ইউসুফ ও জুলেখা – সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

অমর্ত্য প্রেমকথা গ্রন্থ থেকে

…….বলে মােহময়ী মিশরসুন্দরী দরজা বন্ধ করে দেয়। মদিরাচ্ছন্ন চোখে লাস্য রেখে অপাঙ্গে হাসে, এবং ইউফের হাত ধরে ডাকে—এস।

ইউসুফ কেপে ওঠে। কথা বলতে পারে না।

আর জলেখা সহসা নিজের অঙ্গাবরণ উন্মােচন করতে থাকে। ঝরা পাতার মতাে ছড়িয়ে পড়ে গালিচায় সদশ্য পরিধেয় খণ্ড। তার সুডৌল স্তনযুগলে হাহাকার করে বুঝি কেদে ওঠে সাহারা মরুভূমির বিশাল তৃষ্ণা। সে ইউসফকে আকষণ করে। অধস্ফুট স্বরে বলে—এস! আমার বুকে ওঠস্পর্শ করাে প্রিয়তম!

আর তার বলিব্যাকুল নগ্নদেহের চাপে ও তীব্র আন্মেষে থরথর করে কাঁপে | বেথেল তৃণভূমির এক সরল বালক।

– ইউসফ! প্রিয়তম ইউসফ !•••আসঙ্গলিপ্সু প্রেমিকা নারীও ছটফট করে এক গভীরতর জরভাবে। সে ইউসুফের গ্রীবা আকর্ষণ করে ঠোঁটে ঠোঁটের স্পর্শ পেতে চায়। তারপর তার জামা খামচে ধরে হিংস্রহাতে। নখের আঁচড়ে ছিড়ে ফেলে। ইউসুফের বক ক্ষতবিক্ষত করতে থাকে। কম্পিত ঠেীটে বলে তুমি কি জীবিত মানুষ, না প্রতিমতি ইউসুফ ?

সহসা ইউসুফ তাকে সজোরে ধাক্কা দেয়। আছাড় খেয়ে পড়ে জুলেখা। ইউসফ দরজা খুলে পালাতে চায়। | অপমানিতা জুলেখা অমনি আর্তনাদ করে ওঠে। চিৎকার করে ডাকে প্রতিহারিণীদের। সঙ্গে সঙ্গে সাড়া পড়ে যায় মহলে। বাঁদী-বান্দা পরিচারক পরিচারিকা আর কাফ্রি প্রতিহারিণীরা এসে দরজার সামনে ভিড় করে দাড়ায়। ইউসফ দরজা খুলে পালাবার চেষ্টা করতেই ওরা তাকে ধরে ফেলে।

জলেখা দ্রুত একখণ্ড বম্বে নগ্নদেহ ঢেকে হিংস্র দষ্টিতে ইউসুফের দিকে | তাকিয়ে চাপাগজনে বলে-তােরা সাক্ষী থাক। ওই শয়তান গােলাম আমার | বেইজ্জতী করতে ঢুকেছিল আমারই শয়নকক্ষে। এখনই ওকে প্রাসাদের রক্ষীদের হাতে তুলে দে।

ওরা তাকে প্রহার করতে-করতে নিয়ে যায়। তখন দরজা বন্ধ করে অতৃপ্তা, অভিমানিনী জলেখা নির্জন শয্যায় আছাড় খেয়ে পড়ে এবং ফুলে ফুলে কাঁদতে থাকে।………

Leave a Reply