….দীপ্তকে কথা বলতে শুনলাম। সেই কথাগুলো আমার মনের জমিতে এমনভাবে আছড়ে পড়ল যেভাবে একটা মেঘহীন আলোময় সকালে হিরোশিমার ওপর আছড়ে পড়েছিল অ্যাটম বোম। আমার যেন কানের পাশাপাশি পুরো হৃদয়টা ছারখার হয়ে গেল। আমি দেখলাম শৌনক দীপ্তর কাছে দুঃখ করছে আমাকে ট্যুর ম্যানেজার হিসাবে ওর সঙ্গী করা হচ্ছে বলে। “একটু যা মজা ছিল থাইল্যান্ড ট্যুরের সেটাও এবার চলে যাবে। আরে কে যাবে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে তৃষার সঙ্গে? আমাদের ব্যাঙ্কক ট্যুর তুই তো জানিস, আমি আর তুই সেবার গিয়েছিলাম। ওই চিয়াংমাই-এর রাস্তায় যেখানে একশো নগ্ন মেয়ে একসঙ্গে বসে থাকে আর তারা একসঙ্গে স্নান করে, একশো ভাট দিয়ে সেই স্নানের দৃশ্য দেখা যায়। দুশো ভাট দিলে সেই মেয়েগুলোই সাবান ঘষে তোকে স্নান করিয়ে দেবে, এই সমস্ত এনজয়মেন্ট বল তো সঙ্গে একটা মেয়ে নিয়ে গেলে কোনওদিন করা যায়। কোথায় কোথায় যেতাম, কত উলঙ্গ মেয়ে দেখতাম, কেউ নাচছে, কেউ সাবান মাখিয়ে দিচ্ছে, কেউ পায়ের নখ কেটে দিচ্ছে, পুরো এনজয়মেন্টটাই মাটি। একটা নুড ম্যাসেজও নিতে পারব না এবার। ব্যাঙ্ককে যাব না হরিদ্বারে যাব বোঝাই যাবে না। ধ্যাত্তেরি’।….
…..প্রকৃতপক্ষে কুন্তীকে দেখে ওই আলোকসামান্য সূর্যের ভেতরেও এত কাম জেগে উঠেছিল যে সেই কামের তাড়না থেকে সূর্য নিজেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেননি। ঠিক যেভাবে দ্বিপ্রহরের রোদ সমুদ্রের জল শুষে নেয়, সূর্য সেভাবেই শুষে নিতে চাইছিলেন কুন্তীর স্তন, যোনি, জঙ্ঘা, নাভি থেকে সমস্ত রূপ, সমস্ত প্রেম, সমস্ত কমনীয়তা, যাবতীয় মাধুর্য, যা নিয়ে নেওয়ার পরও আবার একইভাবে থেকে যায় রমনীর ভেতরে। ঠিক যেরকম পূর্ণ থেকে পূর্ণ তুলে নিলে পরে পূর্ণই থাকে। সূর্যর ওভাবে কুন্তীকে কামনা করা আমাকে যেন কুন্তীর প্রতি আরও বেশি করে আকৃষ্ট করে তুলল।
আয়নার সামনে নগ্ন দাঁড়িয়ে আমি ভাবতে থাকতাম কোনও পুরুষ কি আমার প্রতি এতটা আকৃষ্ট হবে যে সে কখনও আমাকে প্রলোভিত করার চেষ্টা করবে, কখনও পুরষ্কৃত করার চেষ্টা করবে, কখনও বা ভয় দেখিয়ে আমাকে পাওয়ার চেষ্টা করবে। কিন্তু সব চেষ্টার মূলে থাকবে একটাই চেষ্টা, আমাকে পাওয়া, আমার সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হওয়া। কুন্তীর সঙ্গে সূর্যের সঙ্গমের পর কুন্তী অচেতন হয়ে গিয়েছিলেন, এমন কথাই লিখে গেছেন মহাভারতকার। কিন্তু সেই অচেতন তো তিনি কোনও অত্যাচারে হননি, হয়েছিলেন প্রবল সঙ্গমে। রমণী মাত্রই রমণের সহায়ক কিন্তু সেই প্রচণ্ড রমণ যেন একটা নাগরদোলার মতো প্রবলভাবে নীচ থেকে ওপরে উঠেই আবার ওপর থেকে নীচে নামছিল। তারপর থেকে প্রবল রোদে, সানস্ক্রিন না মেখেও আমি বেরিয়ে যেতাম এক একদিন। মনে হত আমার ত্বকের ওপর ওই যে সূর্যের তেজ এসে পড়ছে, সূর্যের ওই প্রচণ্ড তেজে আমার যে মাথা ঘুরতে শুরু করছে, ওটা যেন কোথাও একটা সূর্যের সঙ্গে মানবীর সঙ্গমেরই আখ্যান। সূর্য তার রৌদ্র রশ্মির মধ্যে দিয়ে যেন প্রতি মুহূর্তে শুষে নিতে চায় সব রূপ, সবটুকু লাবণ্য এবং বিনিময়ে দিয়ে যেতে চায় সেই ত্বকের কুঞ্চন যা সূর্যের সন্তান হিসাবে গণ্য হতে পারে। সূর্য তো ছুঁয়ে যায় প্রতিটা মানুষকেই আর সূর্যকেও আমরা ছুঁয়ে যেতে পারি তেমন তেমন মানুষের মধ্যে।…..
…..আর বাধা দিতে পারলাম না। আমার হাত ধরে ও আমাকে আটশো দশ নম্বর ঘরে নিয়ে গেল। আমি সেখানে বসলাম। শৌর্য স্নান করে এল। ওর স্নানের পরে অদ্ভুত একটা গন্ধ লাগল আমার। আমিও স্নানে যেতে চাইলাম। ও বলল, ‘তোমার স্নানের দরকার নেই। তুমি তো স্নান করাবে লোককে’।
ওর কথায় আমি যেন ক্যাডবেরির মতো গলে গেলাম সেই মুহূর্তটায়। একটা পাখিকে মানুষ যেভাবে হাতে নিয়ে নেয়, একটা উড়তে চাওয়া পায়রাকে যেভাবে মুঠোর মধ্যে বন্দি করে সেভাবে বন্দি করে ও আমাকে বিছানায় নিয়ে এল। আমি ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম। ও এসির তাপমাত্রা কুড়ি থেকে ষোলো করল। আমার কনকনে ঠান্ডা লাগতে লাগল। আমি শীত করছে বললাম।
শৌর্য বলল, ‘আমার সমস্ত উত্তাপ দিয়ে তোমার শীতকে আমি নিয়ে নেব’। বলতে বলতে আমার জামাটা ও খোলার চেষ্টা করতে লাগল। খুলতে পারছিল না। আমি চোখ বন্ধ করে মনে মনে বলছিলাম যেন না পারে। কিন্তু সেই মুহূর্তেই একটা সুতোর টানে আমার জামাটা খুলে গেল। শৌর্য দুটো হাত দিয়ে আমার ব্রা-এর হুকটা খুলে দিল তার অভ্যস্ত হাতে। আর খুলতে গিয়ে একটা মুহূর্ত আমার একটু ব্যথা লাগল ।। আমি ‘আহ’ বলে উঠলাম। শৌর্যর মুখ থেকে বেরিয়ে এল ‘বাহ’। তারপরেই আমি আমার বুকে ওর ঠোঁটের, ওর দাঁতের স্পর্শ পেতে শুরু করলাম। সেই একটু ব্যথার মধ্যেও কি অসহ্য আনন্দ। শৌর্য আমার ওপর উঠে পড়ল। প্যান্টিটা হাত দিয়ে এমনভাবে টেনে নামিয়ে দিল যেভাবে কোনও সেতু বা মঞ্চ উদ্বোধনের আগে পদাটা সরিয়ে দেওয়া হয়। এখানে একটা সেতুই উদ্বোধন হচ্ছিল, আমার আর শৌর্যের শরীরের সেতু। একটা মঞ্চের উদ্বোধনই হচ্ছিল যে মঞ্চে পৃথিবীর আদিমতম এবং আধুনিকতম নাটক অভিনীত হয়ে আসছে এবং হয়ে যাবে। প্রতি দিন, প্রতি সন্ধ্যা, প্রতি রাত্রে। নগ্ন আমাকে দশ সেকেন্ড অপেক্ষায় রেখে শৌর্য খুব দ্রুত নিজেকে মুক্ত করে নিল সমস্ত আবরণ থেকে। আমি একবার ইশারায় ওকে আলোটা নেভাতে বললাম। ও প্রথমে একটু ইতস্তত করল, তারপর নিভিয়ে দিল আলো। তবু সেই আধো অন্ধকারেও আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম ওর ছায়াশরীর জীবন্ত হয়ে উঠছে, ওর নাক-চোখ- মুখ, ওর পেশিবহুল হাত, ওর রোমশ বুক, ওর পেটাই পেট আর তারপরে একটা খাপ খোলা তলোয়ারের মতো ওর পুরুষাঙ্গ। আমি ছোটবেলায় যুদ্ধের গল্প পড়েছি যেখানে ঝলসে উঠত সৈন্যদের তলোয়ার। সেরকমভাবেই যেন গোধূলির আকাশে একটা তলোয়ার ঝলসে উঠল। শৌর্য আমাকে জাপটে ধরে পাগলের মতো আদর করতে লাগল আমার স্তনে, ঠোঁটে, পেটে, নাভিতে। আমি যেন সেই আদরের প্রগলভতায় ভেসে যেতে থাকলাম। মনে হল কোথাও একটা ডিভিসির বাঁধ যেন ফেটে গেছে। জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে মেদিনীপুর থেকে বর্ধমান। আমিও প্লাবিত হয়ে ডুবে যাচ্ছিলাম। সেই সময় সেই ঝলসানো তলোয়ার আমার অভ্যন্তরে প্রবেশ করিয়ে দিল শৌর্য। আর সেই তলোয়ারে আমার মনে হতে লাগল। কেবল আমার কুমারীত্ব নয়, ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে আমার সমস্ত অজ্ঞানতা, আমার সবটুকু সারল্য।
আমি বালিকা থেকে নারী হয়ে উঠছি। যেভাবে খেতের ঢেলাগুলো গুঁড়িয়ে দেয় লাঙল সেভাবে শৌর্যর পুরুষাঙ্গ আমাকে গুঁড়িয়ে দিচ্ছিল ভেতরে ভেতরে। আমাকে পুড়িয়ে দিচ্ছিল, একই সঙ্গে আমাকে জুড়িয়ে দিচ্ছিল। ওই গুঁড়িয়ে যেতে যেতে জুড়িয়ে যাবার প্রক্রিয়ায় পৌঁছতে পৌঁছতে হঠাৎ করে সেই তলোয়ার থেকেই আগ্নেয়গিরির বর্ষণ শুরু হল। লাভায় লাভায় আমার ভেতরটা যেন ভরে গেল। আমি কেঁপে কেঁপে উঠতে লাগলাম। শৌর্য তখন আমার ভেতরে। পুরুষ আর নারীর প্রক্রিয়ায় ঝেঁপে বৃষ্টি শুরু হয়েছে এক নারীর অন্দরে।
সেই রাত্রে আমি শৌর্যকে জড়িয়েই ঘুমিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ঘটনাটা ঘটে যাওয়ার আধ ঘণ্টার মাথায় শৌর্য আমাকে বাড়ি চলে যেতে বলল। ওর কাছে রাত্রিবেলা মিটিং করতে নাকি কোন প্রোডিউসার আসবে। | স্বর্গ থেকে বিতাড়িত হলে মানুষের যেরকম লাগে আমার সেরকমই লাগছিল। কিন্তু তার ভেতরেও একটা নিবিড় আনন্দ যেন আমার সারা শরীরে স্রোতের মত বয়ে যাচ্ছিল। আমি একটা ঘোরের মধ্যে বাড়ি চলে এলাম। নিজের ঘরে ঘুমিয়ে পড়লাম। একা হয়েও সেই ঘুমের মধ্যে সারাক্ষণ শৌর্যের স্পর্শ আমাকে জাগিয়ে তুলছিল। আমার শরীরের তলদেশ যেখানে আমি রক্তের স্রোত দেখেছিলাম ভার্জিনিটি হারিয়ে ফেলার কারণে তা যেন আমাকে প্রতি মুহূর্তে এক অজানা পুলকের আশ্বাস দিচ্ছিল।
রক্তাক্ত হয়ে যে পৃথিবীতে এত সুখ থাকতে পারে, তা এর আগে আমি কখনও আন্দাজ করতে পারিনি। যৌনতার অমোঘ সত্য হল তা একবার ঘটলে আবারও ঘটতে চায়। আর সেই চাওয়াটা কেবল একপাক্ষিক নয়। তাই নিজের থাকাটা আর একদিন বাড়িয়ে শৌর্য যখন পরদিন আমাকে ডাকল, আমি একটা যন্ত্রচালিত রোবটের মতো আবার ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম, আর আবারও তাই তাই হল যা যা আগের দিন হয়েছিল। কিন্তু এবার পুরোটাই যেন সেই ঝরনার প্রগলভতাকে সরিয়ে বৃষ্টির অভ্যস্ততায় নেমে এল। আগের দিনটা ছিল থর মরুভূমিতে বৃষ্টি, এবার যেন চেরাপুঞ্জিতে। প্রবল কর্ষণ আর বর্ষণে শৌর্য আমাকে আধো অচেতন করে দিল আবারও। আর সেদিন কেবল একবার নয়, একবার-দুবার তিনবার মিলিত হলাম আমরা। তিন ঘণ্টার ব্যবধানে। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম ব্যথায়, আনন্দে, যন্ত্রণায়, প্রাপ্তিতে। আমার বারবার মনে হচ্ছিল এত সুখ এখানে লুকিয়ে তা আমি আগে কখনও বুঝিনি কেন। আর সেই পাওয়ার ভেতর অন্য একটা পাওয়াও ছিল, আমার সঙ্গে যে মিলিত হচ্ছে সারা ভারতবর্ষ তার গলায় পাগল। শৌর্য যখন আমার স্তনে কামড় দিচ্ছিল আমি পাল্টা কামড দিচ্ছিলাম ওর গলায়। আমার মনে হচ্ছিল আমি যেন কামড়ে এক খণ্ড গান নিজের মধ্যে নিয়ে আসতে চাইছি। ‘এত সুন্দর তুমি, এত সুন্দর কাউকে আমি বহুদিন পাইনি’। শৌর্য বলছিল। ওর ওই বহুদিন কথাটার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল ও আগেও পেয়েছে, পরেও পাবে হয়তো।…
….তৃতীয়বার ওকে যখন আমি বারণ করছিলাম তখন ও হাত দিয়ে আমাকে এমন জাগিয়ে তুলল যে আমার সারা নিম্নাঙ্গ ভিজে যাচ্ছিল আমারই স্রোতে। আমার স্রোতের মধ্যে বৈঠা বাইতে লাগল শৌর্য। আগের দিন যাকে তলোয়ার মনে হচ্ছিল আজ তাকেই মনে হতে লাগল বৈঠা।
একটার পর একটা ঢেউ কেটে সে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাচ্ছে মাংস থেকে শিরা-উপশিরায়, এগিয়ে যাচ্ছে শক্তি থেকে সম্পূর্ণতায়, এগিয়ে যাচ্ছে যোনি থেকে জন্মে। তৃতীয়বারের মিলন সম্পূর্ণ হওয়ার পর আমি একেবারে নিশ্চেতন পাখির মতো পড়েছিলাম আর শৌর্য আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়েছিল। যেন সম্পূর্ণ তৃপ্ত আর সম্পূর্ণ শূন্য হওয়ার যুগলবন্দি। শুয়ে থাকতে থাকতেই ও গুন গুন করতে থাকল একটা গান। আর আমার মনে হতে লাগল ওই সুর যেন ওর শক্তি হয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে আমার ভেতর।
আচ্ছা বীর্য কখন ঔরসে পরিণত হয়? কোন নিরাপত্তাহীনতায়? পৃথিবীতে যেখান থেকে প্রাণ আসে, প্রাণ যেখানে কথা বলে, সেখানে প্রোটেকশন কী করতে পারে? মৃত্যুর থেকে প্রোটেকশন হতে পারে মানুষের, প্রাণের থেকে প্রোটেকশন নেয় কী করে লোক?….
….হৃষিকেশ থেকে একদিন আমরা একটা ট্রেকিং-এ গিয়েছিলাম। একটা ছোট পাহাড়ের বেস ক্যাম্প অবধি। ততদিনে শীত এসে গেছে বলে আর সেবার শীত খুব বেশি বলে চতুর্দিকে বরফ পড়ছে। আমরা দুজন পাশাপাশি দুটো তাঁবুর ভেতরে ছিলাম। সেই প্রবল ঠান্ডার মধ্যে হঠাৎ করে আমি ওকে কামনা করতে শুরু করলাম। আর হৃষিকেশের জনবসতির মধ্যে থাকলে যা কখনও সম্ভব হত না, ঠিক সেই জিনিস যেন আমার দ্বারা সম্ভব হল যখন আমরা প্রকৃতির কোলে আশ্রয় নিলাম। ভরত ঘুমিয়ে ছিল ওর তাঁবুর ভেতর, আমি আলতো করে ওর কানের লতি কামড়ে ধরলাম। তারপর ওর গলায় চুমু দিতে লাগলাম। চুমু দিতে দিতে গলা দিয়ে নীচে নামতে লাগলাম আবার ওপরে উঠতে লাগলাম। ঘুম ভেঙে চমকে উঠে ও আমার দিকে অবাক হয়ে তাকাল। আমাকে হাত দেখিয়ে নিরস্ত করতে চাইল। কিন্তু আমি তখন নিরস্ত হওয়ার পাত্রী নই। আমি যেন জংলি বিল্লির মতো ঝাঁপিয়ে পড়লাম ওর ওপরে। ওর বুকে মাথা ঘসতে লাগলাম।
ভরত তবু আমাকে নিরস্ত করার চেষ্টা করছিল কিন্তু আমি সেদিন ফেটে যাওয়া গ্লেসিয়ারের মতো উদ্দাম বন্য বেগে ওপর থেকে নীচে নামছি।
আমি আমার সমস্ত যৌবন নিয়ে যেন আছড়ে পড়লাম ওর ওপরে। আমাকে বাধা দিতে দিতে, একটা সময় ও নিজেও প্লাবিত হল। তখনও মুখে বলে যাচ্ছিল, ‘শরীর অবসাদ নিয়ে আসে, অবসাদ থেকে যন্ত্রণা আসে।
আর আমি বলছিলাম, ‘যন্ত্রণা থেকে তৃপ্তি আসে। কানের দুল থেকে গলার হার সরিয়ে নিজেকে নিরাভরণ করলাম আমি। মুহূর্তের মধ্যে ভরতকেও নগ্ন করলাম চোখের সামনে। নিরাভরণ নারী আর নিরাভরণ পুরুষের মধ্যে শুরু হল সেই আদিম প্রাকৃতিক লীলা। বাইরে | যখন বরফ ঝড়ে পড়ছে, ভেতরে তখন আগুন জ্বলে উঠেছে। আর এই আগুন কোনও মানুষ পোড়ানো আগুন নয়, এই আগুন সেই পবিত্র হোমের কুণ্ডের মধ্যে থেকে জ্বলে ওঠা আগুন যে আগুন ওপরে ওঠে, যে আগুনের ওপরে হাত রেখে নিজেকে শুদ্ধ করে নিতে হয়। আমার মনে হচ্ছিল ভরত দাশের সেই প্রবল পৌরুষ যেন জেগে উঠেছে আমারই ছোঁয়ায় যেভাবে ধ্যানমগ্ন | হিমালয়ের ভেতর থেকে জেগে ওঠেন ঋষি।
ভরত যখন আমার ভেতরে প্রবেশ করছে তখন শুধু আমার ভেতরেই ও প্রবেশ করছে না, তখন যেন একটা অশ্বমেধের ঘোড়া একটা রাজত্বে প্রবেশ করছে। পুরুষের সেই বিপুল বিজয়ের সাক্ষী থাকতে চাইছিলাম আমি। চাইছিলাম যে আমার ওপর দিয়ে পুরুষের সেই ঘোড়া চলে | যাক কিন্তু একই সঙ্গে আমাকে পরাজিত নয়,
আমাকে নিজের জয়ে শামিল করতে করতে, একটা আনন্দ উৎসব রচনা করতে করতে, এক | প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে চলে যাক, গোধূলি থেকে রাত্রিতে চলে যাক, রাত্রি থেকে ভোরে চলে যাক, হলকর্ষণ থেকে ফসল উৎপাদনে চলে যাক, ফসল উৎপাদন থেকে অন্ন ব্যঞ্জনে চলে যাক। আমি যেন আমার ভেতরে প্রবলভাবে আবার এক নারীকে অনুভব করছিলাম একজন মা হওয়ার পরও যার কামনা ফুরিয়ে যায়নি। আমার মনে হচ্ছিল সূর্য যেমন যৌবন ফিরিয়ে দিয়েছিল কুন্তীকে, হ্যান্স লারসেন যেন আমার যৌবন ফিরিয়ে দিচ্ছে আমাকে। সেই যৌবনে প্লাবিত হতে হতে, আর হ্যান্স লারসেনকে প্লাবিত করতে করতে এক সময় যেন সেই প্রবল ডিনামাইট বার্স্ট করল, পাহাড় ভেঙে গিয়ে তৈরি হয়ে গেল রাস্তা। ভরত দাশের সম্পূর্ণ বীর্যটুকু নিজের ভেতরে নিয়ে আমি তৃপ্ত হয়ে উঠলাম, পূর্ণ হয়ে উঠলাম।….