কড়িখেলা – সঙ্গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

…..কমলটা যতই ম্যাদামার্কা হােক, সােহিনী তাে কমলের বউ। আর ‘বউ’ মানেই তাে সম্পত্তি। ভােগ-দখলের সম্পত্তি! লালু দেখল, ফাটাফাটি ড্রেস করেছে সােহিনী আজ। সােহিনীর টকটকে ফর্সা গায়ের চামড়ায় যেন কেটে কেটে বসে গেছে কালাে ব্লাউজটা। একটা সাদা কালাে চেক চেক শাড়ি পরেছে। শ্যাম্পু করা একটু বাদামি রঙের চুল খােলা অবস্থায় যেন লকলকিয়ে উঠছে কাঁধের উপর।…..

…..‘আমার বউ হলে’ কথাটার মধ্যে অসম্ভব একটা কাম ভাব রয়েছে, বুঝল লালু। অবদমিত কাম। সে আত্মসংবরণ না করে বলল, “তাের বউ হলে আর কী করতি? বল শালা?” 

শাটুল খুব শান্তভাবে বলল, “প্রথমেই থাই দুটো দেখতাম একটু। দু’হাতে দলাইমলাই করতাম!”…..

…..সত্যি একদম কাছে চলে এসেছে সােহিনী সাউথ.! হাঁটার ছন্দে দুটো ভরাট সুডৌল উরু ফুটে ফুটে উঠছে, দুটো সাদা নিটোল লম্বা লম্বা হাতে ঝিকিয়ে উঠছে সােনার অলংকার।…..

…..’ সােহিনী দক্ষিণ কলকাতার ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া মেয়ে, কো-এড স্কুলে ছােটবেলা থেকে ছেলেদের গােপন অঙ্গে ডেস্কের তলা দিয়ে হাত দিয়েছে! শরীর নিয়ে তার কোনও শুচিবাই নেই। যােলাে বছর বয়সেই সে এক কাকার সঙ্গে চুমােচুমিতে অভ্যস্ত ছিল। আঠারাে-উনিশ বছরে তার একসঙ্গে দুটো বয়ফ্রেন্ড ছিল। এবেলা একটা, ওবেলা একটা মতাে…তা ছাড়াও একজন বয়স্ক অদেখা ব্যক্তির সঙ্গে ফোন-প্রেম চালাত সে রাত জেগে! সারা রাত ধরে লােকটা তার সঙ্গে তীব্র কাম-বিহুল কথােপথন চালাত। সেই কথাবার্তায় নারী-পুরুষের মিলনের, বলা ভাল, উত্তুঙ্গ রমণ প্রক্রিয়ার কোনও অংশের ধারাভাষ্য অস্পৃষ্ট ছিল না। সােহিনীও বিছানায় কাতরাত, রাত জাগা লােকটাও বিছানায় কাতরাত। যৌনতার পাঠ তাে লােকটাই তাকে দিয়েছে একেবারে সর্বতােভাবে। তারপর তার সঙ্গে প্রেম হল ইন্দ্রের। বলা বাহুল্য, সেই প্রথম সে প্রেমে পড়ল, উন্মাদের মতাে প্রেম। অবধারিতভাবে শরীর এল তাতে। দুটো ছেলেমেয়ের প্রেমে শরীর আসবে না, এ তাে ভাবাই যায় না। সে ভাবেওনি, কখনও এতে সে কিছু হারিয়েছে। বিশেষত ভার্জিনিটি তাে আইডিয়া মাত্র! সােহিনীর একবার খুব বিশ্রী ধরনের ইউরিন ইনফেকশন হয়েছিল। তখন লেডি ডাক্তার তার যােনির মধ্যে হাত ঢুকিয়ে পরীক্ষা করেছিলেন। তখনও তার প্রথম সঙ্গম অভিজ্ঞতা হয়নি। সেই পরীক্ষায় তার ব্যথা লেগেছিল, ডাক্তার বলেছিলেন, তার ইউটেরাসে ছােট ছােট সিস্ট আছে, কিন্তু ম্যালিগন্যান্ট নয়। ব্যথা লাগলেও তার রক্তপাত হয়নি। যােনির মেমব্রেন টেমব্রেন মেয়েদের কবেই ছিড়ে যায় তার কি কোনও ঠিক আছে? কমলের কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে সে বলেছিল, “তুমি তা হলে বিয়ের আগে পরিষ্কার করে জানতে চাওনি কেন? আমি বলে দিতাম যে, আগেই আমার অভিজ্ঞতা হয়েছে। লুকোতাম নাকি? আমার পরিস্থিতি এমন ছিল না যে, মরিয়া হয়ে বিয়ে করতে হবে। বিয়ে করে একটা মেয়ের সঙ্গে সেক্স করে তারপর সে ভার্জিন কি না বােঝার প্রক্রিয়াটা তাে অসৎ প্রক্রিয়া কমল?”……

….রাতেই বা কেন এসে শােয় তার পাশে, কে জানে? নিজে থেকে কমল কখনও এগােয় না তার দিকে। শরীরের জ্বালায় জ্বলতে জ্বলতে সে নিজেই টানাটানি করে কমলকে সময় অন্তর। করে, বেশ করে! বিয়ে করেছ কেন? করতেই হবে, বিয়েও করবে, অধিকারও করবে না। ডিভাের্স দেবে না যখন, তখন চড়-থাপ্পড় খাও, তখন চুলের মুঠো ধরে তােমায় নামিয়ে নিয়ে যাই নীচে, আমাকে রমণ করাে, যদিও অনিচ্ছুক মানুষের সঙ্গে শােওয়া জঘন্য অপরাধ – তবু আমি কী করব? দোষ তাে আমার নয়। দোষ আমার কখনওই নয়।

প্রতিবারই মিলনের পর সে অতৃপ্ত অবস্থায় ঘুমােতে যায়। প্রতিবারই তার মনে হয়, কমলকে যদি একটা বারও জাগাতে পারত! একটা বারও যদি শিকারি নেকড়ের মতাে তার টুটি টিপে ধরত কমল, সে ওকে তা হলে তৎক্ষণাৎ মুক্তি দিত।…..

…..যত বার ‘ভর যুবতী’ বলছে শাটুল তত বার সে ভাবছে, ক্যারমের টেবিলের উপর চিত করে ফেলা একটা মেয়ে। মেয়েটা সােহিনী, মেয়েটা ছটফট করছে, তাতে শাড়ি উঠে যাচ্ছে উপরে, আরও উপরে উঠতে উঠতে ঠাসানাে ময়দার মতাে সাদা দুটো মাংসল থাই, একদম নির্লোম! শাটুল মন থেকে জানে, কমলের বউটার উরু, উরুসন্ধিস্থল একেবারে ডাকাতে হবে! পুরুষের যা আছে, সব নিংড়ে, শুষে, টেনে নেবে, ছিবড়ে করে নেবে! শাটুল গান গাইতে গাইতে শার্টের বােতাম খুলতে খুলতেই এগােতে থাকে বাড়ির দিকে।…..

…..আয়েষাকে যেভাবে ধরল লালু, তাতে তার মনে হল, নিজের হাতখানা তার দু থাক নরম গদির মধ্যে ঢুকে গেছে। আয়েষাদি দুর্দান্ত সুন্দরী ছিল। একদম শ্রীদেবী কিংবা দিব্যা ভারতী স্টাইলের। কিন্তু এখন পুরাে জয়ললিতা হয়ে গেছে! আয়েষাদিকে দেখে আর কারও কোনও কামভাব জাগার কথা নয়। তবু মেয়েমানুষ তাে, আর ছােটবেলায় আয়েষাদির ট্যাসেল ঝুলিয়ে নিতম্ব দুলিয়ে হেঁটে যাওয়াটা এখনও মন থেকে সম্পূর্ণ মুছে যায়নি বলে আয়েষাদির শরীরের ভাঁজে খাঁজে হাত দেওয়া অবস্থায় মাথায় পাপ চিন্তা যেন না আসে ভেবে জিভ কাটল লালু মনে মনে।…..

…….এতক্ষণ শাঁটুলের শরীরের সান্নিধ্যে রয়েছে, সেই ওম ছড়িয়ে পড়েছে গহনে। তার মনে হচ্ছে, ইস, যদি সুযােগ থাকত, যদি একটু আদর পেত সে এই লম্বা-চওড়া ছেলেটার, তা ছাড়া শটুল যে তাকে ভালবাসে, তা সে চোখ দেখে বুঝতে পারে। সােহিনী যৌনতার স্বাদ পাওয়া মেয়ে। আর অতৃপ্ত, কোনও পুরুষের প্রতি তৎগত ভাব তৈরি হলে ঘুমের মধ্যেও তার সেই পুরুষের জন্য দুটো উরু, দুই পা দু’দিকে প্রসারিত হয়ে যায়। ……

…….আজ একটা অদ্ভুত ব্যাপার ঘটতে দেখেছে সােহিনী। আজ তার ঘুম ভেঙে যায় যখন সূর্যের আলাে প্রায়। ফোটেইনি। সে ভাল করে চোখ না খুলেই বুঝতে পারে, পাশে শশাওয়া কমলের নড়াচড়াটা একটু অন্য রকম। আধাে চোখ খুলে সােহিনী দ্যাখে, কমল মাস্টারবেট করছে। সে চুপচাপ পড়ে থাকে। ঘুমের ভান করে। কমল একবার তাকায় তার দিকে, আলতাে একটা ঠেলা দেয় তাকে। সে বিন্দুমাত্র সাড়া দেয় না। তখন কমল আস্তে করে তার হাঁটুর উপর উঠে যাওয়া নাইটি দু’আঙুলে ধরে আরও উপরে তুলে দেয়! সােহিনীর ত্রিকোণ উন্মুক্ত হয়ে পড়ে, যেন আকাশের নীচে দখলদারহীন পড়ে থাকে একটা বদ্বীপ। সে বুঝতে পারে, কমল সেটার দিকে তাকিয়ে মাস্টারবেট করছে। এক সময় ‘আঃ, আঃ’ শুনতে পায় সােহিনী। কমল তারপর তার নাইটিটা নামিয়ে দেয় আবার। | সােহিনী আশ্চর্য হয়ে যায়! কী যে কমলের যৌন দর্শন, সে মাথা খাটিয়ে বের করতে পারে না! কিন্তু তার মনে হয়, কমল তাকে ব্যবহার করেছে। হয়তাে দিনের পর দিন। সে টের পায়নি। চোখে জল চলে আসে তার। হাসিও আসে। দু’আড়াই বছরের বিবাহে, পাশাপাশি শােওয়ায় সে প্রতিনিয়ত কমলকে জোর করেছে মিলিত হতে। সে ভেবেছে, সে-ই চেয়েছে। কমল চায়নি। কমল চায়নি। কিন্তু যা পাওয়ার পেয়ে গেছে। এটাই সত্যি। আজ মাসদুয়েক সােহিনী আর কমলকে জোর করেনি। তাই কি কমল এভাবে মাস্টারবেট করছে? তার অজ্ঞাতসারে তারই শরীর থেকে প্ররােচনা সংগ্রহ করছে? নিজের খিদে মেটাচ্ছে? কী গর্দভ! কিছু যায় আসে না। করুক যত খুশি মাস্টারবেট, করুক!……

Leave a Reply