মেঘদুত – কালিদাস

›› অনুবাদ  ›› কবিতার / কাব্যের অংশ  

অনুবাদঃ ডঃ মুরারিমোহন সেন

………..বিদিশা নগরীর উপকণ্ঠেই এক সুন্দর পাহাড়-নাম নীচে সেই পাহাড়ে বিশ্রাম নেবার জন্যে কিছুক্ষণ অপেক্ষা কোরাে। তােমার সংস্পর্শে এলে সেখানে প্রস্ফুটিত কদম্ব পুলকিত হয়ে উঠবে। সেখানে নির্জন গিরিগুহায় যৌবনবিলাসী প্রেমিকের দল বিলাসিনী রমণীদের সঙ্গে মিলিত হয়-তাদের সবাসিত অঙ্গের পরিমলে গিরিগুহাগুলি সুগন্ধে পূর্ণ হয়ে ওঠে।…….

…….এই বিশালায় প্রভাতে শিপ্রার তরঙ্গবাহী শীতল বায় বিকশিত পদ্মের গন্ধে মিশে সৌরভময় হয়ে ওঠে। সেই বায়ুতে ভেসে আসে সারসদলের মদকল মধুর ধনি। রমণীদের তিনিপণ প্রিয়তমের মতাে সেই শিবায়, রাত্রির রতিশ্রমে ক্লান্ত প্রিয়ার গ্লানি দুর করে দিচ্ছে।

……..সেখানে ভােগরতা সুন্দরীগণ যখন আবেগে উচ্ছসিত হয়ে ওঠে-তাদের পট্টবসন সহজেই খসে পড়ে-কটিদেশের বসনগ্রন্থি শিথিল হয়ে আসে-সেই শিথিল গ্রন্থি অনুরাগহেতু চঞ্চল হস্তে আকর্ষণ করেন তাদের প্রিয়তমগণ। তখন লজ্জায় বিমঢ়া সুন্দরীগণ একটি চর্ণ পদার্থ নিয়ে উজ্জল প্রদীপ শিখা লক্ষ্য করে ছুড়ে দেন, কিন্তু তাদের সেই চেষ্টও ব্যর্থ হয়ে যায় ! কেননা, এ যে রত্নপ্রদীপ-নেভানাে যায় না !……..

………অলকার রতিমন্দিরে শয্যার উপরে মণির ঝালর, সেখানে চন্দ্রকান্তমণি ঝােলানো। রাত্রিতে মেঘের অবরােধ থেকে মুক্ত চাঁদের কিরণ এসে পড়ে চকাত মণির উপর-তখন তা থেকে বিন্দ-বিন্দ, শীতল জলকণা ঝরতে থাকে। শয্যায় প্রিয়তমের গাঢ় আলিঙ্গনে অবধ রতিশ্ৰান্তা রমণী-ঐ জলকণার বর্ষণে তার অঙ্গ জড়ায় !………

………অলকার কামী ব্যক্তিদের গৃহে অক্ষয় রত্ন বতমন। কুবের-ভবনের বাইরে ‘বৈভ্রাজ নামে যে উপবনটি আছে সেখানে তারা এসে বিচিত্র গপ বলে সময় কাটান-তাদের সঙ্গে থাকেন অসরা ও কিন্নরের দল। কিন্নরগণ মধুর কণ্ঠে অলকাপতি কুবেরের যশোগাথা গান করেন।………..

………অলকায় রাত্রির অন্ধকারে অভিসারিকার দল যখন যাত্রা করেন তখন দ্রুতগতির ফলে তাদের অলক থেকে মন্দারকুসুম খসে পড়ে ; চন্দন প্রভৃতির দ্বারা দেহে অকিত লতাপাতার ছাপ ঝরে পড়ে ; কোথাও কণের বর্ণালঙ্কার ধুলায় লটায়, কোথাও স্তন থেকে মুক্তার মালা, কোথাও আবার স্তনের চাপে হার হিড়ে পথে পড়ে ! তাই সযেদিয়ে সবাই ববতে পারে, কোন পথে রমণীগণ তাদের নৈশ অভিসার করেছিলেন।…………

…….তুমি যাকে দেখতে পাবে তিনি তন্বী, তিনি শ্যামা, পক দাড়িম্ব বীজের মতাে সক্ষম শিখর যুক্ত তার দাঁত, পক্ক বিবফলের তুল্য তার অধর, ক্ষীণ কটি, গভীর নাভি, নিতবের গরভারে শিথিল গতি, স্তনভারে সমানা আনত-তোমার মনে হবে যুবতী সৃষ্টিতে তিনিই বিধাতার প্রথম আদর্শ।

তাকেই জানবে আমার দ্বিতীয় জীবনরুপে!……..

…….অঙ্গের আভরণ সে খুলে ফেলেছে-গভীর দুঃখে বারবার সে তার কোমল দেহলতা শয্যাতলে এগিয়ে দিচ্ছে। তাকে দেখলে তোমারও নিশ্চয়ই নবজলময় অবর্ষণ হবেকেননা, যাঁদের হৃদয় করণাসিক্ত তারাই অন্যের দুঃখে অভিভূত হয়ে থাকেন।….

………তােমাকে দেখলে সরস কদলী স্তম্ভের মতো তার সেই বাম উর, কেপে উঠবে-সেই ঊরতে এখন আর আমার নখক্ষতের চিহ্ন পড়ে না। আগে কোমরে যে মকার ঝালর সে পরত তাও সে ত্যাগ করেছে-সম্ভোগের শেষে সেই ক্লান্ত উরতে আমি সংবাহন’ করতাম।…………

Leave a Reply