কসবি – হরিশংকর জলদাস

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

…………কখনাে কখনাে কাস্টমারের সঙ্গে কারবার শেষ করে দেবানী যখন খেলাঘর থেকে বেরিয়ে আসে, তখন তার সমস্তমুখে এক ধরনের অনুরাগের প্রলেপ মাখানাে থাকে। সেটা অল্প সময়ের জন্যে। দীর্ঘ বিশ বছরের অভিজ্ঞতায় সেলিম এটা বুঝে গেছে, অনুরাগের আভাটি অল্প সময়ের জন্যে হলেও খাঁটি। এই ধরনের মেয়েরা মনমতাে কাস্টমার পেলে কিছু সময়ের জন্যে বাস্তবতাকে ভুলে যায়। প্রকৃত প্রেমিকার শিহরণ অনুভব করে শরীরে, কখনাে কখনাে মনেও। শরীরের শিহরণ বেশিক্ষণ টিকে থাকে না, অন্য কাস্টমার এসে তা দুমড়ে মুচড়ে দেয়। শরীর বেচাকেনার এই বাজারেও মনের শিহরণ অনেকক্ষণ, মাঝে মাঝে কয়েকদিনও স্থায়ী হয়। তখন দেবযানীদের মতাে মেয়েদের মন থাকে ফুরফুরে, আচরণ হয় গেরস্থি নারীর মতন। হয়তাে কোনাে একরাত কোনাে কাস্টমার শরীরের সঙ্গে সঙ্গে দেবযানীদের মনও জাগাতে পারল । সেই কাস্টমার তার কাজ শেষ করে চলে গেল, ঘরের বউয়ের সঙ্গে বা প্রেমিকার সঙ্গে স্বাভাবিক জীবন শুরু করল, সেই কবে ক্ষণিক প্রয়ােজনে বা উত্তেজনায় দেবযানীদের অতিথি হয়েছিল ও হয়তােবা ভুলে গেল। কিন্তু দেবযানীরা মন-জাগানিয়া সেই অতিথিকে ভুলতে পারে না। ক্ষণে ক্ষণে শুধু মনে পড়ে। সেই সুখ-স্মৃতি নিয়ে অনেক জঘন্য কাস্টমার পার করে তারা। আশায় থাকে, সামনের কোনাে একদিন মন-জাগানিয়া অন্য কোনাে কাস্টমার আসবে তার ঘরে।

দেবযানীরও মাঝেমধ্যে এরকম হয়। খেলাঘর থেকে বেরিয়ে এলে দেবযানীকে অস্বাভাবিক প্রশান্ত দেখায়। সেলিম তখন তাকিয়ে তাকিয়ে দেবযানীকে দেখে। দেবানীর চোখে তখন কৃত্রিম ঝিলিক থাকে না, ঠোটের কোনায় কাস্টমার-টানা হাসি থাকে না, ডান স্তনটা আঁচলের বাইরে থাকে না। এক নিবিড় শান্ত ভাব তখন দেবযানীকে ঘিরে রাখে । মাথায় আঁচল তােলা। থাকে তখন তার। কণ্ঠে উগ্রতা থাকে না। গিন্নির মতাে মােলায়েম কণ্ঠে কথা বলে।

আবার যেদিন তার ঘরে শরীর-চাটা কাস্টমার আসে, পশুর মতাে শক্তি প্রয়ােগ করে পাওনাগণ্ডা বুঝে নিতে চায়, সেদিন দেবানীর মন তিরিক্ষি হয়ে ওঠে। শরীরের আনাচে-কানাচে হাতাতে থাকা এই কাস্টমারদের ঘেন্না করে দেবানী। এই ধরনের কাস্টমারকে শালার বাইচ্চা’ বলে দেবযানী। শালার বাইচ্চারা কাম শেষ করে বেরিয়ে গেলে সে ঝিম মেরে বিছানায় শুয়ে থাকে।……….

……..আজ সেলিম সেই সেকান্দরকে নিয়ে এসেছিল দেবযানীর ঘরে । পরিচয় পেয়ে যত্নআত্তি করে ঘরেও ঢুকিয়েছিল দেবযানী । শেষ মুহূর্তে গিয়ে বিপত্তিটা বাধালেন সেকান্দর। কেন জানি, চূড়ান্ত সময়ে দেবযানীর। মলদ্বারকে বেছে নিলেন সেকান্দর হােসেন। তারপর দেবযানীর ওই চিঙ্কার ‘পােলাখাের একটারে ।

সেলিম জিজ্ঞেস করল, ‘কী অইছিল সেকান্দর, পথ ছাড়ি আপথ বেছে নিলা কেননা? তুমি বিবাহিত মানুষ, পথ না চিনার কথা তাে না!

সেকান্দর কোনাে জবাব দেন না; পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেটটা বের করে একটা সিগারেট সেলিমের দিকে এগিয়ে দেন, আর একটা নিজে ধরান। জ্বলন্ত সিগারেটে একটা জোর টান মেরে নাক-মুখ দিয়ে গলগল করে ধোয়া ছাড়েন। তারপর বলেন, ওই সময়ে আমার কী হল বুঝতে পারছি না। দেবযানীর পুষ্ট স্তন, চেকনাই পেট কোমর দেখে আমার মাথাটা হঠাৎ এলােমেলাে হয়ে গেল। বউয়ের চিমসে স্তন, কুঁচকানাে পেট আমার চোখের সামনে ভেসে উঠল। আমি ঝাপিয়ে পড়লাম দেবযানীর ওপর। তারপর কী হল সঠিক করে এখন আর বলতে পারব না। হুঁশ এল তােমার দেবযানীর চিৎকারে। আমাকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে সে ওইভাবে চিৎকার করে উঠল। কী লজ্জা!’

বিস্ময় আর কৌতুকভরা চোখে সেলিম তাকিয়ে থাকে সেকান্দরের দিকে।…………

…….সেদিন সাঁঝবেলাতে পদ্মাবতীর ঘরে এক সাহেব এল ইউরােপিয়ান । সুঠাম দেহ। বয়স তেত্রিশ না তেতাল্লিশ দেখে বােঝার উপায় নেই। এত সুশ্রী বিদেশি এপাড়ায় কমই দেখা যায় । রতইন্যা দালালই নিয়ে এসেছিল পদ্মাবতীর কাছে। না না করেও এক পর্যায়ে সাহেবটিকে বিছানায় নিতে রাজি হয়ে গিয়েছিল পদ্মাবতী ।

চেহারা ম্যাদামারা হলেও পদ্মাবতীর বিছানায় খেলাটা দেখালাে সে অবাক হবার মতাে। এতদিন পদ্মাবতীর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, এই বেশ্যাপাড়ায় যত মাগি আছে, তাদের মধ্যে কলাকৌশলে সে-ই সেরা। কিন্তু এই সাহেব তার সঙ্গে শুতে এসে দেখিয়ে দিল—অনেকগুলাে কৌশল তার অজানা। সে বেশ উপভােগ করছিল। সাহেবটির পদ্ধতিগুলাে শিখেও নিচ্ছিল। মনে মনে

ভাবছিল–এই নতুন কৌশলগুলাে দিয়ে বাঁধা কাস্টমারদের চমকে দেবে। একজন সাধারণ কাস্টমারকে যতটুকু সময় দেয় দামি বেশ্যারা, তার চেয়ে ঢের ঢের বেশি সময় দিয়ে ফেলেছিল পদ্মাবতী, ওই সাহেবকে। সময় গড়িয়ে গিয়েছিল সন্ধে থেকে রাতের দিকে।

ঘরের বাইরে মােক্ষদার আওয়াজ শুনে বাস্তবে ফিরেছিল পদ্মাবতী । মােক্ষদা দরজার সামনে দাড়িয়ে উচ্চস্বরে বলেছিল, ‘সদাগর আইছে, আবদুল জব্বার সদাগর। বসার ঘরে বই রইছে।’

পদ্মাবতীর তখন রতিক্লান্ত দেহ, চেহারা আলুথালু। সাহেবের উদোম শরীরের পাশে সে তখন তার নগ্ন শরীরটি বিছিয়ে রেখেছিল। | সওদাগরের সামনে দিয়ে বিদেশিটি মাথা উঁচু করে বেরিয়ে গেল। যাওয়ার আগে পদ্মাবতীর ঠোটে গাঢ় চুম্বনও এঁকে দিয়েছিল সে। বাম হাতে প্যান্টের চেইন টানতে টানতে ডান হাতে পেছনের পকেট থেকে মানিব্যাগটি বের করে এনেছিল। এক গােছা ডলার পদ্মাবতীর নগ্ন স্তন দুটোর মাঝখানে রেখে গালটা আলতাে করে টিপে দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিল সাহেবটি।…………

আবদুল জব্বার সওদাগরের আদেশ শুনে মােক্ষদা তাড়াতাড়ি ভেতরঘরের দিকে গেল। পদ্মাবতীর ঘরের দরজা ভেজানাে। দরজা ঠেলে ঘরের ভেতরে ঢুকে দেখল, পদ্মা শুয়ে আছে। চোখ বােজা শরীর উদোম শুধু বালিশের পাশে অনেকগুলাে ডলার জড়াে করা। মােক্ষদা ধীরপায়ে খাটের পাশে গিয়ে চাপাস্বরে বলল, সদাগর রাগি গেছে গই। জিজ্ঞেস কইচ্ছে আন্নে আইবেন কিনা?’ | মােদার কথা পদ্মাবতী কানে তুলল কিনা বােঝা গেল না। শুধু ডান হাত দিয়ে স্তনদুটো আড়াল করে বাম দিকে কাত হয়ে শুলাে।

মােক্ষদা আবার বলে উঠল, ‘আন্নে হুইছেন নি …?

তার কথা শেষ হবার আগেই ডান হাত ওপর দিকে তুলল পদ্মাবতী। সেই হাতের ভাষা—চুপ থাক মােদা। কথা বলিস না।

মােক্ষদা সেই হাতের ভাষা বুঝল। কিন্তু ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেল না। একদৃষ্টিতে পদ্মাবতীর পুষ্ট, পেলব, গােলাকার স্তন দুটোর দিকে তাকিয়ে থাকল। অজান্তে নিজের স্তনের ওপর মােক্ষদার বাম হাতটা উঠে এল। একটা দীর্ঘশ্বাস মােক্ষদার বুক চিড়ে বেরিয়ে এল। ব্লাউজের নিচে চুপসে যাওয়া তার স্তন দুটো স্তুপাকার মাংসপিণ্ডের অস্তিত্ব ঘােষণা করছে।…………

………তার কাস্টমারদের অধিকাংশই ধনী। নানা বয়সের তারা, নানা রুচিরও। একটা জায়গায় তাদের গভীর মিল। পদ্মাবতীর শরীর নিয়ে তারা যখন খেলে, তখন সবাই উন্মাদ হয়ে ওঠে। মদ তাদের উন্মাদনা বাড়ায়। মদে ও নারীতে তারা সাঁতার কাটে। তখন তাদের রুচি সিকেয় ওঠে। পদ্মাবতীর ঠোট নিয়ে, স্তন নিয়ে, শরীরের নানা ভাঁজ নিয়ে ওরা এতই উন্মত্ত হয়ে ওঠে যে, মানুষ পদ্মাবতীর অস্তিত্ব তাদের চিন্তা থেকে খসে পড়ে। পদ্মাবতীর কষ্ট তাদের কাছে আনন্দ বলে মনে হয়। | তারা যখন মর্দনে চুম্বনে পশু হয় ওঠে, পদ্মাবতী তখন ব্যথায় কঁকিয়ে ওঠে। পদ্মাবতীর কঁকিয়ে ওঠাকে ওরা শীল্কার মনে করে। ওদের দৈহিক নির্যাতনে পদ্মাবতীর শরীর যখন কুঁকড়ে যায়, ওরা তখন ভেবে নেয়-চরম শিহরণে পদ্মার শরীর বুঝি দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে। দেহে অনেক কষ্ট নিয়ে, মনে নিবিড় ঘৃণা নিয়ে পদ্মাবতী অস্থিরভাবে অপেক্ষা করতে থাকে রমণেচ্ছুদের রতিপাতের।……….

……..পদ্মাবতীকে দু’বাহু বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরতে গেলে পদ্মা বলে ওঠে, ‘মানুষের সামনে জড়াজড়ি করবে নাকি সওদাগর?’ বলেই খিলখিল করে হেসে ওঠে পদ্মা । নিজেই এগিয়ে এসে সওদাগরকে জড়িয়ে ধরে, উন্নত স্তন দুটো দিয়ে পদ্মা সওদাগরের বুকে চাপ দেয়। তারপর সেই জড়ানাে অবস্থায় সওদাগরকে নিয়ে শােবার ঘরে ঢােকে। দরজা ভেজিয়ে দেয়।………

…….ক্ষোভটা ভেতরে জমাট বেঁধে ছিল যশােদার । রাতে পাশে শুয়ে বুকে হাতটা রাখার সঙ্গে সঙ্গে ধমকে উঠেছিল যশােদা, লাজ করে না তােমার। রাতে রাতে বউয়ের সঙ্গে | শােয়, রঙ্গতামাশা কর । বউয়ের আবদার রাখার মুরােদ নেই?’

কী অইলাে আবার? এত রাইগ্যা রাইগ্যা কথা কইতাছ ক্যান?’ শৈলেশ নরম গলায় জিজ্ঞেস করে। | এক ঝটকায় ব্লাউজের তলা থেকে শৈলেশের ডান হাতটা সরিয়ে দিয়ে যশােদা তেতাে গলায় বলে, ‘প্রতিদিন বউয়ের বুনি চুষতে ভাল লাগে, গাল কামড়াতে ভাল লাগে, ঠোট চাটতে ভাল লাগে; সেই বুনি-গাল-ঠোট তেলতেইল্যা রাখবার জইন্যে স্নাে আইনতে বইল্যে ভুলি যাও ক্যান?……..

……..এই মাসির নাম মােহিনী মােহিনীবালা দাসী। এই মােহিনী একজন জলদাসী। দীর্ঘদেহী। একহারা গড়ন তার। একসময়ে দুধে আলতায় জড়ানাে গায়ের রং ছিল তার। এখন অবশ্য তার শরীরে চেকনাই নেই। বয়স তার পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই। গলার নিচের এবং কোমরের আশপাশের চামড়া কুঁচকাতে শুরু করেছে। তবে স্তন তার নাভি বা পেটের কাছে এখনাে নতজানু হয়নি। দূর থেকে তাকে দেখে কাস্টমারদের চোখ এখনাে চকচক করে ওঠে। চেহারার মতােই মােহিনীর ব্যক্তিত্ব।………

……..কৃষ্ণা মায়ের মতাে দীর্ঘদেহী। দুর্ভার অভাবের মধ্যেও কৃষ্ণা বেড়ে উঠতে লাগল। তার স্তনযুগল ছেড়া শাড়িতে আর ঢেকে রাখা যাচ্ছে না। তার দু’বাহুর সুডৌল গড়ন, তার টানা চোখের চাহনি, একমাথা ঝাঁকড়া চুল এসব কিছু তপন দত্তের চোখে পড়তে লাগল।………

………এক দুপুরে, সিলেটগামী ট্রেনটি সবে স্টেশন ছেড়ে গেছে, তপন কৃষ্ণাকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে মফজলের ঘরে আনে। মফজল তখন খেতে গেছে। খিল দিয়ে কৃষ্ণার হাত ধরল তপন, বুক-মুখ চাটাচাটি করল। আরও এগুতে চাইলে কৃষ্ণা রাজি হল না। শ’দুয়েক টাকা কৃষ্ণার হাতে গুঁজে দিয়ে ঘরের দরজা খুলল তপন।

এইভাবে বুক চাপাচাপি, ঠোট চাটাচাটি চলতে লাগল। সেটা কম দিন নয়, প্রায় বছর খানেক। একটা সময়ে তপন কৃষ্ণার শরীরের জন্যে কাতর। হয়ে উঠল। কৃষ্ণার এককথা—বিয়ে ছাড়া তপনকে শরীর দেবে না।

স্নান সেরে, বেয়ারাকে দিয়ে নিচের রেস্টুরেন্ট থেকে ভাত-মাংস এনে খেল দু’জনে। তারপর শুয়ে পড়ল এক বিছানায়। তপন আদর করে, যৌন উত্তেজনাকর কথা বলে, কৃষ্ণার নানা গুপ্ত জায়গায় সােহাগি স্পর্শ দিয়ে কৃষ্ণাকে চাগিয়ে তুলল। বিয়ের আগে শরীর দেওয়া যাবে না—এই শর্তটি কৃষ্ণা একটা সময়ে শিথিল করল। শরীর তুলে দিল সে তপনের হাতে । তপন পূর্বের বৈবাহিক অভিজ্ঞতা এবং বর্তমানের উত্তেজনাকে পুঁজি করে কৃষ্ণার শরীরে একবার, দুবার, বারবার অবগাহন করতে লাগল। বিকেলভর, রাতভর এবং পরবর্তী তিন চার দিন ধরে অবগাহন চলল। এর মধ্যে বিয়ের কথা তুললে কৃষ্ণাকে আদরে সােহাগে ভরিয়ে দিয়ে বুকে টেনে নিয়ে তপন বলল, “আরে হবে হবে। একটু সবুর কর। মফজল আসুক।’

‘মফজল? মফজল ক্যান?’ বিস্ফারিত চোখে জিজ্ঞেস করে কৃষ্ণা।

“আরে, আমাদের বিয়েতে একজন সাক্ষী লাগবে না? আসবার সময় তাকে তিন চার দিন পর আসতে বলে এসেছি। এই সােনালি বােডিং-এর নাম ঠিকানা তাে মফজলই আমাকে দিয়েছে। কৃষ্ণার গালে-গলায়-বুকে হাত বুলাতে বুলাতে বলে তপন। | এইভাবেই চলল বেশ কিছুদিন। তপনের যা খাওয়ার চেটেপুটে খেল, যা দেখার নয়নভরে দেখল, যা নেওয়ার কড়ায়-গণ্ডায় আদায় করল…………

……….আজ কুয়াপারে প্রথম এসেছে আইরিন ও বনানী। আইরিন পাতলা, লম্বাটে; তার তুলনায় বনানী খাটো। বনানীর স্তন সুডৌল ও আকর্ষণীয় । এজন্যে তার অহঙ্কার আছে। কথায় কথায় সে স্তনের প্রসঙ্গ নিয়ে আসে।……

………তাইলে মনােযােগ দিয়া হুন। বনানী বলতে শুরু করে। আমরা যখন এই পাড়ায় প্রথম আসি তখন আমাগাের বুনি সােজা থাকে। বুনি তাে বুঝছাে, ভদ্দরনােকরা যারে এস্তন কয়। কুত্তার বাইচ্চা হারামজাদারা রাইত দিন টাইন্যা চুইষ্যা হেইগুলির বারােটা বাজাইয়া দেয়। অত্যাচারে অত্যাচারে বুইল্যা পড়ে হেইগুলি। মাঝে মইধ্যে কোমরেও চইল্যা আসে।

বনানী কিছুক্ষণ চুপ মেরে থাকে। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে, “আমাগাের সম্পদ অইল আমাগাের বুনি। রাতকুটুমরা আমাগাে চয়েস করে ওই বুনির লাইগ্যা। যেই মাইয়ার বুনি যত খাড়া, তার কাস্টমার তত বেশি। হুন, তােমাগাের অনেক আগে আমি এই পাড়ায় আইছি; তােমাগাের চাইতে আমার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। যে মাইয়ার বুনি পইড়া যায়, হের কোনাে দাম থাকে না কাস্টমারের কাছে। মাইয়ারা তাই বুনি লইয়া চিন্তিত থাকে। সােজাবুনি দিয়া মাইয়ারা কাস্টমারদের চোখ ধাধানোের চেষ্টা করে।…..

…….‘তিন প্রকারের স্তনের কথা কইতাছিলা তুমি।’ আইরিন বনানীকে মনে করিয়ে দেয়।

কারও কারও বুনি টাইট। ব্রেসিয়ার পরলে তার মইধ্যে আপনা-আপনি ঢুইক্যা পড়ে। কারও বুনি আবার সামান্য ঝুইল্যা যায়। ব্রেসিয়ার পইরা বুনির তলায় হাত দিয়া ব্রেসিয়ারের খােপে ঢুকাইয়া দিতে হয়। আবার অনেকের বুনি বুইল্যা কোমরে চইল্যা আসে। কোমর থেইক্যা বইট্যা বইট্যা হেইগুলি ব্রেসিয়ারে ঢুকাইতে হয়। আমি ওইগুলারে কই বটানাে বুনি। মমতাজরও বুনি ঝুইল্যা কোমরে নামছে। তাই হের নাম দিছি বটাবুনি।………

……….সন্ধে হবার সঙ্গে সঙ্গে পতিতাপল্লির বাড়িগুলাে প্রাণ পেতে থাকে। মেয়েরা সেলােয়ার-কামিজ পরে, কপালে উজ্জ্বল টিপ লাগিয়ে, ওড়নাকে পিঠের দিকে ঝুলিয়ে স্তন দুটোকে আকর্ষণীয় করে ঘরের কাছে পথ জুড়ে প্রতীক্ষা করতে থাকে।….

…..কাল এক বেডা আইল ঘরে, সঙ্গে তার বন্ধু। আগে দুই একবার আইছিল হে আমার ঘরে। আবদার ধরল দুইজনে এক সাথে আমার ঘরে যাবে। আমি রাজি অইলাম না। পাঁচশ টাকার লােভ দেখাইল। রাজি অইলাম । দুইজনে দুইদিক থেইক্যা আদর করা শুরু করল। তারপর হারামি বন্ধুটি সিগারেট ধরাইল। প্রথম ছ্যাকাটা দিল বাম বুকের বোটায়। তারপর ঝর ঝর করে কেঁদে ফেলল মমতাজ।……

………আলাে-আঁধারের জড়াজড়ি। সুন্দরী পতিতারা উজ্জ্বল আলাের তির্যক ছটা মুখে নিয়ে কাস্টমারদের লক্ষ করছে। রঙচটা গালভাঙা পতিতারা আঁধারে দাঁড়িয়েছে। তাদের বুকে মেকি স্তন। সূচিমুখ স্তন দুটোকে খদ্দেরের নজরে ফেলবার জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে।…..

……….দেবযানী এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। সজীব। তার বাহু, গণ্ড, গলা, আঙুল, পা, কোমর—সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কামদ হয়ে উঠেছে। স্তন পুষ্ট, ভারে ঈষৎ নমিত । এতে বুকের সৌন্দর্য আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এখন তার চোখের নিচে কালি নেই, মুখে ম্লান হাসি নেই। দীর্ঘ চুলে যত্নের চিহ্ন। দেবযানী এখন যথার্থ কাম উদ্রেককারী রমণীতে পরিণত হয়ে গেছে। সে এখন সক্ষম।…………..

Please follow and like us:

Leave a Reply