লাল রঙের পৃথিবী – রূপক সাহা

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

……ফুটোতে চোখ রেখে ও দেখল, মঞ্জু নাটক করে যাচ্ছে। শাড়িটা বেশ যত্ন করে | খুলে রাখা এক পাশে, যাতে ভাজ নষ্ট না হয়। লােকটার পরনে শুধু আন্ডারওয়ার।
মঞ্জর শায়ার দড়িটা খােলার চেষ্টায় টানাটানি করছে। আর মঞ্জু ভয় পাওয়ায় ভঙ্গিতে বাধা দিচ্ছে, “এই না, না। পুজো সেরে দিদি ঘরে ঢুকলে আমার সর্বনাশ হয়ে যাবে।”
কোনও পুরুষ মানুষ এই সময়টা এ সব কথা শােনে? লােকটা এক হাতে সাপট ধরেছে মঞ্জুকে। বুকে, গলায়, মুখে মুখ ঘষে যাচ্ছে। অন্য হাতে শায়ার উপর দিয়েই মধুর তলপেটে কিছু খুঁজছে। আয় এক মুহুর্ত দেরি না করে, দরজা খুলে ঢুকল ডালিয়া। লােকটার দিকে তাকিয়ে রুঢ়ভাবে বলল, “ছি ছি, এ সব কী করছেন ?”
লােকটার মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। পরক্ষণেই হাত বাড়িয়ে, প্যান্টটা টেনে নিয়েছে। মঙুও ছিটকে সরে গেল। দ্রুত শাড়িটা বুকের উপর মেলে ধরে বলল, “দেখে না দিদি, বারণ করলাম ..”…..

…..ছাদের দরজা খােলা। উঠেই যা চোখে পড়ল, মাথা ঘুরে গেল ওর। ঘরে দরজা খােলা। মেঝেতে গােপা পড়ে আছে। ওর সারা শরীরে এক চিলতে কাপড় পর্ব নেই। মাথাটা এক পাশে কাত করা। মুখে একটা কুশাল গোঁজা! চোখ দুটো বন্ধ। স্তনের আশপাশে নখের দাগ। যৌনাঙ্গের আশপাশে রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। দেখেই মনে হল, কয়েকটা শকুন ওকে খুঁসে খেয়েছে।…….

………ডালিয়া হাত ধরে টানতে শুরু করল টুনিকে। কিন্তু ওর শরীরে শয়তান ভর করেছে। হাত ছাড়িয়েই ও কে দৌড়ে গেল ডোমলার দিকে। আচল রাস্তায় লুটোচ্ছে। ব্লাউজের হুক খুলে গেছে কয়েকটা। স্তন দুটো প্রায় বেরিয়ে এসেছে। দশ-পনেরাে গজ দূরে বিস্মিত কিছু মুখ এখন ওকেই দেখছে। ঠিক ওই মুহূর্তে হঠাৎ রাস্তার আলাে জ্বলে উঠল।
বিস্ফারিত চোখে ডালিয়া একটা অদ্ভুত দৃশ্য দেখল। অর্ধচেতন ভোমলাকে টেনে হিচড়ে টুনি নিয়ে গেল মাঝ রাস্তায়। তার পর… তার পর কয়েক সেকেন্ডের জন্য, পায়ের গােছ থেকে শাড়িটা সামান্য তুলে আধ বসা হয়ে রইল ওর মুখের কাছে। টুনির ক্লেদাক্ত মুখটা আস্তে আস্তে প্রশান্তিতে ভরে যাচ্ছে। এখন আর কোনও চিহ্নই নেই, ভয়ঙ্কর সেই ক্রোধের ।…..

…….“এই হিমন, একটু আসবে ?” পিঠের দিকে মেহুলির একটা হাত। উঃ আঃ করছে। হিমনকাছে আসতেই ও বলেছিল, “ফ্রকের হুকটা আটকে গেছে। একটু খুলে দাও ।  হিমরে চোখে বিস্ময়। অস্বস্তির সঙ্গে ও বলেছিঠি পারব না। দাঁড়াও, শিউলিকে ডাকি।  “তুমি অদ্ভুত ছেলে তাে। নীচে নেমেছিলাম না বিশ্রীভাবে আবির ঢেলে দিল । পিঠে কুটকুট করছে। দাও না হুকটা খুলে  হিমন কাঁপা কাঁপা হাতে কুক দুটো খুলে দিয়েছিল। মেহলির পিঠে আবির। এভাবে শরীরের ভেতরে আবির দিল কে পাশের বাড়ির ছেলেটা ? নিশ্চয়ই কাঁধের কাছে ফ্রকটা তুলে ঢেলে দিয়েছে।
মেহুলি বলল, “একটু ঝেড়ে দাও না। বুলা এত অসভ্য জাপটে ধরে বুকের দিকেও আবির মাখিয়েছে।”
সাঁতারের কস্টিউমে রােজই মেদুলিকে হিমন দেখে। ওর কাঁধ, অনাবৃত হাত, কোমরের একাংশ, উরু দেখতে ও অভ্যস্ত। কিন্তু সে দিন ওই নির্জন ঘরে, আধা অন্ধকারে মেহুলির পিঠ থেকে আখির মুছে দেওয়ার সময় হিনের গা শিরশির করে উঠেছিল।…..

…..একদম নীচে চোখ গেল ডালিয়ার। এখানে বড় একটা চৌবাচ্চা রয়েছে। ফলে গলা ডুবিয়ে সেখানে বসে আছে বাড়ন্ত শরীরের একটা তের চোদ্দো বছরের মেয়ে। এমনি দেখলে মনে হবে, বিকেলে মেয়েটা গা ধুচ্ছে, ডালিয়ার অভিজ্ঞ চোখ। ও বুঝল, মেয়েটা আসলে কী করছে। আগ্রাওয়ালিরা এ পাড়ায় আসার পর বহু অল্পবয়সী মেয়েকে লাইনে নামিয়েছে। এর মেয়েকে দেওয়ার মতাে শরীর যাদের এখনও তৈরি হয়নি। আসলে মেয়েদের ছােটবেলায় কিনে আনে আগ্রাওয়ালিরা। বসিয়ে বসিয়ে কতদিন খাওয়াবে? চোদ্দেপনেরাে বছর বয়সী যে সব মেয়ের যৌনাঙ্গ ছােট, কৃত্রিমভাবে সেটা ওরা বড় করিয়ে দেয়। প্রক্রিয়াটা অবশ্য খুবই নিষ্ঠুর। সাধারণ লােকের পক্ষে কল্পনাতেও আনা সম্ভব নয়। অল্প দিনের মধ্যেই বাচ্চা মেয়েগুলাের যৌনাঙ্গ বড় হয়ে যায়। তারপর পঁচিশ থেকে পঞ্চাশের ভোগে লাগতে পারে।………

Please follow and like us:

Leave a Reply