চিত্রপট – সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

……….এই প্রথম ডলি নিজে থেকে জড়িয়ে ধরেছে বাপিকে। আদর চাইছে। ঘুমের চটকা ভেঙে গিয়েছিল তখনই। মেয়ের আজ কী হল হঠাৎ! অন্যদিন তাে এমন ভাব করে থাকে, ওসব না করলেও বিবাহিত জীবন চালানাে যায়। ডলির শরীরের চাহিদার সঙ্গে নিজেকে জোগান দিতে দিতে ওই উত্তেজনা ঘন মুহূর্তে বাপির একটা মারাত্মক কথা খেয়াল পড়ে, কন্ডােম ফুরিয়েছে! ডলির শরীর থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছিল বাপি। ঘষা আদুরে গলায় ডলি বলল, “কী হল!” বাপি কারণটা বলল। সঙ্গে সঙ্গে ডলির ঘুম এলানাে। ভাবটা উধাও। উঠে বসল বিছানায়। আদরকালীন ডলির নাইটি খুলে ফেলেছিল বাপি। খােলা মােম। শরীরে তুলনাহীন দুটো বুক। চোখ মােমবাতির । মতাে জ্বলছে, “কেন নেই কন্ডােম?” “কিনতে ভুলে গিয়েছি। খেয়াল ছিল না।” আচমকাই থেমে গেল ডলি। মেঘ সরে গেলে চাঁদ যেমন হেসে ওঠে, সেরকম হেসে বলে উঠল, “অ্যাই, বুলবুলির দেওয়া প্যাকেটটা আছে না? নিয়ে এসাে।” সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত আগুন নিভে গেল বাপির। সেই নির্লজ্জ মেয়েটার কথা বলছে ডলি৷ কনে বিদায়ের সময় বুলবুলির দেওয়া রঙিন কাগজে মােড়া প্যাকেটটা খােলার পর কন্ডােমের। প্যাকেট দেখে, বর বউ দুজনেই হাঁ।…….ডলি তাড়া। দিচ্ছিল, “যাও, নিয়ে এসাে। বসে আছ কেন?” নিরুপায় হয়ে বুলবুলির দেওয়া প্যাকেট ব্যবহার করল বাপি এবং বুঝতে পারল, মেয়েটাকে আর | কোনওদিনই দু’ কথা শােনানাে যাবে না! ওসব । করাকালীন তাই খানিকটা অন্যমনস্ক ছিল বাপি৷ ডলি টের পায়নি। ওর চাহিদা ছিল তুঙ্গে, সহজেই ঠান্ডা হল। তৃপ্তির তােড়ে আরামের নানা শব্দের সঙ্গে দু’টো খুব খারাপ গালাগাল দিয়ে ফেলল। ডলি ! ভীষণ কানে লেগেছিল বাপির। অত সুন্দর মুখে এত খারাপ ভাষা মানায় না, তা সে যতই রাতের অন্ধকার ঘর হােক।……..

……মেয়েটা দাঁড়াল টেবিলের সামনে। একটু ঝুঁকে এল, মুখের হাসিতে এখন আর চাপল্য নেই, মােহঘাের ভাব। হয়তাে অভিনয়। ক্লিভেজ অনেকটাই দেখা যাচ্ছে।………অসম্ভব আবেদনময় মেয়েটার ফিরে যাওয়া, সরু নমনীয় কোমর, নিতম্বের অল্প কাঁপুনি, সামান্য ঝুঁকে থাকা পিঠ, হেলান ঘাড়… সব দেখতে-দেখতে অমিতেশের ভিতরে একটা অস্থিরতা তৈরি হয়।………

…….নােট ব্লাউজে ঢুকিয়ে ডলি বলেছিল, “তুমি তাে কিছু খাচ্ছই না। হাঁ করে তাকিয়ে বসে আছ।” ডলি ঝকমকে শাড়ি পরেছিল সেদিন। ব্লাউজের কাটিং খুবই বিপজ্জনক। শরীরের আউট লাইন আরও ধারালাে হয়ে উঠেছিল।……..

……….শিউলিকে ছোঁয়ার কারণে অদ্ভুত এক বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছিল শরীরে। অন্ধকারটা যেন বিজনকে চুম্বকের মতাে টেনে নিল। শিউলির গন্ধ খুঁজে বিজন ঠোঁট রেখেছিল ওর ঠোঁটে। একটু বুঝি হকচকিয়ে গিয়েছিল শিউলি, চুম্বন গ্রহণ করেছিল ঘােরের মধ্যেই। তারপরই বিজন ওকে বিছানায় ফেলে। দ্রুত খােলার চেষ্টা করে । শাড়ি, ব্লাউজ। শিউলি বাধা দিচ্ছিল, ছটফট করছিল। বিজন। ভেবেছে লজ্জা। মাথার মধ্যে তখন প্ররােচনার কাজ করছে। কুনালের কথাগুলাে। শিউলিকে যত উন্মুক্ত করছে বিজন, তত ঘাের লেগে যাচ্ছে যৌবনের উদ্ভাস দেখে। শিউলি কিন্তু ক্রমাগত বাধা দিয়ে যাচ্ছিল বিজনকে, স্থির হতে দিচ্ছিল না। রােখ চেপে গিয়েছিল বিজনের। তারা দুজনেই তাে উপােসি শরীর, কেন আটকাচ্ছে শিউলি?……….

………..চোখ খােলে অমিতেশ। চশমাহীন ভেজা দৃষ্টিপথে রেনােয়ার নারীমূর্তি লাগে ডলিকে। অমিতেশের একটা হাত তুলে নিয়েছে। ডলি, ঘাড়ের উপর রেখে নিজেই আদর করে নিচ্ছে। সত্যি যেন ওর আরাম হচ্ছে খুব, উপশম। চোখ বুজে ফেলেছে। ডলির শরীরে ফুটে ওঠেনি এমন অনেক ব্যথাও তাে আছে, অমিতেশের হাতটা নিয়ে যাচ্ছে সেসব জায়গায়। স্পশে স্পর্শে শিউরে উঠছে ডলি। অমিতেশ নিজের মধ্যেও ঘুমভাঙা আগ্নেয়গিরির দুলুনি টের পায়। কখন যেন ডলি কোমরে থাকা শাড়ি সায়া থেকে নিজেকে মুক্ত করে ফেলেছে। এখন এক এক খুলে দিচ্ছে অমিতেশের পােশাক। প্রবল চেষ্টা সত্ত্বেও অমিতেশ ডলির শরীর থেকে নিজের দু’হাত বিচ্ছিন্ন করতে পারছে না! ডলিকে আঁকা বাগানের পেন্টিংটায় দুটো শিউলি ফুল যেভাবে স্থির হয়ে আছে পিঠে, নিতম্বের উপর, সেই। ভাবেই চিত্রার্পিত দুই তালু। শরীরের মধ্যে ঘটে যাচ্ছে বিস্ফোরণ। অমিতেশ টের পায়, সে প্রবেশ করেছে ডলির শরীরে! অত্যাশ্চর্য এক নিরাময়ের সন্ধান পেয়েছে যেন ডলি। খুশিতে উথালপাথাল হচ্ছে ডলির শরীর। অসহ্য এক সুখানুভূতির চূড়ায় পৌঁছে গিয়েছে অমিতেশ, নাকি দু’জনেই? অবশেষে অগ্ন্যুৎপাত। নিঃশব্দে দুটো। পাহাড় একে অপরের শরীরে এলিয়ে পড়ে।,,,,,,,,,,

Leave a Reply