অনুবাদঃ চারু হক
…….যৌনতা আপনার উদ্ভাবন নয় ; ঈশ্বরের উপহার । এটা আনন্দদায়ক ! উপভােগ ও উদযাপনের জন্যে এটা ঈশ্বরের দেয়া একটি উপহার। এই মিলন বিরাজিত মহামিলনে অংশ নেয়। কে আপনাকে বলেছে যে যৌনতা অশ্লীল অথবা একটি নােংরা কাজ ? অস্তিত্ববান প্রতিটি প্রাণ যৌনতার ফল এবং সকল জীবের জীবন এর মধ্য দিয়েই সৃষ্ট…….
…….যেখানেই সৌন্দর্য, সেখানেই যৌনতা । যৌনতা হওয়া উচিত খেলাচ্ছল এবং প্রার্থনাময়। কোনাে মেডিক্যাল কলেজেই যৌনতাকে কোনাে পৃথক বিষয় হিসেবে পড়ানাে বা শিক্ষা দেয়া হয় না। এমন এক অপরিমেয় গভীর আর পরাক্রান্ত বিষয়, অথচ তা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষা দেয়া হয় না।…….
……যখন আপনি কোনাে নারী বা পুরুষের জন্যে তীব্রভাবে লালায়িত হয়ে ওঠেন, তখন আসলে কী ঘটে ? আপনার একটি অংশ আরেকটি অংশের সাথে মিলিত হবার জন্যে ব্যকুলতা বােধ করে, কিন্তু আপনি অন্যের বহির্ভাগে মিলিত হতে চেষ্টা করেন।……
…….যখন আপনি আপনার ভেতরের নারী বা পুরুষটির সাথে মিলিত হবেন, একমাত্র তখনই মিলন হবে অন্তরঙ্গ। এবং যখন সকল বিভাজন শেষ হয়ে যাবে তখনই সেই মহামিলন সংঘটিত হবে।…..
……..নিরানব্বই ভাগ মানুষ যৌনতাকে এক ধরনের নিবৃত্তি হিসেবে জানে । তারা এর শীর্ষসুখ বা চরমপুলকগত বিশেষত্বের কথা জানে না । এমনকি যদিও তারা মনে করে যে চরমপুলক অনুভব করছে, তবুও এটা ঠিক শীর্ষসুখ বা চরমপুলক নয় … এটি জননেন্দ্রিয়গত মুক্তি মাত্র।
দৃশ্যত শীর্ষসুখের লক্ষ্যে জননাঙ্গ নিয়ে করার তেমন কিছু নেই : জননেন্দ্রিয়সমূহ এর মধ্যে সম্পৃক্ত, কিন্তু শীর্ষসুখ ব্যাপারটি সামগ্রিক … আপাদমস্তক, এটা আপনার সবকিছু নিয়ে, নির্গমন বা বীর্যপাত করাই শীর্ষসুখ/ চরমপুলক নয় এটা খুবই আংশিক নির্গমন বা অপ্রধান পুলক … তা শীর্ষসুখ নয় ।……..
……..শীর্ষসুখের ক্ষেত্রে, আপনি আপনার দেহের গভীরতম স্তরে পৌছে যান যেখানে বস্তু নয়, শুধু শক্তি তরঙ্গায়িত হয়, আপনি নৃত্যরত শক্তির আন্দোলনে পরিণত হন। আপনার জন্যে আর কোনাে সীমানা থাকে না …. এবং আপনার যৌনসঙ্গীও এ স্পন্দন অনুধাবন করতে থাকে।….
……কিন্তু আপনি যদি সঙ্গম সময়ে এ নিয়ে তাড়াহুড়াে করেন তবে শীর্ষসুখ শুধু নির্গমন/ বীর্যস্থলনে রূপ নেবে, কোনােভাবেই তা প্রকৃত শীর্ষসুখ থাকবে না। কারণ, তখন তা সাময়িক এবং অতি ক্ষুদ্র ; প্রায় অর্থহীন। এক অর্থে আপনি ক্লান্তি অনুভব করবেন, হতাশ। হবেন এবং এটা সম্পাদনের পর নিরুদ্যম হবেন ! কেননা এতে শক্তির ক্ষয় হয়েছে এবং তা আপনাকে কোনাে শুশ্রুষা দেয়নি, তাই বিষয়টি কেবল অর্থহীনতায় পর্যবসিত।…….
…….যােনিপথ নারীদেহের ঋণাত্মক মেরু এবং স্তনসমূহ ধনাত্মক মেরু । এটা ঠিক চৌম্বকত্ব সম্পন্ন দণ্ডের ন্যায় : স্তনের কাছে ধনাত্মক মেরু, যােনিপথের কাছে ঋণাত্মক মেরু। পুরুষের ক্ষেত্রে স্তনসমূহ ঋণাত্মক মেরু এবং পুরুষাঙ্গ ধনাত্মক মেরু।…..
……তাই যখন স্তনসমূহ মিলিত হয় … পুরুষ এবং নারী … ঋণাত্মক ও ধনাত্মক শক্তি মিলিত হয়; এবং যখন যৌনকেন্দ্রগুলাে মিথুনরত হয়, ঋণাত্মক এবং ধনাত্মক শক্তি মিথুনরত হয়…….
…….শক্তি পুরুষের কাছ থেকে নারীতে প্রবাহিত হয়, নারী থেকে পুরুষে নয়। তাই একজন নারী একরাতে বিশ থেকে তিরিশবার পুরুষের সাথে যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হতে পারে, কিন্তু কোনাে পুরুষ তা পারে না।……..
…….যতক্ষণ পর্যন্ত না পুরুষ তার নারীর স্তনভাগ থেকে ভালােবাসতে শুরু না করে, ততক্ষণ নারীর ঋণাত্মক মেরু সক্রিয় হয় না। সে নিজেকে সমর্পণ করে, কিন্তু অংশগ্রহণ করতে পারে না।…….
……নারী কামনা করে ; তার দয়িত তার স্তনযুগলে আদরস্পর্শ দেবে, ভালােবাসা জানাবে … গভীর মুগ্ধতায় । আর যখন তার স্তনযুগল শক্তির উষ্ণতায় পরিপূর্ণ থাকে, কেবল তক্ষুনি দ্বিতীয় মেরু চুম্বকদণ্ডের মতাে আকর্ষণ অনুভব করে, যা ঋণাত্মক মেরু বলে পরিচিত।….
…..যৌনকর্মে শৃঙ্গার অপরিহার্য……
…..পুরুষের কাছে তা খুব আকস্মিক ও অপ্রত্যাশিত নয়, কারণ পুরুষের শক্তি ভিন্ন ধর্মের শক্তি এবং পুরুষের যৌনতা অনেক বেশি স্থূল (Local),
নারীর যৌনতা অনেক বেশি সম্পন্ন ও সম্প্রসারিত (Total) ; তার সমস্ত শরীরকে এতে সম্পৃক্ত হতে হয় । তাই যতক্ষণ না শৃঙ্গারকলার মধ্য দিয়ে তাকে উষ্ণ করা হয়, ততক্ষণ নারী তার গভীরে যেতে পারে না।……