ইচ্ছামৃত্যু – মহুয়া চৌধুরী

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

……..ছােট ফোয়ারার সামনে এসে থামলেন মানুকাকি। বিবসনা পাষাণসুন্দরীর নতমুখ কলস থেকে জল গড়িয়ে পড়ছে ঘেরা চৌবাচ্চায়। কালাে ভেলভেটের জুতাে খুলে হঠাৎ উঠে দাঁড়ালেন মানুকাকি চৌবাচ্চার পাড়ে। কোমরে জড়িয়ে নিলেন সাদা শাড়ির আঁচল। চুলগুলাে দু হাত তুলে উঁচু করে বেঁধে নিলেন একটা চুড়াের মতাে খোঁপা। ঝুঁকে পড়ে হাতে ভর দিলেন পাথরের মূর্তির শরীরে।

রাজ তখন হঠাৎ বুঝতে পারল, কেন আজ তাঁকে এত সুন্দর লাগছে দেখতে। তিনি চোখে ঘন করে কাজল পরেছেন। কিছু না ভেবেই রাজ একলাফে উঠে গেল চৌবাচ্চার পাড়ে। তিনি পাথরের মূর্তিকে ধরে-ধরে সাবধানে ঘুরতে লাগলেন চৌবাচ্চার পাড়ে। শাড়িটা এঁটে জড়ানাে হয়েছে বলে শরীরের ভাঁজগুলাে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। রাজ বলল, “তুমি পড়ে যেয়াে না।” “তুই ধরে নিবি পড়ে গেলে,” ঘাড় ঘুরিয়ে হেসে বললেন। রাজ দেখল অন্যমনস্কভাবেই হয়তাে মর্মরসুন্দরীর স্তনে হাত রেখেছেন তিনি। বিস্তীর্ণ নীল সবুজের পটভূমিতে ঝলকাচ্ছিল তাঁর সাদা সিল্ক। শব্দ করে হেসে উঠলেন। তার চোখে চোখ রেখে এবার প্রমাণ আয়তনের মূর্তির দুই স্তনে হাত বােলাতে লাগলেন তিনি, মুখে হাসি। তারপর সাবধানে বসলেন চৌবাচ্চার পাড়ে।…….

……রাজের বিমূঢ় চাহনির সামনে তিনি এবার এক ঝটকায় খুলে ফেললেন সাদা সিল্ক ও শেমিজ। রাজ এতদিন ভাবত প্রকৃতির সব রহস্যই জেনে ফেলেছে সে, বন্ধুদের গল্প আর নিষিদ্ধ বইয়ের পাতা থেকে। কিন্তু তার জীবনের প্রথমা এই নগ্নিকা, একেবারে আলাদা রকমের এক অভিঘাতে স্তম্ভিত করে দিল তাকে। “আয়… আয় আমার কাছে… আয়,” ঘােরলাগা নারীকণ্ঠ শুনতে শুনতে সম্মােহিত হয়ে যাচ্ছে সে। “না,” জড়ানাে গলায় কোনও মতে বলতে পারল। কারণ চিৎকার করছে তার সংস্কার, তার পাপবােধ। আবার ক্রমশ ক্ষীণও হয়ে যাচ্ছে সে চিৎকার। পায়ে-পায়ে এগিয়ে চলেছে সে। মানুকাকি শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে বুঝি জড়িয়ে ধরেছেন তাকে। গরম পুলওভার, শার্টের উপর দিয়েও তার চামড়ায় গেঁথে যাচ্ছে মানবী স্তন। শেষ চেষ্টার মতাে নিজেকে ছাড়িয়ে নিল সে একটা সজোর ধাক্কায়।……

Leave a Reply