স্বর্গের নীচে মানুষ – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

……মেয়েটির নাম ভাস্বতী, বয়েস ২৭, সে পরে আছে গাঢ় নীল রঙের শাড়ী ও ব্লাউজ ~~ ব্লাউজের তলায় ব্রা-র আউট লাইন চোখে পড়ে। তার ব্রা-র রং কালাে, সায়ার রং কালাে……………কেউ না দেখলেও কিছু কিছু ব্যাপার আসে যায়। ভাস্বতী তার শাড়ী উরুর অনেকখানি পর্যন্ত তুলে ফেলেছে, রঞ্জন সেদিকে একদৃষ্টে তাকালাে। …..…… ভাস্বতীর ফর্সা উরু, নীল শাড়ী যেন যবনিকা। যে-পুরুষ তার নিজের স্ত্রীকে শয়নকক্ষে বহুবার নিরাবরণ দেখেছে, ঘুমের ঘােরে ……

……….ব্লাউজটা খুলে ফেলার পর কালাে সায়া ও কালাে ব্রা-তে তার ফর্সা শরীরটা মােহময় হয়ে উঠে। যেন সে কোনাে প্রাচীন মন্দিরের দেবদাসী।……..অন্ধকার ঘরখানায় কালাে সায়া ও ব্রা-র জন্য ভাস্বতীর ফর্সা শরীরের খালি অংশগুলােই শুধু দেখা যাচ্ছিল। এবার সম্পূর্ণ শরীরটা দেখা গেল। সে বিশেষ রকমের সুবিধাভােগিনী, কারণ সে এরকম একটা নিখুত শরীর পেয়েছে। সম্পূর্ণ শরীরটা হেঁটে গেল খাটের কাছে, পাজামা ও গেঞ্জি তুলে নিয়ে পড়লাে, তারপর বললাে, চামড়ার ব্যাগের মধ্যে টর্চ আছে।……….রঞ্জন দেখলাে, ভাস্বতীর পীনােন্নত স্তন্বয় ঘন ঘন নিশ্বাসে উঠছে নামছে। ভাস্বতী উত্তেজিত।………গেঞ্জির তলায় অল্প ভাজপড়া তকতকে পেটে হাত রেখে ভাস্বতী শরীরে একটা আড়মোড়া দিল।……….

…….ভাস্বতী ভিজে পােশাকগুলােতে হাত দিয়ে দেখল। শুকোবার কোন লক্ষণ নেই। হাওয়া এখনও গুমােট। কিন্তু ব্রেসিয়ার ছাড়া রীতিমতন অস্বস্তি লাগছে তার। রাত্রে বিছানাতে ছাড়া আর সব সময় ব্রেসিয়ার পরে থাকা অনেকদিনের অভ্যস। ব্রা এখনাে ভিজে থাকলেও সে পরে ফেলা মনস্থ করে। রঞ্জন মৃদু আপত্তি তুললেও সে কানে তােলে না।………রঞ্জনের দিকে পেছনে ফিরে তাস্বতী গেঞ্জিটা খুলে ফেললাে, বিশাল ‘ ভি’ অক্ষরের মতন তার ফর্সা পিঠ। কোথাও একছিটে মালিণ্য নেই, এইসব নারীর ঘাড়ে কখনাে ময়লা জমে না। এই সব সৌন্দর্য প্রয়ােজনের চেয়েও অতিরিক্ত মনে হয়- পাথরের মূর্তি হিসেবেই যেন বেশি মানায়।……….

–হুকটা আটকে দাও তাে।

রঞ্জন উঠে ভাস্বতীর ব্রেসিয়ারের হকটা পিছন দিক থেকে আটকে দিয়ে অভ্যেসবশত তার ঘাড়ে একটা চুমু খেল। তারপর কাধ ধরে তাকে নিজের সামনের দিকে ফিরিয়ে দিয়ে বললাে, তুমি এই ভাবেই থাকবে নাকি? এর ওপর গেঞ্জিটা পরবে না ?

ভাস্বতী হাসলাে কৌতুকে। তার সেই কোচকানাে পাজামাও কালাে ব্রেসিয়ার পরা শরীরটা দোলালাে একবার। মাথার ওপর হাত দুটো বাকা ভাবে তুলে রঙ্গভরে বললাে, নাচবে।………ভাস্বতী দু হাত দিয়ে রঞ্জনের গলা জড়িয়ে ধরে বললাে, উহ! রঞ্জন ভাস্বতীর ঘাড়ের কাছে চুমু খেয়ে লালচে দাগ করে দেয়।…….তাস্বতী রঞ্জনের বুকে অসম্ভব জোরে চেপে ধরে নিজের বুক।……….

……….এরকমভাবে খােলা আকাশের নিচে দাড়িয়ে ভাস্বতী কখনাে পােশক পরিবর্তন করে নি। স্নিগ্ধ হাওয়া প্রিয় স্পর্শের মতন লাগছে শরীরে। ভাস্বতী কয়েক দন্ড সম্পূর্ণ নিরাবরণ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাে। কেউ তাে দেখার নেই।…..

………ভাস্বতী আর বাধা দিল না। প্রসেনজিৎ তার শাড়ীটা খুলে ছুড়ে রাখালাে এক পাশে। তারপর অন্ধ যেমন হাতড়ে হাতড়ে জিনিস খােজে, সেই রকম ভাবে সে তার ঠোট চুইয়ে ভাস্বতীর গলা,, ঘাড় এবং বুকে কি যেন খুঁজতে লাগলাে। ভাস্বতী মূর্তির মতন দাড়িয়ে।……..প্রসেনজিৎ হাত দিল তার ব্লাউজের বােতামে। ব্লাউজ ও ব্রা ঝরে পড়লাে মাটিতে। সেই সঙ্গে ভাস্বতীর চোখ থেকে দু ফোঁটা জল। তার ফরসা চেহারাটা কেমন যেন হঠাৎ অলৌকিক মনে হয়।…….প্রসেনজিতের চোখে কয়েক জন্মের বিস্ময়। শিশু যেন দেখছে প্রথম আগুন। কিংবা জহরী যেমন ভাবে হীরে পরীক্ষা করে, সেইভাবে সে হাত বুলােতে লাগলাে ভাস্বতীর শরীরে। ভাস্বতী তার বুকের কাছে দুটো হাত তুলে রাখলাে, যেন সে তার অজাত সন্তানকে আদর করছে।………

…….প্রসেনজিৎ হাটুতে ভর দিয়ে বসলাে মাটিতে, ভাস্বতীর কোমর জড়িয়ে ভাস্বতীর একখানা হাতে ঠোট ছুইয়ে বললাে, তুমি সুন্দর! তুমি সুন্দর।

ভাস্বতীর রূপের মধ্যে সচরাচর একটা অহংকার মিশে থাকে। কিন্তু এখন তার শরীর যেন নম্ব, বিনীত। তার চোখের দৃষ্টি নত হয়ে আছে। নগ্ন স্তন দুটি আড়াল করে রেখেছে দু’হাতে। তার সরু কোমরের কাছে কালাে শায়ার দড়িতে প্রসেনজিতের হাত। …..প্রসেনজিৎ উঠে দাড়িয়ে ভাস্বতীকে প্রচন্ড জোরে জড়িয়ে ধরে। ঠোঁটে চেপে ধরে ঠোট! ব্যস্ত হাতে সে শায়ার দড়ির গিট খুলতে পারছে না। …….ভাস্বতীর মুখখানা অরুণবর্ণ। দেহের উত্তাপ বেড়ে গেছে অনেকখানি।………তবু সে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চাইছে। বুভুক্ষুর মতন প্রসেনজিৎ তার বুকে মুখ ঘষছে। ঠিক তখনই নিচে অনেকগুলাে মানুষের আওয়াজ শুনতে পাওয়া গেল।

ভাৰতী মরীয়া হয়ে বলল, ছেড়ে দাও, আমাকে ছেড়ে দাও।……….

Leave a Reply