……….সেই বিশেষ উদ্যানে গিয়ে তারা দেখলাে, ইতিমধ্যেই সেখানে বহু প্রেমিক প্রেমিকার সমাবেশ ঘটেছে। সব জোড়ায় জোড়ায় জড়াজড়ি করে বসে আছে, কেউ কেউ শুয়ে পড়ে আলিঙ্গনাবদ্ধ, পরস্পর পরস্পরের ঠোটে ডুব দিয়েছে, পারিপার্শ্বিকতার কথা ভুলে বিলকুল দেহের সঙ্গে দেহ লেপ্টে রেখেছে। নদীতে একাধিক পালতােলা সৌখীন নৌকা বিচরণ করছে। যৌবন ডগমগ যুবক-যুবতীরা হাঁটছে পাশাপাশি, মন উজাড় করে প্রেমালাপ চলছে তাদের। একটা প্রকাণ্ড নৌকা ভিড়লাে দ্বীপে। বজরা বােঝাই অসংখ্য নারী-পুরুষ, কলকলিয়ে তারা নেমে এলাে দ্বীপের মাটিতে। ইতি উতি সুরা পানের আসর, পুরুষ ও নারী সমানে মদ্য পান করছে, হৈ-হুল্লোড়ে মাটি ও আকাশ কম্পমান।
কে একজন ওরই মধ্যে বেহালা বাজাচ্ছে, আর একজন ক্যানেস্তারা পিটিয়ে সৃষ্টি ‘ করছে বিকট আওয়াজ। সুন্দরীরা আকণ্ঠ নেশা করে দিশেহারা,–বুকের বাঁধন আলগা করে পুরুষদের দেখায় নিজেদের পুরুষ্ট স্তন, নিতম্ব দুলিয়ে দুলিয়ে পাছার বিশালতায় তাক লাগিয়ে দেয়। মাথায় জোকারের টুপি, পরণে সামান্য নেংটি-অর্ধ উলঙ্গ এক যুবক একরাশ চক্রাকারে ঘূর্ণায়মান যুবতীর সঙ্গে মহড়া দিচ্ছে। তাদের হাে-হো খিল-খিল হাসিতে কানে তালা লেগে যাবার যােগাড় ! আর কি সব অশ্লীল খিস্তি! সঁতারের পোশাক পরে নর-নারীর উদ্দাম জলকেলি, জাপটাজাপটি এবং খিস্তি-খেউড় !…….
জোয়েত …….জলের মাছের মতাে দেয় ডুব। ওর সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে বেদম সারভিনি, নিজের অক্ষমতায় রাগ হচ্ছে তার। জলের বুকে পদ্মের মতাে দেহ ভাসিয়ে জোয়েত তাকিয়ে আছে নীল আকাশের দিকে। সারভিনি লুক দৃষ্টিতে দেখছে ওর সিক্ত চিকন তনু, জলের কৃপায় ওর দেহের প্রতিটি রেখা এখন দৃষ্টিপাত হয়।……..
…….সারাটা জীবন ধরে প্রেম আর শরীর বিলিয়ে এসেছে যে অশ্বশক্তিসম্পন্ন নারী, সেই বহুবল্পভা মারসিঅনেসের মনেও এখন একটা বিষয় শূন্যতা পাক খায় ; এই মুহূর্তে সে ভয়ঙ্কর ভাবে কামনা করছে শক্তিমান পুরুষ সেভেলকে। এই রকম কামনায় যখন সে জর্জরিত হয়, মারসিঅনেস তখন আর নিজেকে স্থির রাখতে পারে না, তখন তার পুরুষ চাই-ই।
সে জন্ম-গণিকা। নিজের অফুরাণ কামশক্তিকে কাজে লাগিয়ে ধাপে ধাপে , উপরে উঠেছে ; শুরু করেছিল সমাজের নিমতল লােকদের নিয়ে, ক্রমশ আকর্ষণ করতে পেরেছে সমাজের ধনী-মানী-সন্ত্রান্তদের। এ ব্যাপারে সে পশুসুলভ শক্তি ও বুদ্ধির অধিকারিণী, বিবিধ প্রকার চুম্বন ও সঙ্গম-রীতিতে যে কোন পুরুষকে পাগল করে দিতে পারে। অজস্র পুরুষ আজ পর্যন্ত তার সঙ্গে দৈহিক মিলনে তৃপ্ত হয়েছে, অজস্র পুরুষ ! কিন্তু মারসিজনেস কখনও কারুর প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়েনি, আবার কারুর ওপর বিরক্তও হয়নি। এই সহজাত নির্বিকারত্ব শ্রেষ্ঠ গণিকার মানসিকতা। ……..
……..এখন রহস্যময় অন্ধকারে শুধু এরা দু’জন-সেভেল ও মারসিজনেস। দু’জনেই নিজেদের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে আনতে আনতে এক সময় একে অপরকে স্পর্শ করে, স্পর্শ রূপান্তরিত হয় আলিঙ্গনে। সেভেলের বলিষ্ঠ বাহু পীড়ন করতে থাকে মারসিঅনেসের নরম দেহকে, মারসিজনেসও প্রবল আবেগে জাপটে ধরে সেভেলকে ; প্রেম ও কামনার জালে আবদ্ধ তারা একেবারে বুদ। নাড়ীর স্পন্দন দ্রুততর, শরীর যেন উত্তাপে ফেটে পড়ছে। সেভেলের বাধা সত্বেও মারসিঅনেস তার কোমর নামিয়ে সেভেলের পায়ের কাছে বসে পড়ে, ফিসফিসিয়ে বলে, “বিদ্যুতের আলােয় আমি তােমার সম্পূর্ণ রূপ দেখবাে।”……..
…….সারভিনির নির্দেশে ঝি জোয়েতের বসন খুলতে থাকে। স্বচ্ছ অন্তর্বাসটি ছাড়া জোয়েতের শরীরে আর কোন আবরণই থাকে না। প্রাণৈশ্বর্যের ও রূপোশ্বৈর্যের রাণী যেন তার যৌবনের শেষ সুপ্ত স্থানটিও এই মুহুর্তে মেলে ধরবে। সারভিনি ওকে দু’হাতে জড়িয়ে ধরে আস্তে আস্তে বিছানায় শুইয়ে দেয়। জোয়েতের স্বল্পবৃত দেহের নিবিড় স্পর্শে সারভিনির শিরা উপশিরা চঞ্চল হয়ে ওঠে।………..