ট্রেন টু পাকিস্থান – খুশবন্ত সিং

›› অনুবাদ  ›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

অনুবাদঃ আবু জাফর

…..জুগ্গাত সিং তার মাথার উপর দিয়ে দু’হাত প্রসারিত করে অন্ধকারে হাতড়াতে লাগল । মেয়েটি হাত দুটো সরিয়ে দিল। জুগ্গাত সিং এবার চোখের ওপর রাখা হাত থেকে শুরু করে ওপরের দিকে বাহু, কাঁধ এবং তারপর মেয়েটির মুখের ওপর হাত রাখল। সে তার হাতের অতি পরিচিত মেয়েটির চিবুক, চোখ ও নাকে হাত বুলাল আদরের সাথে। সে আঙুল দিয়ে মেয়েটির ঠোট দুটোর ওপর খেলা করতে চাইল, যেন সে আঙুলে চুমাে দেয়। মেয়েটি মুখ খুলে তার আঙুল জোরে কামড়ে দিল। জুগ্গাত সিং জোর করে হাতটা সরিয়ে নিল। আকস্মিকতাবে সেদু’হাত দিয়ে মেয়েটির মাথা জড়িয়ে ধরে জোর করে তার মুখ নিজের মুখের ওপর নিয়ে আসল। তারপর সে তার হাত দুটো মেয়েটির কোমরের নিচে নিয়ে গিয়ে তার দেহকে উঁচু করে ধরল। মেয়েটি কাঁকড়ার মতাে শূন্যে পা লাফাতে লাগল। মেয়েটি হাতে ব্যথা পাওয়া পর্যন্ত সে তাকে ঘুরিয়ে আনার চেষ্টা করি তারপর সে মেয়েটিকে একেবারে নিজের দেহের ওপর সমান্তরালতাবে শুইয়ে দিল। দুই দেহ মিলে হয়ে গেল এক।…..

……জুগ্গাত সিং তার দুটো হাত মেয়েটির পিছন দিয়ে এমনভাবে চাপ দিল যে, তার কথা বলতে বা নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হলাে। মেয়েটি কোনাে কথা বলতে গেলেই সে জোরে চাপ দেয়, ফলে তার কথা গলায় এসে থেমে যায় । সে আর কথা বলার চেষ্টা করল না। পরিশ্রান্ত অবস্থায় সে নিজেকে এলিয়ে দিল জুগ্গাত সিং-এর দেহের ওপর। জুগ্গাত তাকে বাদিকে সরিয়ে দিল । মেয়েটির মাথা রইল তার বাহুর ওপর। ডান হাত দিয়ে সে তার চুল ও মুখে আলতােভাবে বােলাতে লাগল।

জুম্মাত সিং-এর আদর ক্রমশ কামুকতায় পরিণত হলাে। তার হাত মেয়েটির মুখ থেকে বুক এবং বুক থেকে কোমরে এসে থামল। মেয়েটি তার হাত ধরে পুনরায় তার মুখের উপর নিয়ে ছেড়ে দিল। জুম্নাহ্-এর শ্বাস-প্রশ্বাসে কামুকতা ছড়িয়ে পড়ল এবং তা বইতে লাগল ধীরে ধীরে। তার হাত যেন ভুল করে পুনরায় নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ঘুরে বেড়াল এবং লক্ষ্যস্থল স্পর্শও করল। মেয়েটি তার হাত ধরে সরিয়ে দিল। জুগ্গাত সিং তার বাম হাতটি প্রসারিত করে মেয়েটির একটা হাত ধরল। মেয়েটির অন্য হাত আগে থেকেই জুম্নাতের নিয়ন্ত্রণে ছিল। মেয়েটি হয়ে পড়ল অসহায়।

‘না! না! না! আমার হাত ছেড়ে দাও! না! আমি তােমার সার্থে আর কোনােদিন কথা বলব না।’ জুপ্পাতের কামাতুর মুখ থেকে বাঁচার জন সে তার মাথা জোরে এপাশ-ওপাশ করতে লাগল। | জুগ্গাত সিং তার হাতটা ঢুকিয়ে দিল মেয়েটির কামিজের মধ্যে। অনুভব করল অরক্ষিত স্তনের প্রান্তরেখা। এগুলাে ছিল সুউচ্চ স্তনের বোঁটা ছিল শক্ত ও কঠিন। তার কঠিন হাত দুটো তার স্তন থেকে নাভি পর্যন্ত ওঠানামা করল বার বার । মেয়েটির পেটের ওপরটা রােমাঞ্চে স্ফীত হলো।

মেয়েটি তখন নানা অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে প্রতিবাদ করে যাচ্ছিল।

‘না! না! না! দয়া কর । তােমার ওপর আল্লাহর গজব পড়বে। আমার হাত ছেড়ে দাও। এ রকম আচরণ করলে তােমার সাথে আমি আর কখনও দেখা করব না।

জুগ্গাত সিং-এর অনুসন্ধানী হাত মেয়েটির পাজামার দড়ির একটা কোণা পেল। হ্যাচকা টান দিয়ে সে পাজামার দড়ি খুলে ফেলল। | ‘না, মেয়েটি কর্কশ স্বরে চিৎকার করে উঠল। জুগত্ সিং তাকে তার পাশে শুইয়ে দিল।…..

…..‘চাষার মতাে কথা বলাে না। কিতাবে…’ জুগ্গাত সিং তার হাত দিয়ে মেয়েটির মুখ চেপে ধরল। সে তার বিরাট দেহটা মেয়েটার দেহের ওপর তুলে দিল। মেয়েটি নিজেকে মুক্ত করার আগেই জুগ্গাত তার পাজামার দড়ি পুনরায় খুলে দিল।

‘আমাকে যেতে দাও। আমাকে…’।

জুগ্গাত সিং-এর পশুশক্তির বিরুদ্ধে সে লড়তে পারছিল না। সত্যিকারভাবে সেও তা চাচ্ছিল না। তার বিশ্ব সংকীর্ণ হয়ে এলাে নিঃশ্বাসের ছন্দময় শব্দের মধ্যে। তার বিষন্ন দেহ উত্তপ্ত হলাে এবং জুগ্গাতের স্পর্শ ও শরীরের গন্ধ তাকে উতলা করে তুলল । জুগ্গাত-এর ঠোট দুটো তার চোখ ও চিবুকে আলতোভাবে ঘুরে বেড়াল, জিহ্বা ঢুকে যেতে চাইল তার কানের মধ্যে। নূরানের ধারাল নখ পাগলের মতাে জুগ্নাতের পাতলা দাড়িতে কি যেন খুঁজে ফিরেনোকে গিয়ে আঘাত করল। তার মাথার ওপরে আকাশের তারাগুলাে যেন উনাদের মতাে ঘুরপাক খেয়ে স্বস্থানে ফিরে এসে থেমে গেল নাগরদোলার মতাে। জীবন ঠাণ্ডা হয়ে গেল, জীবনের গতি নেমে এলাে স্বাভাবিক অবস্থার নিচে। জীবন্ত লােকটার দেহভার সে অনুভব করল, তার চুলের মধ্যে বালি, উলঙ্গ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হলাে হিমেল হাওয়া। আকাশের লক্ষ লক্ষ তারা তাদের দিকে তাকিয়ে রইল অপলক দৃষ্টিতে। জুম্মাকে ঠেলা দিয়ে সরিয়ে দিল, জুগ্গাত তার পাশেই শুয়ে পড়ল।……

…..আলাে হুকুম চাঁদ-এর গায়ে পড়ল। আলাে থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখার চেষ্টায় রত মেয়েটির দিকে তিনি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। মেয়েটি নেহায়েত শিশু এবং খুব বেশি সুন্দরীও নয়। তবে সে যুবতী ও মাসুম। তার স্তন দুটো খুব স্ফীত হয়নি। ঐ স্তনে কখনও কোনাে পুরুষের হাত পড়েনি বলেই মনে হয়।……..

…..হুকুম চাদ আর এক পেগ হুইস্কি ঢেলে নিয়ে নিজেকে যেন সংহত করলেন। মেয়েটি তখনও তার কোলে বসেছিল শক্ত ও অনড় হয়ে।

“তুমি কি আমার ওপর রাগ করেছ ? তুমি কি আমার সাথে কেথা বলবে না ? | মেয়েটিকে আরও নিজের দিকে টেনে এনে হুকুম চাদ জিজ্ঞাসা করলেন। মেয়েটি সে কথার জবাব দিল না বা তার দিকে ফিরেও তাকাল না । | ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব মেয়েটির প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে বেশি আগ্রহী ছিলেন না। | সব কিছুর জন্য তিনি আগেই টাকা দিয়েছেন। তিনি মেয়েটির মুখটা নিজের দিকে টেনে তার গলা ও কানে চুম্বন দিলেন। তিৰিঙ্গিগাড়ির শব্দ আর শুনতে পাচ্ছিলেন। মালগাড়িটা তখন নির্জন প্রত্যন্ত এলাকায় চলে গিয়েছিল। হুকুম চাদ তার নিজের দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দই শুনতে পাচ্ছিলেন। তিনি মেয়েটির অন্তর্বাসের হুক খুলে দিলেন ।….

……হুকুম চাঁদ মেয়েটিকে দুই হাতে জড়িয়ে ধরলেন। তিনি তার নাকে চুমু খেলেন। তারপর হাসতে হাসতে বললেন, “চল আমরা বিয়ে করি।’

মেয়েটি কোনাে উত্তর দিল না। সিগারেটের ছাই, গােশতের টকুরা ও প্লেট ভর্তি টেবিলের ওপর হুকুম চাঁদ যখন তাকে নিয়ে যেতে চাইলেন, তখনও সে কোনাে বাধা দিল না । হুকুম চাদ হাত দিয়ে টেবিলের ওপর সবকিছু ঠেলে ফেলে দিলেন এবং শুরু করলেন আদিম মিলনের প্রক্রিয়া। দুই হাতে তিনি চেপে ধরলেন মেয়েটির প্রস্ফুটিত যৌবন। তাঁর আদিম থাবায় মেয়েটি ক্ষতবিক্ষত হলেও কোনাে বাধা দিল না। তিনি মেয়েটিকে টেবিলের ওপর থেকে নামিয়ে কার্পেটের ওপর শুইয়ে দিলেন। মেয়েটি তার শাড়ির আঁচল দিয়ে মুখ ঢেকে নিল এবং মুখটা একপাশে সরিয়ে নিল হুকুম চাদ-এর মুখের দুর্গন্ধ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ।

হুকুম চাদ শুরু করলেন মেয়েটির বিন্যস্ত পােশাক অবিন্যস্ত করতে।…….

…….মেয়েটি এসে বিছানার এক ধারে বসে অন্য দিকে তাকিয়ে রইল। হুকুম চাদ তার হাত দিয়ে মেয়েটির কোমর জড়িয়ে ধরলেন । তিনি তার উরু ও পেটে হাত | বুলিয়ে দিলেন এবং অফুটন্ত স্তন নিয়ে খেলা করলেন। মেয়েটির কোনাে আবেগ দেখা গেল না। শক্ত হয়েই সে বসে রইল। হুকুম চাঁদ মেয়েটিকে একটু সরিয়ে দিয়ে ঘুম চোখে স্পষ্টভাবে বললেন, ‘এসাে, শুয়ে পড়ি।’ ম্যাজিস্ট্রেটের পাশে | মেয়েটি সােজাভাবে শুয়ে পড়ল। শাড়ির ঝিকিমিকি আলাে তার মুখেও প্রতিবিম্বিত হলাে। শুষ্ক মাটিতে পানি ছিটালে যে গন্ধ পাওয়া যায় তেমনি একটা সুগন্ধের পারফিউম সে ব্যবহার করেছিল। তার নিঃশ্বাসে ছিল এলাচির গন্ধ, বক্ষে মধু! হুকুম চাদ তার দেহের সাথে নিজেকে শিশুর মতাে আটকিয়ে গভীর ঘুমে নিমগ্ন হলেন।………

Leave a Reply