দা রিডার – বার্নহার্ড শেলিঙ্ক

›› অনুবাদ  

জার্মান থেকে ইংরেজি অনুবাদঃ ক্যারল ব্রাউন জেইনওয়ে – রূপান্তরঃ শেখ আবদুল হাকিম

…….‘এই, খােকা,’ বললেন তিনি, ঘাবড়ে গেছেন, এই, খােকা-‘ হাত দিয়ে জড়িয়ে নিজের কাছে টেনে নিলেন আমাকে। তার মতাে অত লম্বা নই আমি, বুকে তার স্তন অনুভব করছি। আমার নিজের নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ ঠিকই পাচ্ছি, তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরায় হঠাৎ পেলাম মিষ্টি একটা সুগন্ধ। ঠিক তখন আমি বুঝতে পারলাম না কোনদিকে বা কোথায় তাকাব। তবে আমার কান্না থেমে গেল ।…….

………দাঁড়াও, ফেরার জন্যে চেয়ার ছাড়ছি আমি, ফ্রাউ স্মিটস বললেন। আমাকেও বেরােতে হবে, চলাে একসঙ্গে কিছুটা হাঁটি।

হলে দাঁড়িয়ে আছি আমি, কিচেনে কাপড় পাল্টাচ্ছেন তিনি। দরজা সামান্য ফাঁক করা। শেমিজ খুলে ফেললেন, উজ্জ্বল সবুজ পেটিকোট পরে দাঁড়িয়ে আছেন।

চেয়ারের পিঠে একজোড়া মােজা ঝুলছে, এক এক করে একহাতেই গােটালেন ওগুলাে, তারপর এক পায়ে দাঁড়ালেন, অপর পায়ের গােড়ালি প্রথম পায়ের হাঁটুর ওপর রাখলেন, ঝুঁকলেন সামনের দিকে, গুটানাে মােজার মুখের ভেতর আঙুলসহ পায়ের পাতা ঢােকালেন, পা চেয়ারের ওপর নামিয়ে মােজার বাকি অংশ দিয়ে গােড়ালি থেকে শুরু করে হাঁটু হয়ে উরু পর্যন্ত মুড়লেন, সবশেষে একদিকে কাত হয়ে গার্টার বেল্টের সঙ্গে আটকালেন মােজাটা।

সিধে হবার পর চেয়ার থেকে পা নামালেন, তারপর হাত বাড়ালেন দ্বিতীয় মােজার দিকে। আমি তার ওপর থেকে চোখ ফেরাতে পারছি না। আমাকে জাদু করল তার ঘাড় আর কাধ, তার স্তন-পেটিকোট যেগুলােকে আড়াল দিলেও, লুকাতে পারেনি-তার নিতম্ব, হাঁটুতে গােড়ালি রাখার সময় আর চেয়ারে পা তােলার সময় পেটিকোটের কাপড়কে যেগুলাে টান টান করে তুলেছিল, তার পা-ফরসা আর নিরাবরণ, পরে ঝলমলে সিল্ক মােজায় ঢাকা।

আমি যে তাকিয়ে আছি সেটা তিনি অনুভব করতে পারলেন। ……….

………তবে তখন আড়ষ্ট ছিলেন না-ছিলেন মন্থরগতি, পবিত্র, আকর্ষণীয়, কেতাদুরস্ত এবং প্রবলভাবে উত্তেজক-উত্তেজক, অথচ যার সঙ্গে স্তন, নিতম্ব বা পায়ের কোনাে সম্পর্ক ছিল না; তা ছিল এড়াতে না পারার মতাে এবং জগৎ-সংসার ভুলে শরীরের ভঁজে আশ্রয় গ্রহণের একটা নিবিড় আমন্ত্রণ।…….

……..তিনি কিচেনে ফিরে আসতে মুখ তুলে তাকাইনি, যতক্ষণ না বাথটাবের পাশে এসে দাঁড়ালেন। তার বাড়ানাে হাতে বিরাট তােয়ালে ঝুলছে। এসাে!’

দাঁড়ানাের সময় তার দিকে পেছন ফিরলাম, আড়ষ্ট ভঙ্গিতে উঠে এলাম বাথটাব থেকে। পেছন থেকে তিনি আমাকে তােয়ালে দিয়ে মুড়লেন, তারপর মাথা থেকে গােড়ালি পর্যন্ত ঘষে শরীরটাকে একেবারে শুকিয়ে ফেললেন।
ছেড়ে দিতে মেঝেতে পড়ল তােয়ালে। আমার সাহস হলাে না একচুল নড়ি তিনি এত কাছে সরে এসেছেন, আমি তার স্তনের স্পর্শ অনুভব করছি পিঠে। তার শরীরেও কিছু নেই। হাত দিয়ে আমাকে জড়ালেন তিনি, একটা হাত আমার বুকে, আরেকটা আমার দৃঢ় উত্থা…..।

‘এজন্যেই এখানে তুমি এসেছ!’……

….. ….আমরা শাওয়ার নিয়ে প্রেম করি, আর ঠিক দেড়টা বাজার কয়েক মিনিট আগে তাড়াহুড়াে করে কাপড় পরে ছুটি দরজার দিকে।…..আমি ভেবেছি শাওয়ারটা বাদ দিলে ভালাে হতাে। পরিষ্কার থাকার ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত নিখুঁত এবং সতর্ক। রােজ সকালে একবার শাওয়ার নেন। আমি তার পারফিউম পছন্দ করি, পছন্দ করি তাজা ঘাম আর কাজ থেকে ফেরার সময় সঙ্গে করে নিয়ে আসা ট্রামের গন্ধ। তবে আমি তার ভেজা, সাবানমাখা শরীরও পছন্দ করি, পছন্দ করি তিনি যখন আমাকে সাবান মাখিয়ে দেন, আমাকে যখন তার শরীরে সাবান মাখানাের অনুমতি দেন। খেলাচ্ছলে বা আনাড়িভঙ্গিতে নয়, আমাকে তিনি শেখান কীভাবে সাহস ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে এসব করতে হয়, খুঁটিনাটি সমস্ত দিক খেয়ালে রেখে ।

আমরা যখন প্রেম করি, তখনও, এটাকে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ হিসেবে বিবেচনা করেন তিনি, আমাকে পুরােপুরি নিজের দখলে নিয়ে নেন, অধিগ্রহণ করেন। তার মুখ আমার মুখটাকে নিজের আওতায় নিয়ে কর্তৃত্ব ফলায় এবং যথাবিহিত দায়িত্ব। পালন করে। | ‘এটা একটা শারীরিক বিজ্ঞান এবং শিল্প। গরজ থাকলে রপ্ত করতে হয় সন্তুষ্টি। নিখুঁত করার জন্যে আর আনন্দে পূর্ণতা আনার জন্যে।

অবশ্য এই অবস্থা অনাদিকাল চলল না, কারণ একসময় আমিও শিখে ফেললাম। কীভাবে তার দখল নিতে হয়।

তবে সেটা আরও পরে, এবং…

কাজটা পুরােপুরি রপ্ত করা কখনােই আমার দ্বারা সম্ভব হয়নি। প্রথম কথা দীর্ঘ। একটা সময় এর জন্যে আমি লালায়িত বােধ করিনি। পাচ্ছি ঠিক আছে, না পেলে নাই পেলাম, এরকম একটা ভাব।………

……‘ঠিক আছে। যা বলি করাে। আমাকে জড়িয়ে ধরাে…এই আস্তে, বােকা বাদর। হ্যা, এবার চোখ বুজে পশুপ্রাণীদের কথা চিন্তা করাে, করেন। দেখাে ওগুলােকে, তারপর বলাে ওগুলাের কোনটার সঙ্গে আমার মিল আছে বলে মনে হয় তােমার।

‘ও, এই কথা। চোখ বুজলাম, ওগুলােকে কল্পনায় আনার চেষ্টা করছি। পরস্পরকে জড়িয়ে পাশাপাশি শুয়ে আছি দুজন, আমার হাত ওর গলায়, আমার গলা ওর স্তনে, আমার ডান বাহু ওর নীচে, আমার বাম হাত ওর নিতম্বে।  হাত বুলাবার সময় মসৃণ আর মােলায়েম লাগল ওর ত্বক। ত্বকের নীচে শরীরটা শক্তিশালী আর নির্ভরযােগ্য। ওর হাঁটুর উল্টোদিকে, আরও খানিক নীচে, ফোলা মাংসের ওপর হাত দিতেই ওখানকার পেশি কেঁপে উঠল । আমার মনে পড়ে গেল, মাছি তাড়াবার সময় ঘােড়া তার পেটের পেশি ওভাবে কাপায়। তােমাকে আমার ঘােড়া মনে হয়।
‘ঘােড়া? নিজেকে ছাড়িয়ে নিল হাননা, উঠে বসল বিছানায়, হতচকিত হয়ে তাকিয়ে থাকল আমার দিকে।………

Please follow and like us:

Leave a Reply