বন্ধু স্ত্রী – গিয়ােভানি বােকাসিও

›› অনুবাদ  ›› সম্পুর্ণ গল্প  ›› ১৮+  

অনুবাদঃ অবনী সাহা
উৎসঃ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ আদি-রসের গল্প
সম্পাদনাঃ সুকান্ত সেনগুপ্ত

সিয়েনা শহরে স্পিনেলােসিও ট্যাভেনা ও জেম্পা ডি মিনাে নামে দুই বন্ধু বাস করত। বয়সে দুজনেই তরণ ও সভ্রান্ত বংশের ছেলে। শহরের এক বনেদী পাড়ায় পাশাপাশি দুটো বাড়ীতে ওরা থাকত।

নজীরবিহীন বন্ধুত্ব ছিল ওদের। ওরা যে শুধু সব কাজ এক সঙ্গে করত, সব জায়গায় একসঙ্গে যেতাে তাই নয়, ওদের ভাবনা চিন্তা, কথাবার্তা আচারআচরণে এমনই মিল ছিল যে বাইরের সবাই তাে ওদের এক মায়ের পেটের ভাই ভাবত। হয়ত বা ঘুমিয়ে ওরা একই স্বপ্ন দেখত। ওদের এই অভিন্ন হৃদয় গভীর বন্ধুত্ব অন্যদের ঈর্ষার কারণ ছিল।

সুখেই কাটছিল ওদের দিনগুলি। অবশেষে একদিন দুই বন্ধুর গভীর প্রণয়ে ভাগ বসাতে এল আরাে দুজন , ওরা বিয়ে করল সম্রান্ত বংশের দুই রুপসী কন্যাকে। দুই-এ দুই-এ চার হােল। দুই পরিবারে আনন্দের উজান স্রোত যেন বাঁধন হারা হয়ে উঠলাে।

কিন্তু চিরকাল একরকম যায় না। অদৃশ্য কোন নিয়তির ঈঙ্গিতে ঘটনা ঘটে যায় আপন নিয়মে—মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে। | স্পিনেলােসিও সারাদিনের অনেকটা সময়ই বন্ধু জেম্পার বাড়ীতে আড্ডা মেরে কাটাতাে! জেম্পাকে কিন্তু অধিকাংশ সময়েই নিজের কাজে বাড়ীর বাইরে থাকতে, হত। জেম্পার অনুপস্থিতিতে তার বউ স্বামীর বন্ধুর সঙ্গে গল্প গুজব করত, আড্ডা মারত। দিনের পর দিন এই ভাবে হাসি ঠাট্টা, গল্পগুজব করে ওরা সময় কাটাত। ক্রমশঃ দুজনের মধ্যে গড়ে উঠলাে বন্ধুত্ব। একদিন সেই বন্ধুত্বে পরিণত হােল গভীর প্রেমে।

জেম্পা কিন্তু এর বিন্দু বিসর্গও জানতে পারল না। সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে একটি নারী ও একটি পুরুষের অবৈধ প্রেমের উদ্দাম লীলা চলতে লাগল দুর্বার গতিতে ।

কিন্তু একদিন।

জেম্পা তখনও বাড়ী ছিল। ওর বউ বুঝতে পারেনি, ভেবেছিল জেম্পা বাড়ী থেকে বেরিয়ে গেছে। স্পিনেলােসিও জেম্পাদের বাড়ী এসে দেখলাে জেম্পার বউ একা রয়েছে। সুযোেগর সদ্ব্যবহার করতে সে দেরী করে না। বন্ধুর সুন্দরী স্ত্রীর নরম দেহটাকে বুকের মধ্যে টেনে নিয়ে পাগলের মত চুমু খেতে লাগল। একটা ঝােড়ো হাওয়া যেন মুহুর্তের মধ্যে জেম্পার বউ-এর দেহটাকে এলােমেলাে করে দিল। কিন্তু সেও পিছিয়ে নেই—আদরের প্রতুত্তর দিল সে স্বামীর বন্ধুকে চুমু খেয়ে।

জেম্পাকে ওরা দেখতে পায়নি, জেম্পা কিন্তু আড়ালে থেকে সব দেখছিল। প্রিয়তমা স্ত্রী ও প্রাণের বন্ধু স্পিনেলােসিওর এই বিশ্বাসঘাতকতায় জেম্পা বিস্ময়ে হতবাক। উত্তেজনায় স্তব্ধ হয়ে গেল। কিন্তু উত্তেজনা দমন করে লুকিয়ে থেকে অপেক্ষা করতে লাগলাে ওদের এই প্রেমলীলা কোথায় শেষ হয় দেখার জন্য।

এদিকে স্পিনেলােসিও জেম্পার বউ পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে শোবার ঘরে গিয়ে ভেতর থেকে খিল এটে দিল। জেম্পা চ্যাঁচামেচি করল না বা ওদের বাধাও দিল না। ও জানে তাতে শুধু কলঙ্কই রটবে। স্ত্রী ও বন্ধুর বিশ্বাসঘাতকতায় উদভ্রান্ত মনকে সান্তনার প্রলেপ দিতে পারে শুধু প্রতিশােধ। ভেবে ভেবে প্রতিশােধের পরিকল্পনা করে ফেলল জেম্পা।

জেম্পা লুকিয়ে অপেক্ষা করতে লাগল। কিছুক্ষণ পরে স্পিনেলােসিও ওদের শােবার ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে গেল। আড়াল থেকে বেরিয়ে জেম্পা ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল ঘরের দিকে। 

ঘরে তখন জেম্পার বউ তার শিথিল বেশবাস গুছিয়ে নিচ্ছিল। হঠাৎ স্বামীকে দেখে চমকে উঠলাে কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে সামলে নিয়ে এমন মুখভাব করল যেন কিছুই হয়নি। নিরুত্তাপ কণ্ঠে জেম্পা জিজ্ঞেস করল। “কি করছ ?” দেখতে পাচ্ছনা কি করছি। রুক্ষ স্বরে জবাব দিল জেম্পার বউ।

হ্যা দেখতে পাচ্ছি। নিরুত্তাপ কিন্তু কঠিন ধরে জেম্পা বলল, “এছাড়া, আরও এমন কিছু দেখছি যা আমাকে দেখতে না হলেই ভাল হত।

মানে? আর কি দেখেছাে ? তীক্ষ্ন স্বরে প্রশ্ন করল ওর বউ। ‘সেটাতাে তুমি আমার চেয়েও ভাল জান ডার্লিং—আর জানে আমার প্রিয় বন্ধু স্পিনেলােসিও। জেম্পার কণ্ঠে শ্লেষ।

মুহুর্তে পাল্টে গেল জেম্পার বউ-এর মুখের চেহারা। বুঝলো ধরা পড়ে গেছে। বলার মত কোন কথা খুজে পেল না, শুধু ফ্যাকাসে মুখে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইল জেম্পার মুখের দিকে। অজানা এক আশঙ্কায় ভয়ে কাঁপতে লাগলাে। বুঝল মিথ্যা কৈফিয়ৎ দিয়ে আর রেহাই পাবে না। জেম্পার হাঁটু দুটো ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ল কৃতকর্মের জন্য বারবার ক্ষমা চাইতে লাগল স্বামীর কাছে।

জেম্পার কোন ভাবান্তর হল না ঠাণ্ডা গলায় বলল,

‘শােন, তােমার অপরাধ ক্ষমার অযােগ্য। তবুও আমি তােমাকে ক্ষমা করতে পারি—এক শর্তে–আমি যা বলব তােমাকে তাই করতে হবে, কি পারবে?

‘হা পারব, তুমি যা বলবে আমি তাই করব।’ জেম্পার বউ ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলল।

‘তাহলে চোখ মােছ, মন দিয়ে শােন। জেম্পা ওর পরিকল্পনার কথা বউকে বলল এবং ওকে কি কি করতে হবে তাও ভাল করে বুঝিয়ে দিল। বারবার সাবধান করে দিল স্পিনেলােসিও যেন ঘুণাক্ষরেও টের না পায় ওর পরিকল্পনার কথা।

জেম্পার বউ ভাল মেয়ের মত স্বামীর কথায় মাথা নেড়ে জানিয়ে দিল স্পিনেলােসিও কিছুই জানবে না। পরদিন ভােরবেলা দুই বন্ধু কথা বলতে রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাে। বাড়ী থেকে অনেকটা দূরে এসে স্পিনেলােসিও জেম্পাকে বলল, ‘বন্ধু আমার অন্য এক বন্ধুর বাড়ীতে ব্রেকফাস্টের নেমন্তন্ন আছে, সে আমার জন্য অপেক্ষা করবে। আমাকে এক্ষণি চলে যেতে হবে।

‘সেকি, এখনও তাে ব্রেকফাস্টের সময় হয়নি স্পিনেলােসিও জেম্পা বলল। আমাকে একটু আগেই যেতে হবে। স্পিনেলােসিও জবাব দিল। বন্ধুটির সঙ্গে আমার কিছু জরুরী কথাবার্তা ও আছে—তাই একটু আগেই যেতে চাই।

বন্ধুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে স্পিনেলােসিও চলে গেল। জেম্পার বউকে কথা দিয়েছে সকাল বেলায় যাবে। জেম্পা ওর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে শুধু একটু মুচকি হাসল। ঘটনা পরিকল্পনামাফিক এগােচ্ছে। একটু অপেক্ষা করে সেও বাড়ীর দিকে পা চালালাে।

জোরে জোরে পা চালিয়ে স্পিনেলােসিও জেম্পাদের বাড়ী পৌঁছে গেল। জেম্পার বউকে নিয়ে ওদের শােবার ঘরে পা বাড়াতেই জেম্পা বাড়ী ফিরে এল। জেম্পা ফিরে আসতে স্পিনেলােসিও হকচকিয়ে গেল। স্বামীর পায়ের শব্দ পেয়ে জেম্পার বউ সন্ত্রস্ত হয়ে উঠলাে। সঙ্গে সঙ্গে স্পিনেলােসিওকে শােবার ঘরের বড় সিন্দুকটার মধ্যে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে তালা দিয়ে ত্রস্ত পায়ে ঘর ছড়ে বেরিয়ে গেল। ব্যাস জেম্পার বউ নিশ্চিন্ত। স্বামীর পরিকল্পনা মত সব কাজই ও করেছে, এরপর যা করবার জেম্পাই করবে।

বাড়ী ফিরে জেম্পা সােজা ওপরে উঠে এলাে। স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করল ব্রেকফাস্ট তৈরী হয়েছে কিনা। ওর বউ জানাল হয়েছে। জেম্পা বলল, “স্পিনেলােসিও ওর এক বন্ধুর বাড়ীতে আজ ব্রেকফাস্ট করবে। ওর বউ বাড়ীতে একা আছে। যাও ওকে ডেকে নিয়ে এসাে ওকে বল ও আমাদের সঙ্গে আজ ব্রেকফাস্ট করবে।

‘বাধ্য মেয়ের মতাে জেম্পার বউ সঙ্গে সঙ্গে স্পিনেলােসিওর বউকে ডেকে আনতে গেল। স্বামী ব্রেকফাস্ট করতে বাড়ী আসবে না জেনে স্পিনেলােসিওর বউ জেম্পার আমন্ত্রণ গ্রহণ করে জেম্পার বউ এর সঙ্গে ওদের বাড়ী চলে এলাে।

ওরা বাড়ীতে পা দেবার সঙ্গে সঙ্গে জেম্পা হৈ চৈ বাধিয়ে দিল। বউকে রান্নাঘরে পাঠিয়ে দিয়ে ঘনিষ্ট ভাবে স্পিনেলােসিওর বউকে জড়িয়ে ধরে শােবার ঘরে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিল।

জেম্পার এই হঠাৎ উদ্দাম আর অস্বাভাবিক আচরণে স্পিনেলােসিওর বউ অবাক হয়ে গেল। জেম্পাকে ঘরের দরজা বন্ধ করতে দেখে বলল। ‘এসবের মানে কি জেম্পা? এজন্যই কি তুমি আমাকে ব্রেকফাস্টের নাম করে ডেকে এনেছে? আমি ভাবতাম স্পিনেলােসিও কে তুমি নিজের ভাই-এর  মত ভালবাস, আমি জানতাম তুমি ওর বিশ্বস্ত বন্ধু। স্পিনেলােসিওর বউ-এর স্বর কঠিন।

জেম্পা কিন্তু নির্বিকার। আরও শক্ত করে বন্ধুর বউ-এর কোমরটা জড়িয়ে ধরে টেনে নিয়ে এল ঘরের একপাশে বড় সিন্দুকটার কাছে, যার ভেতরে স্পিনেলােসিও বন্দী হয়ে আছে। বলল, | ‘প্রিয়তম, আমাকে অভিযােগ করার আগে, আমারও কিছু বলার আছে, মন দিয়ে শােন। আমি স্পিনেলােসিওকে নিজের ভাই-এর মতই ভালবাসতাম এখনও বাসি। কিন্তু ওর প্রতি আমার বিশ্বাসের চরম প্রতিদান ও আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। আমার বিশ্বস্ত বন্ধু স্পিনেলােসিও তােমার স্বামী আমারই প্রিয়তমা স্ত্রীর সঙ্গে অবাধে প্রেমলীলা চালিয়ে যাচ্ছে—ঠিক যেমনটি ও তােমার সঙ্গে করে। আমি ওকে ভালবাসি—তাই ওর অপরাধের একমাত্র উপযুক্ত প্রতিশােধ এটাই। ও আমার স্ত্রীকে অধিকার করে নিয়েছে—আমিও চাই তােমাকে। তুমি যদি রাজী না হও তাহলে জেনে রাখ তােমার স্বামীকে একদিন না একদিন হাতেনাতে আমি ধরব—সেদিন ওর অপরাধের জন্য এমন কঠিন শাস্তি ও পাবে যার পরিনামে তােমাদের দুজনের জীবনই হয়ে উঠবে দুর্বিসহ।

জেম্পার কাহিনী শুনে স্পিনেলােসিওর বউ বিস্ময়ে নির্বাক হয়ে গেল। স্বামীর ব্যবহারে সে ক্ষুব্ধ , লজ্জিত। কিন্তু জেম্পার কথাও সে পুরাে বিশ্বাস করতে পারছে না। ধীরে ধীরে বলল।

জেম্পা, আমার স্বামীর অপরাধের খেসারৎ যদি আমাকেই দিতে হয়—রাজী আছি। কিন্তু তুমি দেখাে তােমার বউ যেন আমার প্রতি কোন রকম বিদ্বেষ পােষণ না করে। ও আমার যা ক্ষতি করেছে, তাতে আমি কিন্তু ওকে কিছুই বলিনি।

জেম্পা বলল, হ্যা আমি তা নিশ্চয়ই দেখব। তাছাড়াও তােমাকে আমি একটা অত্যন্ত মূল্যবান ও সুন্দর রত্ন উপহার দেব। কথাগুলি বলে জেম্পা স্পিনেলােসিওর বউকে দুহাতে জড়িয়ে পাগলের মত চুম্বনে চুম্বনে ভরিয়ে দিল। ওকে পাঁজাকোলা করে তুলে বড় সিন্দুকটার ওপরে যার ভেতরে বন্দী হয়ে আছে স্পিনেলােসিও শুইয়ে দিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই দুজনেই মত্ত হয়ে উঠলাে এক উদাস প্রেমের খেলায়। দুই দেহ এক হল।

সিন্দুকের ভেতরে বন্দী স্পিনেলােসিও ওদের দুজনের কথাবার্তা সবই শুনেছে। তারপরে ওর মাথার ওপরে ওদের দুজনের প্রেমলীলা ওকে যেন পাগল করে তুলল। ওর মনে হতে লাগলাে যেন যে কোন মুহুর্তে সে মরে যেতে পারে। কিন্তু স্পিনেলােসিওর চুপচাপ মেনে নেয়া ছাড়া কোন উপায় ছিল না। তাই সেও তালে তালে বন্ধু পত্নীকে আদর করতে থাকে।

ধীরে ধীরে সিন্দুকের ওপরে ওদের উদ্দামতা শান্ত হয়ে এল। স্পিনেলােসিও ততক্ষণে নিজেকে সংযত করে নিয়েছে। শেষে অনেক ভেবে নিজেই এই উপলদ্ধিতে এল যা স্বাভাবিক জেম্পা তাই করেছে। ওর অপরাধের এটাই শান্তি হওয়া উচিত। এরপর জেম্পা যদি চায় তাহলে এবার থেকে ও জেম্পার প্রকৃতই বিশ্বস্ত বন্ধু হয়ে উঠবে। আর তার বউ ত জেম্পাকে বন্ধু করে নিয়েছে।

জেম্পা স্পিনেলােসিওর বউকে ছেড়ে দিয়ে কোঁচে এসে বসল। স্পিনেলােসিওর, বউ আগােছালাে- পােষাক গুছােতে গুছােতে বলল, ‘ -কই আমাকে যে রত্ন দৈবে বলেছিলে দাও। ‘

‘হা নিশ্চয়ই। বলে জেম্পা শােবার ঘরের দরজা খুলে ওর বউকে ডাকল। ওর বউ, ঘরে এলে জেম্পা ওকে সিন্দুকটা খুলতে বলল। জেম্পা বউ সিন্দুকটা খুলতেই জে স্পিনেলােসিওর বউ-এর দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে হাত তুলে দেখিয়ে দিল সিন্দুকটার দিকে—যেখানে বিষাদক্লান্ত স্পিনেলােসিও মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিল।  স্পিনেলােসিওর বউ সিন্দুকের মধ্যে ওর স্বামীকে দেখে ভুত দেখার মত চমকে উঠলাে। সে এক অবর্ণনীয় মুহুর্তে। বিস্ময়ে নির্বাক ও বুঝল স্বামী সবই বুঝেছে, সবই জেনেছে ও যা করেছে।

মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিল স্পিনেলােসিও। মাত্র কয়েক হাত দুরে দাঁড়িয়ে প্রিয়তম বন্ধু জেম্পা। অস্বস্তিকর কয়েকটা মুহর্তে কেটে গেল নীরবে। জেম্পাই প্রথম নীরবতা ভাঙ্গলাে। স্পিনেলােসিওর বউকে বলল   ‘এই নাও তােমার সেই রত্ন-যা তােমাকে দেব বলে কথা দিয়েছি। বলে স্পিনেলােসিওর দিকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।

স্পিনেলােসিও ধীরে ধীরে বেরিয়ে এলাে সিন্দুকটা থেকে। বলল, বন্ধু এটাই আমার নিয়তি ছিল, যা হবার তা হয়ে গেছে। কিন্তু এখনও সুযোেগ আছে-এসাে আমরা আবার সেই আগের মত নতুন করে বন্ধুত্ব গড়ি।

একটু থেমে স্পিনেলােসিও আবার বলল, ‘এতদিন তাে আমরা কোন কিছুই একা ভােগ করিনি—যা পেয়েছি দুজনে সমান ভাবে ভাগ করে নিয়েছি। এবার থেকে এসাে আমরা আমাদের স্ত্রীদেরও সমান ভাবে ভাগ করে নিই।’ কথা শুনে মুখে লাল হয়ে যায় লজ্জায়। আর সলজ্জ মুচকি হাসি ফোটে স্ত্রীদের চোখে মুখে। লজ্জায় আরম্ভ হয়েও যেন এ প্রস্তাবে স্ত্রীদের আনন্দ ধরে না।

জেম্পা স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে সানন্দে মত দিল বন্ধুর প্রস্তাবে। ওরা চারজনে খুশী মনে বসল ব্রেকফাস্টের টেবিলে। সেদিন থেকে দুই বন্ধু পেল দুই জন করে স্ত্রী—ওদের স্ত্রীরাও পেল দুজন করে স্বামী।

Leave a Reply