বাসাবদল
…………সে রাতে সাদা বলশালী-নারীশরীর রমেনের বিছানায় উঠে আসে শুধু ব্রেসিয়ার আর কালাে সায়া পরে।।
স্ত্রীকে বুকে টেনে নিয়ে রমেন শুরু করে বেশ হালকাভাবেই, “আচ্ছা শিউলি, এই যে আজকাল মালদার ফ্লাডের ছবিটবি বেরুচ্ছে রােজ, দেখছ তাে, আঁ! এই তাে আজই বেরিয়েছে, একটা আরামবাগ-তারকেশ্বর রােডের ওপর দিয়ে বুকজল ঠেলে এগিয়ে আসছে মানুষ। সকলেরই মাথায় তাে দেখি শুধু একটা করে বোঁচকা। আচ্ছা, ওরাও তাে তিনপুরুষের ভিটে ছেড়ে আসছে?
‘কী বলতে চাও তুমি?’ উদ্ধত স্তনবৃন্ত থেকে রমেনের হাত সরিয়ে দিয়ে শিউলি পিছিয়ে যায়।
রমেন ততক্ষণে তার মেরুদাঁড়ায় প্রারম্ভ খোঁজা শুরু করেছে। না, মানে, একজনের তাে দেখলাম তাও নেই। কাঁধে স্রেফ একটা বাচ্চা নিয়ে চলেছে।
‘আবার শুরু করলে তুমি ভ্যানভাড়া? সেই পুরনাে কাসুন্দি!
বাঘিনীর বুকে শুয়ে, দক্ষিণ স্তনে গাল রেখে রমেন শেষবারের মতাে বলে যায়, মনে করাে, একটা এমারজেন্সি। ফ্লাড, আর্থকোয়েক, ইরাপশান অফ এ ভলকানােবা, ওয়ার্ল্ডওয়ার! তখন, তখন তুমি সঙ্গে কী নিয়ে যাবে শিউলি, কাকে নিয়ে যাবে? বলে সে উজ্জ্বল বলশালী নারীশরীরের মেরুদাঁড়ায় প্রারম্ভে ফের হাত রাখে।……..
আইভি সােম হত্যামামলা (১৯৭৮) : একটি পােস্টমর্টেম
………সে আপনাকে দেখানাে যাবে না। কোথায় ? বুকে। লজ্জা করতে হবে না আইভি। যদি সত্যিই বাবার মতাে মনে করাে’ অসীম পিতৃস্নেহ থেকে আমি তাকে বলেছিলাম, তবে দেখাও। আমিও তাে কিছুটা বুঝব।
‘আইভি প্রথম বােতামটা খুলল। তারপর আর কিছুতেই পারে না। আমি উঠে গিয়ে বাকি দুটি খুললাম। সত্যিই, বাম স্তনের ওপর হালকা লালচে প্যাচ একটা, বিঘৎ খানেক,ঠিক একটা নৌকোর মতাে। হঠাৎ বানের সময় মােহনা দিয়ে ঢােকা দুটি জলস্তম্ভের আকার নিল তার স্তনদুটি, আমি দেখলাম, তরঙ্গের মাথায় টলমলে একটি লাল নৌকো। ধ্বংস হবার আগে আমি মাথা নিচু করে সেই জল-তােড়ের মধ্যে ঝাপ দিলাম। মুহুর্তে আমাদের পিতাপুত্রীর সম্পর্ক বদলে গেল।………..
জাগাে, মসৃণ ত্বক
…….খাটের ছত্রিতে নীরা পাট করে ঝুলিয়ে দিয়েছে তার প্রিন্টেড চাইনিজ সিফন শাড়ি। পাশেই খাটের ধারে যমুনার বাড়িতে পরার লাল মখমলের চটিজোড়া ইংরেজি ‘L’ অক্ষর রচনা করে মেঝের ওপর পড়ে আছে। ছত্রি থেকে ঝুলছে যমুনার দুটি ক্লিপে-আঁটা ব্লাউজও, সেই থেকে শুকোচ্ছে।
ইংরেজি ‘এল’ অক্ষরটি মাথায় এলে আজও ‘লাভ’ শব্দটি প্রথমে মনে আসে। অমিয় ভাবে, অসুখ, নার্সিং হােম এ-সব প্রসঙ্গ এনে লাভ কী। বরং, এখন চুপচাপ ভালবাসা যাক। নীরাকে। চুমু খাওয়া যাক তার গ্রীবায়। হাত রাখা যাক শুনে।
যা ভেবেছিল। ‘এই ওকি হচ্ছে’, বরাবরের মতাে ঝটকা মেরে স্তন থেকে অমিয়র হাত সরিয়ে দেয় সে। পরমুহূর্তে তার প্রত্যাখ্যাত হাত সস্নেহে তুলে নিজের জঘনদেশে রাখে। এই প্রথম যে এ-রকম, তা নয়। স্তনমর্দন দূরে থাক, সে অমিয়কে কখনাে স্তন স্পর্শ করতে দেয় না। শিউরে উঠে ছিটকে সরে যায়। বারবার। অথচ, বুকে জড়িয়ে থাকলে কিছু বলে না। শুধু হাত দিয়ে ছুঁতে যাও, বলবে, না। শিউরে সরে যাবে। | দূরে সায়ার ফ্রিলের নিচে, তার প্রগলভ নিতম্ব পেরিয়ে, অমিয়র দৃষ্টি নীরার পায়ের কঠিন তে-কোনা অ্যাঙ্কল-বােন পর্যন্ত চলে যায়। একই চাহনি দিয়ে যমুনার পিঙ্ক-হলুদ ব্লাউজ ও ফেলে-যাওয়া মখমল চটি-জোড়ার দিকে সে তাকিয়ে থাকে। বিষয়-বদলের জন্য অনুভূতিতে কোনও হেরফের তার চোখে পড়ে না।
—কী হল? —বলেছি তাে, হাত দেবে না ওখানে। -কেন? কোথা থেকে যে কী? অমিয়র সহসা মনে পড়ে যায় বা তার অতীত থেকে, ধুলাে ঝেড়ে, স্মৃতি নিজেই উঠে আসে।
কোনার্কের সেই প্রখর অপর-দুপুর। চৈত্রমাস। মন্দিরের দোতলার অলিন্দে উঠে নিছক কৌতুহলবশে মৃদঙ্গবাদিনীর বাম স্তনে সে একবারটি হাত রেখেছিল। রাখতেই, তার হাতের তালুতে উঠে এসেছিল নারী-স্তনের সেই আশ্চর্য নরম ত্বকবােধ, বজ্রাঘাত হােক তার মাথায় যদি না মৃদঙ্গবাদিনীর রক্তমাংসময় স্তনের স্পর্শ সে সেদিন না পেয়ে থাকে! তা নইলে, শরীর জুড়ে কেন তখনি সেই তা-তা-থেই মৃদঙ্গ-বােল—আত্মরক্ষার শেষ ধরতাই ছেড়ে, সব ভুলে, দুহাত তুলে, সূর্যবালিসমুদ্রের সেই অসহ্য দুপুরে যখন গরম বালি উড়ে এসে পড়ছে মুখে-চোখে-বুকে—অমন উন্মাদ আবেগ ভরে সেই নারীপাথরকে, না হলে, সে ওভাবে আলিঙ্গন করতেই-বা যাবে কেন! তখনও ভাল করে গোঁফ ওঠেনি, মুখে ব্রণ ফোটেনি সবকটি। কিশােরবয়সি সেই জীবনে প্রথম মৃত্যু-অভিজ্ঞতা আজও তার গায়ে কাঁটা দেয়। মনে পড়লে, নিজেকে জাতিস্মর মনে হয় আজও। বস্তুত, অত উঁচুতে সেদিন পা ফস্কে গিয়েছিল তার। কার্নিশ ধরে কোনওমতে ঝুলে পড়েছিল ভাগ্যিস।
তারপর বেশ কবার কোনার্কে গেছে। আর কখনাে স্তনে হাত রাখেনি। মন্দির-চাতালে দাঁড়িয়ে দূর থেকে শুধু স-সম্রমে দেখে গেছে। কে জানে, দিনে দিনে আরও কত নরম হয়েছে ওই প্রস্তরীভূত কুচযুগল—অহনিশি সমুদ্রের নুন মেখে মেখে!
সেদিন চৈত্রমাস। সেদিন দুপুর বেলা। সেদিন পাথর গরম। মৃদঙ্গবাদিনীর লাল বেলেপাথুরে স্তন-ত্বকের সেই ছ্যাকা-লাগা গরম, জীবনের পরমপ্রাপ্তির মতাে আজও তার হাতের তালুতে লেগে আছে।……..
……..‘আমি একটু বাথরুম থেকে আসছি’ বলে নীরা উঠে গেছে। রেপ শুরু হবার আগে অমিয় উপুড় হয়ে শােয়।
বেলা কত? প্রায় তিনটে হবে। যদি পাঁচটায় নার্সিং হােমে পৌছতে হয়, তাহলে নীরা ফিরে এলে বিনা ভূমিকায় সঙ্গম শুরু করে দিতে হবে। এ নয় যে, তার প্রয়ােজনীয় উত্তেজনা নেই। আদৌ তা নয়। আসলে, তার সমস্যা হচ্ছে পূর্ব-ক্রীড়া নিয়ে। সেক্স ফর দা ইউজার্স বইটি সে যে দেখা মাত্র কিনে ফেলেছিল, তার কারণ বইটির ওই স্ট্রেটফরােয়ার্ড টাইটেল; কী, না, ‘সেক্স, যারা করে। কত সােজাসুজি। বাংলা ভাষাতেই যত নেকু-নেকু বই : ওগাে বর, ওগাে বধূ! কিন্তু অমন অব্যর্থ নামের বইতেও, সে দেখল, ফোর-প্লে সম্পর্কে ঝাড়া একটি চ্যাপ্টার। এ-সব ভ্যানতাড়া তার ভাল লাগে না। বিশেষত, এক্ষেত্রে তার প্রয়ােজনও নেই। নীরা কেন আসে, সে জানে। শি নিডস্ মাই সিড।
তা বলে কি নীরাকে চুমু সে খাবে না? তার গাঢ় মেরুন লিপস্টিকে (ষাঁড়ের মড়ি থেকে তােলা বাঘিনীর ঠোট যেন) পিছলে যেতে যেতে তার ঠোট থেকে চামড়া তুলে আনবে না? নারী-ঠোটের রঙ চুষে এই চামড়া খোঁজা—একেই তাে যথার্থ চুম্বন বলে ? আর, এইসব আদানপ্রদানের সময় অনুভূতিদেশ থেকে কিছু আলােও এসে পড়ার কথা। পড়বে না।
ফরসা, বলশালী নারীশরীরে শাটিনের কালাে সায়া পরে নীরা যখন বাথরুম থেকে। এল–বুকে পিটার প্যান—তখন তার মাথায় অর্ধচন্দ্রাকারে বারটি প্রদীপ, সবকটি জ্বলছে। আসলে, নীরা যখন ঘরে ঢুকল, আঞ্চলিক চলচ্চিত্রের ধানকলে ঠিক তখনই লেগে গেল নিঃশব্দ আগুন। এখন, ওই, দাউ দাউ করে জ্বলে যাচ্ছে। তারই হস্কা এসে লেগেছে। নীরার মুখে-চোখে। চুলে।
অমিয়র পাশে এসে শুতে গিয়ে নীরা থমকে দাঁড়ায়। —আর-এ, আর-এ একী। তােমার কোমরে এটা কী ? —কোমরে কী, তা আমি জানব কী করে?
-না-না। তুমি আমার পিঠে হুকটা খুলে দাও। খােলাে শিগগির! বলে কী মেয়েটা। ঘরময় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আগুনের আভা, আলােয় আলাে, এমন প্রকাশ্যে নীরা ব্রেসিয়ার খুলবে।
—এই দ্যাখাে, ঠিক এইরকম। ঠিক আমার মতন। নীরা সগৌরবে নিজের বামস্তন তুলে নিচের দিকটা দেখায়। অমিয় লক্ষ করে বেলেপাথুরে রঙের একটা লাল প্যাচ সেখানে। ঠিক এইরকম একটা প্যাচ তােমার কোমরে। এই রঙের’, অমিয়র কোমরের অ-দেখা প্যাচে তর্জনী টিপে নীরা বলল, আমারটাও ঠিক এইরকম। শক্ত।
অনভিজ্ঞ ভয়ে অমিয়র শেকড় সরসর করে ওঠে। তার মুখেও আগুনের আভা, তাই তাকে আরও ভীত দেখায়। তার মাথার চুলগুলি পর্যন্ত ভয় পেয়েছে, সে টের পায়। সে একবার নিজের কোমরে হাত বুলিয়ে দ্যাখে। খুঁজে পায়। তারপর নীরার স্তন ছুঁতে গিয়ে, না ছুঁয়ে, সে সভয়ে হাত গুটিয়ে আনে।………..
ফুটবল খেলার শব্দ
………ধূর্জটি বেরল নমিতার মেয়ে পুতুলের সঙ্গে। আগেও একদিন মেয়েটিকে দেখেছি। সেদিন ফ্রক পরে এসেছিল। ঘরে কেউ ছিল না। আমি ছাড়া। ধূর্জটি বলেছিল, ‘এ তাে বেশ বড়সড় হয়েছে দেখছি। একে আর ফ্রক পরাচ্ছিস কেন? শাড়ি-ব্লাউজ পরা!
মেয়েটি সসঙ্কোচে তাকিয়েছিল তার বুকের দিকে। শাড়ি পরে থাকলে নিশ্চয়ই আঁচল টেনে দিত বুকে। উচিত কথাই বলেছে ধূর্জটি। সত্যিই ফেটে বেরুচ্ছে। এবং এর অবিলম্বে শাড়ি পরাই কর্তব্য।
‘এর কত বয়স হল রে ? ‘পনের। ‘বাবাঃ । এই বয়েসে এত বাড়। শাড়ি পরা! শাড়ি পরা! ধূর্জটি বলল নমিতাকে।……..