…..আপনারা তাে আজকাল আর সংস্কৃত সাহিত্যের নায়িকাদের বর্ণনা রীতি-ভঙ্গি পছন্দ করেন না। এখন আপনারা টল বা স্লিম বা শট ফিগার বলতে চান। বাস্ট আর হিপকে সমান ভাবে ভাগ করতে না চাইলেও, বাস্টের থেকে হিপ সামান্য স্কুল হলেই আপনাদের পছন্দ। এক্ষেত্রে সুনিতম্বিনী বিশেষণটি হয়তাে আপনাদের ভালাে লাগবে না। লাগলেও, ইংরেজি পড়ে, আর এক শ্রেণীর বাতিকগ্রস্ত তথাকথিত সংস্কৃতিবান ভদ্রলোেকদের দৌরাত্মে, নিতম্ব বা স্তন শব্দ বাঙলা সাহিত্য থেকে বাদ দিতে পারলেই বােধহয় ভালাে হয়। নিতম্বকে হিপ বা বাট্যাক বললেই শুচিবায়ুগ্রস্ত তথাকথিত বাঙালী সংস্কৃতিবানরা খুশি হন। তবে কী দিয়েই বা উক্ত তদ্রলােকদের মান রাখবেন। স্তন না বলে ব্রেস্ট বললেও তাদের কানে কেমন কেমন লাগতে পারে। একমাত্র বক্ষস্থল বলে যদি চালিয়ে দিতে পারেন, তাহলে এক রকম চলে যেতে পারে।…..
…..কিন্তু নারীর বক্ষ, যা পৃথিবীকে চিরকাল মােহিত করে এসেছে, তাকে | নিতান্তই বক্ষস্থল বললে, অন্তত আমার মতাে পতঙ্গেরও যেন মনটা বিমর্ষ হয়ে যায়। পীনপয়ােধ তাে আজকাল নেহাতই প্রাচীন হয়ে গেছে। আজকালকার শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা হয়তো তাড়াতাড়ি অভিধান নিয়ে, পীনপয়ােধরা বা পীনবক্ষের মানে খুঁজতে বসবে। কিন্তু হেভি চার্মিং বাস্ট বললে, তাকে আর মানে খুজতে হবে না,
সে তৎক্ষণাৎ বুঝে যাবে। ভদ্রলােকদেরও মান বাঁচবে। যাক, তবু | কথাটা ইংরেজিতে বলা হয়েছে তাে! বাঙলায় না বললেই হল।…..
……শিখরদশনা বলতে কি কেবল অতি উত্তমা রমণী বােকয়? শিখরের সঙ্গে পর্বতশৃঙ্গের তুলনা চলে। শিখরদশনা রমণীর উদ্ধত স্তনচূড়ার সঙ্গে মিলিয়েই কি শিখরদশনা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আমি যথার্থ কিছু বলতে না পারলেও, অমৃতার শরীরের বর্ণনা দিতে গিয়ে, ওকে শিখাদশনা বললেও, ওর বুককে আমি ঠিক উদ্ধত বলতে পারি না। বরং ঈষৎ নম্রতার মধ্যেও যে লাবণ্যের একটা উদ্ধতা থাকে, ওর বুকের বর্ণনা দিতে গেলে, সে কথাই বলতে হয়।……
……সব মিলিয়ে ওর সারা মুখে যেমন একটি রূপের ঝলক আছে, তেমনি আছে একটা স্নিগ্ধতা। লাবণ্য কেবল ওর শরীরে নয়, মুখেও। সু-নিতম্বিনী ওকে বলতেই হবে। বরং বুকের যে তুলনাটা আমি দিতে চাইনি, ওর নিতম্বের ক্ষেত্রে সেটা দেওয়া যায়। ক্ষীণ কটি এবং তার নিচেই নিতম্বকে বিশালই মনে হয়।…..
……হায়, মহাভারতে আপনারা যুধিষ্ঠিরের করুণ দীর্ঘশ্বাস শুনেছেন, পাঞ্চালীর কাছ থেকে প্রাপ্ত অতৃপ্ত প্রেমের জন্য। আরো অনেক ব্যাকুল বাসনামত্ত করুণ আর্জি শুনেছেন। কিন্তু অজয়কে দেখুন, যে ওর অবচেতনের সংবাদ উদ্ভাসিত মনের কোথাও ঘুণাক্ষরেও উদিত হতে দেখেনি। ও নিজেকেই চেনে না। পঞ্চিত মায়াময় সংসারের এই এক আশ্চর্য নিবন্ধ, সে জগতকে আবিষ্কার করতে যায়, কিন্তু নিজের কাছে নিজে থেকে যায় চির অনাবিষ্কৃত । অজয় যেন দুর্দম শিশুর মতাে, অমৃতার সেই পরম রমনীয় বুকে হাত দিয়ে স্পর্শ করল, চকিতেই তাকে বুকের মধ্যে গভীর ভাবে টেনে, স্পর্শের ঘন সান্নিধ্যে, ঠোটে ঠোট স্পর্শ করল, বলল, অমি, অমি, জীবনে একবার, এক মুহূর্ত। আমি শুধু এই কারণেই বেঁচে আছি।’……