বেদনার রঙ – সৈকত মুখোপাধ্যায়

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  


……যারা আসছে, তারা সবাই যে কাছাকাছি জায়গায় থাকে, তা নয় কিন্তু । ঝিনুক বলছিল, ওর এক কলেজের বান্ধবী বারাসত থেকে এখানে প্রেম করতে আসে। আসলে জায়গাটা যে শুধু সুন্দর তাই-ই নয়, নজরদারিটাও কম। ফলে যুবক যুবতীরা সহজেই শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হতে পারে। তাতে সেন্ট্রাল পার্কের বিভিন্ন গাছের আড়ালে, ঝোপের পেছনে যেসব দৃশ্য তৈরি হয়, সেগুলো বেশ অস্বস্তিকর। অবশ্য আমি মফস্বলের ছেলে বলেই হয় তো আমার অস্বস্তি লাগে। যারা ওইসব কাণ্ড করছে তাদের লজ্জা-টজ্জা আছে বলে তো মনে হয় না।
এই কারণেই আমরা এখানে খুব কম আসি। আমরা সাধারণত কোনও নিরিবিলি রেস্তোরাঁ কিংবা কাফেতে বসে গল্প করে সময় কাটাই। আর আমার যদি ঝিনুককে আদর করতে ইচ্ছে করে, কিংবা ঝিনুকের যদি ইচ্ছে করে আদর খেতে, কিংবা একসঙ্গে দুজনেরই যদি ইচ্ছে করে আদর করতে এবং আদর খেতে, তাহলে আমার অমন চমৎকার বাড়িটা তো আছেই। আমার দুই রুমমেট বিবেক আর মনীশের পার্মানেন্ট নাইট শিফট ডিউটি। ফলে সন্ধে আটটার পর থেকে ও বাড়ির বাসিন্দা আমি একাই। তবে সেরকম খেলার দিনেও হাতের সব তাস আমরা কখনওই ফেলিনি। আমি ঝিনুককে বলেছি, পানের পাতার আড়াল সরিয়ে যেদিন তোমার মুখটা দেখব, সেদিন সেই মুখে কিছু রহস্য যেন বাকি থাকে।…..
…….বাবলু নয়, এক মহিলা বারান্দায় বেরিয়ে এলেন। তাকে দেখে সঙ্গে সঙ্গেই শুভেন্দুবাবুর ভয়ের কারণটা বুঝতে পারলাম। ছোটো ছোটো চোখ। ভোঁতা নাক মুখ। ভারী চেহারা। স্লিভলেস নাইটির এদিক ওদিক দিয়ে লাল টুকটুকে ব্রায়ের স্ট্র্যাপ, বগলের চুল, থলথলে বুকের ওপরের অর্দ্ধাংশ এই সব উঁকি মারছে। কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। …..