শূন্য গর্ভ – মহুয়া মল্লিক

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  



…..মিতালি ভিতরে এসে বেড সাইড টেবিলটায় জুসের গ্লাসটা রেখে চলে আসছিল। তমোঘ্ন বিছানায় শুয়েছিল। হঠাৎ ডাকল, “শোনো, আমার মাথায় খুব যন্ত্রণা হচ্ছে, একটু ম্যাসাজ করে দেবে?” মিতালি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। ও বুঝতে পারছে না, ওর কী করা উচিত! এই সব কাজের কথা তো কনট্রাক্টে ছিল না। রান্নাটা বা বাড়ির এটা-ওটা কাজ, সে করে ঠিকই সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছেতে, কিন্তু এভাবে মাথা টিপে দেওয়া! নাহ ব্যাপারটা ওর ভালো লাগছিল না মোটেই। ওদিকে তমোঘ্ন রগের দুপাশ আঙুল দিয়ে টিপে যন্ত্রণাসুচক একটা আওয়াজ করে ফেলল। মিতালি আর কিছু না ভেবে এগিয়ে গেল। কিছুক্ষণ পরে যখন বুঝল, তমোঘ্নদার কিছুটা আরাম হয়েছে, চোখ বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েছে, তখনই সে উঠে আসছিল, আর পলকেই কী যে হল, ঠিক করে বুঝে ওঠার আগেই নিজেকে আবিষ্কার করল তমোঘ্নর শরীরের নীচে। এক হাতে শক্ত করে মিতালির কোমর পেঁচিয়ে রেখে, আরেক হাত দিয়ে দ্রুত ওর কামিজের চেন খুলে সেটা পেট পর্যন্ত নামিয়ে দিয়েছে তমোঘ্ন। মিতালি প্রবল বাধা দেবার চেষ্টা করেও নিজেকে ছাড়াতে পারছে না। কোনও ক্রমে বলল, “এ অন্যায়, আমাকে ছাড়ুন।” গর্জে ওঠে তমোঘ্ন, “কীসের অন্যায়! কদিন পরে তো আমার সন্তানকে ধারণ করতে যাচ্ছই!” মিতালি তবু যুক্তি দেবার চেষ্টা চালাচ্ছিল, ‘কিন্তু সেটা তো অন্যভাবে, এভাবে কখনও নয়’। ওর সমস্ত প্রতিরোধ খড়কুটোর মতো উড়ে গেল। মিতালি দেখল, তমোঘ্ন নামক শ্বাপদটা একটু একটু করে ওর শরীরের দখল নিয়ে নিল। ওর কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে এক ছুটে মিতালি নিজের জন্য নির্দিষ্ট রুমটিতে গিয়ে দরজা বন্ধ করে অনেকক্ষণ হুহু করে কাঁদল। তারপর রূম লাগোয়া টয়লেটে ঢুকল ধারাস্নানে নিজেকে ক্লেদমুক্ত করতে। টয়লেট লাগোয়া আয়নায় দেখলো স্তন দুটোতে আঁচড় আর কামড়ের অজস্র চিহ্ন। হঠাৎ ওর ইন্দ্রনীলের প্রতি বিতৃষ্ণায় মন ছেয়ে গেল।…..

…..প্রত্যুত্তরে পলাদির উত্তর কেউ যেন মিতালির কানে গরম সিসা ঢেলে দেয়। “অসুবিধা কোথাও নেই তো। ইসস ওর খোলা বুক দেখার সাধ হয়েছিল বুঝি তোমার?”….

….বাচ্চাটার খিদে পেয়েছে। কী যে হয়ে গেল ওর, পলকে নাইটির বোতাম খুলে একটা স্তন বাড়িয়ে দিল। বাচ্চাটাও খাদ্যের উৎসের প্রতি মনোযোগী হয়ে উঠল।….

….দৌড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় দেখে, তমোঘ্নদা কখন যেন ফিরে এসেছে। স্ত্রীর ব্যবহারে সেও হতচকিত। মিতালি নিজের ঘরে দরজা বন্ধ করতে যাওয়ার আগের মুহূর্তে তমোঘ্ন এসে দাঁড়ায়। বুকের মধ্যে টেনে নেয় মিতালিকে। সমব্যথীর মতো মিতালির মাথায় হাত বোলায়। মিতালির স্তন থেকে একফোঁটা দু ফোঁটা তখনও ঝরছিল অমৃতসুধা…..

……সিঁড়ি দিয়ে বারান্দায় উঠেই স্তব্ধ হয়ে গেল মিতালি। কেউ যেন ওর পা দুটো ওখানেই পেরেক দিয়ে আটকে দিয়েছে। নড়তেও ভুলে গেল ও। বারান্দার উপরে দীর্ঘ ছায়া। ঘরের মধ্যে আলিঙ্গনাবদ্ধ এক জোড়া নারী পুরুষের ছায়া। আর ছায়ার অবয়ব বলে দিচ্ছে, পুরুষ ছায়াটি ইন্দ্রনীলের। কতক্ষণ ওভাবে দাঁড়িয়েছিল মনে নেই। একটা সময় মুখ দিয়ে একটা অস্ফুট আওয়াজ বেরিয়ে গিয়েছিল বোধ হয়। ইন্দ্ৰ চমকে উঠে বলল, “কে?……

Please follow and like us: