প্যান্টি ও অন্যান্য গল্প – সঙ্গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়

›› গল্পের অংশ বিশেষ  

প্যান্টি

……ওরা আদর করছিল নিজেদের চুম্বন করছিল! ওরা উন্মাদের মতাে মিলিত হচ্ছিল! ওরা হাপাচ্ছিল কিন্তু খেলাটা শেষ করছিল না কিছুতেই। যেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে গেল ওভাবেই। ওই প্রক্রিয়ায়— যতক্ষণ না মূৰ্ছিত হলাম আমি। সেই প্রথম দিন আমি ওদের বুঝতে পারিনি। নানা আশ্লেষ ধ্বনিতে চোখ। মেলে তাকিয়েছিলাম আর ভয় পেয়েছিলাম বেডরুমে এরা কারা! কিন্তু বেডরুমে কেউ ছিল না ওরা ছিল দেওয়ালে। সেই দেওয়ালটায়, যে দেওয়ালটার রং গাঢ় বাদামি। বেমানান দেওয়ালটার মধ্যেই ওরা দু’জনে ছিল নগ্ন, সঙ্গমরত, প্রলাপরত, ক্রন্দনরত ওরা!……..

……..পুরুষটি ঘুমােচ্ছ, বউটি বসে আছে পা ছড়িয়ে, গাছে হেলান দিয়ে, দৃষ্টি সুদূরে। বছরখানেকের মেয়েটা মায়ের নােংরা, হেঁড়া ব্লাউজ সরিয়ে শীর্ণ স্তন নিজের হাতে গুঁজে দিচ্ছে মুখে। মা যে সেই সংযােগ অনুভব করছে, তাও মনে হচ্ছে না।…….

……..দিনটা ছিল বনধের। সকালে বিছানা ছাড়ার কোনও প্রয়ােজন ছিল না। তবে সে সাত-সকালেই উঠে পড়েছিল ব্যথাটার অনুভব নিয়ে। ব্যথা মানে তার সমস্ত শরীরে একটি মাত্র স্তনবৃন্তকে কেন্দ্র করে চাক বেঁধে ওঠা এক। অস্বস্তি! ডান স্তনাগ্রে একটা শিরশিরে অনুভূতি দিয়ে শুরু হয়েছিল অসুবিধেটা। ক্রমশ সেটা বেড়ে ওঠে। সে তখন বারবার বাঁ হাতের আঙুলের নখ দিয়ে সেখানে, চারপাশটায় ছােট ছােট আঁচড় দিতে থাকে এবং বুঝতে পারে শরীরের অন্য অন্য জায়গার তুলনায় এই স্তনবৃন্ত একেবারে ভিন্ন একটি জিনিস। এর গড়ন এমন যে, একে চুলকোনাে যায় না। ভজ খাওয়া ত্বকের অতি ছােট এই এক টুকরাে মাংসকে এভাবে কিছু করার চেষ্টা করলে। জায়গাটা আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে। সত্ত্বেও সে একটা কাপড়ের টুকরাে দিয়ে জায়গাটাকে ঘষে দিয়ে আরাম পাওয়ার চেষ্টা করায় তার ডান স্তনবৃন্ত ও চারপাশের বাদামি ত্বক-যুক্ত অঞ্চল ফুলে গরম হয়ে উঠল। সামান্য অলিভ তেল নিয়ে সে তখন মালিশও করেছিল, কোনও ফল হল না।………

………….তুমি তাকে পাজরে পিষে ফেল—“কী হয়েছে? এত কীসের দুঃখ? তােমার গলা আর্দ্র হয়ে ওঠে। টের পাও তার শরীর শিথিল হয়ে যাচ্ছে। তােমার বাহুপাশে। তুমি তাকে টেনে নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দাও খাটে এবং তার সঙ্গে নিজে স্নেহে, মমতায়, প্রেমে, কামে অসম্ভব লিপ্ত হয়ে আছ উপলব্ধি করাে। তাই অসহায়ের মতাে চুম্বন করাে তুমি তাকে। তখন প্রতি আশ্লেষে ঈশ্বরকে স্মরণ করাে। প্রথমে ঠোটে, পরে গলায় তােমার ঠোট নামতে থাকে। তারপর তার পােশাক সরাও যেই অমনি ডান স্তনটি তােমার হাতে উঠে আসে ও তুমি দেখ স্তনবৃন্তটি ফুলে আছে! তােমার ভুরু কুঁচকে ওঠে। তুমি বৃন্তটি দু’ আঙুলে ধরাে, টের পাও ঘন উত্তাপ। একী? কী হয়েছে। এখানে?’ বলে ওঠো। সে চোখ বুজে পড়ে থাকে, অশ্রু গড়ায় চোখ থেকে তখন। বলে, ‘জানি না। শুধু শিরশিরে ব্যথা করছিল সকাল থেকে। এই বন্ধ, এই নির্জন ঘর, এই একাকিত্ব যা যন্ত্রণা দেয় সব ও নিয়েছে আজ। সব অসাড়তাকে চমকে দেওয়ার মতাে একফেঁটা ছােবল এনেছে বয়ে শরীরে। বলে সে স্তনবৃন্তটাকে তােমার ঠোটের দিকে ঠেলে দেয়। –আমি তােমাকে এই জন্য আসতে বলেছিলাম। কষ্ট হচ্ছে বলেছিলাম…! এটাকে যে চুলকোনাে যায় না…! তােমার চোখও জলে ভরে ওঠে তৎক্ষণাৎ আর, তুমি আমাকে খুলে বললানি কেন?’ বলে প্রবল অনুকম্পায় ডান স্তনবৃন্তটির মাধ্যমে তুমি তার সমস্ত যন্ত্রণা শােষণ করে নিতে থাকো।…..

…….পরপর লক খুলে ঢুকে বেডরুমে পেঁৗছতে যেটুকু দেরি! তুমি এ.সি অন করলে, চশমা খুলে রাখলে টেবিলে মােবাইল ছুঁড়ে দিলে বিছানায়। তুমি আমাকে নগ্ন করতে চাইলে, আমি তােমার শার্টের বােতাম খুলছিলাম। তােমার পরনে তখনও ট্রাউজার আর আমি শুধুমাত্র একটা… সেই বাঘছাল প্যান্টি পরে দু হাতে স্তন আড়াল করে দাড়িয়ে রইলাম আমি! যেন দাঁড়িয়ে রইলাম প্রহরের পর প্রহর। আর দেখলাম প্রথমে বিস্মিত তুমি, ধীরে ধীরে কুঁকড়ে গেলে ঘৃণায়। সেই ঘৃণা বদলে গেল। রাগে, রাগ বদলে গেল হতাশায়। হতাশা থেকে উদগিরণ হল কান্নার। তুমি কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে গেলে ফ্ল্যাট থেকে।……

………একটা ছােট পিঙ্ক স্কার্ট আর সাদা ব্লাউজে ভীষণ সুন্দর দেখাচ্ছিল ওকে। মুখটা কিছু ক্লান্ত। যেন স্কুল-ফেরত বালিকা বলেই ভাবতে পারতাম যদি না আমার চেনা স্তন দুটো প্রকটভাবে জেগে থাকত, যদি না ধবধবে পায়ের গােছ ও হাঁটু চোখে পড়ত যা বালিকাসুলভ নয়, যা ভীষণভাবে নারীর, যা পুরুষের অশ্রুপাতকে স্থান দিয়েছে পায়ে, উরুতে, জঙঘায় ! সুন্দর দেখাচ্ছিল ওকে। চুলগুলাে চুড়াে করে বাঁধা। তুলিগুলাে কোমরে গোঁজা। মেঝেতে ছড়ানাে ছিটোনাে রং। চেয়ার এদিক-ওদিকে টেনে টেনে, বসে, দাঁড়িয়ে ছবি আঁকা চলছিল। দেওয়াল সংক্রান্ত সাময়িক আফসােস কাটিয়ে উঠে আমি মজা পেতে শুরু করলাম। দেখতে দেখতে বিশাল দেওয়ালটায় ফুটে উঠল ছবি। অত বড় ক্যানভাসে ও আঁকল লাইফ সাইজের নারী-পুরুষ এক জোড়া। বিচিত্র এক ভঙ্গিমায় মিলিত হচ্ছিল তারা। আশ্চর্য, একই সঙ্গে প্রবল যৌনতা ও নির্লিপ্তি ফুটিয়ে তুলেছিল ও। যেন ও বলতে চাইছিল সেক্স একটা আত্মআবিষ্কার এবং নিজেকে আবিষ্কার করার মুহূর্তেই নিজেকে ছিড়ে বিচ্ছিন্ন করাই সেক্সের পরের অভিজ্ঞতা! কেননা তুমি আসলে সবসময়ই তােমার ভেতরে আর একজনকে চাও- সেক্স তােমাকে সেই অনুভূতিটুকু কিছুক্ষণ দিতে না দিতেই ফল ফাটিয়ে বীজ আলাদা করার মতাে তােমাকে একা করে দেয়। সেক্সের পরের লগ্নের এই একাকিত্বই জীবনের অন্য সকল হতাশার শিকড়। তুমি চাও সংলগ্ন থাকতে, ব্যস, আর কিছুই চাও না তুমি– তার অধিক ঈশ্বর’ তুমি চাইতে পার না। তুমি আর তােমার ভেতরে কেউ এই শুধু এক জীবৃনন্সিী চাহিদা জীবের! মানুষও খায়, শােয়, বক্তৃতা করে কিন্তু আসলে তার মনের একটা অংশ নিমজ্জিত থাকে সেক্সে, সেখানে সেক্স চলতেই থাকে, একটি শিশ্ন একটি যােনির মধ্যে যায়, তার নরম মাংসপেশী ছোয়, অস্তিত্ব অস্তিত্বকে ছোঁয়, ফিরে আসে, আবার যায়, আবার ফিরে আসে, আবার যায়… ছবিটা আঁকতে আঁকতে বারবার উত্তেজিত হচ্ছিল ও। আমাকে মিলনে আহ্বান জানাচ্ছিল। আমরা চূড়ান্তভাবে মিলিত হচ্ছিলাম। তখন ঘর কাঁপিয়ে চিৎকার করে ও বলছিল—“আমার ভাল লাগছে, আমার ভাল লাগছে। এক সময় মনে হল আমাদের ত্বক জুড়ে গেছে।………….

Leave a Reply