গণিকা চন্দ্রকলা ও চন্দন পুরুষ – হিমাদ্রিকিশাের দাশগুপ্ত

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  ›› পৌরাণিক কাহিনী  ›› ১৮+  

…..বেশ্যারা তিন প্রকার। যারা তাদের আয়ের অংশবিশেষ মন্দির নির্মাণ, তড়াগ অর্থাৎ জলাশয় খনন, আরাম অর্থাৎ উদ্যান নির্মাণ, সেতু নির্মাণ অর্থাৎ সৎ কাজে ব্যয় করে তারা হল গণিকা। এরা কলাবিদ্যায় পারঙ্গম। যে সব বেশ্যারা কলাবিদ্যায় পারঙ্গম নয়, শুধুমাত্র রূপ দ্বারা পুরুষকে আকৃষ্ট করে এবং সৌন্দর্যমণ্ডিত সামগ্রী প্রীতি আছে তারা হল রূপজীবা। আর যাদের শুধু ধনের প্রতি মােহ আছে। তারা হল ‘কুম্ভদাসী’ বা ‘চাকরানি বেশ্যা’। গণিকা, রূপজীবা আর কুম্ভদাসী এই তিন বর্গের বেশ্যাদের আবার প্রতিটি বর্গ উত্তম, মধ্যমা ও অধমায় বিভক্ত। বেশ্যাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠা হল উত্তম গণিকা আর নিকৃষ্টতমা হল অধমা কুম্ভদাসী।….

……দেখতে পেলেন তিনি। হ্যা, সে কাশীরাজের প্রধানা গণিকা, বাৎস্যায়নের পূর্বপরিচিতা, গণিকা চন্দ্রকলা। স্বর্ণভূষণে সজ্জিতা চন্দ্রকলা যেন সত্যিই চন্দ্রকলার মতােই রূপবতী। মসৃণ গাত্রবর্ণ দুগ্ধমাঠার মতাে স্বর্ণাভ-শুভ্র, জলভরা ঘন মেঘের ন্যায় কুঞ্চিত কেশদাম, অক্ষিদ্বয় যেন সমুদ্রের মত গভীর, তীক্ষ নাসার নিম্নভাগে রক্তিম ওষ্ঠাদ্বয় যেন ফুলের নরম পাপড়ির মতাে। সােনার সুতাের রেশম বন্ধনী দ্বারা তার বক্ষ আবৃত থাকলেও সেই বক্ষদ্বয়ের গঠন যে আকাশের দিকে মুখ তুলে জেগে থাকা শঙ্খের ন্যায়, তা অভিজ্ঞ ব্যক্তিমাত্রই অনুমান করতে পারবেন। স্বয়ং সূর্যদেবও যেন আকাশ থেকে চেয়ে আছেন ক্ষীণ কটিদেশ, মৃদঙ্গের মতাে ভারী নিতম্ব সমৃদ্ধ। এই অসামান্যা নারীর দিকে।…..

…..দিশাশ্বমেধ ঘাট থেকে গৃহে ফিরে আহারাদি সাঙ্গ করে নিজের রচিত পুথি খুলেই বসেছিলেন ব্রাহ্মণ বাৎস্যায়ন। কামসূত্রমের ষষ্ঠ অধিকরণ অর্থাৎ সাযোগিক অধিকরণটি মনােযােগ সহকারে পর্যবেক্ষণ করছিলেন তিনি। কামসূত্রমের সাতটি অধিকরণের মধ্যে এই অধিকরণটি সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয়তা লাভ করেছে পাঠকবর্গের কাছে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের কাছে। এই অধিকরণের দশটি অধ্যায়ে তিনি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিবৃত করেছেন, কীভাবে যৌন মিলনের জন্য প্রস্তুত হতে হয়, বিভিন্ন আলিঙ্গন বা চুম্বন পদ্ধতি যা বিপরীত লিঙ্গের নয় বা নারীর মধ্যে তীব্র কামভাব জাগিয়ে তােলে। বিশেষত রতিক্রিয়া বা সংগমের বিভিন্ন পদ্ধতিগুলােও এই অধিকরণের মূল উপজীব্য বিষয়। দীর্ঘকাল ধরে বাৎস্যায়ন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-গােত্রের মানুষের যৌনক্রীড়া, রতিক্রিয়া নানা স্থানে প্রত্যক্ষ করেছেন, আর তারই আলােকে তিনি রচনা করেছেন কামসূত্রম গ্রন্থের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ অংশটি।…..

….গণিকা চন্দ্রকলার মুখমণ্ডল উত্তমরূপে নিরীক্ষণ করার পর ব্রাহ্মণ বুঝতে পারলেন এই পঞ্চ বৎসরে চন্দ্রকলার রূপ যেন অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। হয়তাে বা তা রাজ-অনুগ্রহে সুখ, শান্তি, নিরাপত্তা, সম্পদের প্রাচুর্যের কারণেই। গণিকা চন্দ্রকলা যখন চতুর্দশ বৎসরে পদার্পণ করেছিল তখন আত্মরও কয়েকজন বিভিন্ন বয়সি নারীর সঙ্গে তাকে যােড়শ কলার পাঠ দান করেন বাৎস্যায়ন ও তার অধীনস্থ বিভিন্ন দক্ষতায় পারদর্শী পুরুষ ও গণিকারা। চন্দ্রকলা যখন অষ্টাদশ বৎসরে পদার্পণ করে তখন তার পাঠগ্রহণসম্পন্ন হয়।…….

……গণিকা চন্দ্রকলা তিনটি শ্লোক বলল-

ললাটালককপােলনয়নবক্ষন্তনােষ্ঠামুখে চুম্বন।
উরুসন্ধিবাহুনাভিমূলেষু লাটানাম।।
রাগবশাদ্দেশপ্রবৃত্তেশ্চ অন্তি তানি তানি স্থানানি; ন তু সর্বজনপ্রযােজ্যনীতি বাৎস্যায়নঃ।।

প্রথম শ্লোকটির অর্থ—ললাট, অলক, কপােল, নয়ন, বক্ষ, স্তন, ওষ্ঠ ও মুখের মধ্যে চুম্বন করতে হয়। দ্বিতীয় শ্লোকের মানে—লাটদেশীয় পণ্ডিতদের মতে তলপেটে, উরুর সংযােগস্থলে, নাভিমূলে এবং পুরুষের লিঙ্গ, নারীর যােনিদেশের উপরিভাগেও চুম্বন করা প্রয়ােজন। আর তৃতীয় শ্লোকের মমার্থ হল, বাৎস্যায়ন বলছেন, দেশ বিভেদে মানুষের শরীরে যে সব স্থানে অনুরাগজনিত চুম্বন প্রচলিত সেই স্থানেই চুম্বন করা প্রয়ােজন। তবে তা সর্বজনের ক্ষেত্রে নয়।……

…..জানতে চাই পাটলিপুত্র পরিত্যাগ করে আসার পর কত ধরনের পুরুষের সঙ্গে তুমি রতিক্রীড়ায় মিলিত হয়েছ? কত প্রকার পুরুষের মধ্যে কামােন্মাদনা সঞ্চার করেছ?

গণিকা চন্দ্রকলা জবাব দিল, ‘প্রায় সব বর্ণের, সব ধরনের মানুষের সঙ্গে—ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, সদ্য যৌবনে পদার্পণকারী কিশাের থেকে গতযৌবন বার্ধক্যের সীমাতে উপনীত ব্যক্তি, গাত্রবর্ণের বিচারে শুভ্রবর্ণ-মধ্যমবর্ণ-কৃষ্ণবর্ণের ব্যক্তি, দৈর্ঘ্যে দানবাকৃতির থেকে বামন, নানা ধরনের পুরুষের আমি মনােরঞ্জন করেছি যারা আমাকে উপযুক্ত অর্থ সম্মান দিতে সক্ষম হয়েছে। তবে যে ব্যক্তির মুখে দুর্গন্ধ আছে, আর যার কুষ্ঠরােগ আছে তেমন কোনাে ব্যক্তির সঙ্গে আমি মিলিত হইনি। কারণ, আপনার গ্রন্থেও আপনি গণিকাদের এদের সঙ্গে মিলন পরিহার করতে বলেছেন।…..

…..কামশাস্ত্র প্রণেতা বাৎস্যায়ন মুহূর্ত কয়েক চুপ করে থেকে বললেন, “তুমি যখন সেই ব্যক্তিকে ধীরে ধীরে কামতাড়নায় উদ্দীপ্ত করবে তখন আমি আড়াল থেকে দেখব কীভাবে তুমি সে কাজ করছ। দেখতে চাই কামশাস্ত্র কত নিখুঁতভাবে প্রয়ােগ করতে পারাে তুমি।

গণিকা চন্দ্রকলা জবাব দিল, ‘আচার্য, সে ব্যবস্থা অবশ্যই করব আমি।’…….

……পরিপূর্ণ সেই কক্ষ। চন্দ্রকলা তার আচার্যের আগমনের প্রতীক্ষাতেই ছিল। তার পরনে সােনার সুতােয় বােনা নীল রঙের মসৃণ। রেশমবস্ত্র। আপাতস্বচ্ছ সেই বস্ত্রর মধ্যে। দিয়ে তার শরীরের গােপন আধারগুলি অনুমান করা যায়। উজ্জ্বল রক্তবর্ণের বক্ষবন্ধনী জরির ফিতে দিয়ে উন্মুক্ত পৃষ্ঠদেশে বাঁধা। কেশদাম মাথার ওপরে চুড়াে করা, যাতে তার গ্রীবা ও পৃষ্ঠদেশ পুরুষকে চুম্বকের জন্য আকর্ষিত করে। প্রদীপের কাজল দিয়ে তার হরিণ চোখকে আরও গভীর মােহময়ী করে তুলেছে সে। ওষ্ঠাধর সাজিয়েছে রক্তিমবর্ণে, যা পুরুষের মনে তার প্রতি কামনার উদ্রেক ঘটাবে। তবে অলংকারের বাহুল্য নেই তার শরীরে। কারণ, অধিক অলংকার কামক্রীড়ার বিঘ্ন ঘটায়,—এ কথা বাৎস্যায়ন তার রচিত গ্রন্থতেই লিখেছেন। তিনটি অলংকার শুধু ধারণ করেছে সে। নাকে হীরকের নাকছাবি, নাভিমূলকে বেষ্টন করে সূক্ষ্ম স্বর্ণশৃঙ্খল, পায়ে সােনার নূপুর। গণিকার কণ্ঠদেশ, বাহু সজ্জিত ফুলমালা দিয়ে। আচার্য কয়েক মুহূর্ত চেয়ে রইলেন তার দিকে। উপযুক্ত বেশই ধারণ করেছে গণিকা চন্দ্রকলা। সৌন্দর্য আর যৌন আবেদন দুটোই পরিস্ফুট তার অঙ্গসজ্জায়। চন্দ্রকলার প্রসাধনীর সুবাসে আমােদিত কক্ষ। …..বাৎস্যায়ন এগিয়ে সেই ব্যাঘুচর্মের আসনে উপবেশন করে ছিদ্রপথে চোখ রেখে প্রস্তুত হলেন চন্দ্রকলা ও সেই যুবকের মিলনক্রিয়া প্রত্যক্ষ করার জন্য।

ইতিপূর্বে এভাবে আড়াল থেকে বহুবার নর-নারীর যৌন সম্ভোগের দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছেন গণিকালয় থেকে গৃহস্থের বাটিকায়, এমনকি রাজঅন্তঃপুরেও। বিশ্লেষণ করেছেন নর-নারীর কামকলার প্রতিটি পর্যায়, প্রতিটি মুহূর্তও। যার নির্যাস তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন কামসূত্রম গ্রন্থে।…..

……চন্দ্রকলা নূপুরের মূর্ধনার শব্দ তার হরিণচর্মের সিংহাসনে আসীন যুবকে সামনে গিয়ে দাড়িয়ে করজোড়ে মাথা ঝকিয়ে প্রণাম জানাল। এটা গণিকাদেররীতি। এর সঙ্গে নায়কের, নায়িকার প্রতি যৌন আগ্রহের একটা সম্ভাবনা সূচিত হয়। কারণ ওভাবে ঝুঁকে প্রণাম জানালে কয়েক মুহূর্তের জন্য নায়িকার বক্ষবিভাজিকা দৃশ্যমান হয় নায়কের চোখে। গণিকা চন্দ্রকলা যুবককে প্রণাম জানাতে সেই যুবকও নিজের বুকের কাছে হাতজোড় করে চন্দ্রকলাকে সম্ভাষণ জানাল। আর তার সঙ্গে সঙ্গে একটা আবছা হাসি ফুটে উঠল যুবকের ঠোটের কোণে।

…….বাৎস্যায়ন ছিদ্রপথে দেখলেন বুদ্ধিমতী গণিকা যুবককে আকৃষ্ট করার জন্য নির্দিষ্ট ভঙ্গিতে বাদ্যযন্ত্র বাজাতে বসেছে। তার উরু থেকে পায়ের অঙ্গুলি পর্যন্ত উন্মুক্ত। চন্দ্রকলার শুভ্র মসৃণ উরু বেয়ে প্রদীপের আলাে যেন পিছলে পড়ছে। সেখানে দৃষ্টিপাত করলে পুরুষের মনে শিহরন জেগে উঠবেওই উরুদ্বয় স্পর্শ করার বাসনাতে। যুবক চেয়ে আছে চন্দ্রকলার দিকেই। বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে মাঝে মাঝে পায়ের পাতা নাড়াচ্ছে চন্দ্রকলা। সেই নিক্কণ | ধ্বনিতে জেগে উঠছে কামের আমন্ত্রণ।

বাম বাহু দিয়ে চন্দ্রকলা যুবকের কোমর আলিঙ্গন করল। যুবক কিন্তু নিরুত্তাপ! সে অন্য পুরুষের মতাে, চন্দ্রকলাকে প্রতি-আলিঙ্গন করল না। আলিঙ্গন, চুম্বন বা দংশন নারী-পুরুষের পূর্ণ মিলনের আগে শরীরকে উত্তেজিত করে তােলার জন্য করা হয়। পুরুষের বীর্যপাত বা । নারীর রাগমােচনের পর আর এসবের প্রয়ােজনীয়তা থাকে না। আচার্য বাৎস্যায়ন তাঁর গ্রন্থে ইতিমধ্যেই তা বিবৃত করেছেন। বিভিন্ন চুম্বনের কথাও বিবৃত করেছেন। তিনি। যার তালিম নিয়েছে গণিকা চন্দ্রকলা। সাধারণত আলিঙ্গন, চুম্বনের। ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করে পুরুষরাই, কিন্তু এক্ষেত্রে এ দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে গণিকা চন্দ্রকলাকেই। তাই সে যুবকের কোমর আলিঙ্গন করার পর যখন তার দিক থেকে কোনাে সাড়া পেল না, সে যুবকের উন্মুক্ত কঁাধে মুখ নামিয়ে মৃদু চুম্বন করল। বাৎস্যায়ন রচিত গ্রন্থে এ চুম্বনের নাম ‘প্রশ্ন চুম্বন’। নারী-পুরুষ যখন পাশাপাশি উপবেশন করে তখন একজন অন্যজনের মনে কামেচ্ছা আছে কি না তা জানার জন্য এই প্রশ্ন চুম্বন’ বা জিজ্ঞাসা চুম্বন করে। কিন্তু এ চুম্বনের পরও নিস্তব্ধ হয়ে রইল যুবক। তা দেখে চন্দ্রকলা এরপর প্রস্তুত হল ‘ঘটিতক চুম্বনের জন্য। এ চুম্বনে নারীর ভূমিকাই প্রধান। এ চুম্বন পুরুষকে জানায় নারী লজ্জামুক্ত হতে চলেছে। চন্দ্রকলা নিজের দক্ষিণ হস্তের করতল দিয়ে যুবকের চোখ আবৃত করে নিজের ফুলের পাপড়ির মতাে ঠোট নামিয়ে আনল যুবকের ঠোটে। তার ঠোট স্পর্শ করে এক অদ্ভুত শীতল অনুভূতি হল চন্দ্রকলার। একই সঙ্গে সে । বুঝতে পারল কক্ষের সব সুগন্ধকে ছাপিয়ে সেই চন্দনের গন্ধের উৎস হচ্ছে এই যুবকের মুখগহুর। কিন্তু ঘটিতক চুম্বনেও নিস্পৃহ রইল যুবক।

যুবকের পরনে জৈনদের মতােই বেশ। একটি মাত্র বস্তুখণ্ড দিয়ে তার উরু থেকে কাঁধ আবৃত। চন্দ্রকলা কিছু সময় আগে তার পরিয়ে দেওয়া ফুলমালা এরপর তার কণ্ঠদেশ থেকে খুলে পাশে নামিয়ে রেখে যুবকের বসন কাঁধ থেকে উদরের নীচে নামিয়ে আনল। উন্মােচিত হল যুবকের ত্রিভুজাকৃতি উন্নত বক্ষ, মেদহীন কটিদেশ। গণিকা চন্দ্রকলা এরপর প্রথমে একটা দীর্ঘ চুম্বন করল তার প্রশস্ত বক্ষে। তারপর তার চুম্বনরত ওষ্ঠ ধীরে ধীরে নেমে আসতে লাগল যুবকের শরীর বেয়ে। বাৎস্যায়ন খেয়াল করলেন আর এরই সঙ্গে সঙ্গে যুবকের চোখের পাতা মুদে আসতে লাগল। আর তা দেখে বাৎস্যায়ন ভাবলেন যুবকের মধ্যে চন্দ্রকলার চুম্বন স্পর্শে কাম উত্তেজনা সঞ্চারিত হতে শুরু করেছে। যে অনুভূতির ফলে যুবকের চোখের পাতা মুদে আসছে। আর কিয়ঙ্কালের মধ্যেই চক্ষু উন্মীলিত করে প্রবল যৌন আগ্রহে সে নিষ্পেষণ শুরু করবে চন্দ্রকলাকে। – চুম্বন করে চলেছে চন্দ্রকলা। কখনও ঝুঁকে পড়ে যুবকের উন্মুক্ত উরুতে, নাভিতে, কখনও বা মুখ তুলে যুবকের বক্ষে, বাহুতে, স্কন্ধে, গ্রীবাতে। আলিঙ্গনবদ্ধ অবস্থাতে চন্দ্রকলার চন্দ্রমুখী নরম স্তনযুগল মসৃণ। বক্ষবন্ধনীর আড়াল থেকে যুবকের শরীর স্পর্শ করছে। যুবককে চোখ মুদতে দেখে। তার মধ্যে কামভাব সঞ্চারিত হচ্ছে এ কথা বাৎস্যায়নের মনে হলেও গণিকা চন্দ্রকলার অন্য কথা মনে হতে লাগল। চন্দ্রকলার মনে হল, চোখ মুদে যুবক যেন ধ্যানস্থ হতে শুরু করেছে। তার ঘনিষ্ঠ চুম্বনের ফলে যুবকের শরীরে উষ্ণতা জেগে ওঠার পরিবর্তে যেন শীতলতা নেমে আসছে! গণিকা চন্দ্রকলা ব্যাপারটাতে মৃদুবিস্মিত হলেও সেচুম্বনক্রিয়া চালিয়ে যেতে লাগল। কারণ, বহু পুরুষের শয্যাসঙ্গিনী হবার অভিজ্ঞতা লাভের ফলে। গণিকা, চন্দ্রকলা জানে যে, যে-সব পুরুষ অতিমাত্রায় নারীসঙ্গ করে, আর দীর্ঘ দিন ধরে যারা নারীসঙ্গে বঞ্চিত, তাদের উভয়ের ক্ষেত্রেই শরীর জেগে উঠতে অনেক ক্ষেত্রে বেশি সময় ব্যয় হয়। হয়তাে বা এই যুবক এই দুই গােত্রের পুরুষের কোনাে একটি গােত্রের অন্তর্গত। তাই তাকে উত্তেজিত করে তুলতে সময় লাগছে। একসময় চন্দ্রকলা যুবককে জাগিয়ে তােলার জন্য ‘ফুরিতক’ চুম্বন করল। অর্থাৎ নিজের ওষ্ঠের ভিতর ধারণ করল যুবকের ওষ্ঠ। মুহূর্তের পর মুহূর্ত কেটে যেতে লাগল স্ফুরিতক চুম্বনরত অবস্থায়। কিন্তু যুবক তাতেও সাড়া দিল না। গণিকা চন্দ্রকলার মনে হতে লাগল নিজের মুখগহ্বরে ধারণ করা যুবকের ওষ্ঠদ্বয় যেন তুষারের মতাে শীতল হতে শুরু করেছে। আর এর পরই অট্টালিকার পশ্চাৎদেশের নদীতীরের জঙ্গল থেকে শৃগালের সম্মিলিত ধ্বনি জানান দিল রাত্রির দ্বিতীয় প্রহর শেষ হল। তা শুনে চমকে উঠলেন আচার্য বাৎস্যায়ন। ৩ যুবকের শরীর যখন চুম্বনে সাড়া দিল না, সে যখন চোখের পাতা খুলল না, তখন তৃতীয় প্রহরের সূচনা লগ্নে নানাবিধ চুম্বনের সঙ্গে নখরিলিখন শুরু করল যুবকের উন্মুক্ত শরীরে। নখরিলিখন হল, নখ দিয়ে বিপরীত লিঙ্গের শরীরে চিত্রাঙ্কন করে তাকে উত্তেজিত করা। গণিকা চন্দ্রকলাকে তার আচার্য বাৎস্যায়ন যে আট প্রকার নখরিলিখন আছে অর্থাৎ“আচ্ছুরিতক, অর্ধচন্দ্র, মণ্ডল, রেখা, ব্যানখ, ময়ূরপদক, শশতক ও উৎপলপত্ৰক-এর পাঠ দিয়েছেন, দংশনের উপযুক্ত নখ প্রস্তুতেরও পাঠ দিয়েছেন। স্বাভাবিক কারণেই চন্দ্রকলার নখও উত্তমভাবে প্রস্তুত করা নখরিলিখনের জন্য। আচার্য বাৎস্যায়নের পাঠ-অনুসারে নানারূপ নখরিলিখন করে চলল যুবকের কক্ষদ্বয় বা বাহুমূলে, গলদেশে,পৃষ্ঠদেশ, উন্মুক্ত বক্ষদেশ, কটিদেশ, নিতম্ব ও উরুযুগলে। এমনকি যে স্থান সাধারণত নখরাঘাতের জন্য বিবেচিত হয় না, অর্থাৎ যুবকের – পুরুষাঙ্গের বস্ত্রখণ্ডর ওপর দিয়ে নখরিলিখন শুরু করল চন্দ্রকলা। বেড়ে চলল রাত। কিন্তু পুরুষের লিঙ্গ উত্থিত হল না।

আড়াল থেকে এ দৃশ্য দেখে নিজেও এবার উত্তেজিত হতে শুরু করলেন।  না, কামের উত্তেজনা শ্রদ্ধা তৈরি হতে শুরু করল তার মধ্যে। যে চন্দ্রকলার সামান্য স্পর্শে পুরুষের শরীর জাগ্রত হয়, ত সময় লাগছে কেন এই যুবককে সে তুলতে? সময় তাে তৃতীয় প্রত মধ্যভাগের দিকে এগােচ্ছে!! – নখরলিখনে সাড়া না মেলাতে অভি গণিকা চন্দ্রকলা এরপর অন্য কে গ্রহণ করল। যুবককে সাময়িক আলিঙ্গনমুক্ত করে সে উঠে দাঁড়াল। তার সে খসিয়ে ফেলতে লাগল নিজের শরীফে বস্ত্র-আবরণ। একসময় প্রায় সে সম্পূর্ণ হয়ে গেল। সুতাে দিয়ে কটিদেশের সরে বাঁধা শুধু একটা ফিতের মতাে বস্ত্রখণ্ড আড়াল করে রেখেছে তার যােনিমুখকে। প্রদীপের আলােতে উন্নত তার শঙ্খের মত স্তনযুগল। তার বৃন্তগুলাে যেন সুতীক্ষ বর্শার সূচিমুখ, যা কামের আগুনে বিদ্ধ করতে পারে দেবতা-যক্ষ-মানবকে। এতক্ষণ ধরে যুবকের সঙ্গে আলিঙ্গন-ঘর্ষণের ফলে। ঘর্মাক্ত হয়ে উঠেছে চন্দ্রকলার শরীর। একফোটা স্বেদবিন্দু চন্দ্রকলার গভীর নাভিমূলে জমা হয়ে হীরকের মতাে দ্যুতি ছড়াচ্ছে। তার বাহু, কটিদেশ, মৃদঙ্গের মতাে স্ফুরিত নিতম্ব, কদলীকাণ্ডের মতাে মসৃণ উরুযুগল বেয়ে প্রদীপের আলাে যেন মাটিতে পিছলে পড়ছে। এ শরীর যেন কোনাে মানবীর নয়, এ শরীরের যেন জন্ম হয়েছে স্বয়ং রতিদেবের কল্পনা থেকে।

নিজের আসনে এবার সােজা হয়ে বসলেন আচার্য বাৎস্যায়ন। তার মনে হল গণিকা চন্দ্রকলার এ শরীরকে অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা ত্রিভুবনে কোনাে পুরুষের নে ছিদ্রপথে, চোখ রেখে তিনি প্রত্যক্ষ করা লাগলেন এর পরবর্তী দৃশ্য –

নিরাবরণ, নগ্নিকা চন্দ্রকলা এ যুবকের কাছে গিয়ে তাকে পুনরায় আলিঙ্গন করল। মুদিত চোখ যুবকের শরিরে তার সূচাগ্র স্তনবৃন্ত দিয়ে ঘর্ষণের সঙ্গে দাঁত দিয়ে মৃদু দংশন শুরু করল তার বঁধে, গ্রীবায়, কানের লতিতে। এভাবে সেই যবককে জাগিয়ে তােলার কাজ করেই চলল গণিকা চন্দ্রকলা। নানা ভঙ্গিমায় এ কাজ করে চলল সে। কখনও বা সে যুবকের হস্তপল্লব তুলে নিয়ে তা স্পর্শ করাতে লাগল নিজের স্তনযুগলে, নিতম্বতে, যােনিমুখে। কিন্তু যুবক, স্থির, অচঞ্চল, ধ্যানস্থ। আর এরই মাঝে সে যুবকের লিঙ্গ স্পর্শ করে বােঝার চেষ্টা করতে লাগল তার পুরুষাঙ্গ উখিত হয়েছে কি না। কিন্তু তার কোনাে আভাস মিলল না। বরং চন্দ্রকলার মনে হতে লাগল এই যুবকের শরীর যেন ক্রমে ক্রমে পর্বতগাত্রের তুষারের মতাে শীতল হয়ে আসছে। যেন কোনাে মৃত ব্যক্তির শরীর আলিঙ্গন করে আছে সে। তবে এই যুবক মত নয়, তার বক্ষের মৃদু ওঠানামা জানান দিচ্ছে সে জীবিত। রাত্রি এগিয়ে চলল তার নিজের নিয়মে। একসময় চন্দ্রকলার মনে হতে লাগল এই তুষারমূর্তির স্পর্শে তার নিজের শরীরও শীতল, অবসন্ন হয়ে পড়ছে। যুবককে জাগিয়ে তােলার জন্য শেষ একটা পন্থা ভাবল অবসন্ন চন্দ্রকলা—নিজের যােনিতে এই যুবকের লিঙ্গ প্রবেশের চেষ্টা করবে সে। এ কথা ভেবে নিয়ে চন্দ্রকলা যুবকের মুখােমুখি দাঁড়াল। তারপর একটানে ছিড়ে ফেলল নিজের কটিদেশের সুতাের বাঁধন। ফিতের মতাে শেষ বস্ত্রখণ্ডটাও খসে পড়ল তার অঙ্গ থেকে। এখন সে উন্মুক্ত যােনি। লজ্জাহীনা, রাজগণিকা চন্দ্রকলা। এরপর সে যুবকের বস্ত্রখণ্ডটা স্পর্শ করতে যাচ্ছিল তাকে সম্পূর্ণরূপে আবরণহীন করার জন্য, কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তে শৃগালধ্বনি কানে এল! শেষ হল রাত্রির তৃতীয় প্রহর! হতভম্ব কামসূত্র প্রণেতা বাৎস্যায়ন। গণিকা চন্দ্রকলার শরীরটা এবার পরাজয়ের গ্লানিতে কাপতে শুরু করেছে। শৃগালধ্বনির পর ধীরে ধীরে চোখ মেলল সেই যুবক। কয়েক মুহূর্ত সে চেয়ে রইল চন্দ্রকলার নিরাবরণ শরীরের দিকে। তার চোখের সামনে চন্দ্রকলার স্তনযুগল থেকে, যােনিদেশ সবই উন্মুক্ত। তার শরীরের দিকে চেয়ে সেই যুবকের মুখমণ্ডলে একটা হাসি ফুটে উঠল। নির্লিপ্ততার হাসি, প্রশান্তির হাসি। তার চোখের সামনে আরও কয়েক মুহূর্ত নগ্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে রইল চন্দ্রকলা। তারপর কোনােরকমে বস্ত্র পরিধান করে টলতে টলতে কক্ষত্যাগ করল।

ক্লান্ত বিধ্বস্ত চন্দ্রকলা যখন তার। শয়নকক্ষে প্রবেশ করল তখন নিজের আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়েছেন আচার্য বাৎস্যায়ন। নিজের চোখকে যেন তিনি তখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না। তবে কি তাঁর কামশাস্ত্র সম্পর্কে এতদিনের সব অভিজ্ঞতা মিথ্যা? অসার তাঁর সােড়শ কলাবিদ্যা? সেই জৈন সন্ন্যাসীর কথাই কি তবে ঠিক? কামের আসন শ্রেষ্ঠ নয়?…..

…..আবার পুথি খুলে বসলেন তিনি। পাঠ করতে শুরু করলেন গ্রন্থের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ষষ্ঠ অধিকরণ বা যৌন মিলন সম্পর্কিত বৃহৎ অধিকরণটি। যার বিভিন্ন অধ্যায়ে বর্ণিত আছে নারী-পুরুষের যৌনাঙ্গের স্বরূপ, রতিক্রিয়ার বিভিন্ন পদ্ধতি। তার এই দীর্ঘ পাঠ যখন সমাপ্ত হল তখন দিবার তৃতীয় প্রহর প্রায় অতিক্রান্ত…..

……..‘আলিঙ্গন’ শব্দটা শুনে, বাৎস্যায়ন জানতে চাইলেন, “ওই যুবকের সঙ্গে যখন তুমি আলিঙ্গনরত ছিলে, তখন তােমার কোনাে বিশেষ অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছিল কি?

গণিকা চন্দ্রকলা বলল, “হ্যা, আচার্য। এক অদ্ভুত শীতল অনুভূতি! আমার মনে হচ্ছিল ওই যুবকের দেহ ক্রমে ক্রমে তুষার। মুর্তিতে পরিণত হচ্ছে! আমি যেন সত্যিই কোনাে তুষার মূর্তিকে চুম্বন করছি, লেহন করছি।।

কথাটা শুনে একটু ভেবে নিয়ে বাৎস্যায়ন বললেন, “তােমার কথা শুনে আমার মনে হচ্ছে। ওই যুবকের শরীরে রক্ত সঞ্চালনের কোনাে সমস্যা থেকে থাকতে পারে। যে কারণে তার লিঙ্গোত্থান হচ্ছে না। তুমি, অঙ্গমর্দন ও লেহনের মাধ্যমে তার শরীরকে জাগাবার চেষ্টা করবে। আশা করি তুমি অসফল হবে না।’ এ কথা বলার পর আচার্য বাৎস্যায়ন আসন্ন রাত্রিতে চন্দ্রকলার কর্তব্য সম্পর্কে আরও কিছু প্রয়ােজনীয় নির্দেশ দিলেন।…..

……..আর তারের বাদ্যযন্ত্রের পরিবর্তে আজ এ কক্ষে ‘উদকবাদ্য বা জলতরঙ্গ বাদ্যের। উপচার। জলপূর্ণ সেই নানা আকারের স্ফটিকের পাত্রগুলি সুচারুভাবে মাটিতে সাজানাে আছে। এই উদক বাদ্য সহযােগে সংগীত পরিবেশন মনে কামের উদ্রেক ঘটাতে সহায়ক। এবং এই সংগীতও বিশেষ প্রকৃতির। যা কামাচারে লিপ্ত হবার জন্য রাজারা শ্রবণ করেন। আজ নিশ্চয়ই এসব উপচারের মাধ্যমে এই যুবকের মধ্যে। কামভাব জাগিয়ে তুলতে পারবে রাজগণিকা চন্দ্রকলা।’—এ কথা মনে মনে ভেবে নিয়ে দু সেই কক্ষে যুবককে উপবেশন করিয়ে রেখে বাৎস্যায়ন প্রবেশ করলেন পার্শ্ববর্তী কক্ষে। উপযুক্ত সাজে সজ্জিত হয়ে তাদেরই আসার প্রতীক্ষা করছিল গণিকা চন্দ্রকলা। সে আচার্যের সামনে এসে দাঁড়াল। তিনি দৃষ্টিপাত করলেন শিষ্যার শরীরে।

আচার্য বাৎস্যায়নের নির্দেশমতাে সােনার সুতাের সূচিশিল্প সমৃদ্ধ রক্তবর্ণের পােশাক পরিধান করেছে চন্দ্রকলা। এবং আজ তার পরিধান অন্যরূপ। বক্ষবন্ধনীর ওপর আজ কোনাে অবগুণ্ঠন নেই। সেই বক্ষবন্ধনী এতই নিবিড় যে চন্দ্রকলার বক্ষ বিভাজিকার প্রায় সম্পূর্ণ অংশটাই দৃশ্যমান। সমুদ্রের জলােচ্ছাসের মতােই যেন চন্দ্রকলার স্তনযুগল মুক্ত হতে চাইছে বক্ষবন্ধনীর নিষ্পেষণ থেকে। বক্ষবন্ধনীর নীচ থেকে কটিদেশ পর্যন্ত চন্দ্রকলার দেহ উন্মুক্ত। চন্দ্রকলার গভীর নাভি যেন শুষে নিচ্ছে কক্ষের প্রদীপের আলাে। শরীরের নিম্নাংশে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের বস্ত্রাবরণ চন্দ্রকলার জঙ্ঘা পর্যন্ত আবৃত করেছে। হাঁটু থেকে চন্দ্রকলার রঞ্জিত নখর সমৃদ্ধ মসৃণ পদযুগল সম্পূর্ণ দৃশ্যমান। মহাজনপদের, ‘অঙ্গ রাজ্যের উত্তর-পূর্বে ‘প্রাগজ্যোতিষপুর’ নামে এক প্রাচীন নগরী বিদ্যমান। সে স্থানে নীলাচল পর্বতে দেবী কামাখ্যার মন্দির বর্তমান। শিব-পার্বতীর সংগমস্থল ওই নীলাচল পর্বত। বিষ্ণুর সুদর্শন চক্রে কর্তিত হয়ে সতীর যােনি নিক্ষিপ্ত হয়েছিল সেস্থানে কামাচারের জন্য বিখ্যাত ওই নীলাচল পর্বত। বাৎস্যায়ন নিজেও ওই স্থানে কামশাস্ত্র-কামাচার অধ্যয়নের নিমিত্তে পরিভ্রমণ করেছিলেন। ওই স্থানের নারীরা যে কোনাে পুরুষকে মেষ বানিয়ে দিতে সক্ষম। অর্থাৎ পুরুষকে কামার্ত করে তুলে নারীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে পারে ঠিক পােষ্য মেষের মতােই। বাৎস্যায়নের নির্দেশমতাে গণিকা চন্দ্রকলা আজ যে বেশ পরিধান করেছে তা ওই প্ৰাগজ্যোতিষপুর-স্থিত নীলাচল পর্বতের নারীদের মতনই। চন্দ্রকলার শরীর থেকে নির্গত মৃগনাভির গন্ধ আমােদিত করে তুলেছে তার শয়নকক্ষকে। গণিকা চন্দ্রকলা তার অঙ্গ কস্তুরীমােথিত করেছে তার আচার্যের পরামর্শ মতােই। কারণ, কস্তুরীর ঘ্রাণ কামােদ্দীপক যুবকের সামনে গণিকা চন্দ্রকলাকে উপস্থিত করার ক্ষেত্রে আজ আর কোনােভাবেই সামান্য ত্রুটি রাখতে) চান না কামসূত্রম প্রণেতা ব্রাহ্মণ বাৎস্যায়ন।

আচার্যের আশীর্বাদ নিয়ে কক্ষ ত্যাগ করল গণিকা চন্দ্রকলা। বাৎস্যায়ন নির্দিষ্ট স্থানে উপবেশন করে চোখ রাখলেন দেওয়ালগাত্রের ছিদ্রে। অনতিবিলম্বেই পার্শ্ববর্তী কক্ষে প্রবেশ করল গণিকা চন্দ্রকলা।

পূর্ব রাত্রির মতনই চন্দ্রকলা কক্ষে প্রবেশ করে যুবকের সামনে উপস্থিত হয়ে প্রণাম জানাল তাকে। চন্দ্রকলার শরীরের দিকে তাকিয়ে স্পষ্ট হাসি ফুটে উঠল যুবকের মুখে। তবে কি চন্দ্রকলার নতুন সাজ আকৃষ্ট করল যুবককে?—মনে মনে ভাবলেন বাৎস্যায়ন।

– চন্দ্রকলা যুবকের হাত ধরে নিয়ে বসাল শয্যাতে। এরপর সে আজ আর কোনাে প্রথম স্পর্শের লজ্জা প্রদর্শন না করে সরাসরি দীর্ঘ চুম্বন সূচিত করল যুবকের ওষ্ঠাধরে।

আচার্য বাৎস্যায়ন এ পুরুষকে কামভাবে জাগিয়ে তােলার জন্য যে নির্দেশ দিয়েছেন সে কাজেই নিযুক্ত হল গণিকা চন্দ্রকলা। যুবকের অঙ্গমর্দন বা সংবহন শুরু করল গণিকা চন্দ্রকলা। বাৎস্যায়ন তার ষষ্ঠ অধিকরণের ‘আলিঙ্গন বিচার’ অনুচ্ছেদে এই সংবহন বা অঙ্গমর্দনের পদ্ধতি সম্পর্কে নির্দেশ দান করেছেন। সে মতােই যুবকের শরীর মর্দন করতে শুরু করল গণিকা চন্দ্রকলা। হস্ত দিয়ে শরীর মর্দন তাে আছেই, এ ব্যতীত নিজের উরু দিয়ে, নিতম্ব দিয়ে, স্তন দিয়ে নায়ককে মর্দন করতে শুরু করল। নায়ককে জাগিয়ে তােলার জন্য।

দীর্ঘ সময় ধরে মর্দন করে চলল সে। রাত এগিয়ে চলল তার সঙ্গে সঙ্গে। ধীরে ধীরে চোখের পাতা মুদে এল সেই যুবকের। একসময় শৃগালকুলের সম্মিলিত চিৎকারে নতুন প্রহর সূচিত হল। নিজের উত্তেজনা যেন আর ধরে রাখতে পারছেন না কামশাস্ত্র প্রণেতা বাৎস্যায়ন। আর একটি প্রহর বাকি, এবার নিশ্চয়ই যুবককে যে কোনাে মুহূর্তে কামভাবে জাগিয়ে তুলতে সমর্থ হবে, গণিকা চন্দ্রকলা।

রাত্রি তৃতীয় প্রহরে পদার্পণ করার সঙ্গে সঙ্গেই নিজের শরীরের সমস্ত বস্ত্র উন্মােচন করে সম্পূর্ণ নগ্ন হল চন্দ্রকলা। আর একটা সুতােও রইল না তার শরীরে। তার কণ্ঠদেশ থেকে স্তনবিভাজিকার ফাঁক গলে প্রদীপের আলাে যেন পিছলে নীচে নেমে নাভিমূলকে আলিঙ্গন করে এসে হারিয়ে যাচ্ছে যােনি বিভাজিকায়। চন্দ্রকলার অঙ্গ সঞ্চালনের সঙ্গে সঙ্গেই তার ভারী নিতম্ব ঘুঙুরের মতাে নেচে উঠছে। নিজের শরীরের বস্ত্র উন্মােচনের পরই চন্দ্রকলা যুবকের শরীরের বস্ত্রখণ্ডও সম্পূর্ণরূপে সরিয়ে নিল। দৃশ্যমান হল যুবকের পুরুষাঙ্গ। যুবকের মুখােমুখি দাঁড়িয়ে তার উরুযুগলকে প্রসারিত করে তার শিবদণ্ড স্পর্শ করল গণিকা চন্দ্রকলা। যুবকের মতােই শান্ত-সমাহিত তার পুরুষ দণ্ডটি। আচার্য বাৎস্যায়ন তাঁর গ্রন্থে পুরুষ লিঙ্গ সম্পর্কে লিখেছেন, ‘শশে বৃযােহশ্ব লিঙ্গতাে নায়কবিশেষাঃ। ‘ অর্থাৎ পুরুষের লিঙ্গ তার দৈর্ঘ্য অনুসারে তিন প্রকার। উথিত অবস্থায় যে লিঙ্গের দৈর্ঘ্য ছয় আঙুল প্রমাণ, তা ‘শশক লিঙ্গ’, নয় আঙুল প্রমাণ হলে বৃষ লিঙ্গ আর বারাে আঙুল প্রমাণ হলে তা ‘অশ্ব লিঙ্গ’ রূপে চিহ্নিত হয়। উত্তম রতিক্রিয়ার জন্য। শ্ৰশক  (লিঙ্গের)উপযুক্তামৃগী নারী, বৃষের ক্ষেত্রে বড়বা বা ঘােটকী রমণী এবং অশ্ব লিঙ্গের উপযুক্ত হল হস্তিনী নারী। কারণ, এই ক্ষেত্রগুলিতে নারীর যােনি গর্ভের গভীরতা লিঙ্গের দৈর্ঘ্যের অনুরূপ হয়। যুবকের লিঙ্গ উত্থিত না থাকলেও অভিজ্ঞ গণিকা চন্দ্রকলা তা স্পর্শ ও দর্শন করে বুঝতে পারল এই যুবকের লিঙ্গ ‘অশ্ব লিঙ্গ’ । চন্দ্রকলা নিজে বড়বা গােতে এ পুরুষ যদি জেগে ওঠে ত মিলন হবে আদর্শ মিলন। যে করেই হােক জাগিয়ে তুলতে হবে এই লিঙ্গ। না, কোনাে খুঁত নেই এই লিঙ্গে। শয্যা কিনারে চোখ মুদে বসে যুবক। দু প্রসারিত তার জঙ্ঘা। চন্দ্রকলা মেঝেতে হাঁটু মুড়ে উপবেশন করে। যুবকের দু উরুর মধ্যবর্তী স্থানে মস্তক প্রবেশ করিয়ে করপুটে লিঙ্গ তুলে নিয়ে লেহন শুরু চন্দ্রকলার নিজের শরীরও এবার উত্তেজি হতে শুরু করেছে, সিক্ত হয়ে উঠছে তাই যােনি। সে দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে উত্তেজিত হয়ে উঠছেন আচার্য বাৎস্যায়নও। তবে তাঁর উত্তেজনার কারণ যৌনতা নয়, উৎকণ্ঠ। রাত যে এগিয়ে চলেছে! চন্দ্রকলা, যুবক্সে লিঙ্গ নানাভাবে লেহন করে চলেছে। কিন্তু যুবকের পুরুষ যন্ত্র যেন উষ্ণ হয়ে ওঠার পরিবর্তে শীতল থেকে শীতলতর হয়ে আত্ম সছে। অবশ হয়ে আসছে চন্দ্রকলার জিয়া। এরপর শেষ অস্ত্র প্রয়ােগ করার জন্য প্রস্তুত হল গণিকা চন্দ্রকলা। ধাক্কা মেরে যুবককে চিত করে শুইয়ে ফেলে তার শরীরের ওপর দুই উরু প্রসারিত করে উঠে বসল সে। পুরুষ লিঙ্গের সঙ্গে যােনির সংযােগ ঘটাবার জন্য এই বিশেষ ভঙ্গিতে উপবেশন করাকে বলে—“সম্বেশন’। যুবকের লিঙ্গকে জাগ্রত করার জন্য সম্বেশনের মাধ্যমে যােনি দিয়ে লিঙ্গ ঘর্ষণ করে চলল গণিকা চন্দ্রকলা। চেষ্টা করতে লাগল যাতে যুবকের লিঙ্গ জাগ্রত হয়ে তার যােনিকে বিদ্ধ করে সে জন্য। প্রবল ঘর্ষণ। ‘বাৎস্যায়ন দেখলেন ঘাম ঝরছে চন্দ্রকলার শরীর থেকে। কিন্তু তবু থামছে না সে। নিজের কর্তব্য সম্পাদনের জন্য শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে গণিকা চন্দ্রকলা। উত্তেজনাতে ঘামছেন বাৎস্যায়নও। নিজের হৃৎপিণ্ডের শব্দ যেন তিনি শুনতে পাচ্ছেন। আর এর শৃগালধ্বনি ভেসে এল। সে ধ্বনি পরিহাস করে উঠল ষােড়শ কলার রচয়িতা কামশাস্ত্র প্রণেতা বাৎস্যায়নকে। যে শব্দ শােনার সঙ্গে সঙ্গেই আর্তনাদ করে শর কাগ করে, যুবকের শরীর ত্যাগ করে মাটিতে নেমে এল গণিকা চন্দ্রকলা। আর এর পরমুহূর্তেই চোখ মেলে উঠে বসল সেই যুবক। বিধ্বস্ত, নগ্নিকা চন্দ্রকলার দিকে তাকিয়ে তার মুখমণ্ডলে হাসি ফুটে উঠল। আচার্য বাৎস্যায়ন আর সে দৃশ্য প্রত্যক্ষ করতে পারলেন না। উঠে দাঁড়িয়ে থরথর করে কাপতে কাপতে স্বগতােক্তির স্বরে বললেন, অবশেষে তবে বাৎস্যায়ন। পরাজিত হল সেই জৈন সন্ন্যাসীর কাছে!’

কিছু মুহূর্তের মধ্যেই সে কক্ষে প্রবেশ করল গণিকা চন্দ্রকলা। এতটাই সে বিপর্যস্ত যে যুবকের কক্ষ ত্যাগের সময় বস্ত্র পরিধান। করতেও ভুলে গেছে। তার হুশ নেই যে নগ্ন অবস্থাতেই সে আচার্যের সামনে উপস্থিত হয়েছে! নগ্ন গণিকা চন্দ্রকলা এসে ঝাপিয়ে পড়ল বাৎস্যায়নের পদতলে। নিজের আচরণের প্রতি আর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলেন না বাৎস্যায়ন। নিজের প্রতি প্রচণ্ড ক্ষোভে চন্দ্রকলার প্রতি ক্ষোভে তিনি বলে উঠলেন, “আমার ঘােড়শ কলা মিথ্যা, তাের শিক্ষাও মিথ্যা’,—এ কথা বলে তিনি পদাঘাতে চন্দ্রকলাকে সরিয়ে দিয়ে সেই মুহূর্তেই কক্ষ ত্যাগ করে রওনা হলেন ফেরার জন্য।……

…..আচার্য এরপর তার উদ্দেশে বললেন, “তুমি রাজগণিকা। স্বয়ং মহারাজ তােমার কামকলার সামনে অবনত, তুমি গণিকাশ্রেষ্ঠা, চৌষট্টি কলাতে নিপুণা, তােমার পক্ষে ওই যুবকের যৌনতা জাগানাে সম্ভব। যে-কোনাে পুরুষকেই কামকলায়। পরাভূত করতে পারাে তুমি।…..

কামােদ্দীপক পানীয়ের পাত্র। চন্দ্রকলা যেন ইন্দ্রের রাজসভাকে নামিয়ে এনেছে সেই কক্ষে। যুবকের মদিরার পাত্র যখন শেষ হয়ে এল, তখন নৃত্যরত অবস্থাতেই তার ফুলসাজ খসিয়ে ফেলতে লাগল। প্রথমে উন্মুক্ত হল তার শঙ্খের মতাে শুভ্র স্তনযুগল, তারপর মুদ্রা আকৃতির, কূপসদৃশ গভীর নাভি, ক্ষীণ কটিদেশের পশ্চাতে ঘোটকির মতাে নিতম্ব। অবশেষে যুবক যৎ পানপাত্রে শেষ চুমুক দিয়ে নিঃশেঠি নামিয়ে রাখল, তখন চন্দ্রকলা তা পাপড়ি বসনও সরিয়ে ফেলল। উন্মুক্ত হল তার পাপড়ি সদৃশ্য যোনি। 

সে গিয়ে আলিঙ্গন করল যুবককে। যুবকের বসন তার শরীর থেকে সরিয়ে ফেলল চল তারপর তার সারা সঙ্গে চুম্বন, লেহন করল। কখনও যুবকের ওষ্ঠাধরে, কখ স্কন্ধে, কখনও বাহুমূলে, উরুতে চ করেই চলল চন্দ্রকলা। বাৎস্যায়ন খেয়াল করলেন, আজ আর চোখের পাতা মনে আসছে না যুবকের। তবে নিশ্চয়ই প্রয়াত কামােত্তেজক আরক কাজ করতে এক করেছে তার শরীরে মনে মনে ভাবলেন বাৎস্যায়ন।

এ আর এক প্রহর মাত্র বাকি! এবার প্রচণ্ড উত্তেজনা বােধ করতে শুরু করলেন কামশাস্ত্র প্রণেতা বাৎস্যায়ন। তীব্র উত্তেজনা শুরু হল চন্দ্রকলার মনেও। সময় যে বয়ে যাচ্ছে। যুবকের পুরুষদণ্ডকে নিজ যােনিতে প্রবেশ করিয়ে লিঙ্গোত্থান করার কাজে রত হল সে। চন্দ্রকলা প্রথমে তার যােনি ও যুবকের লিঙ্গের সংযােগ ঘটিয়ে নিজের উরু দিয়ে যুবকের উরুকে বেষ্টন করে ‘বেষ্টিতক সংগমের চেষ্টাতে রত হল। তারপর যুবককে শুইয়ে ফেলে তার পাশে শুয়ে পার্শ্বসম্পুট’ মিলনের চেষ্টা করল। তাতে ব্যর্থ হয়ে সে বাড়বক অর্থাৎ ঘােটকী সংগমের প্রচেষ্টা নিল। এ প্রচেষ্টায় যােনিমুখ দিয়ে লিঙ্গকে কামড়ে ধরার চেষ্টা করা হয়। যুবকের চক্ষুদ্বয় আজ উন্মীলিত আরক পানীয়ের গুণেই হােক বা অন্য কোনো কারণেই হােক, তার শরীরের স্পর্শে আজ তেমন শীতলতা অনুভব করছে না চন্দ্রকলা। সে, যে আসনে যুবকের শরীর সঞ্চালনের চেষ্টা করছে তাতেও কোনাে বাধা দিচ্ছে না। যুবক। শুধু তার মধ্যে যৌনতা সঞ্চারিত হচ্ছে না! তবে যুবকের ঠোটের কোণে জেগে আছে আবছা হাসির রেশ। সে যেন উপভােগ করছে রাজগণিকা চন্দ্রকলার ব্যর্থ প্রচেষ্টাগুলিকে। প্রতিটি ধরনের সংগম প্রচেষ্টাতেই বেশ খানিকক্ষণ করে সময় অতিবাহিত হচ্ছে। তৃতীয় প্রহর এগিয়ে চলেছে। বাড়বক’ অর্থাৎ “ঘােটকী সংগমের প্রচেষ্টার পর চন্দ্রকলা

নিজের হাঁটু দুটো মুড়ে তা যুবকেরনাভির নীচে স্থাপন করে কার্কটক’ সংগম অর্থাৎ কাকড়ার মতাে সংগম চেষ্টা শুরু করল। তারপর চেষ্টা করল যুবককে উপবেশন করিয়ে নিজের পা দুটোকে যুবকের স্কন্ধে স্থাপন করে ‘ন্তিতক’ মিলনের। বাৎস্যায়ন নির্বাক ভাবে বসে দেখে যেতে লাগলেন রাজগণিকা চন্দ্রকলার প্রচেষ্টা। না, ‘কোনাে ত্রুটি নেই গণিকা চন্দ্রকলার চৌষট্টি কলার শিক্ষাতে। রাত এগিয়ে চলল চতুর্থ প্রহরের দিকে। আর তার সঙ্গে সঙ্গে গণিকা চন্দ্রকলাও চালিয়ে যেতে লাগল কামসূত্রম গ্রন্থে বর্ণিত নানা সংগম প্রচেষ্টা—যুবকের বুকে স্তন স্থাপন করে, স্তন দিয়ে তাকে পীড়ন করে ‘উৎপীড়িতক’ সংগম, উত্তানা অবস্থঙ্গ অর্থাৎ চিত হয়ে শুয়ে উরু ওপরে তুলে ‘ভূগ্নক’ সংগম, যুবককে অর্ধশায়িত করে ‘বেণুদারিতক সংগম, যুবকের একটি পা নিজের মাথার ওপর তুলে ‘শূলাচ্চিতক সংগম। শেষ হয়ে আসতে লাগল তৃতীয় প্রহর। আর তা বুঝতে পেরেই শেষ পর্যন্ত যেন উন্মাদিনী হয়ে উঠল গণিকা চন্দ্রকলা। সে দংশন করে, নখরাঘাত করে, পায়ের ঘুঙুরের আঘাত করে যুবকের মধ্যে বন্যকাম জাগাবার চেষ্টা করতে লাগল।না, তা সাধারণ শৃঙ্গার দংশন বা নখরাঘাত নয়, প্রচণ্ড আঘাত। চন্দ্রকলার নিরন্তর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়াতে সে যেন হিংস্র হয়ে উঠেছে। যেন সে যুবকের শরীর চিরে বার করে আনতে চাইছে তার ভিতর লুকিয়ে থাকা যৌনতাকে। চন্দ্রকলার দংশনে, নখরাঘাতে যুবকের শরীরের নানা অংশ থেকে রক্ত ঝরতে শুরু করল। বাৎস্যায়নের মনে হল এই যুবকের জায়গাতে যদি অন্য কোনাে পুরুষ হত তাহলে সে নিশ্চয়ই এই মুহূর্তেই বধ করত উন্মাদিনী গণিকা চন্দ্রকলাকে। ঠিক যেমন কুন্তলদেশের রাজা শতকর্ণের পুত্র সাতবাহন সংগম প্রচেষ্টার সময় তার রানি মলয়দেবীর মাথায় ‘কর্তরী’অর্থাৎবাঁকানাে আঙুলের আঘাত করে। তাকে হত্যা করেছিলেন। কিন্তু আঘাত সহ্য করতে করতেও এ যুবকের মুখমণ্ডলে ফুটে আছে অমলিন হাসি। এত সহ্যক্ষমতা যুবক পেল কীভাবে? বাৎস্যায়ন স্তম্ভিতভাবে দেখতে লাগলেন যুবকের প্রতি উন্মাদিনী চন্দ্রকলার উন্মত্ত আচরণ। আর এর কিছু সময়ের মধ্যেই নদীতীর থেকে ভেসে আসা শৃগালের ধ্বনি জানিয়ে দিল—সব শেষ। আর তার সঙ্গে সঙ্গেই যুবকের শরীর থেকে। ছিটকে উঠে শয্যা থেকে মেঝেতে আছড়ে পড়ল গণিকা চন্দ্রকলার দেহ। বাৎস্যায়নের কক্ষের প্রদীপশিখাটি দপ করে জ্বলে উঠে নিভে গেল। দেওয়ালগাত্রের ছিদ্র থেকে চোখ । সরিয়ে নিলেন বাৎস্যায়ন।……

Please follow and like us:

Leave a Reply