……বিয়ের পরের সেই আশ্চর্য রাতগুলােতে যখন জীবনে প্রথম একটা সম্পূর্ণ নগ্ন, উন্মুক্ত ও প্রাকৃতিকনারী শরীরকে চোখ দিয়ে আস্বাদ করছিল হিল্লোল, পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্লভ সৌন্দর্য, নগ্নিকাকে দেখা শেষ করতে পারছিল না হিল্লোল,……এই গল্প তার স্বাভাবিক নিম্নস্বরে বলতে বলতে, যা ওই বিবাহিত নিশীথে কুহরের মতােই শােনাচ্ছিল তিতি তার পূর্ণ নগ্নতা বইয়ে দিচ্ছিল নগ্ন নগ্ন আপাদমস্তক নগ্ন হিল্লোলের শরীরের আনাচ কানাচ খুঁজে, যেন পাহাড়ি ঝর্না কোনও একটা গর্তে আটকা পড়ে জল উপচে দিচ্ছে আর জল সামান্য কল্লোল নিতে উপচে যাচ্ছে, উপচে যাচ্ছে আর হিল্লোল তার দ্বিতীয় বিখ্যাততম কথাটি বলেছিল, শুধুদু’জনের মধ্যে বিখ্যাততম নগ্ন শুধু রাতে কেন? কোনও গােপনতা আছে? নগ্ন কে দিনময় বয়ে যায় না? গােপনীয়তাহীনামাটির ঢাল বুঝে।
কত অপরাহ্নে হিল্লোল তার কাজের জায়গা থেকে কোনও একটা উপায়ে দ্রুততর ফিরে এসেছে তার নিবাসে আর তিতি তখন দিবানিদ্রায়, হিল্লোল জামা-কাপড় কিছু বদলায়নি, একটা বেতের মোড়া টেনে সে অপেক্ষায় বসে থেকেছে। সে জানত তিতির ঘুম ভেঙে গেছে বা কোনও সময়ই সে ঘুমােয়নি, সে অপেক্ষাতেই থেকেছে হিল্লোলের, আর, কোনও এক সময় নদীতে স্নান করতে অভ্যস্ত কোনও সামাজিক মানুষের মতাে উঠে দাঁড়াত তিতি সেই সরু ডিভানে আর প্রথমেই সে দেয়ালের দিকে মুখ করে নিজেকে বিবসন করত একটু স্থলভাবে কাপড়টা তুলে ফেলে, তারপর অনেক কিছু খুলে-খুলে তার সম্পূর্ণ নগ্নতাকে সে প্রায় দেয়ালেই খােদিত করে তুলত। তিনি দিঘলই ছিল কিন্তু তত কিছু লম্বা ছিল না। আর, তার নগ্ন পিঠের দিকে তাকিয়ে বােঝা যেত তার ঘাড়টা একটু চওড়া, যেন সেই কাঁধের প্রসারতায় কোনও আলিঙ্গন তার অতিরিক্ততা সহ সব সময় অপেক্ষায় থাকে। তিতির এই নগ্নতা কোনও অঙ্গবাধ্য ছিল না। হয়তাে, আর কখনও বা ইতিপূর্বে এমন পূর্ণ নারীর নগ্নতা হিল্লোল দেখেইনি, সে তিতির নগ্নতার সমগ্রতায় একেবারে স্বাসরুদ্ধ হয়ে ডুবে যেত। শুধু দেখা ও দেখানাে। এতে এমন একটা পরিপূরকতা ঘটত যেন শেষ হতে চাইতনা। অপরাহু তাে এক সময় শেষ হতাে। বাইরের আবছায়া এই ঘরটিতে মায়াময় হয়ে উঠত আর তিতি যেন সাঁতারের ভাসমানতায় সেই আবছায়াতে ঘুরে বেড়াত। হিল্লোলের মনে হতাে, নগ্নতা তরল থেকে তরলতর ও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে নগ্নতার পরিধিগুলি অস্পষ্ট ও ঘন হয়ে উঠত। আহ, সেই নগ্নতাময় দিন ও রাতগুলি।…..