নষ্টামি – বীথি চট্টোপাধ্যায়

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

……..এখন যা বাওয়াল তুমি করে বেড়াচ্ছ তাও বেশিদিন চলে না সােনা। আজ আর একটু হলেই তুমি প্রভাসদার মেয়ের হাত ধরে টানছিলে।
—তা ও ওর ওই অতবড় বুক খুলে আমার সামনে ঘুরছিল কেন?……..

……..অপ্সরীর বুকটা কি নিজের নাকি রে? দেবু হাসল, না রে। শ্রীলেখারটা নিয়ে লাগিয়েছে।…..

………শ্রীলেখা তাকে বলেছে। ধ্বজা। শ্রীলেখা তার পশ্চাদ্দেশে লাথি মেরেছে। তার নুঙ্কুর ছােট মাপ নিয়ে শ্রীলেখা তাপসের মায়ের সামনে তাপসকে অপমান করেছে। সারা দুনিয়ার মুখে তাপসের থুথু ফেলতে ইচ্ছে করে। ………

…….অরুণিমা ক্রবর্তী। ফরসা, গােলমুখ, সুন্দরী, মােটাসােটা। কবিতা লিখছে দু বছর, লিখতে জানে না। আধাে আধাে কথা বলে। হাতকাটা ব্লাউজ পরে, পাতলা শাড়ি পরে, ঠোটে হালকা গােলাপি লিপস্টিকের ওপরে লিপগ্লস লাগায়। সাহিত্য বােঝে না। বুড়াে এবং আধবুড়াে সম্পাদকদের ঘাড়ে পড়ে, সবার বাড়িতে যায়, ফুল, মিষ্টি নিয়ে। তিনজনের সঙ্গে শােয়, একজন ওর বাগদত্ত বয়ফ্রেন্ড। চাকরি করে। বাকি দুজনের একজন মাঝবয়েসি সম্পাদক। অন্যটা একটা অর্থোপেডিক ডাক্তার।……..সুপ্রিয়র সঙ্গে অরুণিমা শােয় না। সুপ্রিয়র সঙ্গে অরুণিমা মেশে বড় প্রতিষ্ঠানের খবর জানার জন্য। ……….অরুণিমা, যে মাঝবয়েসি সম্পাদকটার সঙ্গে ও শােয়, সেই স্বরূপস্নিগ্ধ বিশ্বাস ওর লেখা একটু পালিশ করে দেয়, তার ফলে ওর লেখা অনেক পত্রিকায় ছাপা হচ্ছে, তারসঙ্গে ওর ক্লিভেজ খােলা ব্লাউজ। ফলে ও সব জায়গায় কবিতা পড়ছে। শ্রীলেখার থেকে ওর বুক বড় আর রংটাও দু-পোঁচ ফরসা বলে ও সব জায়গায় খাতির পাবে এটা শ্রীলেখা বসে-বসে সহ্য করবে সেটা অসম্ভব।………

……..এই একটা কিছু জোটানােকে খুব ঘেন্না করে শ্রীলেখা। সে সারাজীবন শুধু টিকে থাকার জন্য ছাপােষা জিনিস জুটিয়ে এসেছে। ছাপােষা ইস্কুল, ছাপােষা কলেজ, ছাপােষা চাকরি, ছাপােষা বর। শেষের ছাপােষাটা সে জুটিয়ে ছিল, স্রেফ রােজ রাতের একটা স্থায়ী ধ্বস্তাধ্বস্তির জন্যে। কারণ অরুণিমা, বলাকাদের মতাে শুয়ে বেড়ালে কবি বাজারে তার বদনাম হত। সে চায় গােপনে শুয়ে কাজ আদায় করতে। কিন্তু শরীরের জন্যে শুলে তামাম সংস্কৃতিবাজারে তার গুডগার্ল ইমেজ ধ্বসে যেত, কিন্তু তার শরীরের দাবি প্রবল। তাই সে জীবনে একটা গু-খুরি করল। ওই ধ্বজা তাপস দাসকে বিয়ে করল। সে ভেবেছিল বেশ একটা বরও রাখা থাকল। দোকান বাজার সংসার হল, যারা অবিবাহিত বলে ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে শুতে ভয় পায় তাদের সঙ্গে শােওয়া হল। মাঝে মাঝে হনিমুন হল, বাচ্চা হল, তাদের স্কুল হল, বাড়ি ফিরে একসঙ্গে টিভি দেখা হল। কিন্তু তাপস একটা বাঁজা। আসল কাজ তাে পারেই না, সংসারের একটা কাজ করে না। কুঁড়ে।……

…….তাকে কেউ কোনওদিন আদর করেনি, তার রুক্ষ চুলে কেউ হাত বুলিয়ে দেয়নি, কেউ তাকে গদগদ হয়ে চুমু খায়নি আদর করে, ভালাে বেসে! ঘুঞ্চমুনু করে চৌষট্টি রকমের আদর তাকে দেয়নি কোনও শুয়ােরের বাচ্চা। কেন? না সে অনেক লম্বা, তার চেহারায় হাড় বেশি, তার শরীর ঋজু, সরল, সুস্থ। তার চোখ তীক্ষ্ণ জ্বলজ্বলে, তার চেহারা দেখলে খটাং খটাং করে করতে ইচ্ছে হবে, কিন্তু সেখানে কোনও সােহাগ থাকবে না। যে আদর করা পার্টি হবে সে শ্রীলেখার মতাে মেয়ের দিকে ফিরেও তাকাবে না। বসন্ত বাতাস তাই শ্রীলেখাকে হিংস্র করে। তার গালের হনুর হাড় দুটো চিড়বিড় করে জ্বলে। তার হাত জ্বলে, পা জ্বলে, ঠোট জ্বলে, দাঁতের গােড়া জ্বলে, ছােটছােট দুটি স্তন জ্বলে, যােনি জ্বলে, পায়ু জ্বলে, চোখের পল্লব জ্বলে। সে বাথরুমে যায়, বেসিনের সামনে ঝুঁকে চোখে-মুখে জল দেয়।……….

…….অনিন্দ্যকান্তি রূপবান যুবক, তার সঙ্গে একদিন শ্রীলেখা শুয়েছিল। তারপর সেই রূপবান যুবক উঠে বাথরুমে গিয়েছিল বাথরুম থেকে বেরিয়ে সে শ্রীলেখার দিকে চেয়েছিল। শ্রীলেখার মনে হয়েছিল যেন পৃথিবীর সব মায়া মিশেছে সেই দৃষ্টিতে। তিনচার সেকেন্ড মাত্র শ্রীলেখা হাঁ করে তাকিয়ে থেকেছে, তারপর সেই যুবক কেটে কেটে তাকে বলেছ, কীরে খানকি? এখনও শুয়ে কেন ? যা ফোট। শ্রীলেখার হৃৎপিণ্ড স্তব্ধ হয়ে গেছে। যুবকটি বলেছে বিছানাটা টেনে ঠিক করে দিয়ে যাস তাে। আমার বউ সন্ধেবেলা ফিরবে।

শ্রীলেখা উঠেছে সালােয়ার পরেছে। বাকি পােশাক অনিন্দ্যকান্তি যুবক খােলেনি। সালােয়ার পরে শ্রীলেখা ভাবলেশহীন মুখে বিছানা টানটান করেছে। সে শুনতে পেয়েছে অনিন্দ্যকান্তি আপনমনে খিস্তি করছে। শালা বউ পুষে, সােনাগাছি যাওয়ার পয়সা হাতে থাকে না। দিনদুপুরে বাড়িতে এসব লক্ষচুদি মেয়েছেলে তুলতে হচ্ছে। শালী কুত্তি, ফলস দম নেয়, চুদে আমার পোঁদের হাড়ে ব্যথা হয়ে গেছে।……

………ফেব্রুয়ারির দুপুরবেলা তাপসের নগ্ন শরীর ঘামছে দরদর  করে। ষােলাে বছরের মালতীকে সে সর্বশক্তি দিয়ে পিষছে। তার দাঁতে যত জোর আছে সমস্ত জোর একত্রিত করে কামড়াচ্ছে কালাে বাতাবী লেবুর মতাে বুক। মালতী ডুকরাচ্ছে। তাপস মালতীকে এত ব্যথা দিতে চায় যাতে যৌনতার থেকেও মালতী ব্যথায় বেশি পীড়িত হয়। তাপস তার শক্ত বেঁটে বেঁটে আঙুলের সমস্ত শক্তি দিয়ে ডলছে মালতীর স্তন। সে হাঁটু দিয়ে আঘাত করছে মালতীর পলিমাটির মতাে তলপেটে। তার ক্ষুদ্র লিঙ্গকে সে টানটান শক্ত করে ভেতরে যাচ্ছে। সে ঠুকে ঠুকে ঝাপিয়ে পড়ছে ষােড়শী পলিমাটির ওপর। একঘণ্টা সময় ধরে সে পলিমাটির ওপর রয়েছে, তার নিজেরই মুখে রক্ত উঠে আসছে। তবু যেন কাটছে না তার পৌরুষের গ্লানি। তবু যেন সে হয়ে উঠতে পারছে না প্রকৃত ধর্ষক। তাকে এমন জায়গায় পৌঁছতে হবে যেখানে এই মালতী ব্যথা ছাড়া আর কিছুই অনুভব করবে না। কোনও আনন্দ নয়, মমতা নয়, লােভ নয়, শুধু ব্যথা। তাপসকে হতে হবে ধর্ষক, মালতীকে ধর্ষিতা।

তাপস অবশ্য হাত-পা বেঁধে মালতীকে ধরে এনে ধর্ষণ করেছে। মালতীকে সে অনেক কষ্টে খাটিয়ায় তুলেছে। …….শহরে বড়লােকের বাড়িতে সম্পাদকের দরজায় বিড়ালসুন্দরীদের চোখে কোথাও পাত্তা না পাওয়া তাপস দাস। আজ একটা পশু হয়ে উঠতে পেরেছে। সে কিন্তু আজ খুব আনন্দ পাচ্ছে। তারও খাবার দরকার ছিল, মালতীদেরও খাবার দরকার ছিল। তাপসের সবচেয়ে পছন্দ হয়েছে মালতীর বয়েসটা। ষােলাে। এবং তাপস সিওর মালতীকে আগে কেউ করেনি। ষােলাে বছর কত পরিশুদ্ধ হতে পারে তা মালতীকে না পেলে তাপস বুঝত না, যদিও মালতীর গায়ে ভরতি ঘামাচির মতাে চাপড়া চাপড়া চাকা। পায়ে হাজা, বুকে ঘামের গন্ধের ঝঝ। সামনের থেকে একঘণ্টা সঙ্গম করার পরে সে মালতীকে উপুড় করে মালতীর পিছন দিকে সঙ্গম করতে শুরু করল।  বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠের মতাে তাপস চমকে উঠল। এতে বেশ মজা। তাে। কোনও কিশােরীর সঙ্গে এভাবে মিলিত হলে যে কী সুখ তা তাপসের মতাে কোনও পুরুষ ছাড়া জানে না। তাপস কামড়ে ধরল মালতীর কাধ। ঘাম বা রক্তের মধ্যে হুহু করে খেলে গেল বসন্ত।…….

………শ্রীলেখা ঠোট উলটে বলল, পুরুষদের তাে শুধু ওই একটাই কাজ আছে। যখন-তখন দাঁড়ানাে। বুড়াে হােক, বারাে বছরের নাবালক, টিপলে দুধ পড়া বাচ্চা হােক, সবার ওই এক চেষ্টা, কতক্ষন ঢােকাবে।..

………ইন্দ্র তার স্ত্রীলেখার ঘাড় পছন্দ হয়নি। তখন সে একদিন ইচ্ছে করে রায়ের পিঠে নিজের বুক ঠেকিয়ে দিয়েছে। ইন্দ্র রায় চকিতে। তার দিকে ফিরে বলেছেন—আমার কোথাও কোনও হাত নেই।……..

……… নিজের খাটে খুব নিঃস্বভাবে শুয়ে আছে শ্রীলেখা। আজ কারুর সঙ্গে অন্তত চার-পাঁচ মিনিট জড়াজড়ি করলেও তার ভালাে লাগত। ফ্রিতে পেলে করার লােক প্রচুর ছিল। কিন্তু শ্রীলেখা এখন চার-পাঁচ মাস কাউকে নিজের ওপর ওঠাবে না বা নিজে কারুর ওপরে উঠবে না। কারণ তাপসের ঘটনা যতদিন চলবে ততদিন যেন কেউ ঘুণাক্ষরেও তার শােয়াশুয়ি নিয়ে কোনও কথা না বলতে পারে। শালা আজকালকার ঢ্যামনা ছেলেগুলাে শুয়ে বলে দেয় যে কার সঙ্গে শুলাে। এসব বলাবলি হলে এখন শ্রীলেখার বিপদ। তাকে এখন একটি হতাশাগ্রস্ত, অত্যাচারিত, বঞ্চিত, অসহায় মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করতে হবে। তার স্বেচ্ছায় শুয়ে বেড়ানাে মেয়েদের পাবলিক অসহায় ভাবে না। তাই শ্রীলেখাকে সংযমে থাকতে হবে। এতে শ্রীলেখার কষ্ট হবে। শরীর খারাপ লাগবে। পাঁচ-ছ’ মাস পা ফাক না করে অনশনে থাকা যে কী কষ্টের, তা-ও শ্রীলেখার মতাে সুস্থ সবল টানটান শরীরে। যে শরীরের অণু-পরমাণুতে যৌবনের স্রোত। তবু শ্রীলেখা এই কষ্ট করবে। প্রচারের জন্যে, খ্যাতির পিছনে ছােটার জন্যে সে সমস্ত কষ্ট সইতে পারে।

সে পাশ ফিরল, চকিতে তার মনে পড়ল কৈশােরের হস্তমৈথুনের স্মৃতি। ইদানীং হস্তমৈথুন করা অনেক কমে গিয়েছিল। হাতের আঙুলগুলাে কিছুতেই ছেলেদের ওটার মতাে শক্ত হয় না। সে এখন আঙুলের পরিবর্তে ব্যবহার করে কলম। পেন আর পেনিস কথাদুটো বেশ কাছাকাছি। প্রায় একই শব্দের দুটি রূপ। দুটি বস্তু থেকেই কিছু না কিছু জন্মায়। শ্রীলেখা খাটের পাশের টেবিল থেকে লম্বা কলমটা টেনে নিল। তারপর চোখ বুজে ফেলল নিমেষে। ফঁকা ঘরে সে আঃ আঃ করে কাতরাতে লাগল। তার অন্যসমস্ত জ্বালা যন্ত্রণা এখন ভুলিয়ে দিয়েছে তার হাতের কলম। তার ঘরময় ছড়িয়ে যাচ্ছে তার গােঙানি আর আর্তনাদ। আঃ আঃ, তাপস আমাকে ছেড়ে দাও। আর পারছি না, আঃ।……

………আমি মালতীকে রেপ করেছি কিন্তু সেটা আমি ওকে ওর বাড়ি থেকে ডেকে এনে, ওঁকে মিথ্যে ভয় দেখিয়ে বা গায়ের জোরে করিনি। আমি ওকে টাকা দিয়ে কিনেছি। আমার কেনা মাল নিয়ে আমি যা ইচ্ছে তাই করতে চেয়েছি, তাতে। তােদের কী ? তােরা সােনাগাছি হাড়কাটা খুলে রাখিস তখন দোষ হয় না? আমি ব্যাটাছেলে আমার যৌনতা চাই, সেটা আমি হাড়কাটা বা সােনাগাছি থেকে পেতে চাই না। যে মেয়ে ঘণ্টায় ঘণ্টায় শােয় তাকে রেপ করে কী সুখ বল। মাইরি বলছি রে, সােনাগাছিতে সুখ নাই। ওই মেয়েগুলাের আর কোনও ব্যথা-বেদনা অবশিষ্ট থাকে না। ওখানে গিয়ে নিজেকে ঠিকমতাে ব্যাটাছেলে মনেই হয় না। নইলে এত লােক বিয়ে করত না, ঝি-বাজি করত না, বাঁধামাগি পুষত না। তাে আমি একটা বাঁধামাগি পুষেছি বলে তােদের এত হিংসা হল। …….আমি একটা ছােট, নরম শরীর চাই যা শুধু আমার আয়ত্তে থাকবে। অন্য ব্যাটাছেলেরা যে শরীরের ভাগ পাবে না। আমি সেই শরীরে মেয়েছেলেমি চাই, রক্তমাংসের গন্ধ চাই। আমি চাই সেই শরীর আমার দাসত্বে থাক। আমি একটা মেয়েছেলের শরীরের ওপর প্রভুত্ব করতে চাই। বন্ধুত্ব চাই না, মায়া-দয়া চাই না, প্রেম চাই না, একটা রক্ত-মাংসের বুক-পাছা-যৌনাঙ্গ সমেত শরীরকে নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। ………

Leave a Reply