নদীর পারে খেলা – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

……..হাতে একগাছিও চুড়ি নেই বল্লরীর, বালা নেই, ফর্সা সুডৌল হাত দুখানি সম্পূর্ণ  নিরাভরণ, এক হাতে শুধু ছােট একটা ঘড়ি, কানেও দুল পরেনি, নরম কানের লতি দুটো ফাকা থেকেও সুন্দর দেখাচ্ছে, গলায় শুধু একটা সরু সােনার হার, তার মাঝখানে বড় সাইজের একটা পান্না বসানাে লকেট। টেবিলের ওপর একটি ঝুঁকে আছে বল্লরী, পাতলা ব্লাউজের ফাঁক দিয়ে স্পষ্ট | দেখা যাচ্ছে দুটি নিটোল স্তন, বাদলের মনে হলাে এক জোড়া সাদা ফুটফুটে পায়রা যেন জাল থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে। দুই স্তনের ঠিক মাঝখানে রয়েছে লকেটটা। – সেদিকে দু-এক পলক তাকিয়ে কি যেন একটা ব্যথায় বাদলের শরীর শিরশির করতে লাগলাে।……

……সেই ছবিটা বাদলের চোখে আবার ফিরে এলাে। গৌতম রায় বল্লরীর হাত ধরে ফিস ফিস করে বলছে, তােমার সঙ্গে আমার বিশেষ একটা কথা আছে, পাশের ঘরে এসাে। পাশের ঘরে নিয়ে গেল বল্লরীকে। সেই ঘরটা নির্জন অন্ধকার। বল্লরীর মুখের কাছে গরম নিশ্বাস ফেলতে ফেলতে গৌতম রায় বললাে, আ, এত সুন্দর তােমার গানের গলা, এত সুন্দর চেহারা, আমি মেহের চাদজীকে বলেছি, আগামী ছবিতে তােমাকে হিরােইন….. হিরােইনের চারখানা গান….কাননদেবীর পর তুমিই বাংলা দেশের বেস্ট হিরােইন হতে পারাে—শুধু আমাকে একটু ভালােবাসবে, একটু ভালােবাসা… ব্যাকুল হাতে বল্লরীর মুখ ঘুরিয়ে গৌতম রায় তার লালাসিক্ত ঠোটে চুমু খেল, বল্লরীর বুকে ওর হাত, ব্যস্ত ভাবে ব্লাউজের বােতাম খুলতে গিয়ে | ছিড়ে ফেলেছে বােতাম-বল্লরীর স্তন-সাদা পায়রার বুকের মতন নরম-সেখানে গৌতম রায়ের নােংরা হাত-বল্লরী কি করছে। বল্লরী কি বাধা দিচ্ছে? বল্লরী।…….

………বল্লরীর পিঠের নিচে আর দু পায়ে দু’হাত রেখে বাদল ওকে উঁচু করে তুললাে। বেশ কষ্ট হচ্ছে বাদলের, কিন্তু বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে বলে মনে হলাে। মল্লিকা রাস্তা দেখাতে লাগলাে অন্ধকারে, বাদল পেছনে পেছনে। পড়ে যাবার ভয়ে বল্লরী তার গলা জড়িয়ে ধরেছে। | কয়েক পা যাবার পরই একটা জায়গায় বাদলের চোখ আটকে গেল। বল্লরীর উরুর কাছে তার স্কার্টটা উঠে এসেছে। সাদা স্কিলেরই মতন মসৃণ ধপধপেঊরু বল্লরীর, সে তখন যন্ত্রণায় কাতর—পােশাক ঠিক করার কথা তার মনে নেই। বাদলের হৃৎস্পন্দন হঠাৎ দ্রুত হয়ে গেল, সে তাড়াতাড়ি চোখ ফেরাবার চেষ্টা করলাে সেখান থেকে, কিন্তু ওখানে যেন একটা চুম্বক বসানাে আছে-বাদলের চোখ বারবার টেনে নিতে লাগলাে। বাদল এ পর্যন্ত কোনাে তন্বী মেয়ের অতখানি অনাবৃত ঊরু দেখেনি। তার সহবৎ জ্ঞান আছে, কখনাে বিপর্যস্ত অবস্থায় কোনাে মহিলার দিকে চোখ পড়লেই সে সঙ্গে সঙ্গে চোখ ফিরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু আজ বাদলের কি রকম হয়ে গেল, সে নিজেকে কিছুতেই সামলাতে পারছেনা—তার চোখ বল্লরীর উরুতে আটকে আছে, আরও একটুখানি দেখার জন্য সে ছটফট করছে। বাদল একবার ভাবলাে, সে কি বল্লরীর স্কার্টটা টেনে দেবে? কিন্তু কি করে দেবে—তার তাে হাত ছাড়ার উপায় নেই। মল্লিকাকে ডেকে বলবে? কিন্তু মল্লিকাকে একথা বলতে তার ভীষণ লজ্জা হলাে।

এরপরই বাদল নিজের বাঁ হাতের দিকে তাকালাে। বল্লরীর পিঠের নিচ দিয়ে তার বাঁ হাতটা প্রায় বল্লরীর বুকের কাছে পৌঁছবে। আর এক চুল দূরেই বল্লরীর বুকের | ঢেউ একটা আঙুল সরালেই সে স্পর্শ করতে পারে। বল্লরীর সিল্কের জামা ভেদ করে তার উঁচু বুকের আভাস স্পষ্ট, বাদলের আঙুলের ডগা যেন নিশপিশ করতে লাগলাে, আঙুলগুলাের যেন আলাদা আত্মা আছে। তারা নিজেরাই চাইছে এগিয়ে। যেতে। বাদল মনে মনে বলছে, না, না। তবু বাঁ হাতটা এগিয়ে গিয়ে বল্লরীর সেই ঢেউ ছুঁলাে সঙ্গে সঙ্গে বাদল বলে উঠলাে, বল্লরী, তুমি এবার হাঁটতে পারবে না? আমার হাত ব্যথা হয়ে গেল যে!……….

…….. বল্লরীর কাধে বাদলের একটা হাত, বল্লরী আদর খাবার ভঙ্গিতে বাদলের বুকের সঙ্গে নিজের পিঠ মিশিয়ে দিয়ে আছে। বল্লরীর উরুর দিকে বাদলের চোখ গেল— এখন আবার স্কার্টে ঢাকা। এতক্ষণ বাদল স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলছিল, হঠাৎ তার গত রাত্রে দেখা বল্লরীর সেই মসৃণ উরুর কথা মনে পড়লাে, এবং যুক্তিহীন ভাবেই তার আবার ভংকর ইচ্ছে হলাে—আরেকবার বল্লরীর সেই ঊরু দেখার। সেই মুহূর্তে বাদল আর সব কিছু ভুলে গেল–তার কানের লতি আর নাকের ডগা জ্বালা করে উঠলাে—এক্ষুনি বল্লরী সেই ঊরু আর একবার দেখতে না পেলে সে বাঁচবেই না। মনে হলাে। বাদল বল্লরীর ঊরুর ওপর একটা হাত রাখলােবল্লরীর সেদিকে ভ্রক্ষেপই করলাে না, পা দুটো দোলাতে দোলাতে বললাে, অনেকদিন পর এই ঘরটায় এলুম, বেশ ভালাে লাগছে।…….বাদল আস্তে আস্তে হাত দিয়ে বল্লরীর ফ্রকটা ওপরের দিকে তুলছে। এ রকম কাজ সে জীবনে কখনাে করেনি, কোনােদিন সে করতে পারে তাও জানতাে না, কিন্তু আজ তার সমস্ত মনোেযােগ শুধু ঐ দিকে। ন্যায়-অন্যায়ের কোনাে প্রশ্নই তার মধ্যে জাগলাে না। অন্য হাতে বল্লরীর মুখটা ফিরিয়ে বাদল বললাে, বল্লরী, তােমাকে ভারী সুন্দর দেখাচ্ছে-চোখে কাজল দিয়েছাে বুঝি? কঁকড়া চুল সমেত মাথাটা দুলিয়ে লজ্জার ভঙ্গি করে

বল্লরী বললাে, যাঃ, রােজই তাে দিই, কাজল না, সুর্মা—

—কিন্তু আজ এত মিষ্টি দেখাচ্ছে!

উঃ উ—যাঃ! বাদল বল্লরীর ঠোটে ঠোটটা রেখেই তুলে নিল। বল্লরী মিটমিট করে হেসে তাকিয়ে রইলাে বাদলের দিকে, কোনাে কথা বললাে না। বাদল অন্য হাতে বল্লরীর স্কার্টের | প্রান্ত তুলে হাঁটু ছাড়িয়ে ফেলেছে, বল্লরী সেদিকে একবারও তাকাচ্ছে না। ঝট করে স্কার্টটা অনেকটা তুলে বাদল পাগলের মতন চুমু খেতে লাগলাে বল্লরীর উরুতে, তারপর মুখ তুলে নিয়ে বল্লরীর ঠোটে ঠোট চেপে ধরলাে প্রবলভাবে—আগুনের হল্কা বেরুচ্ছে তার নিঃশ্বাসে-বল্লরীও দু’হাতে বাদলের কঁাধ চেপে ধরেছে, আর অনবরত সে হাসছে। বল্লরীর বুকে হাত দিতে বাদলের আর এক মুহূর্তও দ্বিধা হলাে না। বল্লরীর অনাবৃত ঊরুর দিকে তাকিয়ে বাদল আচ্ছন্নের মতন বলতে লাগলাে, বল্লরী, তােমাকে আমার খুব আদর করতে ইচ্ছে করছে, খুব…তুমি এত সুন্দর…। সেই রকম হাসতে হাসতেই বল্লরী বাদলের বুকে মাথা গুঁজলে। পিঠোর দিকের স্কার্টের বােতাম, সবে মাত্র তিনটে বােতাম খােলা হয়েছে—এই সময় শব্দ পেয়ে বাদল দরজার দিকে তাকালাে। সেখানে মল্লিকা দাঁড়িয়ে আছে। হয়তাে অনেকক্ষণ ধরেই দাঁড়িয়ে আছে।……..

……লম্বা ছিপছিপে চেহারা ভাস্করের, বেশিক্ষণ সিধে হয়ে বসতে পারে না, যে কোনাে জায়গাতেই বসার পর একটু বাদেই গা এলিয়ে দেওয়া স্বভাব। বাদলের সামনেই সে বউয়ের কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়লাে, বাঁ হাতখানা রাখলাে মণিকার উরুতে, সামান্য চাপ দিতে লাগলাে। মণিকার মাংসল উরুতে তার হাত বসে যাচ্ছে! বাদল সেদিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিল।…….

…….দুজনের ঠোটে অনেক তৃষ্ণা,শরীরে উত্তাপ পাবার আকুলতা। দুজনের শরীর খেলায় । . মেতে উঠলাে, বাদল তার মনের চঞ্চলতা ঢেকে দিতে চাইলাে দেহের চঞ্চলতায়। মল্লিকার বুকে মুখ ডুবিয়ে বাদল উন্মত্তের মতাে ঘষতে লাগলাে ঠোট দুটো। মল্লিকা অস্ফুটভাবে বললাে, আঃ, আঃ………

 

Please follow and like us:

Leave a Reply