রঙে রঙে রামধনু – হুমায়ুন কবীর

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

……..আফরােজ যখন ফিরল নিধির দিকে, গাঢ় কমলা রঙে মাখামাখি ওর মুখ, ওর সারস পাখির ডানার মতাে লম্বা হাত দুটো, গলা আর চওড়া বক্ষ বিভাজিকা। কমলা রং ছিটকে বেরােচ্ছে ওর কানের বিশাল গােল-গােল দুটো রিং থেকে আর কণ্ঠনালির নীচে ছােট্ট হীরের টুকরাে থেকেও।…….

……..আফরােজের দিকে কোণাকুণি সামান্য ঝুঁকে আছে নিধি। আর সেটাই হয়েছে যত কাল! নিধির পুরুষ্ট বুকের উপচে পড়া আফরােজের চোখের সামনে প্রকট, কম্পিউটর স্ক্রিনের রং-বেরঙের শাড়ির ডিজাইনের চেয়ে। যেটা অনেক বেশি আকর্ষক। সঙ্গে হালকা পারফিউম আর নিধির শরীরের গন্ধ মিলেমিশে একাকার। নেশা ধরিয়েছে আফরােজের মনে। আফরােজের চোখ ফলাে করে নিধি। চট করে সােজা হয়ে দাঁড়ায় না নিধি, সেটা একধরনের অসভ্যতা। তাই সময় নেয়, জিজ্ঞাসা করে, “স্যার, আর ইউ স্টিল এনজয়িং দ্য বিউটি অফ সাইলেন্স?”

“নাে মাের,” সামান্য অপ্রস্তুত আফরােজ। চোখ জোড়া সরিয়ে নেয় নিধির অনেকখানি অনাবৃত শরীরের উর্ধাংশ থেকে। হাতের ডান পাশে ছােট্ট টুলে রাখা ব্রিফকেস টেবিলে তুলে নেয় আফরােজ। ইশারায় টুল দেখিয়ে নিধিকে টুল টেনে নিয়ে বসতে বলে।………..

………আলাে নিভিয়ে খাটে যায় সুরিন্দর, শুয়ে পড়ার আগেই ওর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে শ্যামলী, “আমি রুম ভাড়া নেওয়ার সময়ই ভাবছিলাম শুধু-শুধু দুটো রুম না নিতে।” সুরিন্দরের হাত ঘুরছে শ্যামলীর শরীরে। আর শ্যামলীর ঠোঁট চেপে বসেছে সুরিন্দরের ঠোঁটে। ঘণ্টাখানেক পরে ঘুমিয়ে পড়ার আগে সুরিন্দর বুঝতে পারে ওর চেয়ে শ্যামলীর অভিজ্ঞতা কিছু কম নয়। দু’দিন পরে ওরা মালদা থেকে ফিরল, পরের দিন অফিসে শ্যামলী স্বাভাবিক………..

……….“আমার সব আছে, এখন বাজার যেতে মােটেই ইচ্ছে করছে না। তুমি বরং আমার উপর একটু নজর দাও,” শরীর থেকে গাউন খুলে ফেলে শুধু অন্তর্বাস পরা তনুশ্রী সােফায় বসা অরূপকে জড়িয়ে ধরে, অরূপের মুখঠোঁট চেপে বসছে তনুশ্রীর নাভির উপর। দু’হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে শূন্যে তুলে নেয় তনুশ্রীকে। অরূপের নিজেকে এখন শাজাহান মনে হয়।……..

………..বাথরুমের বালতিতে নাইটি আর আন্ডারগার্মেন্ট ভেজানাে আছে, ওটা কেচে বাথরুমে বা বেডরুমেই শুকোতে দিতে হবে! সৌমিত্র গতকাল ফুলশয্যায় ওগুলাে নােংরা করে দিয়েছে দু’বার! তনুশ্রীর জঙ্ঘা, তলপেট, পেট আর বুকও নােংরা করে দিয়েছিল। বাথরুমে ঢুকে ঠান্ডা জলে প্রায় হাফ স্নান করেছিল অনুশ্রী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে। তাই মেজাজটা একটু বিগড়েই ছিল অনুশ্রীর। যাক গে, প্রথমদিন উত্তেজনায় এরকম হয়তাে হয়ে থাকবে। মেজাজ খারাপ থাকলেও মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েনি। এমনিতে বেশ সুস্থ এবং সবল, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এই সৌমিত্র। দিন সাতেক এরকমই চলার পর অনুশ্রী ঘাবড়ে গেল, সৌমিত্রকে নিয়ে গেল। ডাক্তারের কাছে। ওষুধ কম, অনেক পরামর্শ দিল ডাক্তার। অনুশ্রী খুব যত্ন করে ওষুধ খাওয়াল সৌমিত্রকে আর অক্ষরে-অক্ষরে ডাক্তারের পরামর্শ মানতে সাহায্য করতে লাগল। কিন্তু কোথায় কী? মাসখানেক বাদেও অনুশ্রী ভার্জিন থেকে গেল! না ভার্জিন ঠিক নয়, হাজব্যান্ডের কাছ থেকে বৈধ সঙ্গমে বঞ্চিতই থেকে গেল।………

………আফরােজ খাটে টেনে তুলেছিল অনুশ্রীকে। চূড়ান্ত মিলনের আগে জিজ্ঞাসা করল, “একটা কথা বলবে? যদিও এটা জিজ্ঞাসা করার কোনও মানে নেই, কোনও কিছু বিগড়ােচ্ছেও না এর জন্য, জাস্ট আউট অফ কিউরিয়ােসিটি বলতে পার, তুমি কি আজও ভার্জিন?” | “না স্যার। অঙ্কে আমি বরাবরই কাঁচা, কিন্তু বাবার ইচ্ছে ছিল সায়েন্স নিয়ে পড়ি। হায়ার সেকেন্ডারিতে রেজাল্ট ভাল না হওয়াতে কোনও সাবজেক্টে অনার্স পেলাম না। বাবাই বলল, বি কম পড় অন্তত, চাকরি করলে বিএ-র চেয়ে বেশি কাজে লাগবে। তাে ওই অ্যাকাউন্টেন্সি বুঝতে বাবার এক পিসতুতাে ভাইয়ের কাছে যেতাম। ওই কাকাই একদিন জবরদস্তি রেপ করল ফাঁকা বাড়ি পেয়ে। বাড়ি ফাঁকা পেতে অনেক বুদ্ধি খাটিয়েছিল আমার কাকা। তারপর আমারও ওই শারীরিক মিলনটা ভাল লাগতে লাগল, সুযােগ পেলেই আমরা মিলিত হতাম। কাকা ব্যাঙ্কে চাকরি পেয়ে চলে গেল রাঁচি, আমারও সেক্সলাইফে ইতি পড়ল। তারপর পাড়ার এক-আধজন প্রেম নিবেদন করেছে, তবে আমার পছন্দ হয়নি তাদের।”

দুটো রাত তাই ভালই কেটেছিল অনুশ্রীর। ভুবনেশ্বর থেকে ফিরে আসার পর আফরােজ আর ডাকেনি,……….

……..মৈনাকদার পাশে দু’ ধাপ কাঠের সিঁড়ি বেয়ে নামতে হবে লােয়ার ডেকে। ওখান থেকে আবার গােটা ছয়-সাত ধাপ কাঠের সিঁড়ি বেয়ে নীচের তলায় ঢুকে পড়তে হবে। অনুপমা মৈনাকদাকে পাশ কাটাতে গিয়ে ওর পীনােন্নত বুক আলতাে করে ছুঁয়ে যায় আড়াআড়ি দাঁড়ানাে মৈনাকদার বাহু। খুব সামান্যই, কিন্তু মৈনাকদার না বােঝার মতােও নয়, ওর মুখের অভিব্যক্তি আড়চোখে দেখে নেয় অনুপমা। ……..

………..একটু শীত করছে তাই এসি রিমােট হাতে নিয়ে টেম্পারেচার চব্বিশ থেকে বাড়িয়ে পঁচিশ করে চাদরের ভিতর ঢুকে পড়ে। পাশেই ঘুমিয়ে অনুশ্রী, ওর অনাবৃত শরীর দেখে নিধির থেকে মনটাকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করে, হাত বাড়িয়ে দেয় ওর শরীরের উপর দিয়ে। কুঁকড়ে ঘুমিয়ে থাকা অনুশ্রী সরে আসে আফরােজের বুকের কাছে, অনুশ্রীর মুখ আফরােজের গলার কাছে, ওর নিঃশ্বাস টের পায় গলায়, ওর শরীর চেপে বসেছে। আফরােজের শরীরের সঙ্গে। নিধির মতাে সুন্দরী না হলেও বেশ একটা আলগা চটক আছে ওর চোখে-মুখে। তাছাড়া যৌবনে কোনও ঘাটতি নেই। ওর স্পর্শ আফরােজের খারাপ না লাগলেও শরীরে কোনও উত্তেজনা টের পায় না, বাঁ দিকে পাশ ফিরে একইভাবে শুয়ে থাকে। অনুশ্রী এবার ওকে আরও চেপে ধরে শরীরের সঙ্গে, একটা পা তুলে দেয় ওর পায়ের উপর আর আফরােজ মনে মনে ভাবতে থাকে কীভাবে নিধিকে ফিরিয়ে আনবে নিজের কাছে।…….

………খুট করে ল্যাচ খােলার আওয়াজ হতেই টয়লেটে ঢুকে পড়ে অরূপ। তনুশ্রীর শরীর বেয়ে মুক্তোর দানার মতাে গড়িয়ে পড়ছে জল। “ধুস, চুলােয় যাক ব্রেকফাস্ট, আমি আবার স্নান করব,” শাওয়ারের তলায় জলের ধারার মধ্যে ঢুকে পড়ে তনুশ্রীকে জড়িয়ে ধরে অরূপ। ওর ঠোঁট দুটো ঘুরতে থাকে তনুশ্রীর শরীরে। “বাঁ দিকেরটা টাটিয়ে আছে আর কত জায়গায় ব্লাড ক্লট করেছে তা দেখেছ? এই যে গলারটা, এটা কী করে লুকবাে?” আদুরে গলায় জিজ্ঞাসা করে তনুশ্রী।………..

Please follow and like us:

Leave a Reply