চুক্তি – ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায়

›› সম্পুর্ণ গল্প  

এই যে ম্যাডাম, কী খবর? খুব টায়ার্ড?”
……
‘কী হল? কিছু বলাে।’
‘কথা বলতে ভাল্লাগছে না।’
‘ভাল্লাগছে না! শরীর খারাপ?’
‘না’
‘তবে? আজকের দিনে আমার সঙ্গে কথা বলতে তােমার ভালাে লাগছে না? তােমার কী হয়েছে বলাে তাে?’
‘এখনও কিছু হয়নি। কথা বললেই হবে। কথা থেকে শুরু হয়ে পরপর সব লাইন দিয়ে হয়ে চলবে।’
‘আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।’
‘না বােঝাই ভালাে।’
‘স্ট্রেঞ্জ! অদ্ভুত। সােনা, আজকের দিনটা তাে বারবার আসবে না। জীবনে ওনলি ফর ওয়ানস। এই দিনটা, মানে রাতটাতে তুমি বালিশে মুখ গুজে পড়ে থাকছ।’
‘ওনলি ফর ওয়ানস কেন?”
‘কী বলছ? ফুলশয্যা কি বারবার হয়? নাকি আমরা বারবার বিয়ে করব?’
‘ফুলশয্যা ব্যাপারটাই বেশ বাজে। যদি তিনশাে পঁয়ষট্টি দিন একসঙ্গে থাকি, তবে রােজই ফুলশয্যা হতে পারে।’
‘আহা! সে তাে হবেই। কিন্তু আজকের রাতটা তাই বলে… তােমায় এবাড়ির কেউ কিছু উলটোসিধে বলেছে নাকি?’ ‘না। তেমন ঘটার কোনও কারণ নেই।’
‘তবে? ধুত্তেরি! বুঝেছি। আমার সঙ্গে মজা করা হচ্ছে! দাঁড়াও! তােমার মুখ গুঁজে থাকা আমি বার করছি। একটা টান—’
‘খবর্দার! গায়ে হাত দিলেই চিৎকার করব।
‘চিৎকার করবে? অ্যা!..কেন? কী করেছি?’
‘এখনও কিছু করা হয়নি। কিন্তু করার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। একটু আলগা দিলেই…প্রথমে দুচারটে মিষ্টি কথা…তারপর জড়িয়ে ধরে…উ:! ভাবতেই শিউরে উঠছি।’
‘শিউরে উঠছ? এই স্বাভাবিক ব্যাপারটাতে? ফুলশয্যার মধুরাতে স্বামী-স্ত্রী করবেটা কী? আদর না করে ঝগড়া করবে?
‘সেটাই ভালাে। ইনফ্যাক্ট, আমি ঝগড়া করতেই তৈরি আছি।’
‘ঝগড়া করবে? আশ্চর্য! তােমার সঙ্গে গত দু-মাস ধরে ফোনে বকবক করে হাজার ডলার উড়িয়ে দিলাম, স্কাইপে চ্যাটিং করলাম, একটা কড়া কথাও তাে বলাে নি!’
‘বলিনি। তার কারণ, তাহলে পাখি খাঁচা ছেড়ে পালিয়ে যেত। সত্যি কথাটা বলার জন্যে আমি মনে-মনে আজকের রাতটা বেছে রেখেছিলাম।’
‘ওহ মাই গড! তুমি তাে ডেঞ্জারাস মেয়ে। ঠিক আছে! বলাে, শুনি তােমার ঝগড়ার কথা। আমায় তােমার পছন্দ হয়নি, তাই তাে? সেটা আগে বললেই পারতে।’
‘বলব কেন? মােটেই অপছন্দ হয়নি। এমন কার্তিকের মতাে চেহারা, লেখাপড়াও অনেক দূর পর্যন্ত, না পছন্দ হওয়ার কি কোনও কারণ আছে?
‘তবে? আমার আগের প্রেম? আগেই কিন্তু তােমায় আমি বলে দিয়েছিলাম, স্টেটসে গিয়ে পিএইচডি করার সময়ে সিলভেস্তা নামে একটা স্প্যানিশ মেয়ের প্রেমে পড়ে গেছিলাম। মেয়েটা বেশ ভালােও ছিল। কিন্তু ওর সঙ্গে ক’মাস ডেটিং করার পরে দেখলাম, ইন লং রান, ব্যাপারটা ক্লিক করবে না। তখন সরে এসেছি।’
‘জানি।’
‘আমি তােমায় এটাও পষ্ট জানিয়েছি, সিলভেস্তার সঙ্গে ফিজিক্যালি অনেকটাই আমি এগিয়ে গেছিলাম। তবে হ্যাঁ, সিলভেস্তা ওদেশের তুলনায় কনজারভেটিভ ছিল। ওর মা ইন্ডিয়ান। আমাদের ফিজিক্যাল ইনভলবমেন্ট আলটিমেট এন্ড পর্যন্ত পৌঁছােয়নি। সেই অর্থে, আমি এতদিন স্টেটসে থেকেও কনফার্মড ব্যাচেলার।’
ওসব নিয়ে আমি দারড নই। যদি পাস্ট কোনও ইনসিডেন্স থেকেও থাকে, পাস্ট ইজ পাস্ট। আমার কলেজ লাইফেও টুকটাক এসব ঘটেছে। ঘটতেই পারে।’
“তবে? আর কী করেছি আমি? দোষটা কোথায় আমার?’
‘প্রােষিতভর্তৃকা মানেটা কি জানা আছে?
‘ক-কী বললে? কী ভর্তৃকা? শব্দটা, আই মিন ওয়ার্ডটা খুব চেনা-চেনা লাগছে। মনে হয়, ছােটবেলায় পড়েছি। বাট আয়াম স্যরি, বুঝতে পারছি না।’
‘বা:! মাতৃভাষা বােঝা যাচ্ছে না! না পারলে বাংলা ডিকশনারি দেখে নেওয়া হােক।’
‘কী বলছ? ফুলশয্যার রাতে বাইরে বেরিয়ে আমি ভাইপাের ঘরে গিয়ে ডিকশনারি খুঁজব? প্লিজ সুইটি!’
‘আমার নাম কোয়েলি, সুইটি নয়।
‘জানি, জানি। কিন্তু নিজের বউকে আদর করে সুইটি ডাকতে পারব না?’
‘উচিত নয়। কারণ, এটা এখনও কনফার্মড নয়, সে সুইটি না সলটি না বিটার। ঠিক আছে, মানেটা বলে দিচ্ছি। এই ফাস্ট, এই লাস্ট। এরপর বাংলা অভিধান কনসাল্ট করতে হবে। রাজি?’
‘রাজি।’
‘প্রােষিতভর্তৃকা মানে হল যে স্ত্রীর স্বামী প্রবাসে অর্থাৎ বাইরে থাকে। আমি প্রােষিতভর্তৃকার জীবনযাপন করতে রাজি নই।’
‘কেন তােমায়, ওই কী বলে, প্র-পােষিতভর্তৃকার জীবন কাটাতে হবে? আমি তাে সব ব্যবস্থা করে ফেলেছি। আমি পনেরােদিন পরে ফিরে যাব। গিয়ে ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট সহ তােমায় স্পনসরশিপ পাঠিয়ে দেব। ব্যস, তুমি তিনমাসের মধ্যে স্টেটসে চলে আসবে আমার কাছে।’
‘এত সােজা? গড়গড় করে বলে গেলেই হল? এই রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের কোনও ভ্যালু আছে আমেরিকায়? ওখানে গিয়ে এটাকে, আবার নােটারি পাবলিককে দিয়ে এনডাের্সর্ড করতে হবে, সেটা জানা নেই?’
‘জানি। ওটা কোনও প্রবলেম নয়। এজেন্টের সঙ্গে কথা বলে এসেছি। সার্টিফিকেটটা নিয়ে গেলেই ওরা করিয়ে দেবে।’
‘হ্যাঁ-অ্যাঁ! গেলেই করিয়ে দেবে। পেন উঁচিয়ে বসে আছে করে দেওয়ার জন্যে! তাহলে আমার বেচারি টিনামাসিকে পাক্কা দেড় বছর বসে থাকতে হয়েছিল কেন?’
‘টিনা মাসি? তিনি কে?’
‘কে আবার! মায়ের খুড়তুতাে বােন। আমার মাসি। সঞ্জয় মেসাে এল, বিয়ে করল। হানিমুনে গেল দিঘায়। তারপর ম্যারেজ সার্টিফিকেট নিয়ে চলে গেল। স্পনসর পাঠাল। কিন্তু তাতে কী? আমেরিকার ভিসা কিছুতেই পাচ্ছে না। বলে কিনা, এদেশের বিয়ে ওদেশে বৈধ নয়।’
‘তাই নাকি? তারপর?’
‘তারপর…উঃ! টিনামাসির কী কষ্ট। বাবা-মা থাকে বহরমপুরে, সে কলকাতায় ওয়ার্কিং গার্লস হস্টেলে। মেসাে ডলার পাঠায়, তাতে তার খরচ চলে।’
‘সঞ্জয় মেসাে বােধহয় গ্রিন কার্ড হােল্ডার ছিলেন না!’
‘কে বলল? পনেরাে বছর স্টেটস-এ সফটওয়্যার এঞ্জিনিয়ার, তার গ্রিন কার্ড থাকবে ? মেসাে তখন বুদ্ধি খাটিয়ে কোম্পানিকে বলে কানাডার টরন্টোতে ট্রানসফার নিল। সেখানে ছ’মাস কাটিয়ে নতুন করে কানাডা থেকে মাসির স্পনসর পাঠাল। কানাডার হাই কমিশন আমেরিকানদের মতাে অত নিষ্ঠুর নয়। তারা তিন মাসের মধ্যে ভিসা গ্র্যান্ট করল। তারপর টিনা মাসি প্লেনে উঠল। বেচারি! সেই যে আটবছর আগে গেল, আজ পর্যন্ত একবারও দেশে আসতে পারেনি।’
‘আসতে পারেনি?’
‘আজ্ঞে হ্যাঁ। এখন স্টেটসের গ্রিন কার্ড পায়নি। কারণ মেসাের সঙ্গে তাকে প্রায় সাতবছর কানাডায় থাকতে হয়েছিল। কোম্পানি তাে মেসাের খেয়ালখুশিমতাে আমেরিকা কানাডা-আমেরিকা ট্রান্সফার দেবে না! এইবার কানাডা থেকে যখন বছরখানেক আগে স্টেটসে ঢুকতে যাচ্ছিল, স্টেটস মেসােকে অ্যালাও করে দিল। মাসি আর তার ছােট্ট মেয়েটাকে কিছুতেই ইমিগ্রেসন দিচ্ছিল না। শেষে প্রায় বে-আইনিভাবে লুকিয়ে-চুরিয়ে ওরা নায়াগ্রা বর্ডার ক্রস করে ঢােকে। সে কী বিশ্রী আর ভয়ংকর ব্যাপার। মাসির কাছে ফোনে সব শুনে আমার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেছে। স্টেটসে পৌঁছে সঞ্জয় মেসাে। টিনামাসিকে ফের ওদেশিয় মতে বিয়ে করল, নিজের বাচ্চাকে অ্যাডপ্ট করল। সবে ছ’মাস হল পুরাে প্রসেসটা লিগালাইজড হয়েছে। মাসি গ্রিন কার্ডের জন্যে ভেরি রিসেন্টলি অ্যাপ্লাই করেছে। গ্রিন কার্ড পেলে তবে বাচ্চা আর মাসিকে নিয়ে মেসাে আসতে পারবে।’
‘মাই গড!’
‘আজ্ঞে হ্যাঁ। টিনামাসির কত ইচ্ছে ছিল, আমার বিয়েতে আসবে। পারল না।’
‘তাতে কিন্তু কিছু যায় আসে নি। হ্যাঁ, গেট টুগেদার হইচই এসব মাসি মিস করেছে। তবে ওদের সঙ্গে দেখা হয়েই যাবে। একই দেশে তুমিও যাচ্ছ। বাই দ্য ওয়ে, মাসিরা কোন স্টেটে থাকেন?’
‘বস্টন শহরে। ম্যাসাচুসেটস স্টেট তাে?’
‘হ্যাঁ। গ্রে হাউন্ডে নিউ ইয়র্ক থেকে মাত্র চার ঘণ্টা। উইক-এন্ডে গাড়ি নিয়ে চলে যাব।’
‘যদি আমি অ্যাট অল যাই।’
‘কী বলছ! তুমি স্টেটস যাবে না?’
‘তাতাে বলিনি। আমি একটাই কথা বলেছি, বিয়ের পরে প্রােষিতভর্তৃকা হয়ে থাকতে পারব না। যদি থাকতেই হয়, তবে যতদিন না আমি ওদেশে পৌছােচ্ছি, তদ্দিন নাে ছোঁয়াছুঁয়ি। আমি ভার্জিন আছি, থাকব।’
‘লে ব্বাবা! তুমি তাে ব্ল্যাকমেইল করছ!’
‘ব্ল্যাকমেল করছি? বলতে লজ্জা করছে না? আমার স্বামী বাহাদুর পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দেশ থেকে রাজপুত্ত্বরের মতাে উড়ে এসে আমায় বিয়ে করলেন। তারপর আদরে-টাদরে আমায় অস্থির করে দিলেন। সিমলায় হানিমুনে বেড়াতে নিয়ে গেলেন। আমার শরীরে-মনে তখন সর্বত্র তিনি। পনেরাে দিন পরে টা-টা বাই-বাই করে উড়ে গেলেন নিজের জায়গায়। আমি বসে-বসে আঙুল চুষৰ। কবে যেতে পারব, কবে আবার থাকতে পারব তেনার সঙ্গে, জানি না:! প্রশ্নই আসে না। টিনামাসিকে আমি দেখেছি। কী কষ্ট! শরীরে জ্বালা, মনে জ্বালা!’
‘ক-কিন্তু আমি করবটা কী?’
‘করণীয় এখনও বােঝা যায়নি? পষ্ট তাে বলে দিলাম, আমায় সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।’
‘উ: সুইটি, ইয়ে সরি কোয়েলি, কেন বুঝছ না, সেটা পনেরােদিনে সম্ভব নয়।’
‘পনেরােদিনে না হলে একমাসে হবে। বর আছে এখানে, এটা বললে ভিসা সিওরলি অনেক তাড়াতাড়ি পাওয়া যাবে। এখানকার আমেরিকান কনসুলেট বিবাহিত বর এবং ম্যারেজ সার্টিফিকেট দেখলে আমায় নিশ্চয়ই কনসিডার করবে।’
‘কিন্তু আমার চাকরিটা? সেটা যে চলে যাবে।’
‘অত সােজা নয়। রিসেসনের সময়ে তিন বছরে যখন চাকরি যায়নি, উল্টে বছর-বছর দিব্যি মাইনে বেড়েছে, সে চাকরি এত সহজে যায় না! কোম্পানিও জানে, কার কত এফিসিয়েন্সি!’
‘বা:, তুমি দেখছি আমার চেয়ে আমার চাকরি সম্পর্কে বেশি জান!’
‘সেটা বলিনি। খোঁজখবর নিয়েছি, ওয়েবসাইটে গিয়ে কোন পােস্টে কাজ করা হয়, কত মাইনে এটুকু অন্তত: জেনেছি। যাকগে! আমার কথা আমি বলে দিয়েছি। ডিসিশন এখন উল্টোদিকের।’
‘আরে ভাই, অমন করে বেঁকিয়ে-বেঁকিয়ে বলছ কেন?’
‘সােজা আঙুলে ঘি উঠছে না বলে।’
“উ: বাবা! ক্ষ্যামা দাও। প্লিজ, একটু বুদ্ধি দাও। আমার মাথা কাজ করছে না।
‘এখন ওখানে কটা বাজে?’
‘ও-ওখানে? এখানে রাত একটা। ওদেশ প্রায় দশ ঘণ্টা পিছিয়ে। তার মানে ওখানে দুপুর তিনটের আশেপাশে।’ ‘অর্থাৎ মিস্টার অভিজিৎ সানিয়ালের অফিস খােলা?’
‘সিওর।’
‘এখনই ল্যাপটপ থেকে একটা মেল করা হােক। বয়ানটা হােক, আমার বিয়ে-সংক্রান্ত বিষয়ে একটা কমপ্লিকেশনস হয়েছে। দুর্ঘটনাও লেখা যায়। আমার মতাে বেয়াড়া বউ পাওয়া একরকম দুর্ঘটনা তাে বটেই। নিরুপায় হয়ে আবেদন করছি, আমায় আরও এক মাস উইদাউট পে ছুটি মঞ্জুর করা হােক। উইদাউট পে আমি আগ বাড়িয়ে বললাম। কারণ, যা এতদিন ইনকাম করা হয়েছে, একমাস না পেলে কিছু ক্ষতি হবে না। কোম্পানির ওপর চাপও পড়ল না। রাজি হয়ে যাওয়ার চান্স বাড়ল।’
‘যদি রাজি না হয়? কোয়েলি, প্লিজ ভেবে দ্যাখাে, ওদেশে চাকরি কিন্তু অত সস্তা নয়।’
‘বউ খুব সস্তা বুঝি? এদেশ থেকে যখন খুশি মুঠো-মুঠো নিয়ে গেলেই হল। মেয়েটাকে দাগী করে, ফুর্তি লুটে চলে গেলাম, যেতে পারলে গেল, নাহলে গেল না! কী আসে যায়! ঠিক কি না?’
‘ছি: ছি: ছি:। কীসব যাচ্ছেতাই বলছ।’
‘বেশ। বলব না আর। এই আমি মুখ গুঁজলাম।’
“কোয়েলি! কোয়েলি! ঘুমিয়ে পড়লে?’
‘মেল পাঠিয়েছি। আশ্চর্য, রিপ্লাইও এসে গেছে।’
‘এর মধ্যে এসে গেছে? নিশ্চয়ই রিফিউজ করেছে?’
‘না।’
‘ক-কী-? অ্যাকসেপ্ট করেছে? ছুটি স্যাংশন করেছে?’
‘হ্যাঁ। শুধু তাই নয়। লিখেছে, ‘প্লিজ টেক কেয়ার অফ ফ্যামিলি প্রবলেমস। উই’ল ওয়েট ফর ইউ জয়েনিং টু আওয়ার অর্গানাইজেন।’
‘ইজ ইট ট্র? কী বলছ? সত্যি?’
‘ইয়েস! এই দ্যাখাে না।’
‘উ:—! আ-আমি পাগল হয়ে যাব! তুমি-তুমি এখানে থাকছ…আমি তােমার সঙ্গে যাচ্ছি …।
‘আরে, আরে—তুমি এরকম করছ কেন? বিহেভিং হিস্টিরিক? এতক্ষণ ভাববাচ্যে কথা বলছিলে—এখন…অ্যাই…এ কী! কথা বলতে বলতে…উম-উম!’
‘উম-উম!…আর কোনও কথা নয়। আজ আমাদের ফুলশয্যা না? তােমায় আমি…এসাে। এসাে-শিগগির!
‘আরে আরে, টানছ…দ্যাখাে…লাইটটা জ্বলছে যে।’
‘জ্বলুক! জ্বলুকগে!
যদি কেউ উকি দিয়ে দেখে, কী বলবে?
বউটা বেহায়া…বলুক গে! আমার এখন…তােমাকে যে আমি…কী করব..’
‘কী করবে…অ্যাই…আবার..ধুতি-টুতি…দ্যাখাে…দ্যাখাে…সব ইয়ে…’
‘পাগল…পাগল করে দেব! শিগগির সুইটি বলাে! ভ্যাবলাকান্ত কোথাকার! আমি যে তােমায় ছাড়া থাকতে পারব না, সেটা বুঝতে এতক্ষণ লাগল?’
‘উম-উম-উঃ-উঃ..ঠোঁটটা এতজোরে চুষছ কেন সুইটি?…তুমি আমায় এত ভালােবেসে ফেলেছ…সত্যি?’
‘না তাে কী! মরলে তােমায় নিয়েই মরব। তােমায় আমি ছাড়ছি না।…শিগগির লাইট নেভাও।’