১. সৌপ্তিক – শ্রীরাধিকার এসএমএস
…..শোকাতুরা রমণীরা এমনকী শতপুত্রহারা সাধ্বী নারী গান্ধারীও যখন বিলাপে আকুল, কৃষ্ণ শোকক্ষেত্র থেকে দূরে দাঁড়িয়ে মেসেজ বক্স খুলে দেখে নিয়েছিলেন বার্তা, ‘তুমি কেমন আছ? আমাকে কি ভুলে গেছ?’ বার্তা প্রেরণকারিণী একদা প্রেমিকা রাধিকা। যার স্তনদ্বয়ের নিন্মতল কৃষ্ণের বড় প্রিয়সুখের ছিল। অভিমানবশত প্রেমিকার কোনো ঠিকানার উল্লেখ ছিল না। বিচলিত হয়ে উঠেছিল চিরপ্রেমিক কৃষ্ণের হৃদয়। তিনি এখনও রমণীমোহন। বহু গোপিনীর সঙ্গসুখ তখনও তাঁর স্মৃতি থেকে অপসৃত হয়নি।…..
…..ঈশান কোণের দিকে যাত্রা করতে ইচ্ছে হয় তাঁর। সেখানেই তো বঙ্গদেশ– রাধার। দেশ। দীর্ঘাঙ্গী, আয়তনয়না রাধা। নিতম্ব কিঞ্চিৎ ভারী হলেও অসাধারণ বক্ষদেশ।…..
৪. শ্রীরাধিকার অনুরাগ স্মৃতি
শ্রীরাধা রতিক্রিয়ার হৃদয়ে যে-আনন্দের রেশ উৎপন্ন হয় সেখান থেকে বললেন, ‘হে যদুনন্ধন! চন্দনাপেক্ষাও সুশীতল তোমার করদ্বারা মদনের মঙ্গলকাসতুল্য আমার এই পয়োধরে মৃগনাভি পত্রলেখা অঙ্কিত করো।’ স্বাধীনভর্তৃকা রাধা। তিনি সব দূরত্ব আড়াল করে কৃষ্ণের কোলে এসে বসেছেন। যমুনায় নৌকাবিহার চলেছে। মাঝি ক্রুদ্ধ, সে তো আর যদুনন্দনকে চেনে না। বইঠা হাতে নিয়ে সে অন্য দিকে তাকিয়ে রয়েছে। চুম্বনে চুম্বনে রাধার চোখের কাজল মুছে গেছে। ভ্রমরসাদৃশ অবস্থা চূর্ণকুন্তলের। এবার সরস সুন্দর জঙ্ঘাদেশে কৃষ্ণের হাত খেলা করছে। রতি উন্মুখ রাধার জঙ্ঘাদেশে যে ঘর্ম রয়েছে তা তিনি জিহ্বা দিয়ে লেহন করছেন। আরও আরও শিউরে উঠেছে রাধা। একসময় মনে হয়েছিল, কথিত সময় তো অতিক্রান্ত হল, কই তিনি তো এলেন না। সখিগণ বোধ হয় বঞ্চনাই করেছে। কৃষ্ণের কাছে কোনো সংবাদই পৌঁছোয়নি। আসলে তখন তো চলভাষ ছিল না। ক্ষণে ক্ষণে তাঁর অদর্শনে মনে হত ‘মম বিফলমিদমমলমপি রুপযৌবনম’। সখী কলহান্তরিতা এসে বলেছিল, ‘রাতিসুখসারেগতমভিসারে মদনমনোহরবেশম্’। হে সখী, তোমার হৃদয়েশ্বর মদনমনোহর বেশে রতিসুখসারভূত অভিসারে গমন করেছেন। নিতম্বিনী তুমি গমনে বিলম্ব কোরো না। পীনপায়োধর-পরিসর মর্দন চঞ্চল করযুগশালী। তোমার পীনপয়োধর পরিসর মর্দনের জন্য তাঁর করযুগল চঞ্চল হয়ে উঠেছে। সখী খন্ডিতা যোগ করল আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ‘ধীরসমীরে যমুনাতীরে বসতি বনে বনমালী।’ ধীর সমীর সেবিত যমুনাতীরে সেই বনমালী বনান্তে অপেক্ষা করছে। রাধার তখনই মনে হয়েছিল তোমার অভিসারে যাব অগম পারে। তাঁর হাড়-মজ্জার ভেতর দিয়ে বাজতে থাকত সেই আহ্বান। আহ্বানের বাঁশি আকুল করে তুলত। জীবন আচ্ছন্ন করা সেই বাঁশি। ঝড় বৃষ্টি বিদ্যুৎচমক উপেক্ষা করে, আয়ান ঘোষের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেও রাধা গেছে। ও’ই যে বাজিল বাঁশি, বলো কী করি?’…..
৫. কৃষ্ণের ব্যাসদেবের কাছে গমন
খুব ভোরে প্রতিটি বারাঙ্গনা পল্লিতেই এক ধরনের পবিত্র আলো এসে পড়ে। কৃষ্ণের প্রতিনায়িকার নাম চন্দ্রাবলী। গোপনে তার কুঞ্জে বহু রাত অতিক্রান্ত করেছেন কৃষ্ণ। রাধার উদবিগ্ন এসএমএস-এর কারণে একটা পালটা উদ্বেগ কৃষ্ণের মন জুড়ে রয়েছে। চন্দ্রাবলী ছিল খন্ডিত। ওর গৃহে রাত্রি যাপন করেন বলে রাধার প্রবল অভিমান হত। কৃষ্ণেরও গত রজনির জাগরণের কারণে লোহিত চক্ষু আলস্যে নিমীলিত থাকত। সেইসব পূর্বকথা।…..
…..সেই মৃত্যুদীর্ণ গহন অন্ধকারের স্তর থেকে কৃষ্ণের চিন্তায় আবার উঠে আসছেন শ্রীরাধিকা। প্রথম মিলনে যথেষ্ট ভীত ও সন্ত্রস্ত ছিল সে। কৃষ্ণ তাকে সম্পূর্ণ নগ্ন করলেন। হয়তো তিনি স্বয়ং অবলোকন করলেন সৃষ্টির রহস্যের পরিপূর্ণতাকে। রাধিকার গায়ের রং ছিল তাম্রাভ, একটু কালোর দিকেই। শরীর সর্বদাই উত্তপ্ত থাকত। স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সৌন্দর্যচর্চায় তার কখনো কোনো রকমের অলসতা ছিল না। রাতের পর রাত আয়ান ঘোষের পুরুষাঙ্গটির শিথিলতা না কাটলেও রাধিকা যৌনাঙ্গের কেশগুলি সযত্নে কর্তন করে রাখত। মাথার কেশরাশিতে দীর্ঘদিনের সুগন্ধিতেলের ব্যাবহারে কিঞ্চিৎ কুঞ্চন ও বাহার এসেছিল। স্তন দুটি ভরন্ত এবং নিতম্ব অত্যন্ত আকর্ষণের। ওর শরীরের সবচেয়ে কামার্ত অংশ ছিল পা দুটো। চোখের পাতা দুটো ঘন কৃষ্ণবর্ণের, আয়তনয়না এবং নাসিকা দীর্ঘ। ঠোঁট অপেক্ষাকৃত ভুল, এটি শরীরের একমাত্র অনুজ্জ্বল অংশ যদিও রক্তিম। দন্তরাশি উজ্জ্বল শ্বেতবর্ণের, রতিক্রিয়ায় অসম্ভব পারঙ্গমা। অপাঙ্গ দৃষ্টিতে বুদ্ধির তীক্ষ্ণতা, আবেগের অভিনয় নিখুঁত। অক্ষিদ্বয় থেকে নির্গত অশ্রুবারি স্ফটিকের মতোই স্বচ্ছ এবং বিশ্বাসযোগ্য। নীলাম্বরি শাড়িই ছিল শ্রীরাধিকার প্রিয়। দু-পায়ে রাঙিয়ে থাকত আলতা।
বৈষ্ণব কবি বলছেন, ‘রাধার অন্তরে হইল ব্যথা।’ আসলে রতিরণোচিত বেশে সজ্জিতা কোনো গুণশালিনীর প্রেমবিলাসে মেতেছেন কৃষ্ণ। …..
…..ব্যাসদেব এখন রয়েছেন লৌহিত্য নদের তীরে। এই নদের বৃত্তান্ত রয়েছে কালিকাপুরাণে। ব্রহ্মা একবার পৃথিবী প্রদক্ষিণে বেরিয়ে মহর্ষি শান্তনুর আশ্রমে এসে উপস্থিত হলেন। শান্তনুর স্ত্রী ছিলেন অসম্ভব সুন্দরী। ওকে দেখে একেবারে মোহিত হয়ে গেলেন ব্রহ্ম। শান্তনু অনুপস্থিত জেনে এমন নির্জন পরিবেশে আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারলেন না। কামনা করে বসলেন অমোঘাকে। স্বাভাবিকভাবেই এই অশালীন আচরণে অসন্তুষ্ট হলেন অমোঘা। ওঁর রুদ্রমূর্তি দেখে ব্রহ্মা আর কাছে যাওয়ার সাহস পেলেন না। তবে যাওয়ার আগে আত্মনিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে স্খলন করে গেলেন তার বীর্য দ্বারপ্রান্তে। শান্তনু ফিরে এসে সবটা জানতে পেরে অসন্তুষ্ট হলেন। ব্রহ্মাকে তৃপ্ত করাই ছিল সনাতন ধর্ম। অমোঘা তখন ব্রহ্মার বীর্য ধারণ করে গর্ভবতী হলেন। জলপিণ্ডবৎ এক পুত্রের জন্ম হল। …..
৬. কারাগৃহে কৃষ্ণ
…রাধা রয়েছে বৃদ্ধাবাসে। সে এখন প্ৰবীণা। স্তন, নিতম্ব কোনো কিছুই ওর আর আকর্ষণীয় নয়। হয়তো রাধাকে দেখতে শ্মশানপ্রান্তের কোনো ডাকিনীর মতোই হয়েছে…
…..কৃষ্ণ ঘোষণা করেছিলেন শ্রীরাধিকাকে বিবাহ করা তাঁর সম্ভব নয়। আয়ান ঘোষ তো নপুংসক ছিলেন। ওর বীর্য সন্তানক্ষম ছিল। কিন্তু কৃষ্ণের বীর্যে রাধার গর্ভে সন্তান আসা তো স্বাভাবিক। কী পরিচয় হবে ওর? এইরকমই সংশয়ে দীর্ণ ছিল রাধা। এই প্রাণের জন্ম দেওয়া সম্ভব নয়। প্রয়োজন হলে দক্ষ বৈদ্যকে ডেকে আনতে হবে। গর্ভপাত ঘটাতে হবে রাধার। কৃষ্ণ অবশ্য রাধাকে আশ্বস্ত করেছেন, এই অবৈধ প্রেমই শাশ্বত হবে। আহত হবে কাল। রাধাকৃষ্ণ প্রেমলীলা জগতে অক্ষয় হয়ে থাকবে এই তাঁর অভীপ্সা। সুচতুর ক্ষমতাবান কৃষ্ণ যা খুশি করতে পারেন। মুহূর্তে আত্মস্বার্থে হত্যা করতেও তিনি নিবৃত্ত হবেন না। অবশেষে চোখের জলে সম্মত হয়েছিলেন রাধা। সেই অশ্রুজলের দাগ বাহুতে লেগে ছিল।…..
…..কেশব, আপনি কি জানেন পুরুষেরা অধিকাংশ নিবীর্য? আপনার সখা পার্থ, সেও এই রোগের শিকার। রতিক্রিয়ায় পারঙ্গমা নারীরা উদ্দীপ্ত পুরুষের অপেক্ষা করতে করতে এখন উন্মাদিনী। দম্পতিদের রাত্রির শয্যা শান্ত। সঙ্গমে অশক্ত পুরুষ কেবলমাত্র ভর্ৎসনা করে নারীকে। সন্দেহ আর ভর্ৎসনা থেকেও এক ধরনের সুখ জন্মায়। গৃহে গৃহে এখন। সেই করুণাহীন সুখ।…..
৭. মৌষল পর্ব
…..বিশেষ করে উজ্জ্বলতা প্রকাশ পাচ্ছিল কৃষ্ণপুত্র শাম্বের মধ্যে। তিনি রূপবান ছিলেন এবং দিবসের অধিকাংশ সময়ে নারীদের সঙ্গে বিবিধ আমোদ প্রমোদে ব্যস্ত থাকতেন। মাতৃস্থানীয় কৃষ্ণের প্রিয় গোপিনীরাও তার বিভিন্ন আকার-ইঙ্গিতপূর্ণ সম্ভাষণ থেকে রক্ষা পেত না।…..
…..রাজ্যে বারাঙ্গনাপল্লির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াতে গৃহে যেমন সঙ্গমের আকর্ষণ নেই তেমনি বিপ্রতীপভাবেই রতিক্রিয়া পারঙ্গমাদের পণ্যগৃহে অপুষ্ট অসফল বীর্যপাতে প্রেমের বদলে শারীরিক ক্ষুধা নিবৃত্তির ব্যাপক আয়োজন বৃদ্ধি পেয়েছে।…..
…..রাত্রিকালে বহুকাল পর সত্যভামা নগ্ন করলেন নিজেকে। ওঁর পৃষ্ঠপ্রদেশে কৃষ্ণ যখন আদরপূর্বক জিহ্বা লেহন করছেন, কামতাপিত সত্যভামা হঠাৎ উন্মত্তা ব্যাঘ্রীর মতোই কৃষ্ণকে আক্রমণ করলেন বাক্যবাণে।
–কী হয়েছে তোমার, স্বামী? নিজের পুত্রকেও ভয় পেলে?
–শাম্ব সীমা অতিক্রম করেছিল।
-কীসের সীমা?
–শালীনতার।
–গোপিনীদের বস্ত্রহরণ করে তুমি একদা এর চেয়েও গুরুতর অশ্লীলতায় অভিযুক্ত ছিলে।
–গোপিনীরা সকলেই আমার ভক্ত। তারা ত্রিসন্ধ্যা আমার নাম জপ করতেন।
–তাই তুমি ওদের বিবস্ত্র করেছিলে, এ কি কোনো ঈশ্বরের কর্ম?
–আমারই প্রেমলীলার রূপ।
–আর রাধা? চমকে উঠলেন কৃষ্ণ। আবার প্রশ্ন করলেন সত্যভামা, তোমার অমর প্রেমকাহিনির সঙ্গিনী?
–তার সঙ্গে আমার আর কোনো যোগাযোগ নেই।
–আমি রুক্মিণী দুজনেই এ সম্পর্কে জ্ঞাত আছি। তাই তুমি অন্যমন। সামান্য কারণে শাম্ব অভিশাপগ্রস্ত, যাদবকুল ধ্বংসের মুখে। মন্বন্তরের করালগ্রাসে রাজ্য আক্রান্ত।…..
…..জাম্ববতী, সত্যভামা ও রুক্মিণী ব্যতিরেকে তার অগণিত রক্ষিতারাও সেইদিন ভৎসিত হয়েছিল। রমণীদের তিনি জলক্রীড়ায় আমোদিত করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সহবাসের ক্ষমতা তো তিনি প্রায় হারিয়ে ফেলেছেন। শাম্বের অনিন্দ্যসুন্দর রূপ তাদের অনেকের মধ্যেই গোপন অভিসার আকাঙ্ক্ষার জন্ম দিয়েছিল। অতি প্রেমোচ্ছ্বাস প্রকাশের কারণে ওদেরও শাস্তি দিয়েছেন তিনি। ষোলো সহস্র রমণীকে উপভোগ করার অপারগতা তাঁকে অভ্যন্তরে যন্ত্রণায় ক্লিষ্ট করে তুলেছে।…..
৯. প্রোষিতভর্তৃকা
…..বীট নিয়ে এল একটি গৃহে। মাটির প্রদীপ জ্বলছে। এখানকার প্রতিটি গৃহই অপ্রশস্ত। অঞ্চলটিও জনপদ থেকে বহুদূরে। গৃহগুলিতে প্রদীপশিখার রং থাকে সামান্য লালাভ। নারীটি ঘোর কৃষ্ণবর্ণা। স্বাস্থ্য মধ্যম। আলুলায়িত কেশ। অশ্বারোহী যুবা বীটকে কয়েকটি রৌপ্যমুদ্রা হাতে দিয়ে চলে যেতে বলল। বীট চলে গেলে গৃহের একমাত্র ক্ষুদ্র বাতায়নটি বন্ধ করা হল। ইতিমধ্যে নারীটি ফুলের গয়নায় সেজে এসেছে। অনাবৃত স্তন, উরু থেকে পুষ্পগন্ধ উঠে আসছে। সে কাছে এসে যুবাপুরুষটিকে কঠিন আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে। অদ্ভুতভাবে গণিকাটির আঁখিতারায় নিমীলিতভাব এবং ওষ্ঠাধর রসসিক্ত হয়ে উঠল ও দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে স্তনদ্বয়ের পেষণে সে বেশ সুখানুভূতি প্রকাশ করল।
সচরাচর ক্রেতাদের রতিক্রিয়ার পর বেশ শীত করে। দীর্ঘকেশ রাখতে হয় যাতে খদ্দের আকর্ষণ করে সামান্য প্রহার করতে করতে শয্যায় নিয়ে ফেলে। এখানে শৃঙ্গার আসলে ধর্ষণেরই নামান্তর। কিন্তু আজ এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা হল। যিনি এসেছিলেন তিনি যেন নিজে তৃপ্ত হতে আসেননি, সামান্য গণিকাকে তৃপ্ত করতেই আসা। রাজপুরুষ তো হবেনই যত ছদ্মবেশ ধারণ করে থাকুন-না কেন। কয়েকটি স্বর্ণমুদ্রাও রেখে গেছেন। একটি কথাও বলেননি। বৃন্দাবনের গোপিনীদের মতোই নিজেকে মনে হচ্ছে। যাবতীয় পাপের মুক্তি ঘটল যেন আজ।……
১০. বিশাখজ্যোতি
…..দিনে দিবাকর তপ্ত হলেও রাত খুব সুখদায়ক। অপালার চন্দনচর্চিত ত্বকের স্পর্শ পেতে হৃদয় উন্মুখ হয়ে রয়েছে। যোনিদ্বারে জিহ্বা লেহন করে অভিমানপর্ব ভাঙতে হবে।…..
১২. বিশাখজ্যোতির অরণ্যযাত্রা
…..প্রবাসী পুরুষেরা এই সময়েই স্বগৃহে প্রত্যাবর্তন করে। প্রোষিতভর্তৃকা নারীরা এই সময়েই মিলনসুখ উপভোগ করে। স্বামীর প্রবাসকালে নারীরা কেশচর্চা করে না।….
…..কৃষ্ণের তো প্রোষিত-প্রেয়সীর সংখ্যা অগণ্য। তিনি একাই উপভোগ করেছেন এদের সুভগ পুরুষ মেঘের মতো। শোনা যায়, এক বিবাহিতা নারীর বিলাপে মথুরায় অবস্থানকালে কৃষ্ণের চিন্তায় সাময়িক জাড্য পরিলক্ষিত হয়েছিল। লোকশ্রুতি রয়েছে, তিনি আয়ান ঘোষের পরিত্যক্তা স্ত্রী শ্রীরাধিকা’। কাম ও রমণ যার নিত্যসঙ্গী, প্রেম তার কাছে বহুল ব্যবহৃত আসবাবের মতোই জীর্ণ। …..
১৩. কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস সকাশে
…..মোক্ষগন্ধী অরণ্যের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলেন কৃষ্ণ। অদূরে মন্দাকিনী প্রবাহিত হচ্ছিল। ঘন বৃক্ষরাজির মধ্য দিয়ে তিনি দেখলেন, কিন্নর দেশের অপ্সরার দল সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে স্নান করছে। কোনো প্রতিক্রিয়া হল না তাঁর। আশঙ্কা হল, তবে কি তিনি নিগ্রন্থ ঋষি হয়ে গেলেন। এবার কৃষ্ণ প্রকাশিত হয়ে অপ্সরাদের সম্মুখে এসে দাঁড়ালেন। স্নানসিক্তা নগ্ন নারীদের মধ্যে কৃষ্ণকে দেখে কোনোরকম ভাববিকার হল না।……
১৪. ভীষ্ম
…..গঙ্গার সঙ্গে রমণসুখের স্মৃতি। সেই নদী-নারী কখনো-বা করত রমণপূর্ণ শৃঙ্গার, কখনো সম্ভোগ, কখনো-বা নৃত্যগীত হাস্য-লাস্যে ভরে তুলত তাঁদের একান্ত আলাপ। শান্তনু কখনো তাঁকে হস্তিনাপুরে নিয়ে আসতে পারেননি। গঙ্গার মহিনী মায়া এখনও তাঁর মন জুড়ে রয়েছে।…..
১৬. একটি অলীক সাক্ষাৎকার
…..–বহু নারীসঙ্গ আমার জীবনে ঘটেছে। রাধা তাদের মধ্যে একজন। তবে তিনি ব্যতিক্রম ছিলেন। রতিক্রিয়ায় এত পটুত্ব আমি দ্বিতীয় কোনো নারীর মধ্যে পাইনি।
–তিনি কখনো গর্ভবতী হননি?
–ওঁর গর্ভে ভ্রূণের আবির্ভাব হলেই আমি নাশ করতাম।…..
…..–রাধার সঙ্গে আমার সহবাস পার্থিব কোনো প্রণয়ের সঙ্গে তুলনীয় নয়। আমাদের সন্তানও বীরত্বব্যাঞ্জক কিছু হত না। শাম্বের রূপও সে প্রাপ্ত হত না। কখনোই সামাজিক অনুশাসনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। কৃষ্ণও তো কখনোই নন।…..
১৯. মুহূর্তিকা
মহাপার্শ্ব অসম্ভব ধূর্ত প্রকৃতির লোক। তার উপর সে প্রচার করে বৃন্দাবনের একদা অধিবাসী হওয়াতে কৃষ্ণ তার সখা। ‘কৃষ্ণস্তু ভগবান’ ধ্বনি দিয়ে সে যাবতীয় পাপকর্ম করে থাকে। তবে মুহুর্তিকাকে নিয়ে সে ব্যাপক চিন্তিত। একদা এই দেহজীবী গ্রাম্য বালিকা ছিল। রাজগৃহের প্রান্তবর্তী গ্রামে কৃষক পরিবারে ওর জন্ম। তখন সেসব প্রান্তবর্তী পল্লিগুলিতে দারুণ আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছিল। বালিকা চুরি যাচ্ছে প্রতি রাতেই। অন্ত্যজ শ্রেণির মানুষে জনাকীর্ণ পল্লিগুলিতে দরিদ্র মানুষদের বাস। মহাভয়ে তারা রাত কাটাচ্ছিল। রাজার কর্ণগোচর হয়েছিল সেই সংবাদ। কুরুক্ষেত্রের মহাযুদ্ধ। তখন সন্নিকটে। পূর্ব ভারতেও সেই যুদ্ধের কারণে রণসজ্জা শুরু হয়ে গিয়েছে। রক্ষীরা সতর্ক হল, কিন্তু মহাপার্শ্ব খুব সহজেই এই বালিকাকে চুরি করেছিল সামান্য কাহ্নপণের বিনিময়ে। তখনই কৃষ্ণকে মনে হয়েছিল প্রকৃত সখা। তাঁর অপ্রত্যক্ষ নির্দেশেই এইসব অপহরণকান্ড খুব সহজেই সংঘটিত হচ্ছিল এবং জনশ্রুতি ছিল যে নরমাংসভুক কোনো রাক্ষস বালিকাদের নরম মাংসের লোভে এই হরণকার্য চালাচ্ছে। অপ্রাকৃত এই প্রাণীটির নিধনের কারণে অচিরেই ভগবান কৃষ্ণ রাজগৃহে আসবেন। সেই বালিকা একদিন কিশোরী হল, তারপর যুবতী। অসাধারণ রূপবতী বহু রাজপুরুষের যৌনলিপ্সা সার্থকভাবে মিটিয়েছে এবং প্রচুর সম্পদও আয় করেছে। …..
….–বেশ্যা রমণীর গৃহে যে এসেছিল, সে আবার ত্যাগী পুরুষ!
–তিনি আমার তৃপ্ত করেছেন।
–এলেন কেন তবে?
–বিশ্রামের কারণে।
–তোর ওসব কলা দিয়ে ওকে তৃপ্ত করিসনি মাগি! তোর শরীর ওই রাজপুরুষ জিহ্বা দিয়ে লেহন করেনি?
–তিনি যেন ছিলেন মাটির গভীর গর্তে নির্বাপিত আগুন! সেই আগুনের নির্বাপিত সুখ আমি প্রাণভরে উপভোগ করেছি।
–দ্বিধা, দোলাচল চিত্ত নিয়ে তিনি তোর কাছে এসেছিলেন। হয়তো তেমন কামুক পুরুষ তিনি নন যে ধর্ষকামের সুখ উপভোগ করবেন।
নগরদ্বার থেকে ঘন্টাধ্বনি ভেসে আসছিল। মুহূর্তিকাটি নিশ্বাসের বাতাস উড়িয়ে দিয়ে স্তব্ধ থাকল।
–এরা আমাদের প্রাপ্য কেড়ে নিতে এসেছে।
–তোমাকে কোনো উৎকোচ তিনি দেননি পিতা?
–উৎকোচ! তস্করের মতোই প্রবেশ করেছিল তোর গৃহে।
–তিনি ছিলেন দেবতার মতো সৌম্যদর্শন। বেদজ্ঞ পুরুষই হবেন। আবার ক্ষত্রিয়ের মতোই তাঁর বক্ষদেশ।
–পুরুষাঙ্গটিও নিশ্চয় দীর্ঘ এবং দৃঢ়।
–তেজের অভাব তাঁর ছিল না। নারীকে তৃপ্ত করতে তিনি জানেন।…..
….–কিন্তু সে এক রাতের জাদুর খেলা আমি যে কখনো ভুলতে পারব । আগের জন্মের পূণ্যের ফলে আমি তাঁকে পেয়েছিলাম। পিতা, এই বারাঙ্গনার কাছে তুমি তাঁকে আরেক বার মাত্র নিয়ে এসো।
–মা, তোর অতুলনীয় আঁখি, ওষ্ঠাধর, পদ্মকোরকের মতো বক্ষ, যেখানে প্রতি রাতে কত ভ্রমর আসে মধুপানে উন্মত্ত হবে বলে; এবং সবেশী সহচরী বারাঙ্গনারাও তোকে ঈর্ষা করে। সে তুই সকল সৌন্দর্যের সার হয়েও একজন রাষ্ট্রদ্রোহীর জন্য অপেক্ষায় জীবনকে কন্টকযুক্ত করছিস।…..
২২. শৃঙ্গার স্মৃতি
শস্ত্রহীন, লগ্ন, অপবর্গ আবেগে মুহ্যমান কিন্তু পরম শক্তিমান রাধারমণ রাধার শরীর-অরণ্যে মৃগয়াযাত্রা শুরু করলেন। ক্রমাগত দংশনক্ষতে ছিন্নভিন্ন করছেন রাধাকে। রাধার চক্ষুদ্বয় আবেগে নিমীলিত, দেহ কামাক্রান্ত। উত্তালভাবে শায়িত রাধা ওর ডান পা বাম উরুর মূলে স্থাপন করল। বিপরীতক্রমে বাম পা ডান উরুর উপর স্থাপন করে তার পদ্মযোনি উন্মুক্ত করল। এভাবে শৃঙ্খলিত রাধার চরণে চুম্বন করে কৃষ্ণ ওর যোনিমধ্যে উদ্যত তরবারিসদৃশ লিঙ্গ প্রবেশ করালেন। বার বার লিঙ্গ আঘাতে রাধাও ক্রমশ উন্মাদিনী হয়ে উঠল। সঙ্গমসুখের যন্ত্রণায় সেও তখন মুহ্যমানা প্রায়। এইভাবে এক বার মিলনের পরও রাধারমণ ক্লান্ত হলেন না। আবার নতুন করে শুরু হল স্তনদ্বয়ের মর্দন। চুম্বনপর্বে রাধার ওষ্ঠ প্রেমিকের দন্তস্ফুটনে রক্তাক্ত হয়ে ওঠে। যন্ত্রণায় শিউরে ওঠে রাধা। এক আবরণহীন লজ্জার প্রকাশ ঘটে। একটু কপট কোপ প্রকাশ করেন কৃষ্ণ। রাধা তখন কৃষ্ণের সুরতক্রিয়ায় অলীক হয়ে ওঠা মুখমন্ডল বক্ষমধ্যে স্থাপন করে। আত্মা ও শক্তির নিতান্ত আবরণ উন্মুক্ত করে পুরুষশ্রেষ্ঠ রাধারমণ লিঙ্গ ও যোনি সংবদ্ধ রেখে রাধার কটিদেশে মৃদু অঙ্গুলি সঞ্চালন অব্যাহত রাখেন। তাঁর বীর্যরস লিঙ্গশীর্ষে এসে স্তব্ধ হয়ে যায় মুহূর্ত, পল অতিবাহিত হয় কিন্তু নিসৃত হয় না। লিঙ্গ-যোনি যুক্ত অবস্থায় তিনি রাধাকে দুই বাহু দিয়ে উত্তোলিত করলেন। রাধার যাবতীয় ধ্বনি তখন স্তব্ধ, হয়তো প্রাণবায়ুও স্তব্ধ রাধারমণের বক্ষমধ্যে আশ্রিত হয়ে। সেই কঠিন নৈঃশ্বব্দ্যের প্রহরে হঠাৎ রাধা আর্তনাদ করে ওঠে, ‘প্রিয়সখা, আমায় ত্যাগ করবে না কোনোদিন –কথা দাও, প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হও।’ অশেষ লিপ্সা চরিতার্থ করে রাধারমণের লিঙ্গ রাধার যোনিপথে দ্বিতীয় বার পুনর্গমন করে। সঙ্গমশেষে তিনি বলেন, রাধা, এই আমার জীবনের শেষ সঙ্গম।
পরদিন প্রভাতে নিদ্রাভঙ্গ হলে রাধারমণ কৃষ্ণ দেখেন, লালপাড় শ্বেত রঙের শাড়িতে অদ্ভুত শোভিত লাগছে রাধাকে। কপালে বৃহৎ লাল টিপ দেখে চমকে ওঠেন কৃষ্ণ। বঙ্গদেশীয় বিবাহিতা নারীর সজ্জা নিয়েছে রাধা। এখনও চন্দনচর্চিত মুখমন্ডলে ভাস্বর গত রাতের নখরের দশনক্ষত। রাধার মুখ দিয়ে উচ্চারিত হচ্ছে গীতার স্তব। এই কাব্য তো বহুসময় পরে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের মহারম্ভের প্রাক্কালে তিনি অর্জুনকে বলবেন। অর্থাৎ কাল রাতে সঙ্গমকালে তিনি উচ্চারণ করেছেন নিজেরই অজান্তে এই কাব্যিক সুষমা। রাধা আত্মস্থ করেছে ভালোবাসার গুণে। হঠাৎ কৃষ্ণ বললেন, ‘রাধা, যদি কখনো তুমি চান্দ্রদশায় আক্রান্ত হও!’
-আমি তো এখনও উন্মাদিনী।
–আর তো আমাদের সাক্ষাৎ হওয়ার কথা নয়।
রাধার দুই চোখে অশ্রু সঞ্চারিত হল। তবে কৃষ্ণের কাছ থেকে এই প্রতারণা অনুমানের বাইরে ছিল না। তবুও চোখের জলে স্নাত হচ্ছে মুখমন্ডল। লবণাক্ত সেই জলধারা গন্ডদেশ প্লাবিত করছে। কৃষ্ণের দক্ষিণ কর এই সময় সন্ধান করছে রাধার বাম স্তন। বক্ষবন্ধনী ত্যক্ত খোলসের মতো লুটিয়ে পড়ল। আবার স্তনমর্দন, দীর্ঘ চুম্বন। এটা সত্যি রাধার শরীর ওঁর সঙ্গমে ঋদ্ধ হয়েছে, তবে সেই অলৌকিক স্বাদ এখন লবণাক্ত। চতুর কৃষ্ণ পূর্ণ সম্ভোগের পর বিদায় নিচ্ছেন। আর প্রত্যাবর্তন করবেন না। চকিত, চপল আনন্দের মুহূর্ত হারিয়ে যাচ্ছে। প্রখর দিনে আর বৃষ্টিপাত হবে না। বীর্যবান রাধারমণকে ভালোবাসতে গিয়েও কপটতার জন্য ক্ষমা করা হল না রাধার। প্রেমিকার সেই অভিশাপের কারণেই বোধ হয় এই নির্জন, বিস্তীর্ণ অরণ্যে কৃষ্ণের চান্দ্রদশা শুরু হল।
২৫. শ্রীরাধিকা
…..ঘরের দেওয়ালের টিকটিকি কখনো রাধার ছায়ার কাছে এসে বসে। তখন আবার স্মৃতি লন্ডভন্ড করে দেয় বর্তমান সময়কে। সম্পূর্ণ বাধ্য, অধীন কৃষ্ণ নারীর বশীকরণ শক্তির কাছে পরাভূত। সব খ্যাতির পথ তখন এসে আশ্রয় খুঁজছিল রাধার স্তনতটে। রাধা তখন ঘাতিকা। কৃষ্ণ মহার্ঘ্য মালিশ মৃদুভাবে লাগিয়ে দিচ্ছেন ওর স্তনে। চুম্বনে চুম্বনে চোখের কাজল লুপ্তপ্রায়। শয্যায় নিজেকে সম্পূর্ণ অনাবৃত করার আগে করজোড়ে নতজানু কৃষ্ণ।…..
৩৩. কৃষ্ণ
…..আর মনে পড়ছে সেই নদীর কথা। যমুনা। কৃষ্ণজল তার। সেই নদীর তীরবর্তী একটি ছায়াঘন মায়াকুঞ্জের কথাও মনে পড়ছে। গোপিনীদের শরীরে কামনার বহ্নি। কৃষ্ণের চিত্তজয়ী দুর্বার আকর্ষণে তারা নিজেদের স্বজনদের ভুলে গিয়ে তাঁর কাছেই থাকে। গোপরমণীরা কৃষ্ণের সঙ্গে মিলনের ক্ষেত্রে অনেক স্বাধীনচেতা। পীনবক্ষ, ক্ষীণকটি, গুরুনিতম্বের রমণীদের উপভোগকাল কখনো বিস্মৃত হওয়া যায় না। কৃষ্ণের গলায়ও তখন থাকত কবচযুক্ত মুক্তহার, কানে কুন্ডল আর বাঁশরিতে চাতুর্যপূর্ণ আহ্বান। রমণীরা মক্ষিকার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ত অফুরান মধুভান্ডের অধিকারী কৃষ্ণের বক্ষে। অতি প্রার্থিনীদের অনেক সময় কোনো অবগুণ্ঠন ছাড়াই তৃপ্ত করেছেন কৃষ্ণ। চুম্বন সহযোগে ভরিয়ে রাখতেন ওদের অধর।
তারপরেই ডাক এল কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের, মুহূর্তে ভেসে গেল বাঁশরি বাদন ও রমণ সম্ভোগের কাল।…..
৩৫. মহাপার্শ্ব
–মুহূর্তিকা, এই রাতটা আমি ক্রয় করতে চাই।
–ইতরজনের এত স্পর্ধা! এই শরীর রাজপুরুষদের জন্য সংবর্ধিত।
–আমি আজকে তোর রাজপুরুষ।
–ছি, তোর গাত্রের উৎকট গন্ধ আমার অসহ্য লাগে।
–মুদ্রা দিয়ে আমি তোর সেই কষ্ট লাঘব করে দেব।
–কত কাহ্নপন দিবি আমায়?
–কয়েকটি স্বর্ণমুদ্রা।
–রাজকোষ থেকে চুরি করেছিস? তবে তো এখনই নগরদ্বারকে খবর দিতে হয়।
–উৎকোচ পেয়েছি।
–কোনো ভয়ংকর কান্ডে ব্যপৃত হয়েছিস নিশ্চয়! দূর হবি এক্ষুনি।
–বিশ্বাস কর মুহূর্তিকে, আমি তেমন কোনো কাজ করিনি।
–তবে স্বর্ণমুদ্রা কোথায় পেলি?
–তোর শরীরটা দিবি তো?
–স্বর্ণমুদ্রার বিনিময়ে তোর যাবতীয় যৌনতৃষ্ণা মিটিয়ে দেব। কিন্তু তুই কি পারবি?
–আমি কি বীর্যহীন পুরুষ?
–এই পেলব পা দিয়ে তোর পুরুষাঙ্গে সামান্য চাপ দিলেই যাবতীয় বীর্যরস মুহূর্তে নির্গত হয়ে যাবে। কত রাজপুরুষ এই ক্রিয়ায় পরাভূত হয়েছেন। তবে কিছুক্ষণ টিকিয়ে রাখার কৌশলও আমার জ্ঞাত আছে।
–তবে তাই করিস।
–আগে বলবি কোথায় পেলি?
–আরও একটি সুখ তোর কাছে প্রত্যাশা করি।
–আমার সন্তানের পিতা হবি?
–আমি তো তোরই অন্নদাস। প্রতিপালনও তো সেই তোকেই করতে হবে।
–তবে কী চাস?
–আমার পুরুষাঙ্গটি তোর মুখগহ্বরে প্রবেশ করাব।
–শিথিলতা দূর করার ঔষধি চাইছিস।
–হ্যাঁ, মুহূর্তিকে।
–দন্ত বসিয়ে একটু রক্ত নির্গত করব।
–মূত্রত্যাগে জ্বালা করবে না?
–তার ঔষধ আমার কাছে আছে।
–জিহ্বা দিয়ে লেহন করে দিবি তো?
–তোর বির্যরসে খিদে মেটাব। তরলীকৃত হয়ে যায়নি তো?
–না, এখনও বেশ ঘন।
মহাপার্শ্ব মুহূর্তিকাটির কেশ উন্মুক্ত করে দিল।
দুটি স্বর্ণমুদ্রা ওর হাতে দিতেই রমণীটি বলল, ‘তোর উপায়ের সূত্র জেনে আমার প্রয়োজন নেই। তবে দ্বাররক্ষীদের কোনো কারণে আগমন ঘটলে আমি তোর কথা জানিয়ে দেব।’
কেশরাশির অতুলনীয় গন্ধে মহাপার্শ্বের আরামে নিদ্রা চলে আসছিল। মুহুর্তিকাটি নগ্ন হতেই মহাপার্শ্ব নিম্নাঙ্গটি ওর মুখগহ্বরে প্রবেশ করিয়ে চাপ দিতেই থাকল।
৩৭. রাধাকৃষ্ণলীলার সারসংক্ষেপ
শ্রীরাধিকা বললে, ‘নাথ, তুমি অত কী দেখছ আমায়?’
–শুধু দেখছি আর দেখছি।
–কেশব, তুমি আমার কত দূর দেখতে পাচ্ছ?
–আজ আমি তোমার সবটাই দেখতে পাচ্ছি। আমায় পূর্ণ আহার দেবে তো?
কৃষ্ণ শ্রীরাধিকার গলার মালা ছিন্নভিন্ন করে ফেললেন। ওর শরীরটা দু-হাতে তুলে নিয়ে শয্যার সমীপে চলে এলেন। কক্ষের প্রদীপ তখন নিভে গেছে। শুধু শয্যাপারে আরেকটি দীপ ক্ষীণশিখা নিয়ে কম্পমান ছিল। কৃষ্ণ রাধিকাকে শয্যায় ন্যস্ত করে ত্বরিত গতিতে যাবতীয় বস্তু ছিনিয়ে নিয়ে বিবসনা করলেন। তারপর রাধার উপর শায়িত হয়ে স্তন দুটি মর্দন করতে লাগলেন। মুহূর্তে উন্মাদিনী হয়ে ওঠা রাধা কৃষ্ণের যাবতীয় বস্ত্র ছিঁড়ে ফেলল। দন্ত বসিয়ে দিয়ে এক আশ্লেষ চুম্বনে কৃষ্ণ ভরিয়ে দিলেন রাধাকে। এবার রাধারমণ শ্রীরাধিকার অপূর্ব জঘার উপর অশ্বারোহীর মতো চেপে বসলেন। ঈষৎ ঘর্মাক্ত রাধা যোনিদ্বার বিস্ফোরিত করল। কৃষ্ণ তখন ওষ্ঠ দিয়ে যথাক্রমে ওর স্তন, নিতম্ব, জঘায় চুম্বন করতে থাকলেন। তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ একত্রিত করে যোনিগহ্বরে আলতো প্রবেশ করলে এবং কয়েক বার সামান্য উত্থিত হয়ে যোনিতে লিঙ্গের স্পর্শ লাগাতে থাকলেন। তারপর শ্রীরাধিকা সত্যিই যেন দেবীভঙ্গিমায় জেগে উঠল। ওর বিস্ফারিত যযানি কৃষ্ণের লিঙ্গের উপর স্থাপন করলে কৃষ্ণ আরও বেশ কয়েক বার জিহ্বা দিয়ে লেহন করলেন। তখন যৌন উন্মাদিনী রাধা কৃষ্ণের লিঙ্গটি মুখগহ্বরে গ্রহণ করল। রাধা তখন কৃষ্ণের উপর আরোহন করেছে। এবং পুরুষোত্তম ভগবান নব্যযৌবনপ্রাপ্ত পুরুষের মতো কাতর আহ্বান করছেন যে, তিনি আর বীর্যধারণ করতে পারছেন না, এবার যেন সে সঙ্গমে লিপ্ত হতে দেয়। অবশেষে রাধিকার যোনিদ্বারে প্রবিষ্ট হল পুরুষোত্তমের পুরুষাঙ্গ। তিনি আপ্লুত কণ্ঠে ডেকে বললেন, ‘রাধে, জয় রাধে।‘ আর শ্রীরাধিকা তখন যোনি-জঙ্ঘা-নিতম্ব সর্বস্ব সমর্পণ করে কেশবের লিঙ্গদেশ সম্পূর্ণ গ্রস্ত হতে দিলে।
রতি সম্পূর্ণ হতেই কৃষ্ণ আছড়ে পড়লেন রাধার দেহে। ঠিক তখনই আরেক বার রাধা বললে, ‘হে যদুনন্দন, আমি যদি গর্ভবতী হই?’
|||||||||| কৃষ্ণ মৃদু হাসলেন, কোনো উত্তর দিলেন না। প্রকৃতপক্ষে সেটা ছিল তাঁর শেষ সঙ্গম।
স্মৃতিটা মনে আসতেই কেমন বিষবাষ্পে ভরে উঠল হৃদয়। কৃষ্ণের প্রদত্ত চলভাষ যন্ত্রটি নদীর জলে নিক্ষেপ করল রাধা। তাঁর সঙ্গে বার্তার আকাঙ্ক্ষা থেকে এভাবেই নিবৃত্তি ঘটল। যন্ত্রও হারিয়ে গেল জলের অতল আহ্বানে। সেই কালের কাছে গোপন রইল তার প্রকৃত রহস্যময়তা।
৪৬. জরা ও অশ্বত্থামা
…..এই সময় জরার যুবতী স্ত্রীটির কথা মনে পড়ল। কুয়াশা ঢাকা নদীতীরের মতোই অপুষ্ট সেই জীবন। নারীর সঙ্গে প্রতি রাতের যৌনমিলনই পৌরুষের শক্তি ও আকাঙ্ক্ষাকে প্রকৃত স্বীকৃতি দেয়। হঠাৎ জরার চাঁদের আলোয় খুব আকর্ষক মনে হল এই অরণ্যভূমিকে। প্রিয় নারীর সঙ্গে প্রতি রাতের সঙ্গমসুখ এক আশ্চর্য নিষ্ঠুর হত্যার পর অবশিষ্ট থাকবে না বলেই মনে হয়। হয়তো তখন জরাকে অন্ধকারে চোখ জ্বলতে থাকা পশুদের মতোই দেখাবে। ……
৪৭. শ্রীরাধিকার অভিসারযাত্রা
শীতের রাত্রি এমনিতেই দীর্ঘতর। তার অন্তিম চরণ যেন আসতেই চায় না। নগরের বাতিস্তম্ভগুলি নির্বাপিত হয়ে গেছে। প্রৌঢ়া রাধার এই রাতের অভিসারে যাওয়ার কারণে আর কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। শুধু প্রতিবন্ধক শরীর। যে-শরীর পুরুষোত্তম ভোগ করেছেন, বীর্যরসকে লিঙ্গশীর্ষে স্তব্ধ রেখে তিনি মিলনকে করে তুলেছেন অপার্থিব সেই শরীর এখন খুব ক্লান্ত। এই ক্লান্ত, যৌবনের উপান্তের শরীর নিয়ে রাধা বিপরীত বিহারের কথা ভাবছে, যেন কৃষ্ণকে রমণ করছে। কৃষ্ণের পুষ্ট স্তনযুগল মর্দন করতে করতে রাধার যোনিদ্বারে লিঙ্গশীর্ষের অবতারণা হল। আর স্বয়ং পুরুষ রাধারমণ বিপরীতক্রমে যোনিদ্বার উন্মুক্ত করলেন। হেমন্তের উষ্ণ রাত্রি পৃথিবীও প্রত্যক্ষ করল এক বিপরীত রমণবিহার। কৃষ্ণের ত্বক এমনিতে নির্লোম, কিন্তু আর ত্বকের অভিসন্ধি থেকে গুপ্ত লোমরূপের প্রতিটি কণায় কণায় রমণ হতে থাকল। উপভোগ্য কৃষ্ণের শরীর ভোগ করছে রাধা।
রমণ এবং ক্ষরণহীন পলের পর পল রাধাকে উন্মাদিনী করে তুলেছে।
কখন যে নীলাম্বরি শাড়িতে বুনো কাঁটা আটকে গিয়ে শরীরকে রক্তাক্ত করে তুলেছে সংবিত ফিরে এল নগরকোটালের ডাকে। নগরকোটাল রাধার পরিচয় জানে, ফলে সমীহ করে থাকে। আজও ব্যতিক্রম কিছু হল না। তবুও রাধা কেমন যেন অপমানিত বোধ করল। কৃষ্ণের পরিবর্তে নবাগত পুরুষের প্রতি অনাসক্ত নারী যেমন ভর্ৎসনা দৃষ্টিতে দেখে, রাধাও নগরকোটালের সম্ভ্রমপূর্ণ বাক্যালাপে প্রাথমিকভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করল। যদিও সেটা মুহূর্তের উন্মোচন। স্বপ্নের রমণ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিতেই রাধা রক্তবর্ণ গোলাপের মতোই সলজ্জ হল। রাত্রি বোধ হয় তখন তৃতীয় প্রহরে পরছে। কখন যে শয়নকক্ষ অতিক্রম করে বৃদ্ধাবাসের দ্বারপালের ঘুমন্ত দৃষ্টিকে অগ্রাহ্য করে রাধা রাজপথে নেমে এসেছে অনেকটাই শরৎকালের আলোয় প্রতিভাত নগরীর মতোই সেই স্বপ্ন সমসাময়িক মুহূর্তগুলিকে অগ্রাহ্য করে এক আবহমানকালের শাশ্বত প্রণয়ের অভিমুখে যাত্রা করিয়ে দিয়েছে।
আবার গৃহে প্রত্যাবর্তন করে রাধা মৃদুস্বরে ডাকলেন, ভাবমুখের কেন্দ্ৰপতি এ কেমন তোমার প্রণয়লীলা?’
কোথাও যেন পৃথিবীর কম্পনাঙ্ক স্পর্শ করে বাঁশরির ধ্বনি বেজে উঠল। কৃষ্ণ বললেন, ‘জয় রাধে!’
–প্রভু, এই ঘুমন্ত শরীরকে তুমি আবার জাগালে কেন?
–বিপরীতবিহার উপভোগ করব বলে। এবং তুমি তো অমৃতময় যাত্রার সর্বাত্মক রূপটাই দেখতে চেয়েছিলে!
রাত্রি এবার চতুর্থ প্রহরে পড়ল।
–রাধাকে নিয়েই তোমার প্রণয়ের যাবতীয় খেলা!
কৃষ্ণ এবার তাঁর রতিসুখকর উত্তপ্ত পুরুষালি হাতের স্পর্শে রাধার বিগত হয়ে যাওয়া যৌবন ফিরিয়ে আনলেন। শরীর সন্ধানী পুরুষের মতোই তিনি খুঁজতে লাগলেন রাধার চিরকালীন রহস্যময়তা। বিপরীত বিহারের অবসান যখন ঘটল শীতের রাত্রিও অতিক্রান্ত হয়েছে। ঘন কুয়াশায় আবৃত প্রভাব সেই মনোমুগ্ধকর রমণবিহার দেখে আরও পক্ষকালের জন্যই অনাবৃত থেকে গেল।
.
৪৮. বাঁশরি
কমবয়েসি একটি মেয়ে সিঁড়ির ধাপে বসে রয়েছে। অদূরে শুকনো পাতার জঙ্গল ভেদ করে লণ্ঠনের আলোর সঙ্গে সঙ্গে নাচতে নাচতে আসছে বাঁশরির শব্দ। এক ধরনের ব্যথা জাগছে মেয়েটার হৃদয়ে, যেন সে কোনো ভালোবাসার মানুষকে হারিয়ে ফেলেছে অজ্ঞাতসারে। মোহগ্রস্তের মতোই সে ফিরে যেতে চাইছে তার কাছে। হারিয়ে যাওয়ার বেদনায়, শূন্যতার বেদনায় আচ্ছন্ন থাকত রাধার মন। কুমারী রাধার আয়ানের সঙ্গে পরিণয়ের পর সেই শূন্যতার পুরণ হল না। ব্যথাটা বোধ হয় গোপনই থেকে যেত যদি-না বাস্তবের পৃথিবীতে শুকনো অরণ্যের প্রান্তরকে ছাপিয়ে দিবানিশিকে ব্যাপ্ত করে কৃষ্ণের বংশীধ্বনি রাধার হৃদয়কে আচ্ছন্ন না করত।
সময় যত এগিয়েছে খ্যাতি ততই আঁকড়ে ধরেছে কৃষ্ণকে। তিনিও আঁকড়ে ধরতে চেয়েছেন সাফল্যকে। অথচ সাফল্যের গল্প তেমন স্থায়িত্ব পায় না। দ্বারকা যে জলগর্ভে হারিয়ে গেল এবং প্রায় লুপ্ত হল যাদবেরা, কৃষ্ণের সেই ব্যররথতার কাহিনি পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে দীর্ঘকাল।
বসন্তের মনোরম অপরাহ্ন। সূর্যের নিস্তেজ আলো যমুনা নদীর উপর থেকে লঘু পদক্ষেপে অপসৃত হচ্ছে। মথুরার হাট থেকে পুষ্প সাজে সজ্জিত হয়ে ফিরছে রাধা। দুই বেণিতে জড়ানো কুকলি। কণ্ঠে ফুলহার। পদযুগলে নূপুর।
কৃষ্ণ বাঁশরিতে রাগেশ্রী ধরলেন। কিন্তু হচ্ছে কই! কড়িমধ্যম লাগালেন।
মালিনী জিজ্ঞেস করল রাধাক, ‘রাইসুন্দরী, এত সজ্জা কার লাগি?’
কৃষ্ণ এবার কৌশিক কানাড়া ধরলেন। বাঁশরির এবারের ধ্বনিতে সাড়া দিয়েছে রাধা। বক্ষযুগলের মৃদু ছন্দ, শ্বাস-প্রশ্বাসের ঘাত-প্রতিঘাত এবার শ্রুত হচ্ছে। রাধার মৃণালভুজে ফুলের অঙ্গদের সৌরভে কৃষ্ণের বাঁশরির সুরে যেন প্রাণপ্রতিষ্ঠা হল। নৌকায় রাধার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছেন কৃষ্ণ। যমুনার কৃষ্ণ জলে আবছা চাঁদের আলো। মাঝিও কেমন বিবশ কৃষ্ণের সুরের জাদুতে। পাপ-পূণ্য রহিত হয়ে কৃষ্ণ চুম্বন করলেন সেই পদযুগলে যা কিনা অলক্ত রঞ্জিত, গুঞ্জরী নূপুরে কৃষ্ণের ঠোঁটে সামায় ক্ষত তৈরি হল। তবে সেই সামান্য আঘাত অগ্রাহ্য করে কৃষ্ণ রাধার বাম কর্ণে আবার চুম্বন করলেন। এবার রাধার আঁচল স্খলিত হল। কৃষ্ণের চুম্বনে চুম্বনে জেগে উঠছে নিতম্ব, জঘন। তবুও হঠাৎই। কপট ছলনায় সামান্য সরে গিয়ে রাধা বলল, ‘কেশব, এ মহাপাপ! ধরিত্রী এই পাপের পূর্ণ প্রতিশোধ নেবে।
–পাপ-পূণ্যের বিচারক তো আমি। ঈশ্বর পাপ-পূণ্য জানেন না। তিনি শুধু জানেন প্রেম।
রাধা ভ্রূকুঞ্চন করে বলল, ‘প্রাণনাথ, এই সর্বনাশের খেলা সাঙ্গ করে তুমি একদিন বিদায় নেবে। তখন?’
কৃষ্ণ উত্তর না দিয়ে আরও বেশি কামোন্মত্ত হয়ে পড়লেন। ঈষন্মুক্ত রাধার ওষ্ঠাধার দন্ত দিয়ে দংশন করে তিনি রাধার মুখবিবরের অভ্যন্তরে জিহ্বা প্রবেশ করালেন। রাধার আঁখিপল্লবের কম্পন এবার সম্পূর্ণ নিমীলিত। তৃপ্তির আগাম আনন্দে রাধার জীবন্ত কাননে দাবানলের বহ্নি ছড়িয়ে পড়ল। বিষাক্ত সেই বাঁশরির আদরে রাধা তখন উন্মাদিনী প্রায়।
সেই বাঁশরি তিনি কি কখনো আর বাজাতে পারবেন না। রাধারমণ কৃষনের চোখ দিয়ে জল নয় যেন গলন্ত লোহা নিঃসৃত হচ্ছে। প্রেমহীনতার অনলে তিনি যেন পুড়তে পুড়তে শ্রীহীন হয়ে পড়বেন। কৃষ্ণ একাকী এই অরণ্যে হাহাকার করছেন। কোথায় গেল তাঁর সেই মোহনবাঁশরি। তার সুর কতদিন অতিক্রান্ত মধ্যপথে হারিয়ে গেছে। তিনি সুর লাগাতে পারছেন না।
৫১. শ্রীরাধিকার বঙ্গদেশ ও কৃষ্ণকথা
……–কেশব, তুমি তো আজ বস্ত্রত্যাগ করছ না। অথচ আমি তো সম্পূর্ণ অনাবৃতা। এ তো তোমার অসম খেলা।
কেশব হঠাৎ বললেন, ‘রাধিকে, বঙ্গদেশটা কি অন্য দেশ? আর্যাবর্তের সঙ্গে এর কোনো মিল নেই!’
বাইরের চাঁদের আলো তখন রাধার নগ্ন দেহে এসে পড়তেই হীরকদ্যুতির মতো জ্বলছে।
লুপ্ত বস্ত্র অন্বেষণ করতে করতে রাধা বলল, ‘কেন প্রভু এত অনাত্মীয়তা?’
কৃষ্ণ স্মিত হেসে বললেন, ‘প্রকৃতি এখানে তোমার মতোই। আর্যাবর্ত যদি আহির ভৈরবীর হয় তবে এখানে মল্লার। পুরুষ নারীর কাছে বঙ্গভূমিতে সদা বশীভূত থাকবে।
–তাই কি তুমি সঙ্গম থেকে বিরত থাকবে?
–না, রমণ হবে। তবে সায়াহ্নের পর।
সবস্ত্র কৃষ্ণ রাধাকে নিরাভরণ রেখেই বাঁশিতে তুললেন মল্লার। নেশা ধরানো সেই বাঁশির সুরের মাদকতায় অসীম আকাশ, বিস্তীর্ণ প্রান্তর এবং বিশ্বসংসারের যত ধ্রুবপদ এতদিন বিচ্ছিন্ন ছিল, রমণে রমণে কত-না দাক্ষিণ্যে তারা সঙ্গমযুক্ত হয়ে আলোকধারায় প্রবাহিত হতে শুরু করল। চন্দ্রিমা প্রত্যাবর্তন করলেন রোহিণীর কাছে। …..