………মুকুজ্যে পরিবারের বউরা সব অলস ছিলেন। অতিরিক্ত আলস্য ও প্রচুর প্রোটিনজাত খাদ্যে তাঁরা মেদভারে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুরুষরা সেইটাই পছন্দ করতেন। এও এক ধরনের বিকৃত রুচি। দীপা বড়ো হয়ে বুঝেছিল, এটাও এক ধরনের ভালগার টেস্ট। বউগুলোকে করে ফেলেছিল জ্যান্ত পাশবালিশ। দীপার মনে হয়েছিল মেয়েরা বন্দি হতে পছন্দ করে। দাসত্বের প্রতি তাদের ভয়ংকর আসক্তি। খাঁচা থাকবে। পুরুষের ভোগের সামগ্রী হবে। এই ভাবটা তাদের সংস্কারে চলে গেছে। মেয়েরা নিজেরাই মনে করে, তারা দেহ ছাড়া কিছুই নয়, ভিতরে একটা মন নড়াচড়া করে ঠিকই, কিন্তু সেই মনটা বিকলাঙ্গ। অন্ধকারে একটা পাখি। ভিতরটা খুব নোংরা। যা-তা বই পড়ে। অশ্লীল আলোচনা করে। কাজের মেয়েদের সঙ্গে পরের বাড়ির আলোচনা করে। যখনই সুযোগ পায় আজেবাজে সিনেমা দেখতে ছোটে। আর কুৎসিত সাজগোজ করে স্বামীদের সঙ্গে বিয়েবাড়িতে হল্লা করতে ছোটে। সঙ্কীর্ণ মনের মানুষ সব। নিজেদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া করে। তখন মুখের আর কোনও আগল থাকে না। hiবস্তির ভাষা ব্যবহার করে। স্বামীকে বলে ভাতার। বউগুলো সব মাগি। তখন মুখ-চোখের চেহারা পালটে যায়। আঁচল খসে পড়ে। বিশাল বুক থলথল করে নাচতে থাকে। বৃহৎ নিতম্ব দুলতে থাকে। খোঁপা আলগা হয়ে যায়। গা থেকে একটা পাশবিক গন্ধ বেরোতে থাকে। ……
…..সুন্দরী নায়িকা বলছে, সন্ন্যাসী। আমার হাতে কী দেখেছ?
চাঁদের আলোয় ঝিলিক মারছে চকচকে ছুরি। তুমি যদি প্রত্যাখ্যান করো, এই ছুরি আমি আমার বুকে বসাব। ফড়ফড় করে সে তার নানের পোশাকের বুকের দিকটা ছিঁড়ে ফেলল। বর্তুলাকার বুকের আধখানা ছিটকে বেরিয়ে এল।
লেখক বর্ণনা দিচ্ছেন। চকচকে ছুরির ফলা বাতাবিলেবুর মতো বাঁ-দিকের বুকে ঠেকানো। উঃ সে কী বুক! এই হল নারীর স্তন। চাঁদের আলো সোজা সেই বুকে এসে পড়েছে। সেই ঝকঝকে সাদা বুকের দিকে তাকিয়ে সন্ন্যাসী স্তম্ভিত। ঈশ্বর কী তার চেয়ে অন্য কোনও সৌন্দর্যের সন্ধান দিতে পারেন। শরীর মুচড়ে দিতে পারে অন্য কোনও এমন বস্তু। চোখ ফেরাতে পারছে না। তৃষ্ণা, আগ্রহ, আবেগ। একটা ক্ষীণ কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে, ছিঃ ছিঃ, তুমি সন্ন্যাসী। প্রলোভন, দেহবাসনা, পাপ। তাকিও না। কিন্তু আনন্দ। এ কী আনন্দ! সারা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে আগুন। ধমনীর রক্ত টগবগ করে ফুটছে। চোখে আগুন। বহুতর পাশবিক কামনায় শরীর কাঁপছে। মাত্র আড়াই হাত দূরে। সেই লোভনীয় প্রলোভন চাঁদের আলোয় ধকধক করছে। সন্ন্যাসী হঠাৎ আর্তনাদ করে উঠলেন, ‘দাঁড়াও। আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারছিনা। মোহিনী। তুমি দাঁড়াও, আমার সর্বনাশের জন্য তুমি দাঁড়াও।’……
– ….বিছানায় শুয়ে ঘুমে তলিয়ে যেতে যেতে দীপার মনে হত, এই সময় কোনও নরম শরীর যদি তাকে জড়িয়ে ধরত। নরম শরীরের উষ্ণতা। পিঠের কাছে নরম একজোড়া বুকের ভারী শ্বাস-প্রশ্বাসের ওঠাপাড়া। নরম একটা জানুর তার কোমরের কাছে চেপে বসা। তার বুকের কাছে লেগে থাকা নরম একটা হাত। মুক্তো যেমন ঝিনুকের শ্লেষ্মর আবরণে মাখামাখি। হয়ে থাকে, রাতের নির্জন অন্ধকারের কোলে সেইভাবে থাকা ঘাড়ের কাছে খোপার নীচে ঠেকে থাকা একটা নাকের নরম নিঃশ্বাস। এই নেশাটা ধরিয়ে দিয়ে গেছে সেই মহিলা, যে তার ঠাকুরদার সেবা করত কলকাতার বাড়িতে। সাদা ব্লাউজ, সাদা শাড়ি। শরীরে ওষুধের গন্ধ। ঘামের গন্ধ, চুলের গন্ধ। কী একটা মশলা চিবোতো। মুখে সেই মশলার গন্ধ। পুরু দুটো ঠোঁট। জোড়া ভুরু। অন্ধকার কালো চোখ। সেই দেহের আলিঙ্গন, উত্তাপে দীপার শরীর ঘেমে উঠত। সে পাশ ফেরার সময় দীপাকে জড়িয়ে ধরেই পাশ ফিরত। দীপা তার শরীরে উপর দিয়েই। এপাশ থেকে ওপাশ চলে যেত। সে তার পিচ্ছিল ত্বকে হাত বোলাতে বোলাতে বলত, তোর স্কিন সিল্কের মতো। তোকে ছেড়ে আমি থাকব কেমন করে। এই কথা বলে সে পাগলের মতো আদর করত। তখন তাকে মনে হত নারী-পুরুষ। বিছানার চাদর কুঁচকে যেত। বালিশ ছিটকে চলে যেত খাটের বাইরে। সেই আদরের হাতে দেহ-সমর্পণ করতে দীপার খুব ভালো লাগত। মনে হত। সবটাই অন্যরকম। স্বাভাবিক নয়। একটু ভয়ের; কিন্তু খুব মজার, ভীষণ আরামের।…..