বৃষ্টিতে ভেজার বয়স – সমরেশ মজুমদার

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

……….ঘরের ভেতরটা এখনও আবছা আলাে জ্বাললেন কুহেলি। সঙ্গে সঙ্গে আয়নায় বিকশিত হল তাঁর প্রতিবিম্ব। লম্বায় পাঁচফুট আট ইঞ্চি, ওজন বাষট্টি, কোথাও মেদের প্রকাশ নেই। একদা নিতম্ব ছাড়ানাে চুল ছেটে হেঁটে এখন কাঁধের সীমারেখায়। গত কুড়ি বছরে সময় স্থির হয়ে আছে সর্বাঙ্গে। এই এখন বিছানা থেকে উঠেছেন অন্তর্বাসহীন অবস্থায়। কিন্তু বুকের ঢেউ তেমনই উত্তাল।…….

………গেঁয়াে মেয়েছেলের মতাে কান্নাকাটি কোরাে না। বড় ঘুম পাচ্ছে আজ, চটপট শাড়িটাড়ি খােল।

খাটের মাঝখানে ফুলের বিছানায় সিঁটিয়ে বসেছিলেন কুহেলি। তখন তার বয়স যা তাতে যৌন অভিজ্ঞতা থাকা সম্ভব নয়। অত্যন্ত আব্রু রেখে চলতে অভ্যস্ত একটি কিশােরীকে শাড়িটাড়ি খুলতে বললে সে তাে চোখে অন্ধকার দেখবেই।

শাড়ি খুলল। জামা ছিড়ল, সায়াও। যত দ্রুত বাধা সরানাে যাবে তত যেন লক্ষ্যবস্তুতে তাড়াতাড়ি পৌঁছানাে যাবে। তারপর শরীর ছিড়ল। ছিড়তে ছিড়তেই উৎসাহ চলে গেল নতুন বরের, নেশায় ঢলে পড়লেন বিছানায়! দাঁতে দাঁত চেপে যন্ত্রণা সহ্য করতে করতে কুহেলির মনে হল, যাক, আজ রাতের মতাে হয়তাে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে। কিন্তু তখনই তার শরীর থেকে বেরিয়ে আসা রক্তের ধারা দেখে চিৎকার করতে গিয়েও সামলে নিল। মনে পড়ল বিয়ের আগে বউদিদের। পরামর্শ এবং উপদেশ, তার শরীরের ভেতর একটা পর্দা ছিল। সেটা চিরকালের জন্য ছিন্নভিন্ন হল আজ রাত্রে।……..

………. এইসময় পাখি এল ঘরে। দ্রুত পােশাক পালটেছে সে। কালাে হলুদে মেশানাে শরীর চেপে ধরা হাঁটু পর্যন্ত স্কার্ট, চুলেও উলটো ভাঁজ, নিতম্ব এবং বুকের উদ্ধত ভঙ্গিটি চোখে পড়ার মতাে। দেখলে পনেরাে বলে মনে হয় না।……….

……….শিবানীর গলায় একটা আমেজ আছে। তাছাড়া মদ্যপানের কারণে তার সঙ্গে “আবেগ মেশায় শুনতে ভাল লাগছিল। ওরা এখানে আসার আগে কোথাও খেয়ে এসেছিল। এখন পেটে পড়াতেই উৎফুল্ল হয়ে উঠেছে। আঁচল খসে পড়েছে কাঁধ থেকে। বিশাল ভারী স্তন যে প্রকট তা ওর হুঁশে আসছে না। কুহেলি লক্ষ করল শােভন ওদিকে তাকাচ্ছে না। চোখ বন্ধ করে গান শুনে যাচ্ছে। এবার কুহেলি ইশারা করল শিবানীকে আঁচল তুলে নিতে। গান গাইতে সে এতই মত্ত যে ইশারা উপেক্ষা করছে।

গান শেষ হলে শােভন কুহেলির দিকে তাকালেন, আপনি বিব্রত হবেন না। যেহেতু শিবানী আমাকে দাদা বলে ডাকে তাই ও যদি সম্পূর্ণ বিবস্ত্র হয়ে আমার পাশে বসে তাহলেও আমার শরীরে কোন উত্তেজনা জন্মাবে না।’

শিবানী ঈষৎ জড়ানাে গলায় বলল, আশ্চর্য! আঁচল ছিল না তাে কি হয়েছে, জামা তাে আছে। জামার নিচে ব্রেসিয়ারও আছে। এগুলাে আড়াল নয়?………

……একটা মানুষ সারাদিন চোখের ওপর থাকত, লিখত। কিন্তু ব্রেকফাস্টের পর লিখতে যাওয়ার আগে তাকে চুমু খেয়ে যেত, সন্ধের পর বাড়িতে থাকলে শরীরে শরীর যােগ করত। নাই বা বিয়ে হল, এই পাওয়া তাে কম নয়।…..

…….পাখির পরনে স্কার্টের ওপর পুলওভার, গলায় মাফলার। ঘােড়ার ওপর বসে থাকায় তার স্কার্ট ওপরে উঠে গেছে। হাঁটু আর কুঁচকির মাঝখান পর্যন্ত উন্মুক্ত। মেয়েটার কবে যে কাণ্ডজ্ঞান হবে। ওই স্কার্ট পরার কি দরকার ছিল?………

……বাবুলাল বললেন, ‘পাখি। তােমাকে একটা কথা বলি। তােমার বয়স কম, বুদ্ধি এখনও কাচা। কিন্তু শরীরটা যে বড় হয়ে গেছে। পাবলিকের সামনে নিজের শরীর এক্সপােজ করবে না কখনও। এই ম্যালে যারা আছে তাদের সবাই তােমার থাই দেখছিল। যদি স্টার হতে চাও তাহলে পাবলিককে তােমার মুখও দেখাবে না। আন্ডারস্ট্যান্ড?……….

…….একটু হাঁটতে বললেন।
হাঁটলি?’
হা। বললেন, হাই হিল পরতে আর হিপ দোলাতে।
‘ও বাব্বা। তারপর ?

তারপর কাছে ডাকলেন। আমি যেতে উনি আমার হিপে হাত বােলালেন। বললেন, আর একটু বড় হলে ভাল হত। তারপর নিজেই বললেন, প্যাড ব্যবহার করলে ম্যানেজ হয়ে যাবে।

‘তারপর জিজ্ঞাসা করলেন আমার বাস্টলাইফ দেখানাে যায় কিনা! আমি ঠিক বুঝতে পারিনি। উনি আমাকে জামার প্রথম তিনটে বােতাম খুলতে বললেন। আমি খুললে জামার দুটো প্রান্ত ব্রার স্ট্র্যাপের মধ্যে গুঁজে দিয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললেন, ‘গুড! আমি এইটে চেয়েছিলাম। ওটা বন্ধ কর। করলাম। উনি, একটা কাগজ এগিয়ে দিয়ে বললেন পড় তাে! পড়লাম। খুশি হলেন। তােমাদের ডাকলেন।

কি বলবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না কুহেলি। স্বপন গুপ্তের মতাে নামী মানুষ একটি কিশােরীর বুক নিতম্ব দেখছেন নির্জন ঘরে? এটা লাম্পট্য ছাড়া আর কি হতে পারে। মন খারাপ হয়ে গেল তার।

হঠাৎ পাখি বলল, ‘বুঝতে পেরেছি। আমি যে চরিত্রটা করব সে রেপড় হবে। তার যদি ভাল হিপ এবং বুক না থাকে তাহলে রেপ করবে কেন? উনি সেটা পরীক্ষা করলেন। একবারও খারাপ ভাবে হাত দেননি। দর্জিরা যেমন মাপ নেওয়ার সময় দেয়।’………..

…….ঘরে এসে চেয়ারে বসে সই জিজ্ঞাসা করলেন, ‘মেয়ে কোথায় ? ‘রিহার্সাল দিচ্ছে স্বপনবাবুর কাছে! শুনে ঠোট মােচড়ালেন সই, স্বপনদা বুড়াে হতে চলল তবু। মানে?

মানে কিছু না। আমি যখন প্রথম ছবি করি তখন আমার বয়স সতেরাে। এই স্বপনদারই ছবি। তখন আমাকে নিয়ে এক্সকুসিভ রিহার্সাল দিয়েছিলেন উনি। একটু বড় হয়ে গেলে আর রিহার্সালের জন্যে ডাকেন না। হাসলেন সই।

‘ওটা রিহার্সাল তাে?
‘ওই আর কি? তবে একটা ব্যাপারে নিশ্চিন্ত থাকুন, স্বপনদা কখনই কোন মেয়েকে নিয়ে শােন না। লােকে আড়ালে এই নিয়ে নানান কথা বলে।……..

……‘আঃ। মা। এসব ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামিয়াে না তাে! স্যুটিং-এর সময় যখন একগাদা লােকের সামনে ভিলেন আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে, আমার ফ্রক ছিড়বে, শরীরে হাত দেবে তখন তাে ভয়ে আমি চিৎকার করে উঠতাম, অভিনয় করতে পারতাম যদি রিহার্সাল না দিতাম?………

……..‘গরম লাগছে না?

হা। ঠিক বলেছেন। বেশ গরম। ‘এখানে এ.সি. নেই। দরকার হলে শাড়িটা খুলে ফেলুন অর্ধেক।

তাই খুলি। উঃ, কি গরম। কুহেলি আর যুঝতে পারছিলেন না। তাঁর শরীরের ভেতরটা আনচান করছিল। এইসময় মিহির মিত্র আদুরে গলায় ডাকল, ‘আসুন। দুটো হাত তার শরীর হাতড়াচ্ছে। কুহেলি তাদের অস্তিত্বও টের পেলেন না। একটা বড় ঢেউ তাকে গ্রাস করে নিয়ে গেল অন্ধকারে। তিনি নেমে যেতে থাকলেন।

ঘুম ভাঙল যখন তখন ধড়মড়িয়ে উঠলেন কুহেলি। দ্রুত বেশবাস ঠিক করলেন। ঠিক তার পাশে মিহির মিত্র বেঘােরে ঘুমাচ্ছেন। ………

……..সেই দৃশ্যটি, যেখানে পাখিকে রেপ করছে ছেলেটি, পাখি সােজা হয়ে বসল। প্রেক্ষাগৃহে আলপিন পড়ার শব্দও বােধহয় শােনা যাবে। রেপড় হওয়ার পর পাখি অজ্ঞান হয়ে শুয়ে রয়েছে ঘাসের ওপর, তার স্কার্ট উঠে গেছে অনেক ওপরে, হাঁটু, থাই-এর অনেকটাই দৃশ্যমান কিন্তু অশ্লীল বলে মনে হচ্ছে না। উলটে করুণরস তৈরি করছে। কিন্তু নাড়া খেলেন কুহেলি। পাখির থাই বলে দিচ্ছে ও এখন পূর্ণ যুবতী। ওর কৈশােরবেলা শেষ হয়ে গিয়েছে। মন খারাপ হল একটু।…….

……..‘বেশ। তাহলে চুমুই খাই। আচমকা গ্লাস ছেড়ে দিয়ে দুহাতে রুদ্র রায়কে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে লাগল শিবানী। রুদ্র রায় স্থির হয়ে রইলেন। শিবানী তাতে সাহসী হল। রুদ্র রায়ের কোলের ওপর উঠে বসল সে। পাগলের মতাে চুমু খেয়ে চলল সে। হঠাৎ রুদ্র রায়ের চোখ জ্বলে উঠল। দুহাতে শিবানীর শরীরটাকে ওপরে তুলে এক পাক ঘুরিয়ে বিছানায় ছুঁড়ে ফেলল। পতনের ধাক্কাটায় জোর থাকায় ককিয়ে উঠল শিবানী, উঃ। একটানে নিজের জামা খুলে রুদ্র ওর পাশে বসে হাত বাড়িয়ে চুলের মুঠো ধরলেন। তারপর টেনে নিয়ে এলেন শিবানীর মুখটাকে। ওই এক মুহুর্তেই রুদ্রের চোখ মুখের বীভৎস অভিব্যক্তি দেখতে পেয়ে চিৎকার করে উঠল শিবানী। একটুও আমল না দিয়ে ওর ঠোট কামড়ালেন। শিবানী গােঙাচ্ছে। ঠোঁট থেকে রক্ত পড়ছে। কিন্তু রুদ্র রায় তখন উন্মাদ।

সমস্ত শরীরে যন্ত্রণা নিয়ে নিঃসাড়ে পড়ে ছিল শিবানী। যেন একটা ভয়ঙ্কর ঝড় নিষ্ঠুরতায় গুড়িয়ে দিয়ে গেছে গাছপালা, বাড়িঘর। সে পড়ে আছে বিছানায় সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায়। যন্ত্রণাতে পাশ ফিরতে পারছে না। সে তাকাল। ঘরে রুদ্র রায় নেই। পশুর চেয়ে অধম লােকটা। অথচ কথা বললে, বাইরে থেকে দেখলে ওই পশুটার অস্তিত্ব টের পাওয়া যায় না।…….

…..ইয়েস। তুমি আমাকে মদের বদলে চুমু খাও। এফেক্ট উইল বি সেম। দুহাত বাড়াল রুদ্র রায়। অগত্যা এগিয়ে গেলেন কুহেলি। আলতাে চুমু খেলেন রুদ্রর ঠোটে। সঙ্গে সঙ্গে রুদ্র রায় তাকে জড়িয়ে ধরল। ধরামাত্র কুহেলির মনে হল তার হাতের হাড় বুকের পাঁজর ভেঙে যাবে একটু চাপ পড়লে। যন্ত্রণায় ককিয়ে উঠলেন তিনি। চিৎকার করলেন কোনমতে, একি! ছাড়, ছাড় আমাকে।

না। ছাড়ব না। আজ আমি তােমাকে খাব। রােজ রােজ আলুনি, আজ ছাড়ছি । গলার স্বর জড়ানাে, নিজের বুকে যেন পিষে ফেলতে চাইল কুহেলিকে। | কুহেলির স্বাস্থ্য ভাল, শরীরও লম্বা। কিন্তু ওই শক্তির সঙ্গে পেরে উঠছিলেন না। মনে হচ্ছিল অজ্ঞান হয়ে যাবেন। ঝিমঝিম করছে মাথা। হাত আলগা করে ব্লাউজের বােতাম খােলার চেষ্টা করে না পেরে টেনে ছিড়ে ফেলল। তারপর কুহেলিকে বিছানায় নামিয়ে মুখ নিয়ে এল বুকে। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে উঠলেন। ধারালাে দাঁত তার বুকে, কাঁধে বসছে। যেন হাঙর তার সব হিংস্র দাঁত দিয়ে দিয়েছে রুদ্র রায়কে। নিজেকে ছাড়াবার চেষ্টা করতেই প্রচণ্ড চড় খেলেন তিনি। আঘাতে মাথা ঘুরে গেল। অন্ধকারে তলিয়ে যেতে যেতেও বুঝতে পারলেন তার শরীর দাঁত দিয়ে কাটা হচ্ছে।

সম্পূর্ণ বিবস্ত্র এবং অচেতন কুহেলির শরীরের দিকে তাকিয়ে হাসল রুদ্র। শুধু উর্ধ্বাঙ্গ নয়, শরীরের মধ্যভাগ এবং নিতম্বেও এখন ক্ষত থেকে বের হওয়া রক্ত চামড়ার ওপর স্পষ্ট। তার কিছুটা লেগে রয়েছে রুদ্র রায়ের ঠোটে। এতদিন সে কুহেলির সঙ্গে সময় কাটিয়েছে, বেশ কয়েকবার সহবাসের নামে নির্লিপ্ত খেলা খেলেছে কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যেও সুখ পায়নি। কিন্তু আজ সে একটু একটু করে সুখ পাচ্ছে। আর এই পদ্ধতি যে সব মেয়ের কাছে যন্ত্রণাদায়ক তা তাে নয়। কোনও কোনও মেয়ে বলেছে, খুব কষ্ট হয় কিন্তু শেষপর্যন্ত যে মহাসুখ হয় তা তাদের স্বামীরা দিতে পারেনি কখনও। কুহেলির স্বামী নেই। অতগুলাে ছেলেমেয়ের মা। আর কিছুদিন বাদেই প্রাকৃতিক নিয়মে ওর সুখী হওয়ার উপায় থাকবে না। ওকে সুখী করা আজ তার কর্তব্য। নিতম্বে দাঁত বসালাে রুদ্র। এই বয়সের শরীরও যে এমন আবেদনময়ী হয় তা প্যারিসেও দ্যাখেনি রুদ্র। আবার মদ খেল সে। তারপর কুহেলির গােঙানি শুনতে পেল। আঃ কি আরাম। ওর জ্ঞান ফিরে আসছে। দুজনের খেলায় একজন যদি নিঃসাড়ে পড়ে থাকে তাহলে খেলে আনন্দ হয় না। রুদ্র মদ গিলতে গিলতে বলল, কাম অন বেবি। লেটস প্লে।” ।
মুখ তুললেন কুহেলি। ঝাপসা দেখলেন রুদ্রকে। তাতেই তার ঠোট নড়ল, তুমি তুমি শয়তান। উঃ, মাগাে।।

শয়তান একজন সৎ ব্যক্তি যার কখনও ভুল হয় না। দুহাতের শক্তিতে কুহেলিকে উপুড় করে দিল রুদ্র রায়। আর তারপরেই বীভৎস চিৎকারে ঘরের দেওয়াল যেন কেঁপে উঠল। অজ্ঞান হয়ে গেল কুহেলি।……..

Please follow and like us:

Leave a Reply