উপন্যাস সমগ্র – কমলকুমার মজুমদার

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

শ্যাম-নৌকা

…..কাঁচের চুড়ি-ভাঙা শিকল করিবার মানসে সংগৃহীত, বাক্সর মধ্যে তাহাকে সুস্পষ্ট দেখা যায়। নিজের ভার কত সহজেই, অবলীলাক্রমেই, সে গ্রহণ করিয়াছে; ফলে সকল সময়ই সে, রসকে, তপ্ত কাঞ্চন বর্ণ, বস্তৃত সে দৃঢ় যদিও সে বালিকাপ্রতিম, চোখের নিমেষে ভানুমতী, এখনও কপােল অঙ্গুলি স্পর্শ করত অবাক হয়—অনায়াসে বলিতে পারে স্মিত হাস্য করত, ঋতুদান কর’—তথাপি সে দৃঢ়, তাহার আপৎকাল নাই—এই দৃঢ়তার অভিজ্ঞতার জন্য কালাচাঁদ নিশ্চিত অন্যমনা অর্থাৎ দৃষ্টিতে আত্মস্থভাব, তাহার মনে পড়ে হয়ত রসিক, যে এখন এতল-বেতল খেলে, রসকে যাহার মাইএর, স্তনের বোঁটা আছে—এক মতে যে, যাহারই মাইএর বােটা আছে সে-ই রমণী—তবু সে বড় মানী রাশভারী।…..

সুহাসিনীর পমেটম

…..তদীয় সুন্দর মুখমণ্ডল বিকৃত, অদুরে গৌর বর্ণা স্ত্রীলােকের ধড়, একদিকে একটি চমৎকার উরু সমেত পা, লাইনের পূৰ্ব্বে ঢালের দিকে নিশ্চিত আর একটি, কেননা পাটি জাগিয়া আছে উহার আলতায় রঙ চিত্তবিভ্রমকারী—হাত দুটি দূরে দূরে কচুগাছের পাশেই মাথা, আশ্চর্য্য যে চক্ষুৰ্ধয় অর্ধ উন্মীলিত; নাকে হীরা নাচ্ছাবি-মহিলা যে অসামান্য সুন্দরী ইহা ধ্রুব; এই পৈশাচিক সংস্থানের প্রায় ঠিক পিছনে, একটি গরুর নাল ঠোকা হয় ফলে গরুটি নিজ বাঁধন হইতে মুক্তি লাভের আশে পরিত্রাহি দেহ সঞ্চালন করে তাহার সমস্ত দাঁতগুলি বিকট ভয়ঙ্কর হইয়া দেখা দেয়, যে লােকটি তাহার শিং ধরিয়া আছে সে ঘর্মাক্ত, এখন পশুটির ঐ ভয়প্রদ মুখ ব্যাদন উঠিবার চেষ্টা সম্মুখের দৃশ্যকে অধিক মাত্রায় নৃশংস করিয়া বীভৎস করিয়া উর্দ্ধে তুলে, খণ্ডিত ধড় যাহা এখনও লােভনীয়—অটুট স্তনদ্বয় ঈষৎ বিধ্বস্ত যদিও যেহেতু শায়িত, দেহ নিম্ন ভাগে; সম্ভবত রাস্তা হইতেই কুড়ান একটি ছিন্ন অকথিত মলিন বস্ত্র খণ্ড, হয়ত উহার লজ্জা নিবারণার্থে মেলান, পাছে ইহা উড়িয়া যায়।…..

Please follow and like us:

Leave a Reply