শােনাে বাতাসের সুর – হারুকি মুরাকামি

›› অনুবাদ  ›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

ভাষান্তরঃ জিয়া হাশান

…..কোনাে রেডিওর ক্ষীণ স্বর যেন আমার কানে এসে বাজে। তখনাে আমি নগ্ন, বিছানায় হেলান দেয়া। তবে সিগারেটে আগুন জ্বালাতেই অবাক চোখে দেখি আমার পাশে ঘুমায়ে থাকা মেয়েটিকে। দক্ষিণমুখী জানালা থেকে সূর্যের আলাের একটা রেখা মেয়েটার শরীরের আগা মাথাজুড়ে ছড়ায়ে পড়েছে। তার গায়ের চাদরটা হাঁটুর নিচে গুটানাে। ফলে তার শরীরের সবটাই দেখা যায়। অনেক গভীর থেকে যেন সে শ্বাস নেয়, তাতে করে তার সুগঠিত স্তন যুগল তালে তালে ওঠানামা করে। তার গায়ের রং ঘন তামাটে। তবে মনে হচ্ছে ধীরে ধীরে কালোটা বদল হয়ে আসছে। তার সুইমস্যুট পরার অংশটুকু পুরােটাই ফর্সা। আর শরীরে যেন আমিষের কমতি আছে। 

সিগারেট শেষ করে পাক্কা দশ মিনিট ধরে মেয়েটার নাম মনে করার চেষ্টা চালাই। কিন্তু কোনাে কাজ হয় না। মনে করতে পারি না। এমনকি তার নামটা জানি কি না তাও মনে আসে না। শেষে সব চেষ্টা ছেড়ে মেয়েটার দেহ পানে ফিরি। মনােযােগ দিয়া দেখি । বিশের চেয়ে কিছু কম বলে মনে হয় তার বয়স। দেহ হালকা-পাতলা ধরনের। আমি তার মাথা থেকে পা পর্যন্ত আঙুল চালায়ে পুরাে দেহ মাপি। দেখি আট বিঘতের চেয়ে এক আঙুল কম লম্বা। তার বাম স্তনের নিচে ক্ষুদ্র আকারের মতাে একটা জন্ম দাগ। আর পেটের নিচ থেকে কেশের একটা হালকা রেখা নদীর দুপাশের ঝােপের মতাে ছড়ায়ে রয়েছে ।…..

…..মিনিট দশেক পর বছর ত্রিশেকের এক মহিলা এসে ঢােকে। তার পরনে জমকালাে পােশাক। বুকে আঙুরের গুচ্ছের মতাে স্তন। সে কাছের একটা সিটে বসে।…..

……আমি যখন একুশে, তখন এ রকম মৃত্যুর কোনাে পরিকল্পনা আমি কখনাে করিনি। কারণ তত দিনে আমার তিনটি মেয়ের সাথে শােয়া হয়ে গেছে।

প্রথম যে মেয়ের সাথে আমি বিছানায় যাই, সে ছিল আমার ক্লাসমেট। আমরা তখন সতেরােয়। একে অপররে নিবিড়ভাবে ভালােবাসি বলে আমাদের মনে হয়। এক সন্ধ্যায় প্রচুর পানের পর মেয়েটা একে একে জুতাে, সুতার মােজা, গা-কামড়ানাে পােশাকাদি, কোমরের তলার বেটপ আন্ডারওয়্যার খুলে ফেলে। তারপর একটু হতভম্ব ভাব নিয়া হাতের ঘড়িটাও ছুড়ে দেয়। ব্যস, তখন আমরা রবিবাসরীয় আশাহি শিম্বুন পত্রিকার ওপর শুয়ে নিজেদের জড়ায়ে ধরি। তার মাত্র কয়েক মাস পর আমাদের স্কুলের সমাপনী পরীক্ষা হয়ে যায় । তারপর কোনাে অজ্ঞাত কারণে আমাদের ছাড়াছাড়ি হয়। তবে বেশ কিছুদিন সারাক্ষণ তার কথা ভেবেছি। তার ভাবনায় রাতে ঠিকমতাে ঘুমুতে পারিনি। ব্যস, এ কাহিনি এখানেই শেষ ।

দ্বিতীয় যে মেয়ের সঙ্গে শুই তার সঙ্গে আমার দেখা হয়-সাবওয়ের শিনজুকু স্টেশনে। তার বয়স তখন যােলাে। একেবারে চালচুলােহীন মেয়ে। এমনকি রাতে ঘুমানাের মতাে তার কোনাে আশ্রয়ও ছিল না। তবে শরীরে আর কিছু না থাকলেও সুঢৌল একজোড়া স্তনে সমৃদ্ধ ছিল বুক। আর ছিল সুন্দর একজোড়া চোখ।……

…..তার গায়ের শার্টটা বেশ পাতলা। ফলে তার বুকের মাপজোখ, আকার-আকৃতি লাগসইভাবে মেপে নিতে আমার আর কোনাে অসুবিধা হয় না। দেখি তার নিতম্ব ঘিরে স্বচ্ছন্দে ঝুলে থাকা কটনের প্যান্ট। আর বােনাস হিসেবে পাই টেবিলের তলায় তার পা নাড়ানাে।……

Please follow and like us:

Leave a Reply