রঘুবংশ – কালিদাস

›› কবিতার / কাব্যের অংশ  

…..ক্ৰমে প্রথম গর্ভসঞ্চারের অবসাদ কমে যাওয়ায় ধীরে ধীরে তাঁর দেহ অবার পুস্ট হলে তিনি শোভা পেলেন, পুরনাে পাতা করে গেলে রমণীয়-প-লবে মণ্ডিত হয়ে লতা যেমন শােভা পায় তেমনি। কিছুদিন গেলে তাঁর ঈষত্নীল বৃন্তমণ্ডিত সপুষ্ট স্তন দুটি ভ্রমর-নিবন্ধ দুটি সুঠাম পুস্পমুকুলের শ্রীকে ম্লান করে দিল।……

………একদিন

তিনি (রামচন্দ্র ) নিজের প্রভাবে এক বিশাল গাছের ছায়াকে স্থির করে রেখে তারই নিচে সীতার কোলে মাথা রেখে ক্লান্ত শরীরে একটু শুয়েছেন।

হঠাৎ

একটা কাক এসে তাঁর ( সীতার ) স্তনযুগলে নখের আঁচড় কেটে দিল। বমীর। উপভােগের চিহ্নে সে যেন দোষ দেখতে পেয়েছিল।………

…….কামতরঙ্গে অবগাহন করে তিনি বিলাসিনীদের যৌবনউন্নত স্তনের অতল কমলযুক্ত এবং গােপন অভিসারগৃহযুক্ত দীর্ঘিকাসমূহের জলে বিহার করতেন।……

………তিনি নিত্যনতুন কাম্যবস্তুর সনধানে তৎপর, প্রেয়সীরা তাই সম্ভোগকে অর্ধসমাপ্ত রেখে তাঁর মিলনের আনন্দকে অপর্ণ’ রাখতেন।…

…….অভিসারের নির্দিষ্ট রাত্রিতে তিনি দুতীর জ্ঞাতসারে (কামিনীর) পশ্চাদ্দেশে উপস্থিত হতেন এবং প্রিয়ার বিরহকাতর প্রলাপবাক্য ( মজা করে) শুনতেন।……..

……..প্রসাধনচর্ণে পিঙ্গলবণ, ছিন্নমালায় পর্ণ, ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন মেখলাশােভিত এবং অললাঞ্ছিত শয্যাই সেই বিলাসীর বিভিন্ন রতিবিলাসের কথা প্রকাশ করে দিত।

তিনি নিজে ললনাদের চরণে অলরাগ পরিয়ে দিতেন, কিন্তু তাদের বসন শিথিল হয়ে পড়লে শুধুমাত্র মেখলাযুক্ত নিতবে দষ্টি আকৃষ্ট হওয়াতে তিনি আর তেমন অভিনিবেশ করতে পারতেন না। 

চুম্বনকালে তারা মুখ ফিরিয়ে নিত, মেখল ছিন্ন করতে গেলে হাত চেপে ধরত, এইভাবে ইচ্ছায় বাধা পেলেও তাঁর বধসম্ভোগের কামাগ্নি জলতেই থাকত।

দর্পণে পরিভােগচিহ্নগুলি-দেখতে-থাকা কামিনীদের পশ্চাদ্দেশে পরিহাস সহকারে দাঁড়িয়ে তিনি তার প্রতিবিম্ব দর্শনে তাদের লজ্জাবনতমখী করে দিতেন।

শয্যাত্যাগকালে প্রণয়িনীরা কোমল বাহবন্ধনে তাঁর কাঠালিঙ্গন করে চরণের অগ্রভাগ দিয়ে তাঁর পদদ্বয় পর্শ করে দাঁড়িয়ে তাঁর কাছে রজনীশেষের চুম্বন প্রার্থনা করত।  “ নবীন যুবক ( অগ্নিবর্ণ ) দর্পণতলে ইন্দ্রকে হার-মানানাে নিজের রাজবেশ নিরীক্ষণ করে তত তৃপ্তি পেতেন না, যতটা তিনি রমণীগণের পষ্ট পরিভােগচিহ্ন দেখে প্রীত হতেন।

বন্ধুর কাজের ছলে তিনি পাশ কাটিয়ে চলে গেলে চঞ্চল তাঁকে প্রণয়িনীরা চুলের মুঠি ধরে বলত—শঠ ! তােমার পালাবার ছলচাতুরী আমরা বেশ বুঝি। | তাঁর নির্দয় রতিশ্রমে ক্লান্ত কামিনীরা ‘কণ্ঠস’ নামে আলিঙ্গনের ছলে তাঁর বিশাল বাহদায়ের মধ্যস্থলে (বক্ষে ) শয়ন করলে তাদের বিশাল স্তনমর্দনে রাজার অঙ্গরাগ লিপ্ত হত।

রাত্রিতে মিলনের উদ্দেশ্যে তিনি কুট্টিনী-নির্দেশিত পথে গােপনে অগ্রসর হলে সুন্দরীরা তার সামনে এসে তাকে টেনে নিয়ে বলত–‘কামুক! অন্ধকারে লুকিয়ে আমাকে বঞ্চনা করবে ?

চাদের কিরণে সারারাত প্রস্ফুটিত থেকে কুমুদবন যেমন দিনে নিমীলিত থাকে, তিনিও রমণীসংসর্গে সমস্ত রাত্রি জেগে জেগে কাটিয়ে দিনে নদ্রিত থাকতেন।………..

Please follow and like us:

Leave a Reply