…..এক্সট্রা লার্জ স্লিপিং ব্যাগে ঢুকে, পায়ের দিকে মাথা করে, রাহুল পৌঁছে গিয়েছিল এক এক্সট্রা লার্জ মাংসল জগতে, কাঁচা সোনার বিপুলা অনিশ্চয়তায়, উচিত-অনুচিতের দোটানা-কাটানো ব্লটিং পেপারের জ্যোতির্ময়ী বিভ্রমে । ব্লটিং পেপারের মায়াজাল ওর রক্তে ছড়িয়ে পড়া ঢেউয়ের ওপর ডুবসাঁতার দিতে-দিতে রাহুল নিজের মাংসল অভিজ্ঞতাকে প্রসারিত-সঙ্কুচিত করে সুযোগ-সন্ধানী সম্পর্কজাল বিছিয়ে ফেলেছিল, আর তা, মেয়েটি এক্সট্রা লার্জ বলেই, মেয়েটির স্বীকৃতি অনুযায়ী, ওকে জড়িয়ে ওপরে তোলা যায় না, কোমরের বেড় প্রায় বুকের সমান, দেহের শক্তিও এমন যে ও-ই পুরুষদের কাবু করে ফ্যালে, হিপি পুরুষরা তার সঙ্গ একদিনের বেশি দিতে চায় না ।…..
…….তহমিনা আপাদের বাড়িতে ডিম কিনতে পাঠাত মা, হাঁসের ডিম শুধু ওদের পোড়ো বাড়িতেই পাওয়া যেত, বাজারে পাওয়া যেত না । রাহুলদের বাড়িতে তখন মুরগির ডিম আর মুরগির মাংস ঢোকেনি । একদিন দুপুরে যখন আপাদের বাড়িতে কেউ ছিল না, উনি রাহুলের হাত ধরে একটা অন্ধকার ঘরে টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন, যে ঘরে ওদের হাঁস মুরগি ছাগল থাকত । খালি-গা রাহুলের হাফ প্যান্ট একটানে নামিয়ে দিয়ে নিজের চুড়িদারও নামিয়ে নিয়েছিলেন, আর তারপর জড়িয়ে ধরেছিলেন রাহুলকে । রাহুলের হাত নিয়ে নিজের কুঁচকির মাঝে চেপে ধরে নিজেই তাকে ব্যবহার করছিলেন ; তারপর রাহুলের যৌনাঙ্গ বাঁ হাতে নিয়ে খেলতে-খেলতে নিজের কুঁচকির ভেতরে ঘষা শুরু করেছিলেন । রাহুল জিগ্যেস করেছিল, এরকম করছেন কেন । আপা কোনো উত্তর না দিয়ে ঘামছিলেন, কেঁপে-কেঁপে উঠছিলেন । রাহুলের বেশ ভালো লেগেছিল খেলাটা । ডিম কেনার না থাকলেও, আরও কয়েকবার দুপুরে, যখন আপাদের বাড়ির সবাই কোনো কাজে বাইরে, গিয়েছিল রাহুল।
দ্বিতীয়বার তহমিনা আপা কবজি ধরে জানোয়ার-ঘরের অন্ধকারে রাহুলের হাফপ্যান্ট টেনে নামাতেই রাহুল বলেছিল, আমাকে তাহলে মুরগির ডিম খাওয়াতে হবে, খাইনি কখনও ; স্কুলের বন্ধুরা বলে মুরগির মাংসও ভালো খেতে। তোমাদের রান্নাঘর থেকে মাঝে-মাঝে মাংস রাঁধার কত ভালো গন্ধ বেরোয়, মাংস খাওয়াতে হবে, নইলে আর আসব না।
–তোর বাবা-মা যদি জানতে পারেন যে আমাদের বাড়িতে খেয়েছিস তাহলে তোকে আস্ত রাখবে না । গোবরজলে চান করাবে । ন্যাড়া করে টিকি রাখবে তোর ।
–তুমি আমার প্যান্টুল খুলে নাও জানতে পারলেও পিটুনি খাবো ।…….
…..শেষবার রাহুলের যৌনাঙ্গ নিয়ে আপা এত বেশি নিজেকে চেপে ধরছিলেন, বারবার, যে রাহুলের জ্বালা ধরে গিয়েছিল। ঠাকুমা সবাকসুন্দরী দেবীকে ছাড়া রাহুল কাউকে কখনও বলেনি জীবনের ওই ঘটনা, লজ্জা করেছে। রাণোকে বললেই বলত, তোমাকে রেপ করেছিল, মলেস্টেশান । বন্ধুদের বললেও নিশ্চয়ই ঠাট্টা করত যে ওকে রেপ করা হয়েছিল, ছি ছি।…….
…..রাহুলের কানপুর ফিরে যাবার দিন উনি বলেছিলেন, যা করেছিস তা আর কখনও কাউকে বলিসনে, আমাকে বলার বলেছিস ; অমন লুকোনো পিরিতের খেলা তো ব্যাটাছেলেরা করে । এখেনে তুই হয়ে গেলি মেয়ে, আর ছুঁড়িটা হয়ে গেল ছেলে । বুড়ো মিনসেরা আগেকার দিনে কচি মেয়েদের বিয়ে করে বেধবা করে সগগে চলে গেলে সেসব বেধবারা তাদের দেওর, ভাসুরের ছেলে-টেলেদের দিয়ে অমন পিরিতের খেলা খেলত, বুঝলি । কচি খোকাদের সঙ্গে অমন পিরিত করলে তো আর পোয়াতি হবে না, আশও মিটবে । তোকে দিয়ে মোচরমান ছুঁড়িটা আশ মিটিয়ে নিলে । জীবনে ওসব কথা আর মুখে আনবি না ।……
…..রাহুলও রক্তমাংস দিয়ে গড়া প্রমাণ করবার জন্য জড়িয়ে নিয়ে কার্পেটের ওপর শুয়ে পড়ল । মেয়েদের নিঃশ্বাস কী দিয়ে গড়া ? বরফের মরুভূমি দিয়ে হয়তো । জামাকাপড়, আকর্ষণের অংশটুকুতে নিজেদের মেলে ধরার খাতিরে যতটুকু, খুলে ফেলল, একজন আরেকজনের । দুজনেই একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হল আর, এতদিন পর রাহুলের মনে হয়, তা ছিল প্রথম প্রেম, উন্মাদ, মোহময়, নেশার মতন ।
স্কুলের পর,অঞ্জলির ঘরের ইরানি কার্পেটের ওপর শ্বাস-প্রশ্বাসের ঝড়, আর ওর মা বাড়িতে না থাকলে স্নানঘরে, শাওয়ার চালিয়ে। অঞ্জলির ঘরে গিয়ে বিছানায় । অন্ধকারে বা আলো জ্বেলে । হাফছুটির দুপুরে বা স্কুল শেষের সন্ধ্যায় । নারী শরীরের গোপন রহস্যের সঙ্গে পরিচিত হয়েছে রাহুল, যা তহমিনা আপা স্পষ্ট করে মেলে ধরেননি, বা যা বুঝতে পারার মতন প্রতিক্রিয়া তখনও গড়ে ওঠার বয়স হয়নি সেসময় ।
পরস্পরের গোপন নাম হয়ে গিয়েছিল ক্লিংগার । আকর্ষণের নাম অঞ্জলি দিয়েছিল পাশাখেলা । পাশাখেলার সময়ে দ্রৌপদীর শাড়ি খুলে ফেলতে চেয়েছিল কৌরবরা আর দ্রৌপদীর তখন মাসিক, যোনিতে কানি বাঁধা ।
মনে রাখবি, শরীরের কিছু এলাকা ছোঁয়া চলবে না ।
নিষেধ ! এটাই বোধহয় আকর্ষণবোধের সূত্র ! ছোঁবো বললেই হয় না, রাহুলের তো সাহস চাই । ও তো ডরপোক।……
…..বারান্দায় এক কোনে মোটামতন এক প্রৌঢ়া, পানের বাটা নিয়ে বসে । ঝন্টুকে দেখে বললে, আজকে তোর মাগির হপ্তাবাবুর রাত, তুই অন্য কাউকে চাস তো দ্যাখ । বারান্দার তিন দিকে ছোটো-ছোটো ঘর, কয়েকটার দরোজা বন্ধ । কয়েকটায় সাজগোজ করে দাঁড়িয়ে রয়েছে যুবতীরা, বড্ডো বেশি সাজুগুজু, টকটকে লাল ঠোঁট, গালে লালচে পাউডার, ব্লাউজ থেকে উথলে সবই দেখা যাচ্ছে, বোঁটা ছাড়া । এদের জড়িয়ে ধরলেও সহজে লিঙ্গোথ্থান হবে বলে মনে হয় না ।……
…..রাহুল দেখল সামনের বাড়িটার একটা ঘরের সামনে একজন যুবতীর সঙ্গে কথা বলছে প্রদীপন চাটুজ্জে, মস্করা করছে নিশ্চয়ই, যে-ভাবে হাসি খেলছে যুবতীর শরীর জুড়ে । কথা বলতে উনি ওস্তাদ । আন্দোলনের বুলেটিনে একবার লিখেছিলেন, বেশ্যার ঘরে আয়না থাকবেই, খাদ্যদ্রব্য কদাচিৎ দেখেছি, তবে বাসন থাকে, কাঁচের কলাইয়ের কাঁসা বা পিতলের বাসন ; বেশ্যা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় কটি তথ্য এই হতে পারে যে এক সে উপহার পেতে ভালোবাসে দুই তার আত্মা আছে তিন তার লজ্জাহীনতা সত্যের মতো চার সে মৌলিক নির্বোধ পাঁচ সামনে কোনো সময় নেই এমন মানুষ যদি ভাবা যায় সে সেই রকম ; তার সম্পর্কে একটি কথাই গভীরতরভাবে ভেবে জানার, তার শরীর যখন একজন ভোগ করে, কী মানসিক অবস্হায় সে থাকে, লোক এলে সে সুখী হয়, বিরক্ত হয়, ঘৃণাও করে, লোককে হিংসে সে কখনও করে না, যখন লোক তাকে উলঙ্গ করে, সে বিরক্ত হয়, একবার উলঙ্গ হলে স্বস্তিবোধ করে, তার সহজ লাগে, কিন্তু বেশিরভাগ লোক একসঙ্গে উলঙ্গ হয় না, আলো নিভবার আগে অন্তত আণ্ডারওয়ার বা গেঞ্জি পরে থাকে, বেশ্যার নগ্নতা সে দ্যাখে, তাকে দেখতে দ্যায় না, তারপর কতকগুলি নিয়মকানুন তারা মানে, বেশ্যারা, সে-সময় শয়তান তাদের সাহায্য করে বা ঈশ্বর, যে-জন্য তারা কদাচিৎ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।
–তুমি প্রদীপন চাটুজ্জের লেখাটা পড়েছিলে, বেশ্যাদের নিয়ে লেখা ? ঝন্টুকে জিগ্যেস করল রাহুল ।
–পড়েছি, পড়েছি, তুই দিয়ে গিসলি । ও নিজের কথা লিখেছে, কী করে ও জানল অন্যরা কী-কী করে ? বেশ্যারা নিজেরাই জামাকাপড় তাড়াতাড়ি খুলে ফ্যালে, যাতে কাজ সেরে পরের খদ্দেরের জন্যে ধুয়েটুয়ে রেডি হতে পারে । তাছাড়া কোনো-কোনো কচি খদ্দেরের তর সয় না, তাড়াতাড়ি শাড়ি-ব্লাউজ খুলে সরিয়ে না রাখলে তড়িঘড়ি জড়িয়ে ধরে লিকুইড ফেলে নোংরা করে দেবে । তখন ? প্রদীপন চাটুজ্জে তো হাড়গিলে, পাঁজরা গোনা যায়, তাই ঘর অন্ধকার হলে গেঞ্জি-আণ্ডারওয়ার খোলে । তোকে একদিন দিনের বেলা নিয়ে আসব, তখন রেট অনেক কম থাকে, ওসব রঙচঙ মেখে কুচ্ছিত হয়ে সাজে না , দেখতে পাবি, একদম নর্মাল, যেন পাড়ার মেয়ে । দিনের আলোয় তোর সামনে শাড়ি-ব্লাউজ খুলে দাঁড়ালে সারা ঘর আলোয় আলো হয়ে যাবে, ভালো না বেসে পারবি না ।……
…..–ও, তুইও তাহলে এদের বিছানায় শুয়েছিস ?
–না, শুইনি । এখানের বিছানায় শুলে আমার লিঙ্গ দাঁড়াবে না । কোনো মেয়ের সম্পর্কে আমার ধারণা ভালো না হলে আমার লিঙ্গ দাঁড়ায় না ।
–তোর আবার লিঙ্গ হবার বয়স হয়েছে নাকি ; এখনও তুই খোকানুনুর বয়সে আছিস। একটু বয়স হোক, তারপর দেখিস ; ফেলবি কড়ি আর মাখাবি তেল, মাখবি নয়, মাখাবি ।……
…..ঝন্টুদার কথা শুনে রাহুল বলল, না, আমার এই পাড়াগুলো পর্যটকদের মতন ঘুরে-ঘুরে দেখতে ইচ্ছে করে, কারোর সঙ্গে শোবার ইচ্ছে হয় না । পরে, বিদেশে গিয়ে, বিশেষ করে অ্যামস্টারডমে, রাহুল গিয়েছিল অমন এক পাড়ায় পরিক্রমণ-পর্যটনে। ওর বয়স তখন কত, মমমমমমম, কত হবে, থাকগে,, যা-ই হোক না কেন, কী-ই বা এসে যায় । পাড়াটার নাম ‘দ্য ওয়ালেন’ বা খালপাড় : খালে সাঁতরে বেড়াচ্ছে রাঁজহাঁস । পর্যটনের জন্য একটা সংস্হা আছে ওই
পাড়ায় । পর্যটকরা, মহিলা গাইডের, যিনি নিজে এককালে পাড়াটিতে যৌনকর্মী ছিলেন, তাঁর পেছন-পেছন, সেই খালের নৌকো থেকে নেমে,পাড়ার এগলি-সেগলি ঘুরতে-ঘুরতে ওপর দিকে তাকিয়ে, একতলায় চোখ বুলিয়ে, এটা-ওটা হাতে নিয়ে, দেখে বেড়ান চারিদিক ।
পথের দুপাশে, নীল-লাল-হলুদ ঝিলমিলে আলোয়, নিচে তলায়, সরকার অনুমোদিত গাঁজার দোকান, একা-একা যৌনকর্মের টুকিটাকি সাজ-সরঞ্জামের দোকান, অহরহ-চালু যৌনকর্ম দেখার দোকান, সবুজ বা ফিকে-সবুজ আবসাঁথ যা র্যাঁবো-বদল্যারের প্রিয় ছিল তা পান করার দোকান, যৌনকর্মের ফিল্ম-ডিভিডি-সিডির দোকান, কিনে বাড়ি নিয়ে যাবার জন্য ফোলানো যায় এরকম রবারের যুবতী বা রবারের যুবকের দোকান । ওপরতলায় বিশাল জানালায়, ফিকে লাল আলোয়, প্রৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশ থেকে আনা, প্রায়-নগ্ন যুবতীরা, বসে আছে খদ্দের আকৃষ্ট করার জন্য । রেস্তরাঁর মেনুর মতন, যেমন যৌনকর্ম, তার তেমন দাম বাঁধা, সময়ও নির্দিষ্ট । ওরা যখন মহিলা গাইডের পেছন-পেছন যাচ্ছিল, আরেকটু হলেই এক যুবক গাইডের গায়ের ওপর মুখ থুবড়ে পড়ত । গাইড সেই যুবকটির হাত ধরে গ্র্যানাইট-বেছানো পথে বসানো একটা ভাস্কর্য দেখালেন, যেটিতে যুবক হোঁচট খেয়েছিল ।
ব্রোঞ্জের তৈরি ভাস্কর্য, মাই টিপতে উদ্যত পুরুষের হাত । হাজার হাজার আদেখলা পুরুষ তার ওপর দিয়ে হেঁটে, তাকে ঝকঝকে করে তুলেছে ।
আরেকবার পর্যটনে গিয়েছিল থাইল্যাণ্ডে । সেখানের হট জোন নামের এলাকায়, সারি-সারি কাচের শোকেসে দাঁড়িয়ে আছে, নগ্নবুক, সরু জাঙিয়া পরা তরুণী-কিশোরীর দল, আলু-পটল বাছাই করার মতন তাদের মধ্যে যাকে চাই বেছে নাও । …..