সম্পাদক ও অনুবাদকঃ অনিলেন্দু চক্রবর্তী
বাড়ির পথ – গী দ্য মপাসাঁ
….ডেকের উপরে পা দুটি খুশিভরে ছড়ানাে, তার উরদেশে শুয়ে আছে একটি কিষাণ যুবতী-মাছ-ধােয়া বা মাছ-কাটা কাজের মেয়েদের একজন। ছেলেটির মতােই দীর্ঘ বিপুল তার দেহ, রােদে জলে-পড়ে মুখখানা কঠিন লালচে পােড়-খাওয়া, চাতকের পাখার মতাে ঘনকৃষ্ণ দীর্ঘ ভ্র-যুগল, নেশাধরানাে চোখ দুটি আধােবােজা। ছেলেটির উরুর উপর মাথাটি রেখে সে এলিয়ে আছে অলস-ভরে। তার বােতাম-খােলা লাল কাঁচুলিটার ভাঁজ ঠেলে ঠেলে উপরে উঠেছে দুটি স্তন—সে স্তন এত দৃঢ় যে মনে হয় পাথরে খুদে গড়া! ছেলেটির দীর্ঘ পেশীবহুল বাহ, দুটি কনুই পর্যন্ত খােলা। সে তার চওড়া থাবা দিয়ে ধরে আছে মেয়েটির বাম স্তনটা, আর সেখানে আঙলগলি বাজাচ্ছে আস্তে আস্তে তাল ঠুকে।…..
….এই কড়া মধু, তােমার কপালে নেই!’—এবার সে হাত দুটি একবার তুলে নিয়ে আবারাে চাপ দিয়ে ধরল মেয়েটির দুটি বুকে, বিজয়ের ভঙ্গীতে বলল—বুঝলে দাদু সমস্ত রাশিয়ার জন্ম দেবাে আমরা!…..
একগােছা চুল – গী দ্য মপাসাঁ
…..একরাতে হঠাৎ জেগে উঠলাম আমি। ঘরে আমি যেন একা নই, -একাই ছিলাম যদিও। দু’চোখ বুজতে পারলাম না, একটা উগ্র নেশায় জেগে রইলাম যেন। তাকে কাছে টেনে নেব বলে উঠে পড়লাম। আজ সে যেন আগের চেয়ে আরাে কোমল আরাে মধুর আরাে জীবন্ত। ফিরে এল কি তার সেই সুন্দর প্রাণ ? পাগল চুমােয় চুমােয় এক অপূর্ব সুখের আবেগে যেন মছিতই হয়ে পড়ছিলাম। সারাদেহ দিয়ে জড়িয়ে ধরলাম তার কোমল তনুলতা ••••••মতেই কি ফিরে এল প্রাণ ?
সে এসেছে ! হ্যা, তাকে আমি দেখেছি, তাকে জড়িয়ে ধরেছি, পেয়েছি তাকে! বিগত দিনের আমার সেই প্রিয়া,•••ঠিক সেদিনকার মতােই ! কোমল-পেলব শুভ, তন্বী তনুলতা। সুখশীতল পীনস্তনযুগল, বিপুল নিতম্ব ধনুকের মতাে কোমরের কোমল ভাঁজ। সবি ঠিক সেই আগের মতাে। তাকে জড়িয়ে ধরার সঙ্গেসঙ্গেই সর্বাঙ্গে সে কী অধৈর্য সুখ-শিহরণ,—স্ময়তে স্নায়তে পা থেকে মাথা পর্যন্ত।…..
ম্যাররােকা – গী দ্য মপাসাঁ
…..তাপ-তপ্ত প্রহরে একটি দীর্ঘাঙ্গী নগ্নদেহ-রমণী জলে বুক ডুবিয়ে স্নান-লীলায় মত্ত ! একেবারে নিশ্চিন্ত যে এখানে সে একান্ত একেলা ! তার মুখােমুখী সুদর-বিস্তৃত সমুদ্র ! সে এক অপূর্ব অপরূপ দৃশ্য ! সাগরজলে আধাে-ডােবানাে তার সুন্দর তনু তার উপর এসে লুটিয়ে পড়ছে অজস্র উজ্জ্বল আলাে। সত্যিই সুন্দরী সে, চমকে দেবার মতােই সুন্দরী! দীর্ঘ সুঠাম নিটোল পেলব তনু ঠিক মর্মর-প্রতিমার মতাে!…..
….কিছুদিন পর থেকে স্নানের সময় বদলে ফেলল সে। দুপুরবেলা আমার বাড়ী আসে মধ্যাহ্ন-বিশ্রামে। সত্যিই বিধাতার অপুর্ব সৃষ্টি সে! তার চোখে জলে কামনার আগুন ; তার ঈষৎ ফাক-হওয়া ঠোঁট দুটিতে, উজ্জল ধারালাে দাঁতে, তার অদ্ভুত হাসিতে পর্যন্ত বন্য কামনার ইশারা; সমস্ত দেহ জুড়ে কেমন একটা হিংস্র লাবণ্য! তার দীর্ঘাকার মােচার মতাে স্তন দুটি সমস্ত দেহে ফুটিয়ে তুলেছে কেমন জান্তব রপ,-করে তুলেছে তাকে মনুষ্যেতর হলেও বিশিষ্ট এক বিচিত্র জীবের মতাে! যেন উগ্র অবধি কামনার তরঙ্গ-দোলায় দলবার জন্যেই সষ্টি হয়েছে তার। তাকে দেখে মনে পড়ে প্রাচীন পুরাণ-বর্ণিত কামপ্রবণ দেবদেবীর কথা,বনে প্রান্তরে চলত যাদের অবাধ প্রণয়লীলা !
রমণী কখনাে এর চেয়ে বেশী কামােন্মত্তা হয়ে উঠতে পারে না। তার লীলাভঙ্গীতে জেগে উঠে নব নব মত্যুর ইশারা। মাঝে মাঝে হঠাৎ সে আমার দুই বাহুর মধ্যে অধৈর্য আবেগে ঝাঁকুনি মেরে উঠত নতুন নতুন আলিঙ্গনের তীব্রতর উল্লাসে। অধরে জলে উঠত নিবিড়তর চুম্বনের তপ্ত ধা। অথচ তখনি কিন্তু তাকে মনে হত একান্ত সহজসরল, তার সঙ্গীতময় হাসিতে ফুটে উঠত স্বচ্ছন্দ ছেলেমানুষি। নিজের রুপের স্বভাব-সজাগ গবে ঘণার চোখে দেখত সে তার অঙ্গের ক্ষীণ আবরণটুকু পর্যন্ত ! সমস্ত ঘরময় সে ঘুরে বেড়াত নৃত্য-চঞ্চল শিশুর মতাে—নির্বিকার এক নিশ্চিন্ত নির্লজ্জতায়। চীৎকার করতে করতে আর ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে দেহভার এলিয়ে দিয়ে সে শুয়ে পড়ত আমার পাশে, নিঝম হয়ে পড়ে থাকত কোমল-গভীর ঘুমে। অসহ্য গরমে তার তামাটে দেহের উপর জমে উঠত অজস্র ঘর্মবিন্দ, সমস্ত দেহ থেকে বেরােতে থাকত কামনা-মদির গন্ধ !…..
নারী ছলনাময়ী – গী দ্য মপাসাঁ
….কিছুদিন থেকে একটি সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে দেখা হচ্ছিল। প্যারিসমাকা অনন্যসুন্দরী নয় অবশ্যি ! কোমার খুব সরু বুক অবশ্যি এত উচু যে চোখে লাগে। আমি আবার ভিনাসের প্রাণহীন মমর-প্রতিমার চেয়ে ঢের বেশী পছন্দ করি এই জাতীয় জীবন্ত প্রতিমাদের।…..
ইশারা – গী দ্য মপাসাঁ
…..বান্ধবীর হাতখানা নিয়ে সে নিজের বুকের উপরে চেপে ধরল, নারীপ্রাণের পীনােত আবরণটির উপরে, পুরষেরা যা হাতে পেলে স্বর্গ পায় এবং তার তলদেশে কী যে পদার্থ আছে খুজে দেখার চেষ্টা করে না ! …..