নীল আলোর বাসিন্দা – রম্যাণী গোস্বামী

›› গল্পের অংশ বিশেষ  

…..আচমকা চোখাচোখি হল লোকটার সঙ্গে। প্লাস্টিকের চুড়ি, টিপের পাতা, ক্লিপ এইসব নিয়ে সার বেঁধে বসে থাকা ফুটপাতের অস্থায়ী স্টলগুলোর আড়ালে দাঁড়িয়ে ঠায় তাকিয়ে আছে রিক্তার দিকে। লোকটার তীক্ষ্ণ চোখদুটো যেন এক্স-রে মেশিনের মতো বহিরঙ্গের শাড়ি ব্লাউজের আবরণ সরিয়ে জরিপ করছে ওর নগ্নতা। জিভ দিয়ে চাটা ঠোঁটের কোণে ঝুলে থাকা অশ্লীল হাসিটা সরাসরি বুকে গিয়ে বিধল ওর। ভয়ে শিউরে উঠে ভিড় ঠেলে পাগলের মতো ফ্লাইওভারের নীচে পার্কিং জোনে রাখা নিজেদের গাড়ির দিকে দৌড়োতে লাগল রিক্তা।……
…..একটা পার্টিতে ফর্মাল আলাপের পর ফেসবুকে চ্যাট করতে করতেই গাঢ় হয়েছিল রাতুলের সঙ্গে ওর ঘনিষ্ঠতা। প্রথম শরীর চেনাচেনি, সেও আন্তঃজালের মাধ্যমেই। তারপর তো কেবলই ভেসে যাওয়া আর দুটো উচাটন শরীরের মিশে যাওয়া ৷ গত দেড় বছরে নেই নেই করে তিনবার কলকাতার কাছাকাছি বিভিন্ন রিসর্ট, হোটেলের খাতায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে কাটিয়ে এসেছে ওরা দুজন। এমন অবিস্মরণীয় শরীরী সুখ অবগাহনের সৌভাগ্য হয়নি রিক্তার ওর বিবাহিত জীবনে। এবং এই নিয়ে কোনও অপরাধবোধ কাজ করেনি ওদের দুজনের মধ্যে।….
…..গেস্ট রুমের বিছানায় অসাবধানি মানুষদুটো কী নিশ্চিন্ত ! কী পরম নির্ভার !
সেদিন ডায়মন্ডহারবারের হোটেলের সাজানো গোছানো ঘরেও জ্বলছিল এমনই স্বচ্ছ নীল আলো। নিভৃত অবকাশে যে ভিডিওটা আবারও দেখবে বলে সঙ্গে সঙ্গে তা মুছে ফেলতে পারেনি ও, ওর মোবাইল থেকে, সেই ভিডিওর দুজন নারী-পুরুষের চরম আশ্লেষের নিবিড় পরিপূর্ণতার গোপনতম দৃশ্যগুলোই যেন অপূর্ব ভঙ্গিমায় এই মুহূর্তে ফুটে উঠছে বিস্তার পলকহীন চোখের সামনে, ওরই গেস্টরুমের সাত বাই ছয়ের শয্যায় !
সব ভুল গিয়ে আরও একবার মোবাইল ক্যামেরাটা বের করার জন্য নাইট গাউনের পকেট হাতড়াতে থাকে রিক্তা।….