফল মুল্লুকে ॥ রঙ্গমহলে দুইজনে নিরবেতে রাখে * ছয়ফল মুল্লুকে রাখে সোত্তাই পালঙ্গে ॥ গোসাইর কন্যা ঘরে প্রবেশিল রঙ্গে * জৌসেন গোসাইর কন্যা রসে রসবতী ‘আরম্ভিল রস পাঠ সাহাজাদার প্রতি * শুনরে রসের ভোমর চাও মোর পাশে ॥ রঙ্গ রসে রস খেলা খেলি দুই জনে * নবীন যৌবন মোর রসে টল। ভোমর হইয়া লুটো রসের কমল * নুতন কমল কলি রহিছে বিকসি খাওরে ফুলের মধু ফুল মধ্যে বসি উঠিছে বুকেতে কুচ নয়া পদ্য কলি ৷ সুবর্ণেতে বানাইছে জেন ঢালের ফলী * জিনিয়া কটির মুখ দুই কুচের আলেতে ॥ ধরিলে যে গেন্দা মত লুকাইবে হাতে * উঠ উঠ প্রাণনাথ বস মোর কোলে ॥ দুই জনে করি খেলা রঙ্গ রসে মিলে * আমি মতি তুমি হীরা দোনই নূতন ॥ হীরার ভরেতে মতি করনা ছেদন * বোতলের মধু মোর টল টল করে । কাম রসের জোসে মধু উথলিয়া পড়ে * রসের বোতলের মুখে রস কাগ দিয়া ॥ দোন রসের মজা লেও রস মধু পিয়া * নুতন জৌবন আমার রসে টল২ ॥ মোর কোলে বসি কর আনন্দে মঙ্গল * তোমার রস খেলা আমার আনন্দ ভোজন ৷ তুমি চন্দ্র রাহু আমি লাগিবে গ্রহণ * কত রঙ্গে কহে করা সাহা নাহি ভুলে ৷৷ লেপটিয়া রসমূখী ধরে সাহার গলে * বুকে বুকে মিসি করে গালেতে চুম্বন ৷ তবুত ছয়ফলমুলুক না খোলে নয়ন* বড়ই নাটকি কব্জা কত নখরা জানে ॥ সাহাজাদার পিন্দনের বস্ত্ৰ খোলে টাইনে * হাসিতে হাসিতে কন্যা সয্যায় শুইল ৷ সাহা জাদারে তুলি আপন বুকেতে লইল* আপনা পিন্দনের বস্ত্র আপনে খুলিল ৷ গুপ্ত স্থানে সাহাজাদায় বসাইয়া দিল * দোন জাঙ্গে কসা কসি দোন হাতে খিচে ॥ উলটিয়া পড়ে সাহা পালঙ্গের নিচে * ভাবেন গোসাইর কন্যা করিব কেমন ৷ এমন কঠিন মন না দেখি কখন * শও শও বৎসরের বুড়া কটাক্ষে ভুলাই ৷ সাত বৎসরের শিশু পাগল বানাই * মণি ও মহন্ত তপস্বী বৈষ্টব সন্ন্যাসী দরবেশ ফকির আর খোদাই তরাসী * এসব ভুলাইতে পারি চক্ষেতে ঠারিয়া ॥ এই কঠিনে মোর পানে না চাহে ফিরিয়া * বিষম সঙ্কটে মোরে ঠেকাইল খোদায় ঘরে যাওা এ রঙা দোন হৈল দায় * এমন রূপের পুরুষ দেখিয়া নয়ানে ।। কেমনে যাইব ফিরে চিত্তে নাহি মানে * মধু মিশ্ৰি হৈতে মিষ্ট এহার মিলন । এইরূপ বিহনে আমার জিতাতে মরণ* এ বুলিয়া গোসাইর কন্যা কান্দিতে লাগিল ৷
যেরূপে পারিবে তারে মোহিনী লাগাও * এত শুনি নাটকিনী যত কছবদার । জেওর পোশাকে খুব করিয়া সিঙ্গার * পিন্দিল এমনি বস্ত্র অঙ্গ দেখা যায় ৷ রাস্তার দোন ধারে হৈল খাড়া পায় পায় * ছয়- ফল মুল্লুক আর ছায়াদ নেকনাম ॥ মা, বাপের কদমে দোন করিয়া ছালাম * বেছমেল্লা পড়িয়া রত্তানা হৈল দোন জন ৷ পাছে চলে লোক সবার কান্দন কাঞ্চন রাস্তায় দেখে সব দরজায় ॥ সাহা- জাদা ছায়াদ দোন চলে পায়২ * ছয়ফল মুল্লুকের রূপ দেখে কাঞ্চ নীরা ৷ মূৰ্চ্ছাঘাতে বেহুসিতে হৈল হোসহারা * ছয়ফল মূল কের তরে কি করে মোহিনী ৷ রূপেমগ্ন ধন্দখায় সকল কাঞ্চনী সবে বলে সাহা এই রূপের সাগর ॥ আমাদিগকে দেখে কেন ভুলিবে নাগর * তবুত জৌবনী বালা খাড়া দোন ধারে মুচকিয়া হাঁসি২ সাহাজাদার ঠারে * কোন২ বালা ধরে সাহাজাদার হাতে। টানিয়া বোলায় হাত আপন কুঁচেতে * কোন বালা কুচ খুলি সাহাজাদার বুকেতে । লাগাইয়া সামটিয়া ধরে দোন হাতে কোন বালা আপনার পিন্দনের কাপড় ৷ উঠাইয়া আখি ঠারে দেখায়ে চুতড় * কোন২ জুবতী ধরে সাহাজাদার মাঞ্জায় ৷ ইজারের বন্দ টাইনে খসাইতে চায় * কোন কোন বিনদিনা হাতে পাসরিয়া ॥ লটকেন বাদুড় মত গলেতে ধরিয়া * কোন কোন নাজনিরা হাঁসে ঘনে ঘনে ৷ টানা টানি করে ধরে জামার দাওনে * নাজ নখরা করে কর্ত কাঞ্চনী কাযেলী ॥ কার পানে সাহাজাদা না চায় আখি মেলি * ছির নিচা আখে পানি বহে ঝর ঝর ৷ দেখিয়া কাঞ্চনী সব হইল কাতর * কছবী কাঞ্চুনী মোরা কত ভঙ্গি জানি । তপস্বী দরবেশ কত ভুলাইয়া আনি* কটাক্ষে ভুলাইয়া দেই মনি মহন্তের মন ॥ বুঝি সাহা থাকের নহে কাষ্ঠের গড়ন * কাম রস লোভ নাহি সাহাজাদার গায় ।।
দেউনী বলে ওহে নাগর মুখ কেনে ফিরাও। রসের নাগরী আমি মোর পানে চাও * তুমি তো রসের নাগর আমি রসবতী ॥ তুমি আমি এক সাতে ভঞ্জিব ছুরতি * না হৈছে বিয়া মোর আমিত অবলা ৷ রঙ্গে রসে দুই জনে খেলি রতি খেলা * ছয়ফল মুলুকে শুনি বাত নাহি বলে ৷৷ দেওনী বলে তুমি মোরে ভাল না বাসিলে* ঠমক নাচন তুমি দেখিলে আমার ॥ কভু না ভুলিতে মোরে নরের কুমার * আমার নাচন দেইখে দেও ভুলে যায় ৷৷
পয়ার * নিরব হইল সবে নিদ্রায় বেভোল ॥ বদিউজ্জামাল হইল কামেতে পাগল * ধীরেং শয্যা হইতে উঠে বিনোদিনি সাহার রূপ দেখিতে চলে হইয়া উদাসিনি * কামেতে চঞ্চল অতি ফিরে পুষ্পবনে । কি করি কি করি বলি সদা উঠে মনে অর্দ্ধেক হাস্য মুখে কহ কথা আমার সহিত * বানু বলে আমি পরী তুমিত মানব। তোমার আমার প্রেম কভু না হয় সম্ভব * সাহাবাল পরীর বাদসা সেই মোর পিতা ৷ এই বাত শুনিলে তোমায় না রাখিবে জিতা * না জানি আমারে করে কত অপমান ॥ রাখে বা না রাখে জিতা আমার পরাণ * আর এক বাত বুরা আছে মনুষ্যের ॥ মানুষের পিরীতি কভু না হয় কাজের * মনুষ্যের পিরীতি কভু ওফা নাহি পায় ৷ সত্য ভঙ্গ করি পিছে দুর্গতি ঘটায় * কাম্বের পুরুষ এখন কামেতে মজিবা ৷ সুন্দর কামিনী পাইলে ফিরিয়া যাইবা * যুবাকালে পিরীতি করে ধরে হাত পায় ৷ যৌবন ফুরাইলে শেষে ফিরিয়া না চায় * পাইলা যতেক দুঃখ আমার কারণ ৷ এখনে ফিরিয়াঁ যাও পাইলা দরশন* জতেক চাতুরি তুমি করিলা আমারে ॥ ক্ষেমিন্ সকল দোষ ফিরে যাও ঘরে * জিয়নের আশা যদি থাকেন তোমার ।। তবেত আমার নাম নাহি লিও আর বানুর নিঠুর কথা সাহাজাদা শুনিয়া ৷ কান্দিয়া জমিনে পড়ে আছাড় খাইয়া * লোটন পায়রার মত গড়াগড়ি যায় ৷ শুনগো বদিউজ্জামাল ধরি তোর পায় * গলে ছুরি দিয়া মোর করি ডাল খুন ॥ একিবারে নিবি জাউক এ দুক্ষের আগুণ * এই মতে কহে সাহা কান্দিয়া বেহাল ৷৷ সাহাজাদার কান্দন দেখি আকুল জামাল * সাহাজাদার বিচ্ছেদ দেখি সাহাজাদী পরী । থুইলেন লোক লাজ এক ধার করি বদিউজ্জামাল পরী কামে উথলিয়া । সাহাজাদার গলে ধরি হাসিয়া২ * লেপটিয়া বুকে বুকে করেন মিলন ৷ মুখে মুখে লাগাইয়া আদরে চুম্বন * মুখে বুকে বুকে দোনই মিলিয়া । অঙ্গে অঙ্গে মিলি দোন রহিল মিলিয়া * কামাতুরা মতি অতি বিপরীত গতি ॥ পুরুষে কামিনী দেখে কামে হয় মতি * কামের সাগরে অতি তরঙ্গ দেখিয়া ॥ লাজেতে রহিল সাহা দুই আখি মুদিয়া * কভু নাহি জানে সাহা কাম রস রতি ॥ লাজে আখি মুন্দি রহে না ছাড়ে যুবতী দুধকে ছানিয়া যেমন তুলেছে মাখন বদিউজ্জামালের তনু মোলাম তেমন * বানুর আসনাইর বাস পাইয়া রসিক ৷ আখি মেলি সাহাজাদা চাহে চারি দিক * শরীর কম্পয় জোসে ধরকে পরাণ ॥ কি করিব কি করিব না সরে জবান * রস রতি ভঞ্জী যদি ধরিয়া এখন ॥ না জানি প্রাণেশ্বরী করেন কেমন * ছয়ফল মুলুকে মনে এমনি ভাবিয়া ॥ রাজি কি নারাজ বানু দেখি নিরক্ষীয়া * ধরিল বানুর কুচে প্ৰেম রস রসে ৷ সাহাজাদী রসমুখী মুচকিয়া দেখি খুশী পরে খুশী ॥ সরম ত্যাগিয়া হাসে * ছয়ফল মুলূক ধরে বুকে২ কসি * জড়া সাহাজাদা বানু দোন রসে * জড়ি ঘেসা খেসি ছিড়িল কাঞ্চলী ॥ মিলা মিলি * ভোমরায় মধু পান করে মন রসে। পিয়াসী পাইল পানি অনেক দিবসে * হারা ধন পাইল যেন অনেক বিচারি। তীরেতে শিকার যেন পাইল শীকারী * কাঙ্গালে পাইল যেন পরশ পাথৰ ৷ সোন কুইচ বদলে পাইল লাল জাত্তাহের * সারা দিন ভূকা যেন থাকি রোজাদার ! শামে পাইল গোস্ত রূটি করিতে এপ্তার * বাঘেতে পাইল যেমন গোস্ত হরিণের ৷ জোকেতে পাইল যেমন রক্ত মনুষ্যের * এই মতে সাহাজাদা খুশীতে ডুবায় ৷ বানুকে লইয়া কোলে তরঙ্গ খেলায় * বুকে২ মিশা মিশী কাম খেলা জোটে ৷ বানুর কমল ছাতি ধরে দোন মুটে যেমনে জড়াইয়া ধরে গাছ আর লতে ৷ সিঙ্গার নিকটে জোটে উড়াতে উড়াতে * কামের সাগরে জোসে উথলে দুই জন ৷ কি করিব কি করিব এই সে জপন * সাহাজাদা অতি রসে মাঙ্গে রস রতি ৷ নহে নহে বারে বারে বলেন যুবতী উহু উহু নহে নহে ছাড় ছাড় মোরে ৷ অবলা কুমারী আমি না ভঙ্গ আমারে * সর্বতায় সত্য ভঙ্গ না কর আমার ॥ নহে নহে বিনদিনী বলে বার বার * ছিছি সরমে মরি না ভক্ত আমারে ॥ দেখ দেখ মালেকা আসিল দেখ ফিরে * সাহাজাদা শুনি বাত চতুরদিকে চায় । আশে পাশে কেহুকে দেখিতে নাহি পায় * কেনেগো প্রিয়সি তুমি আমাকে ভাড়াও রস রতি দিয়া জান আমাকে বাচাও * চতুরদশ বৎসর যাবৎ লাগিছে পিয়াছ ৷৷ দেখাইয়া মিষ্ট পানি না কর নৈরাস * হাসে হাসে করে মানা রস বিনদিনা। নাকর নাকর পিয়া মোরে কলঙ্কিনী * বেসরম হইয়া যদি না ডর খোদাকে ৷ আখেরে সরমেন্দা হৈয়া যাইবে দোজখে * পরধারি বিষম কাম করা অনুচিত ৷ আমি কি বুঝাব নাথ আপনি পণ্ডিত * বিদ্যায় ফাজিল তুমি সব শাস্ত্ৰ জান ৷ তবে এমন মন্দ কর্ম্ম করিতে চাও কেন * তবু নাহি মানে সাহা কামের জ্বালায় ৷ অঞ্চলে উরাত অঙ্গ ঢাকেন কন্যায় * দোন হাতে ধরে বানু সাহাজা- দার পাও ৷৷ আজ তুমি ক্ষেম মোরে মোর মাথা খাও * নাকর কলঙ্ক পাপ না কর বদনাম ৷৷ সহজে সহজে পিয়া সাধ আপন কাম পাণ্ড ধরি বানু বলে আজি মোরে ছাড় ৷ পুরাইব মনের সাধ যত খাইতে পার * তুমিত পিয়াসি আমি মিষ্ট জল নদী ॥ খাইতে ফরান নাই জনম অবধি * তুমি রস কাগ আমি মধুর বোতল ৷৷ নয়া মধু বোতল ভরা করে টল টল * এখন বোতলের কাগ দিতে না উচিত । সহজেতে সাধ নাথ ধর্ম্মের পিরীত * পাপের পিরীতি কভু না হয় কাজের। ধর্ম্মের পিরীতি নহে জেন্দেগী বাহের * ছয়ফল মুল্লুক বলে বুঝেনা মোর মণ ৷ কাম জ্বালার আগুণেতে জলে হৈন খুন * বহুত দিনের পিয়াসা পানির ধারে গিয়া ভঙ্গ ত্রিপদী। রসে রস মতি, রসে সারা রাতি, রসে২ কহে বাত ৷ নাগরী নাগর, নাহতে অন্তর, পোহাইল রস রাত * বহুত দিবসে, অনেক অন্যেসে, পাইয়াছিল এক নিশি ৷ না পুরিল রস ভাঙ্গিল সে রস, দারুণ ফজর আসি * আহারে ফজর, কিলাভ তোর ভাঙ্গি রসিকের রস ॥ দয়া হিনা হইয়া, অবলা বধিয়া, পাইল কেমন জস * নাগর নাগরি, রসে আশা করি, কামে কামাতুরা অতি ৷ কোন শাস্ত্রে হিত, এমনি বিহিত, পোহাইতে এমন রাতি * আকুল কামিনী, নাজক বদনী, রসে করে টল টল ॥ অতি মনদুক্ষে, কহিল রবিকে, চক্ষের পুড়িয়া জল *
বদিউজ্জামাল যেথা করেন সাজন। অল্প অল্প লিখি সে সাজের বিবরণ * আনিয়া গোলাব পানি
করায় গোছল ৷ সোণার পুতলা যেছা করেঝলমল * গোছল দেলাইয়া বসায় কুরছির উপরে ৷ সোণার চিরনী দিয়া মাথায় চুল আচড়ে * মাথার চিরনী করে মালেকার জননী । থরে থরে সিতা পার্টি করিল চিরনা * বান্দিল বিনট খোপা বেউনি লোটন ৷ সো- নার তারে জাদ ঝোপা মানিকের লটকন * কপালে মানিক পার্টি বিচ্ছে মতি ৷ অন্ধকার রাত্র যেয়ছ। বিজলির জ্যোতি * হাতেতে সোণার চুড়ি আগেতে কাঙ্গন ৷ বাক বাজুবন্দ তার মতির লটকন কান পরে কর্ণ ফুল গলে মতি হার ৷ পায় বাক গোল খাড় পাও জেব সোণার * কমরেতে চন্দ্রহার নাকে বোল বোলা ৷ বিচে ছনি দানা লাল জরদ কালা * কপালে বসায় দানা আতা ও কাজলে ॥ বিচে ছফেদা তারায় মত জ্বলে * নয়ানে কাজল রেখি যেমন কামান ৷ দেখিলে রসিক লোকে হারায় জ্ঞান * দত্ত আনারের দানা তার বিচে মিশি॥ হাসিলে চমক যেছা অন্ধকারের শশী * নাকেতে বোলাক ঝুলে লহরে গাঁথা মতি ঝোপা বন্দি জ্বলে যেমন জুনি পোকের জ্যোতি * নাক উপর সোণার ফুল মধ্যে টোপ মতি ভোর রাত্রে তারা মত টলটল জ্যোতি * খিন্ন মাজা বাজু দোন বেলন মতন ॥ পাও জানু অতি খুবি চলন খঞ্জন * বুক মাঝে ছাতি দোন জিনিয়া আনার | কুন্দে বানাইছে যেমন ঢেপুয়া সোণার * কুচের আগে কলি দোন যিনি লঙ্গ ফুল ৷ কুন্দি করি বানাইছে হাত পায়ের আঙ্গুল * সোণার পুতুলা যেন শরীর গঠন ॥ তার মত না হইবে আলমাছ কাঞ্চন * যে ছুরত দিয়াছে আল্লা বদিউজ্জামালেরে যেয়াদা রূপ কি বাড়িবে এছার জেওরে * রাগ সিন্দরা ছুটকি ৷ জৌবন সমপুর্ন, মধু রস মন, চলিল হালি ঢুলি ॥ কামে রস মন, কামে উচাটন, রসে রঙ্গে যায় চাল * রতির আসাসে, প্রেমের আবেশে, চলিল সাহাজাদার পাশে ৷ চলে ধিরে পায় খঞ্জনে বাড়ায়, যুবতির আসে পাশে * মুখ পুন্নি শশী, মন্দ মন্দ হাঁসি, বচন মধুর ধারা ৷৷ নয়ানে কাজল, কপালে হিঙ্গল, মাঝে দুই আখি তারা * রঙ্গের জেওর, রঙ্গিন কাপড়, বুকে ডালিম্ব সোভে ৷ খোস বাস বিকসে মধু পিবার আসে, ঘুমে ভোমরা লোভে * আন্ধারেতে ধুপ, হেন অপরূপ, ভাবকে দেখিয়াছে ৷ যে দেখে যে শুনে, ধন্দ লাগে মনে, ভেকা চেকা হইয়াছে *
পয়ার । পরিছে মিহিন বস্ত্ৰ অঙ্গ দেখা যার ॥ লিলুয়া বাতাসে বস্ত্র হিলায় উড়ায় * হাটিতে বুকের ছাতি করে থর থর ৷ হিলিয়া ঢুলিয়া যায় রাসকিনী চোর * ক্ষিণ মাজা জেওরে কাপড়ে এত সোর্ভে ॥ থাকুক মনুষ্যের মন মুনি ভুলে লোভে * যার পানে চায় বানু ফিরাই নয়ন সেই দিকে লোকে যেন কাড়ে লয় প্রাণ * যে দেখে মাতওাল মত পড়েন ঘুমিয়া || চেতন পাইলে থাকে ভেকা মত হইয়া * হুস আকল নাহি থাকে যেন নিশাখোর ॥ মুখের বচন শুনি হয় কামাতুর * যেই দেখে সেই লোকে হায়২ করে ৷৷ মুখে নাহি কহে কিছু হাকিমের ভরে সাজিয়া সুন্দরীগণ চলে সাথে সাথে ৷ চন্দ্ৰ সোভা তারা যেয়ছা সোভে চারি ভিতে * বাহু সাহাজাদা রঙ্গে রঙ্গে হাসে । নিদ্রা নাহি গেল কেহ খুশীর আবেসে * মালেকার রঙ্গ মতি দোহার মিলনে ৷ সর্বাঙ্গে হাসেন কন্যা স্বরস বদনে * মালেকায় জামালেরে কোলেতে করিয়া ৷ সাহাজাদার কোলে নিয়া দিল বসাইয়া হাসিয়া মালেকা বানু ছাপাইল কোনে ৷ লজ্যা ভঙ্গি অতি রসে হাসে দুই জনে * জামাল সাহার গলা ধরে দৃড় করি । চাতকির মত লটকে দোন জড়াজড়ি * লাজ সঙ্ঘ। পলাইল দোন কামাতুর ॥ নিশ্বাসেতে মধু পান করে মধুকর * মুখেই চুমে দোন ধরে গলা গলি ৷ পায়রা পাইরি যেমন মুখে বাটে লালি * খান৷ পূর্বে আগে লোক মুখে দেয় নুন ৷ রতি পূর্ব্বে অতি মজা মুখেতে চুম্বন * জুবক জুবতি তারা ভজিল দুজনে ॥ রস রতি খেলা মজা কড়ু নাহি জানে * ভঞ্জনেতে কি লজ্জত দোহে নাহি বুঝে ৷ নাহি ভঞ্জে দেহে চক্ষু সরম লাজে * চমকি চমকি প্রাণ অঙ্গ থর থর দোহার রজমলেতে দোহার বস্ত্র তর * ক্ষণেক সাহাজাদা ধরে বানুর, কাপড় ৷ টানিয়া থোসাই ফেলায় করে বে বস্তুর জামালে সাহায় কাপড় টানিয়া খোসার রঙ্গে ঢঙ্গে সাহ। বানু চাতুরি খেলায় * বিনদিনী কোলে করি সাহাজাদা বসে ৷ সাহাজাদার কোলে বসে বিনদিনী হাসে * গোত্তাইল সেই নিশি এমত রঙ্গেতে।
বারমাসি বর্ণন ৷ বৈশাখ মাসেতে ফুল ফুট নানারসি ॥ ভোম- রায় খায় মধু ফুল মাঝে বসি * ভোমরায় গুণগুণে দগধে পরাণ ৷ আমার ফুলের মধু কে করিবে পান * জৈষ্ঠ মাসে অম্রফল সব লোকে খায়৷৷ নারীয়ে চিপড়ি দেয় পতির পানরায় * পতিকে করিয়া তুষ্ট নারীয়ে খাইব ৷৷ পতি বিনে কারে আম চিপড়িয়া দিব * আষাঢ় মাসেতে হয় ঘন বরিশন ॥ ঘোর অন্ধকার হয় বিজলি গৰ্জ্জন * প্রাণ থর থর করে বিজলি গড়গড়ে ৷ পতি যার ঘরে আছে জড়া ইয়া ধরে * আমি অভাগীনি নারী পতি নাই ঘরে ॥ জড়াইয়া ধরিব আমি কাহার কমরে * শ্রাবন মাসেতে পানি উথলে সাগরে ৷ খাল নালা চলাচল জোওয়ারের তড়ে অভাগীর যৌবন জোয়ার হইল কেমন ৷ পতি বিনে সে জোওয়ার না হবে বারণ * ভাদ্র মাসেতে হয় পানির স্বরবর । আনন্দে চালায় রথী সাউদ সদাগর * আমার যৌবন নদী কেবা দিবে পাড়ি । পতি বিনে কে হইবে যৌবনের বেপারি * আশ্বিন মাসেতে হয় বরিষার শেষ । কি করিব কর্ম ফল পতি নাহি দেশ * হৈব আমি অভাগীনি আশ্বিন মতন ৷ ফুলে না বসিল অলি থাকিতে যৌবন * কাৰ্ত্তিক মাসেতে হয় হাতী সিরে মতি ৷ ধান্য আদি শস্য যত হয় গরভবতী * ভাগ্যগুণে কেহ ধান্য কেহু পায় মতি ৷৷ আমি অভাগীর হইল সমূলে ক্ষেয়াতি * অগ্রাণ মাসেতে হয় অধিক উল্লাস ৷ নিত্তিনিত্তি নয়া নুতন ভোজন অভি লাস * নারী পুরুষ অতি রঙ্গ নূতন ভোজন ৷ আমি অভাগীর অঙ্গ অনলে দাহন * পৌষ মাসেতে হয় হেমন্তের ঝড়। জাহার তাড়নে লোক অধিক কাতর * নারী পুরুষ জোটে সোয় জারে কিধা করে ৷৷ অভাগীনি জারে মরি পতি নাই ঘরে * মাঘের জারে বাঘের অঙ্গ কাপে থর২ ৷৷ পতির বুকে যেই নারী সোয় একাত্তর * শীত জার কিছু নাহি সেই নারীর অঙ্গে ॥ অভাগীনি মরি জারে পতি নাহি সঙ্গে ফাল্গুনে বসন্ত বাও কুহরে কুকিলে ॥ নারীর শরীর দহে বিচ্ছেদ অনলে * যার পতি ঘরে আছে নিবাহে অনল ৷ অভাগীর পতি নাই কে ঢালিবে জল * চৈত্র মাসেতে বড় ধুপের তাড়ুন । ছটফট করে অঙ্গ জালায় দাহন * যার পতি ঘরে আছে শীতল সে নারী ৷৷ পতি বিনে অভাগীনি জ্বলে পুরে মরি * প্রতি স্থানে নাচে ঢঙ্গে নাজ সাজ করি * নানা অলঙ্কার পরি পরী আফজার। রাজা সবের খেদমতে হাজের সব নারী * পরী সব সুন্দরী শুভের চাতুর কাম ভাবের কামিনী কামের কামাতুর * কাঞ্চলী উড়িল গায় খাড়া মন রসে ॥ চলে ঠারে লাজ করে মন্দাহ হাঁসে * রাজা সরে সমুক্ষে করএ নানা খেলি । কেহ কার অঙ্গেতে আবির মারে মেলি * গোলাব ছিটায় কেহ উপরে কাহার কেহ কার গলে দেয় কুসুমের হার * কেহ কার মুখেতে তাম্বুলে দেয় তুলি । কেহ রসেতে করয় কোলা কোলি * কেহ কারে ঠেলিয়া ফেলায় কার কাছে ! কেহ কারে ঠারিয়া যৌবন ঢাকি আছে * : কোন সখী ঢলিয়া পড়েন কার গায় । কেহ কার চুলে ধরি টানিয়! ফেলায় * কেহকার কাঞ্চলী খোসায় টানদিয়া ॥ অঙ্গে অঙ্গে ঘো ঘেসি সরব ত্যাগিয়া * কেহ ঘরের এ দ্বীপ নিবার নানা ছলে। কুচে হতা খেপে কেহ চুম্বি লয় কোলে * কালী ছাড়িয়া কার কুচে নোখের রেখা । দশ নোকের আচড় বদনে যায় দেখা ঝাকা ঝাকি কাহার ছিড়িল গলার হার টানাটানি কেহুর খুলিল কেশ ভার * কেহ শীঘ্র করি চেরাগ জ্বালায় ৷ কেহ কামে মত্ত হইয়া নিবায় ফেলায় কামের নিকটে নাহি লজ্জার বসতি ৷ কোথায় রয় গুরু গরুবিত যথা বসতি এই মত ছয় মাস আছিল কৌতুকে পয়ার * কন্যাকে সাজাই রাখি মহল বিচেতে৷ চলিল যুবতী সব দুলা গোছল দিতে * একে নব যৌবন কাম সাজ করি ॥ গোছল দৈলাইতে সবে চলে দৌড়াদৌড়ি * একেত বিহার কর্ম্ম অতি আন- ন্দিত ॥ পরী যুবতী সব কামেতে মোহিত * দেখিতে দুলার রূপ সাদ সবের মনে ৷৷ পূর্বে হৈতে সবের মনে আসক দ্বিগুণে * নড়া- লড়ি গেল সবে সাহাজাদার পাস। নৃত্য গীতে রঙ্গে ঢঙ্গে বড়ই উল্লাস * কামের কামনা সাজ কামিনী সকলে ৷ রতি রসে কাম আসে চলে কৌতুহলে * গুরু গরবতি নাহি সব এক মতি ৷ বৃদ্ধা তরুনা কিবা কুলবতী সতী * কিবা বালা কিবা বুড়া কিবা ইয়া নারী । লাজ সরম ছাড়িয়া সকলি হুড়া হুড়ী * দুরে থাকি কাম ভাব হৈল সবের মনে ৷ নিকটে পাইয়া চিত্তে নিষেধ না মানে * খোস বাস গোলাব পানি কলসীতে ভার ৷ সাহাজাদার নিকটে গেলেন যত নারী * সুবর্ণের খাট রাখিয়া একস্থানে ৷ বাহের আনিতে দুলা চলে রঙ্গ মনে * দেখিয়া সাহার রূপ সবে রঙ্গ মন ৷ হইল সরে চিত্তে ভেটিতে জৈবন * একচুলা নারীগণ ঘিরে শতে শতে ৷৷ নাহি আটে একস্থানে ধরিব কিমতে * একদুলা শত নারী কেমনে পাবে লাগ৷৷ কোন কোন জুবতী মনেতে করে রাগ * যেই ছুয় সেই নারী মনে হয় খুশী । এক পিয়াল। সরবত বহুত পিয়াসী * একেরে ঠেলিয়া একে দুরেতে ফেলায় ৷ হুড়াহুড়ি করি ভের ঘুরে ২ যায় * একেরে টানিয়া ফেলাই আর জনে আনে ৷ সকলেতে হুড়া হুড়ি কামাতুরা মনে গোপ্তের কামনা ব্যাক্ত হইল সবার লোক লাজ গুরু ভয় নারহিল কার * কামরতি রস ভাবে সব টানা টানি ৷ সবার মনের ভেদ হৈল জানাজানি * দুলার বদনে হাত ছুয়ে যে জুবতী ৷ রজমল উথলিয়া হয় রসবতী * শাশুড়ি সহিত বধু ভাঙ্গে রজমল ৷ মা, বেটি রতিবাত কাযেতে পাগল * শাশুড়ি ঠেলিয়া বন্ধু চাহে যে ভঙ্গিতে ॥ মা, ঠেলে বেটি চাহে জাতি মজাইতে টল২ নারীগণ দেখিয়া নাগর। রক্তমলে তর সবের পিন্দনের কাপড় * কাযে কামাতুরা হৈয়া বেছসেতে পড়ে ৷ পিন্দনের কাপড় খসেগিরে আছে দুরে * লণ্ড ভণ্ড বেহুসেতে রমণী বেবাক ॥ রজমলে বহি বাহি জাগা হইছে নাপাক * এইমতে নারীসব হৈয়াছে আকুলি ॥
সাহাজাদাকে লিয়া গেল জামালের ডেরা * রঙ্গরসে জুবতীরা নাচে গায় ঢঙ্গে ৷৷ দিন কাটে বিনদিরা এইমত রঙ্গে * দিন গেল সন্ধ্যা হইল রাত্রের আমলে ॥ সাহা বানু ঘরে রাখি কামিনী সকলে ‘* হাতে হাতে টিপা টিপি চক্ষেতে ঠারন । জুবক জুবতী দোন কামে উচাটন * ছবর ভানু তাফাত করিল সবাদেরে । ঘরের দরতাজ। বান্ধি সকল বাহিরে * নিরালা মন্দির পাই নাগর নাগরী ॥ কাম রসে জলে দোন হইল জড়া জড়ি * আসিলেন রসমুখী করি কাম সাজ ৷ রতি রসে হইল কুশস্ব সয্যা মাঝ * কামিনী কামনা সাজ দেখিয়া নাগরে ৷৷ খিদা রতি খাইতে ভাত চাহে দোন করে * কাম রসের ভোমরা মাঙ্গেন রসবতি। লোক লাজে নহে। বলেন জুবতী কামাতুরা সাহা অতি কামিনী লজ্জিত ॥ বাহিরেতে সখীগণ হাসিয়া মো.হত * বহুকালের পিয়াসা ছামনে মিঠা পানি ৷৷ নিষেধ না মানে চিত্তে ধরাবে কেমনি * এই মতে কহি কহি হাসে সব সখী সাহাজাদার কানে কানে কহে চন্দ্ৰমুখী * ক্ষেমহ জাবত ঘরে যায় সখীগণ ॥ সহজেতে খাও খানা করিয়া রন্দন * কামাতুরা সাহা অতি ধরে বানুর গলে । উহু উহু নহে নহে বিনদিনী বলে *কোন দিন নাহি জানে রতি কারে কয় । সরঘেতে সাহাজাদী চক্ষু-মুন্দি রয় * বাহিরেতে চতুরভিতে হাঁসে সব পরী। সাহাজানা আকুল বড় লজ্জিত সুন্দরী ক্ষেনে বাহু ধরিয়া তুলিয়া লয় কোলে ॥ ক্ষেনে- কুচে দোন হাতে ধরে কৌতুহলে * ক্ষনেক পিন্দন বস্ত্র চাহে খসাইতে ৷ ক্ষেনেক বাড়ায় হাতি গুপ্তস্থান ভিতে * কামাতুর অত্যন্ত দেখিয়া দুই জনে ॥ লাজ সম্বরী ঘরে গেল যত সখী গণে, হাতে টিপা টিপি করি ঠারা ঠারি ! হাঁসিতে২ ঘরে গেল যত নারী নীরব নিরালা যদি হইল মন্দির ॥ ফুটিল কমল কলি ভোমরা অস্থির * নাহি জানে রতি কারে কয় । সরমেতে সাহাজাদী চক্ষু-মুন্দি রয় * বাহিরেতে চতুরভিতে হাঁসে সব পরী। সাহাজানা আকুল বড় লজ্জিত সুন্দরী ক্ষেনে বাহু ধরিয়া তুলিয়া লয় কোলে ॥ ক্ষেনে কুচে দোন হাতে ধরে কৌতুহলে * ক্ষনেক পিন্দন বস্ত্ৰ চাহে খসাইতে | ক্ষেনেক বাড়ায় হাতি গুপ্তস্থান ভিতে * কামাতুর অত্যন্ত দেখিয়া দুই জনে ৷৷ লাজ সম্বরী ঘরে গেল যত সখী গণে হাতে২ টিপা টিপি করি ঠারা ঠারি ॥ হাঁসিতে২ ঘরে গেল যত নারী * নীরব নিরালা যদি হইল মন্দির ॥ ফুটিল কমল কলি ভোমরা অস্থির * মধু ত্রিপদী প্রদীপ পতঙ্গে দেখি, হইয়া প্রেমের সুখী, ঝাপিছ পড়ে তরঙ্গেতে * বিকসে ফুলের কলি, রহিতে না পারে অলি, লোভে বসেন ফলেতে * দোন কাম রসে তর, খোলে দোন দপ্তর, মাতিলেন দোন রস খেলা ৷৷ কাঁপিয়া দোহার অঙ্গ, লাগিল সঙ্গিনীর সঙ্গ, নিভায় দোহার কাম জ্বালা * ঘুঙ্গুরের বান২, বাজিছে ঘন ঘন, কাঙ্গন বালার কেনে২ ৷৷ পিয়ার কানে মুখ রাখি, চুপে কহে চন্দ্রমুখী শুনিলে হাঁসিবে সখীগণে * সাহা কহে প্রিয়সী সাতে, কে জানিবে এত রাতে, লাজ সঙ্ঘা ছাড় প্রিয়সি ৷৷ আজুকার পিরিতি যেমন, আর না পাইবা তেমন, বড় মজা আকার খুসী * ক্ষেনে কুচে কমলে, দোন হাতে ঘনে মলে, মুখে গলে ভূমে ঘন২ ৷৷ নয়া মতি পরিজাদী সাহাজাদা নয়া খরাদি, হীরার ভরে করিল ছেদন * ক্ষণে২ কোলে বয়, বসে দোন মজা লয়, ক্ষণেই বিছানে শুইয়া ৷ ঘামিল দোহার অঙ্গ, তবু নাহি ছাড়ে সঙ্গ, মুখে২ রহিল মিসিয়া * যত সুখ সেই সমে, লেখিতে নারি কলমে, রসিকেরা বুঝ ইসারেতে। দোনের দোনে লিল, দোহে দোহার মজা পাইল, রঙ্গেঢঙ্গে নিন্দ নাহি রাতে * দুই জনে এই মতে, শ্রম করে আনন্দেতে, কসা কসি ধরে বাহু২ ৷৷ যেন পূর্ণিমাসী চান্দ, ধরিল পাতিয়া ফান্দ, গ্রহণ করিল যেন রাহু * পয়ার ॥ : এইমতে রস খেলা জুবক জুবতী ॥ শ্রম করি নিন্দে যে চাপিল শেষ রাতি * রাত্র প্রভাত কুকিলা ফুকারে ॥ সাহাজাদা জাগিয়া গেলেন স্বরবরে * রাত্রে বিহার শ্রম অতিশয় করি ৷ নিদ্ৰায় বেভর শুয়ে আছেন সুন্দরী * ছবরভানু বুড়ি ঘরে উকিদিয়া চায় । বেবস্ত্র বদিউজ্জামাল গুয়ে নিদ্ৰা যায় * এসনের নাম নাহি জামালের অঙ্গে । খসিয়া মাথার চুল লোটায় পালঙ্গে * বিছানাতে ছিতরিছে ছিড়ি গলার হার ৷ ঠাই ছাড়া হইয়াছে যত অলঙ্কার * টেড়া যেকা হইয়াছে নাকের বেসর ৷ রজমলে ঘামে তর পিন্দনের বস্তুর * ভানু মত দুই চক্ষে কাজল আছিল ৷ পাসরিয়া কালী মুখ হইয়াছে কাল * মেসির লাগি দুই ঠোঁটে আছিল বাহার | কিছু চিন্ন নাহি তার ঠো- টের মাঝার * গালেতে বসিছে দাগ বত্রিশ দণ্ডের ॥ দুই কুচ পরে দাগ আচড় নোখের * দেখিয়া ছব্রভানু হাঁসি খুসী মন ॥ হাতে ধরি জামালেরে করিল চেতন * বুঝিগো জামাল আজি পিয়ার পাঠশালে আপনার নিজ পুস্তক খুলে দেখাইলে * সাহাজাদা শুনে বাত মুচ কিয়া হাঁসে ৷৷ কহে এখন উঠি ভাঙ্গে নিন্দের আলিসে * লঘু ত্রিপদী * বসিল জামাল, হইয়া খোসাল, পিন্দেন কাপড় ঝাড়ি । দোহার মলরজে, বস্ত্র গেছে ভিজে, দেখে হাসে যত পরী * সবে হাঁসি বলে, পিয়ার পাঠশালে, নুতন পাঠ পড়িছে ৷ রান্ধন ভোজন, না জানে কখন, নয়া মুতন শিখিছে * হাতেতে ইসারে, চক্ষে চক্ষে ঠারে, হাঁসি হাসি জুবতিরা ॥ পিয়ার রসে, অঙ্গ অলসে সঙ্গ সঙ্কনির ধারা * খসিয়া লোটন, চুল আউলন, মুখ কালা কাজলে ৷ গলার হার ছিড়ে, বিছানে ছিতরে, কত পালঙ্গের তলে * জতেক গহেনা, আছিল পরনা, ঠাই ছাড়া হইছে ৷ নথ ছিল নাকে, চুম চুমি মুখে, টেরা বেকা হইছে * গালে দাগ দত্তের, কুচে দাগ নোকের, বদন লহুর বরন । দেখি সখাগণ, হাসি হাসি কন, রঙ্গ চাতুরি বচন *