……নিচের তলার ওই ভদ্র আর অভদ্রলােকটির মতাে নাই কেনাে, যে আরাে নিচের তলার কাজের মেয়েটিকে সিঁড়িতে দেখলেই একটা সিগারেট ধরিয়ে দাঁড়ায়, হাসে, পকেট থেকে পাঁচ টাকা বের করে মেয়েটার ব্লাউজের ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়ে হাতটা কিছুক্ষণ চেপে রাখে, যার লিকলিকে বউটি বিয়ােয় বছর বছর?….
……দারােগা সাহেব মালপানি খাওয়া বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, পনেরাে বছরের কাজের মেয়েটিকে, যে-মেয়েটির বুকে সে নিজেও একবার হাত দিয়েছিলাে যে-মেয়েটির বুক খুবই । নরম ছিলাে যে-মেয়েটি তার কাছে একবার কবিতা শুনতে চেয়েছিলাে, সেই মেয়েটিকে বিবাহেরও উদ্যোগ। নিয়েছিলেন।
……সন্ত রহমত আলি মাহমুদ বলে আমাদের বুঝতে হবে, বিংশ শতাব্দীর টুয়েনটিয়েথ সেঞ্চুরির এই অভিনব । কবিতার দশকে যে কবিতা লিখবে, তাকে বুঝতে হবে | কবিতা। আজ আর ডিভাইন গডেজ না, কয়েক হাজার বছরের কন্টিনিউয়াস চোষাচুষিতে টানাটানিতে দেবীদের স্তন ঝুলে গেছে পচা কাঁঠালের মতাে, নাভির কাছে নেমে এসেছে, বোঁটা খ’সে গেছে, থকথক করছে, ঠোঁট ফেটে চৌচির হয়ে গেছে, তাতে ভনভন করে মাছি বসছে, তলপেট ঢিলে গােস্তে ভরে গেছে, আরাে নিম্নে প্রবাহিত হচ্ছে শুধু পৌর আবর্জনা, দেবী সিফিলিসে গনােরিয়ায় ভুগছে, কবিতা আজ বাদামতলি টানবাজারের গ্রাম থেকে আসা পনেরাে বছরের টাটকা বেশ্যা, ওইটা যাকে ঘরে | বসায় সে-ই কবি হয়, তরুণ কবির কাজ হচ্ছে টাটকা ভার্জিন বেশ্যাকে বলাৎকার করা।…..
……কাদের আবদুল খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠে বলে, দেবীর থেকে বেশ্যাই পরমােত্তম, তার স্তব করতে হয় না, তার দেহ আছে, স্তন আছে, ত্রিভুজ আছে, লােমে সুগন্ধ আছে, থুতুতে মাদকতা আছে, ট্রাউজার খুলে সায়া তুলে তাকে বলাৎকার করলেই চলে। আমি তাকে বলাৎকার করি, তাই আমি কবি।….
…..বিভূতিভূষণ মণ্ডল এবার চিৎকার করে ওঠে, মাহমুদ ভাই, কাদের ভাই, আপনেরা খুব বেশ্যা, বেশ্যা করতেছেন, বেশ্যার চিনেন কি আপনেরা, কয়টা বেশ্যার লগে শুইছেন, আমি দেড় বছর ধরে বেশ্যাবাড়িতে আছি, আমি বেশ্যারটা খাই,বেশ্যার বিছানায় শুই, আমি জানি ওইগুলিতে কোনাে কবিতা নাই।…..
……হাসান বলে, চলুন, মেয়েগুলােকে দেখি।
ম্যানেজার হাসানকে নিয়ে তেতলার একটি ঘরে যায়; হাসান দেখে মেয়ে কলকল খলখল করছে, ওদের কণ্ঠের শব্দ ওদের মুখের রঙের মতােই শস্তা ও তীব্র।
ম্যানেজার বলে, ছার, দেখেন কোনাডারে আপনের পছন্দ হয়। সবগুলিই মাল ভাল, ইচ্ছা লইলে ধইর্যাও দেখতে পারেন।
হাসান মেয়েগুলাের দিকে বিব্রতভাবে তাকায়; মেয়েগুলােকে কি সে টিপে টিপে পরীক্ষা করে দেখবে, ওদের জিভ টেনে বের করে দেখবে, ওদের শরীরের ওপরের কটকটে রঙিন বস্তিগুলাে ছিড়ে ওদের খুলে দেখবে, অন্ধকার সুড়ঙ্গগুলােতে উঁকি দিয়ে দেখবে?
একটি মেয়ে বলে, চোখ-মেইল্যা ভাল কইরা দেখেন, সাব, কোনাডারে আপনের পছন্দ। আমাগাে সবারই শরিল আর বুক ভাল; আমাগাে অসুক নাই, আমরা গিরস্ত ঘরের মাইয়া, আমরা বেশ্যা না।
হাসান দুটি মেয়েকে দেখিয়ে ম্যানেজারকে বলে, এই মেয়ে দুটি আমার পছন্দ। ম্যানেজার বলে, কন কি, ছার, আপনের দুইডা মাইয়া লাগবাে?
হাসান বলে, হ্যাঁ।…..
….হাসান তার পােশাক খুলে ফেলে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে দাঁড়ায়।
মেয়ে দুটি একবার চমকে ওঠে; তার শিশ্নের দিকে তাকিয়ে থাকে।
হাসান বলে, তােমরাও হও, আমার মতাে নগ্ন পবিত্র শুদ্ধ। আদিম, আমার মতাে কবি।
কংকাবতী বলে, বাত্তি জ্বলাইয়া এমন হইতে আমাগাে শরম লাগে, সাব।
হাসান বলে, নগ্নতা সুন্দর, নগ্ন না হলে মানুষ পবিত্র হয় না, নগ্নতায় লজ্জা নেই, তােমরা কবিতার বােন, কবিতার মতাে নগ্ন কবিতার মতাে শুদ্ধ, কবিরা চিরকাল তােমাদের বন্দনা করেছে, আলাে অন্ধকারের মধ্যে পার্থক্য নেই। তােমাদের রক্তে, আলােই অন্ধকার, আলাের অন্ধকারেই তােমাদের আমি নগ্ন পবিত্র বিশুদ্ধ সুন্দর দেখতে চাই। আমি তােমাদের দেখতে চাই, তােমাদের কেউ দেখতে চায়না, তােমাদের স্তনবৃত্তের দিকে কেউ তাকায় না, | তােমাদের গ্রীবার জ্যোৎস্নার দিকে কেউ তাকায় না, সবাই তােমাদের মাংস খেতে চায়।
মেয়ে দুটি ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে মাথা নিচু করে বিছানায় বসে থাকে। হাসান বলে, নগ্নতা মাথা নিচু করে থাকার জন্যে নয়, কংকাবতী; নগ্নতা লজ্জা পাওয়ার জন্যে নয়, আফ্রোদিতি।
মেয়ে দুটি বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে তার দিকে, হাসান বিছানায় উঠে তাদের মাঝখানে বসে বই খুলে।
জীবনানন্দের ‘অন্ধকার’ কবিতাটি পড়তে থাকে, তার স্বরে মেয়ে দুটি মুখ তুলে হাসানের দিকে তাকায়।
হৃদয়ের অবিরল অন্ধকারের ভিতর সূর্যকে ডুবিয়ে ফেলে আবার ঘুমােতে চেয়েছি আমি, অন্ধকারের স্তনের ভিতর যােনিত ভিতর অনন্ত মৃত্যুর মতাে মিশে থাকতে চেয়েছি। কোনােদিন মানুষ ছিলাম না আমি। হে নর, হে নারী, | তােমাদের পৃথিবীকে চিনিনি কোনােদিন; আমি অন্য কোনাে নক্ষত্রের জীব নই…….
…..কংকাবতী একটি হাত দিয়ে জড়ায় হাসানকে, ওর শরীর থেকে ধূমায়িত একটি গন্ধ না সুগন্ধ না রঙ এসে ঢাকতে থাকে হাসানকে।
গভীর অন্ধকারের ঘুমের আস্বাদে আমার আত্মা লালিত; আমাকে কেন জাগাতে চাও? হে সময়গ্রন্থি, হে সূর্য হে। মাঘনিশীথের কোকিল, হে স্মৃতি, হে হিম হাওয়া, আমাকে জাগাতে চাও কেন।
আফ্রোদিতি কাঁপা কাঁপা হাতে হাসানের ঠোঁট ছোঁয়, হাসানের স্বর্গীয় অরণ্যের তলদেশে সােনালি সাপের ফণায় গিয়ে যেনাে ওর আঙুল লতাগুল্মজালে জড়িয়ে পড়ে, সে জড়ানাে গলিত স্বরে বলে, আমার মনে হইতেছে গােস্তের ভিতর আগুন জ্বলতেছে, আমার দেহে আর গােস্ত নাই, সব পুইর্যা আগুন হইয়া জ্বলতেছে, সাবরে জরাইয়া ধইর্যা আমার পদ্মানদীর ঢেউয়ের লগে ভাইস্যা যাইতে ইচ্ছা হইতাছে, সাব, আপনে আমারে ধরেন, আমার সবখানে আপনের হাত দেন, গলায় কামড় দেন, শিনায় কামড় দেন, সবখানে আপনের দাঁত বসাইয়া দেন।
অরব অন্ধকারের ঘুম থেকে নদীর চ্ছল চ্ছল শব্দে জেগে উঠব না আর; তাকিয়ে দেখব না নির্জন বিমিশ্র চাঁদ বৈতরণীর থেকে অর্ধেক ছায়া গুটিয়ে নিয়েছে কীর্তিনাশার দিকে। ধানসিঁড়ি নদীর কিনারে আমি শুয়ে থাকিব-ধীরেপাউষের রাতে-কোনােদিন জাগাব না জেনে-কোনােদিন জাগাব না আমি-কোনােদিন আর।
কংকাবতী বলে, আরও পরেন, সাব, মেঘ হইতাছে বাজ ডাকতাছে, ঘরের চাল উইরা যাইতাছে।
হাসান বলে, কংকাবতী আফ্রোদিতি, তােমাদের পৃর্ণিমাজ্বলা স্তনের দিকে তাকিয়ে দেখাে, তােমাদের স্তন পদ্মার নৌকোর পালের মতাে ফুঠে উঠছে, পালে আষাঢ় শ্রাবণের ঝড় ঢুকছে বৃষ্টি ঢুকছে।……
…..মরিয়ম বেশ ঝলমলে, তার সব কিছু দোলে; হাসানকে সালাম দেয়ার সময় তার বাহু আর বিভিন্ন অঙ্গ ঢেউয়ের মতাে দুলে ওঠে, সব কিছু দুলিয়ে সে আলমারি থেকে। ব্ল্যাক লেবেলের বােতল বের করে: ধবধবে শাদা গেলাশে সােনালি পানীয় ঢেলে তাদের সামনে রাখে। কেরুর থেকে এটা কতােই ভিন্ন কতােই উজ্জ্বল। হাসানের চোখে একবার দুলে ওঠে কংকাবতী আফ্রোদিতি।…..
…..দ্বিতীয়টা প্রাইভেট; রাধিকা’র পিতৃপুরুষেরা মায়ের স্তনকে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের পুষ্টিকর খাদ্য মনে করে, শিশুর নয়, শিশুকালের স্তন নিয়ে টানাটানি ইত্যাদিতে কোমলমতি শিশুদের চরিত্র নষ্ট হয়ে যেতে পারে, দুধ খাওয়া ছেড়ে | চোষাতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়তে পারে, যা জাতির জন্যে শুভ নয়; তাছাড়া মায়ের দুধ বিনে পয়সায় পাওয়া যায়, কিন্তু। বিনে পয়সার জিনিশে বিশ্ব চললে বিশ্ব চলতাে না। ব্যবসা থেমে যেতাে, ধস নামতাে বাজারে। অন্য দিকে মাতৃদুগ্ধ । উৎপাদন ব্যয়বহুল, আধলিটার মাতৃদুগ্ধের পেছনে খরচ হয়, একশাে টাকা, সেখানে এক লিটার রাধিকা পাওয়া যায় পাঁচ টাকায়।…..
……নারীবাদী হা হা হা করে বলেন, ওরা মনে করে নারীরা দুগ্ধবতী গাভী, নারীদের ওলানের দিকে এবার ওদের চোখ পড়েছে, আগামী বছর হয়তাে ওরা উন্নত জাতের দুগ্ধবতী নারী উৎপাদনের জন্যে উন্নত মানের গােয়ালঘর বানানাের
পরিকল্পনা নেবে, নারীদের উন্নত মানের ফিড দেবে, যাতে দেশে বেশি পরিমাণে নারীদুগ্ধ মাতৃদুগ্ধ উৎপাদিত হয়।…..
……বাক্স ক’রে সংবাদটি ছাপা হয়েছে, যার শিরােনাম ‘স্ত্রীর স্তন্য পান করে বেঁচে আছেন মােহাম্মদ ফজর আলি’। সংবাদে বলা হয়েছে মােহাম্মদ ফজর আলি বছর বছর। বিয়ে করে চলছেন, তার ঘরে সব সময়ই কমপক্ষে একটি ক’রে গর্ভবতী স্ত্রী থাকে, এবং থাকে একটি নতুন সন্তানবতী স্ত্রী। মােহাম্মদ ফজর আলি তাঁর শিশু সন্তানকে মায়ের স্তন্য পান করতে দেন না, তিনি নিজেই স্ত্রীকে চেপে ধরে সকাল দুপুর বিকেলে রাতে চারবেলা স্ত্রীর দুগ্ধ পান। করেন। স্ত্রীর পুষ্টিকর দুগ্ধ পান করলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন, তার গর্দান সরু হয়ে যায়; তাই এই কাজ তিনি | ক’রে আসছেন তিরিশ বছর ধরে। এবার তিনি গােলমালে পড়েছেন, তিনি নতুন বিউটির স্তন্য পান করতে গেলে বউটি তাকে বাধা দেয়, তিনি জোর করে তিন মাস ধরে স্ত্রীর স্তন্য পান করেন, শিশু কন্যাটিকে স্তন্য পান করতে দেন না। মােহাম্মদ ফজর আলি হৃষ্টপুষ্ট হয়ে উঠলেও শিশুটি দিন দিন রােগাপটকা হয়ে পড়তে থাকে। স্বামীর স্তন্যপাননেশা বন্ধ করতে না পেরে অবশেষে বউটি গিয়ে থানায় মামলা দায়ের করে; এবং নীতিপরায়ণ পুলিশ ফজর আলিকে গ্রেফতার করে।
হাসান সংবাদটি পড়ে অভিবাদন জানায় মােহাম্মদ ফজর আলিকে।
হাসান এবার আরাে গভীরভাবে উপলব্ধি করে যে নারীদের স্তন্য জাতীয় সম্পদ, তা নষ্ট হতে দেয়া যায় না। গরিব দেশে প্রতি বছর নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি লিটার মাতৃদুগ্ধ; কিন্তু ওই মূল্যবান জাতীয় সম্পদ নষ্ট হতে দেয়া যায় না। মােহাম্মদ ফজর আলিকে হাসানের পথপ্রদর্শক বলে মনে হয়-আবার অভিনন্দন জানায় সে মােহাম্মদ ফজর। আলিকে। জাতিসংঘ কি তাঁকে নেবে?…..
…..আহমেদ মাওলা বলেন, বােঝতে পারছি মাইয়া দ্যাখতে চান, তা মাঝেমইধ্যে দাখন ভাল; তাতে স্ক্রিপ্টও ভাল। হইবাে, মডেলগুলিরেও একটু লাড়াচাড়া করা যাইবাে। দুইটা খুব ডগমইগ্যা সেক্সি মডেল লাগবাে। মাতৃদুগ্ধের মাটারে হইতে হইবাে মধুবালার মতন সেক্সি, মা সেক্সি না হইলে পােলাপান মার দুধ খাইতে চাইবাে ক্যান? বুকের দুধ খাওয়াতে হইলে মাগুলিরে সেক্সি হইতেই হইবাে। আর হইবাে বুক ভরা মধু বঙ্গের বধু! এমুনভাবে ক্যামেরা চালাইতে হইবাে যে পােলাপান ক্যান বাপােরাও দুধ খাইতে চাইবাে।…..
……আহমেদ মাওলা বলেন, যা স্ক্রিপ্টট ল্যাখছেন তার জাইন্যে আপনেরে প্রাইজ দিমু, একটা মিল্কি মডেলের গে এক সন্ধ্যা ছাইরা দিমু। অইটা ঠিক রাধিকার অস্ট্রেলিয়ান গাভীটার মতন, যত ইচ্ছা ওলানা থিকা দুধ খাইবেন।…..
…..শ্যামলীই তাকে নিয়ে গিয়েছিলাে এক অভিজাত রেস্তোরাঁয়। একটি নারী, সম্পূর্ণ নারী, সম্পূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ঠোঁট স্তন উরু বাহু গাল ভুরু নিয়ে তার মুখােমুখি বসে আছে, এটা পরম বিস্ময় মনে হচ্ছিলাে তার; সে ধ’রে | নিয়েছিলাে সে শুধু নারীর স্বপ্ন দেখবে, স্বপ্ন দেখে কবিতা লিখবে, কোনাে বাস্তব নারী দেখবে না; মুখােমুখি বসে। হাসান তীব্র আকর্ষণ বােধ করছিলাে শ্যামলীর প্রতি, যা কোনাে স্বপ্নের নারীর প্রতিও সে বােধ করে নি-তার মুখে সে হিজল ফুলের লাল চেলি দেখতে পাচ্ছিলাে, প্রবল। বৃষ্টিতে হিজল ফুল ভেসে যাচ্ছে তার মুখের ওপর দিয়ে, বুকে বাহুতে দেখতে পাঁচ্ছিলাে জৈষ্ঠের জোয়ার; তার মুখ চোখ ঠোঁট চুল আঙুল বাহু তাকে টানছিলাে। যেমন মেঘ জ্যোৎস্না আষাঢ় শ্রাবণ তাকে টানে। কী সে বােধ করছিলাে? প্রেম? কাম? শরীরের জন্যে শরীর? সে। শ্যামলীকে ছাড়া শ্যামলীর আর কিছু জানে না, জানার। কোনাে প্রয়ােজন আছে ব’লে তার মনে হয় নি, শ্যামলীকে দেখার পর আর কিছু জানার থাকে না।……
….শ্যামলী, ছড়িয়ে থাকে। তার মুখ, তার চোখ, তার চুল, তার আঙুল, তার স্তন; অ্যাডেও সে সফল হ’তে থাকে, পদোন্নতি ঘটতে থাকে। শ্যামলী তার একটি প্রচণ্ড প্রত্যঙ্গ ছুঁয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাে, এখন কাম নেই? হাসান হেসে বলেছিলাে, এটা কতাে বড়াে মূর্খ চাষা তা তাে তুমি জানােই।
শ্যামলী বলেছিলাে, এই চাষাটা আমার জীবন, এই চাষাটার সাথে দেখা হওয়া আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ ঘটনা।
হাসান বলেছিলাে, চাষ কেমন লাগে?
শ্যামলী বলেছিলাে, এই চাষ ছাড়া আমি বুঝতাম না আমি মাটি।……
……শ্যামলী যখন শরীরে সাবান মাখে স্নানাগারে, চুলে শ্যাম্পু ঘষে, তখন তাকে কেমন লাগে? দেখতে ইচ্ছে করে বিছানার অন্ধকারে কেমন লাগে শ্যামলীর ওষ্ঠ নাক গাল স্তনের চারদিকের শ্যামল জ্যোতির্ময় জ্যোৎস্না। শ্যামলী কীভাবে রাতে, মধ্যরাতে, শেষরাতে ঘুমােয়? রাতগুলােতে শ্যামলীকে নিশ্চয়ই উরুর ভেতর গেঁথে রাখেন মােহাম্মদ ফরহাদ হােসেন খান, শ্যামলীর বিবাহিত স্বামী; হয়তাে রাখেন, হয়তাে রাখেন না,……
……তিনটি দিন তিন মিনিটের মতো কেটে যায় রোগ, জ্যোৎস্না, ছায়া, অন্ধকারে; নখের দাঁতের রক্তিম ক্রিয়াকলাপে; চুম্বনে, চুম্বনে, সঙ্গমে, সঙ্গমে। শরীর সমস্ত মধু ঢেলে দেয় জঙ্গলের প্রতিটি পাতায়, প্রতিটি লোমকূপ চুইয়ে নিরন্তর ঝরতে থাকে চাক ভাঙা মধু; তাদের শরীর গ’লে মধু হয়ে ভোরবেলায় টলমল করতে থাকে সবুজ ঘাসের শিখায়, কচুপাতার মসৃণ করতলে; তাদের আলিঙ্গন, চুম্বন, সঙ্গমের দাগ লেগে থাকে গাছের ওপরের গোলগাল চাঁদের শুভ্ৰ শয্যায়; জ্যোৎস্নাবিহ্বল হয়ে সেটি গ’লে পড়তে থাকে শালের পাতায় পাতায়। মধু ঝরতে থাকে শালের পাতা থেকে, পাখিরা মধু পান ক’রে মুখর ক’রে রাখে বনভূমি; গুঞ্জনে মেতে ওঠে মৌমাছিরা, ফুলে ফুলে এতো মধু তারা আগে কখনো পায় নি।…….