দুই বাংলার দাম্পত্য কলহের শত কাহিনী

›› গল্পের অংশ বিশেষ  ›› বই এর অংশ / সংক্ষেপিত  

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও ইমদাদুল হক মিলন সম্পাদিত

অস্থির অশ্বক্ষুর – আবদুল মান্নান সৈয়দ

……মেয়েটার হাসি যেন সেই ইদারার মুখ মুহূর্তে বুজিয়ে দ্যায়, মুহূর্তে বাস্তবে ফিরে আসি। আশ্চর্য, মেয়েটাকে কোনোদিন ভালো করে দেখি নি। এখন আশ্চর্য হয়ে দেখি ঈশ্বর-রচিত এক প্রাকৃতিক ভাস্কর্য : ফুলকপির মতো স্তন, বাঁধাকপির মতো পাছা। কবিতার শব্দগুলি যেন ঘাসের মধ্যে এদিক-ওদিক নিঃশব্দে লুকিয়ে পড়ে। ………..
……..সব বদলে যায় রাত্রিবেলা। ফ্যান ঘুরছে না তো, যেন মনে হচ্ছে গলায় দড়ি বাঁধা হরিণের ক্রমচক্কর। ব্রা-খোলা মিনার স্তন দুটি বাল্বের মতো দীপ্যমান, তার আলো একটা নীলাভকালো গোলাপের পাপড়ির ওপর পড়ে থাকে। আমার ঘরের সবুজ ডিসটেম্পার করা দেয়াল দেখে মনে হয় যে আমি দোতলা অরণ্যশিবিরে আছি। ……..
……… অদ্ভুত মায়া লাগে। বুকের ভেতরে ছিঁড়ে যায় আমার। সমস্ত কাম মরে যায়। লু কীরকম অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে ওকে আলিঙ্গন করি। শরীর প্রবেশের সময় আমার কণ্ঠ থেকে আমার অজ্ঞাতে যেন বেরিয়ে আসে ‘ডালিয়া। ডা-লিয়া! ডা-লি-য়া!’……

পানকৌড়ির রক্ত – আল মাহমুদ

……….যে বয়সে কিশোরীরা তাদের হঠাৎ গড়ে ওঠা শরীর সম্বন্ধে সচেতন থাকে না, আদিনার ছিল সে বয়স। বড় জোর দশ কি এগার। বার ত্রেও হতে পারে, আমি ঠিক জানিনা। দেখতে যদিও সে হালকা পাতলাই ছিল সু তার বাহু ও বক্ষবিতান সুডৌল হয়ে উঠেছিল। সে কমলারঙের খাটো ফ্রক পরত বলে একদিন আমি তার উরুও দেখে ফেলেছিলাম। সে নীলডাউনের মতো হয়ে বারান্দায় মায়ের চুল আঁচড়ে দিচ্ছিল। ঠিক সেসময় মায়ের চালতার আচারে কাউয়া এসে বসলে, মা কাউয়া তাড়াতে উঠলেন। পড়ার ঘর থেকে আমি তখন নীলডাউন অবস্থায় থাকা আদিনার উরুযুগল দেখেছিলাম। কারুকার্যময় খিলানের বিশাল দুটি থামের মতো মনে হয়েছিল হাঁটুর ওপরের অংশকে। আদিনা তার খাটো ফ্রকটাই আবার শাড়ির আঁচল গোঁজার মতো করে দুপাশ থেকে জমিয়ে নাভির ওপর বেঁধে কাজ করত বলে, আমি দেখার সুযোগটা পেয়ে যাই।…..

……….আদিনা আগুন হস্তান্তর করে তার ফ্রকের সামনের দিকটা দিয়ে ঘামে-ভেজা মুখটা মুছতে গেলেই আমি তার নাভিও দেখেছি। তার নাভি দেখলে মনে হত তার জেগে ওঠা তলপেটের পেশিকে ভারসাম্যে আনার জন্যে এধরনের জবা ফুলের মতো গভীর নাভিমণ্ডলের একান্ত প্রয়োজন ছিল।……..

………সম্ভবত শিকারের মুখোমুখি না হলে বারুদবর্ষণকারীরা কোনও আনন্দ পায় না। বীর্যবর্ষণকারীদেরও যেমন রমণলিপ্তা নারীর মুখমণ্ডল, বাহুমুল, স্তনযুগলের প্রত্যক্ষ অবলোকন ও পেষণের প্রয়োজন অবধারিত হয়ে ওঠে, কারণ এসব উপাচারের স্বতঃস্ফূর্তি রক্তকে মথিত করলে পুরুষের শরীর একা নিক্ষেপনীতিতে ঋজু হতে হতে এক অন্তরালবর্তী পুলকময় সত্তাকে নির্গলনে বাধ্য করে। ……

ফাঁদ – আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন

…….শরতের শিউলির মতো ঝরার জন্যই তো ব্যাকুল হয়ে উঠেছিল সায়মা। দিনে দিনে, রাতে রাতে। শিউলির মতো ছুতেই সোবহানের উষ্ণ বাহুতে ঝড়ে পড়ল ও। সারা শরীর কাঁপছে গভীর আবেগে। অন্ধকারে ওর উন্মুখ অধরের পাপড়ি খুঁজে নিল সোবহান। কালবোশেখির মহাতাণ্ডব সোবহানের পেশিতে স্নায়ুতে, রক্তের প্রতি কণিকায়। অশনির কঠিন প্রহরে যেন বিধ্বস্ত হচ্ছে তার শালবন, ডোবার পাড়ে ঘন সবুজ গাছের সারি। সোবহানের উন্মাদ পেষণে বিধ্বস্ত হয়ে গেল সায়মা।

দেড় ঘণ্টা পর আলো এল। সমস্ত শহর আবার ঝলমলিয়ে উঠেছে বিদ্যুৎ সজ্জায়। ততক্ষণে অন্ধকারে পথ হাতড়ে অফিসে চলে গেছে সোবহান। ক্লান্ত, অবিন্যস্ত সায়মা। কোলে ফিল্ম ম্যাগাজিনটি আলতো করে ধরা। কভারে উন্নত গ্রীক দেবীর অপরূপ মূর্তি। সুঠাম সুডৌল স্তনযুগল তার। নত দৃষ্টিতে চেয়ে আছে সায়মা দেবমূর্তিটির দিকে। চোখে ওর হিজল ছায়ার গভীর স্নিগ্ধতা। তৃপ্তির নিবিড় আবেশ ওর সারা অঙ্গ জুড়ে। ঘুম ঘুম দৃষ্টি সায়মার। ব্লাউজের বোতাম লাগাতে লাগাতে একটা বড়ো হাই তুলল শব্দ করে।…

বন্ধ্যা – তমাল লাহা

…….সেই গোঙানির মধ্যে মিশে যাচ্ছে অজস্র স্তুতির উপচার, তাৎক্ষণিক আবিষ্কারের অন্ধ আবেগ আর তীব্র পিপাসার গোপন শারীরিক সংকেতের টুকরো টুকরো ভাষা। চম্পার কানের লতিতে, গলায়, নীচের ঠোঁট আর স্তনের বিভাজনে ঘষটে যাচ্ছে সেইসব ধ্বনি আর সংকেত। চোখ মুখের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে ঘন উত্তপ্ত নিঃশ্বাসের হলকা। তাতে উগ্র কোহলের ঝাঁঝ।……

……..হঠাৎ তলপেটের কাছাকাছি একটা তীব্র অনুভূতি চম্পাকে ফিরিয়ে নিয়ে এল সেই মুহূর্তের প্রক্রিয়ায়। একটা চঞ্চল ব্যস্ত হাতকে নাভির কাছ থেকে তুলে নিয়ে এসে চম্পা যেন নিতান্ত খেলাচ্ছলেই তার শরীরের অন্য সম্পদে স্থাপনা করে নিল। তারপর অনেকটা জোর করেই তার অবচেতনে শিথিল হয়ে আসা শরীরটাকে টান টান করে নেবার চেষ্টায় ব্রতী হল। ……

……একসময় চম্পা ধড়মড় করে উঠে বসল। তার ভারি উন্মুক্ত বুক দ্রুত স্বাসপ্রশ্বাসে ওঠানামা করছে। মুখে চোখে গরম হলকা। রগের দুপাশের শিরা দপদপ করে মাথার মধ্যে যেন আগুনের স্রোত ছড়িয়ে দিচ্ছে।……

Leave a Reply