আয়নামহল – সুচিত্রা ভট্টাচার্য

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

পৃ-৩৩ঃ

…….রুনি ডিভানে শায়িত! দিব্যর ছােটমাসির বড় মেয়ে রুনি! গাইঘাটা থেকে কলকাতায় ডাক্তারি পড়তে আসা রুনি! ক্যালকাটা মেডিকেল কলেজের হােস্টেলনিবাসিনী রুনি!… রুনির বুকের ওপর মাথা রেখে শুয়ে আছে দিব্য! দু’জনের কারও অঙ্গে এক কণা সুতােও নেই! | রুনি চোখ বুজে কী যেন প্রলাপ বকে চলেছে একটানা। দিব্যর হাত ঘুরে বেড়াচ্ছে রুনির নগ্ন দেহে। হঠাৎ হঠাৎ কেঁপে উঠছে রুনি, পরক্ষণে হাসছে খিলখিল। | দৃশ্যটায় একটা তীব্র মাদকতা ছিল। আবার প্রচণ্ড উত্তাপও। পৃথার চোখ দুটো যেন ঝলসে গেল। প্রায় টলতে টলতে এসে শুয়ে পড়ল বিছানায়। স্টুডিয়াে থেকে ভেসে আসা হাসি আর উল্লাসধ্বনি, মাঝে মাঝে যৌনগন্ধী আওয়াজ, তার কানকে পুড়িয়ে দিচ্ছিল।……….

পৃ-৮৬ঃ

………..তার নিরাবরণ দেহটাকে কিন্তু নিজে থেকে স্পর্শ করেনি দিব্যদা। শুধু দৃষ্টির পালক বােলাচ্ছিল সর্বাঙ্গে। আর অফুটে বলছিল, বিউটি ইজ ডেথ। বিউটি ইজ হেভেন। বিউটি ইজ লাইট। বিউটি ইজ ডার্কনেস। | নিজের শরীরটা তখন জ্বররা রােগীর মতাে কাপতে শুরু করেছে রােহিণীর। একটা অচেনা কষ্টে দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছে। উন্মাদিনীর মতাে ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরেছিল দিব্যদাকে। চুমু খাচ্ছে। বুকে মুখ ঘসছে। অস্থিরভাবে বলে চলেছে, আমি আর পারছি না দিব্যদা। পারছি না, পারছি না, পারছি না। সেই শুরু। তারপর তাে প্রায় নিয়মিতই চলতে থাকল খেলাটা। সপ্তাহে এক দিন, সপ্তাহে দু’দিন…। কী তীব্র আবেগে যে মিলিত হত তারা! তাকে আদর করার সময়ে দিব্যদা যেন মাতাল হয়ে যেত। ভালবাসা যেন শরীর ছাপিয়ে অন্য কোথাও পৌঁছে দিত দু’জনকে। | এক দুপুরে তাে ধরাই পড়ে গেল হাতেনাতে। সেদিন পৃথাবউদির জন্য কী খারাপ যে লেগেছিল। ……….

পৃ-১২৬-১২৭ঃ

……..দিদির সঙ্গে নিজেকে তুলনা করেছিলি না? তাের দিদি যা দিতে পারে, সেটা তাে তাের নেই। যা তাের আছে, সেটাই দে।
কী দেব? শরীরটা। বলেই আঙুল নাচাল, নাইটিটা খুলে ফ্যাল। ঝুনি স্তম্ভিত, কী বলছ তুমি দিব্যদা? ন্যাকামি করিস না। খােল চটপট। …….তারপরে তাে হয়েই গেল। প্রায় জন্তুর মতাে তার শরীরটাকে আঁচড়াল, কামড়াল দিব্যদা। কিন্তু কী আশ্চর্য, যেই শুনল দিদির সঙ্গেও দিব্যদার একটা দৈহিক সম্পর্ক আছে, অমনি এক অদ্ভুত পুলকে ভরে গেল মন। পুলক, না সুখ? পুলক, না তৃপ্তি? নাকি শুধুই দিদির পারফিউম পাউডার ক্রিম লুকিয়ে মেখে নেওয়ার শিহরন? তা একবার রক্তের স্বাদ পেলে বাঘিনী আর কি শান্ত থাকে! রক্তে তখন কল্লোল বাজছে, দিব্যদাকে চাই, দিব্যদাকে চাই। দিদি না-থাকলে সন্ধেবেলা চলে আসে দিব্যদা, খ্যাপা পশুর মতাে দু’জনে দু’জনকে ছিন্নভিন্ন করে তখন। হ্যাঁ, পশুই। লজ্জা, হায়া, শরম, সবই তখন উবে গেছে ঝুনির। এর মধ্যে হঠাৎ দিদি মাকে নিয়ে এল কলকাতায়। কী বিপদ, এবার ঝুনি কী করে! দিব্যদাই সমাধান খুঁজে দিল। মিডলটন স্ট্রিটে দিব্যদার এক বন্ধুর ফ্ল্যাট ছিল, বন্ধু বিদেশে, সেখানে শুরু হল অভিসার। দিদির কাছ থেকে টেনে হিচড়ে সরিয়ে আনছে দিব্যদাকে, এতে যে কী অপার আনন্দ! ……….

পৃ-১৪৯-১৫২ঃ

………বাবা, হিরাের ক্যারেক্টার তাে বেশ লুজ! নিজের মাসতুতাে বােনকেও কিনা বুকে চেপে ময়দা ঠাসার মতাে ঠাসে! …….

……মামা আবার বলল, বটেই তাে। তাই তাে। এতদিন সেভাবে খেয়ালই করিনি! বলতে বলতে হাত নেড়ে সামনে ডাকছে, এদিকে আয়, তােকে ভাল করে দেখি।

কী দেখবে? আয় না। কাছে যাওয়ামাত্র মামা সটান হাত তুলে দিল বুকে। টিপেটুপে দেখতে লাগল, যেন সাইকেল রিকশার হর্ন বাজাচ্ছে। কল্পনার গা কেঁপে উঠল। ছিটকে সরে গেছে দু’পা, এ কী করছ মামা? 

পরখ করছি। শাঁসেজলে দিব্যি হয়েছিস তাে! সােফা ছেড়ে উঠে পড়ল মামা। ফের গায়ে হাত বােলাচ্ছে, নাহু, তাের শরীরটা তাে কেন। 

এর পর যা ঘটল, তা তাে একেবারেই অভাবনীয়। মুরগির ছাল ছাড়ানাের মতাে টেনে টেনে খুলে কল্পনার সালােয়ার কামিজ। তাকে পুরাে উদোম করে দিয়ে বলল, বড় হতে গেলে পুরুষমানুষের শরীরটাও চিনতে হয় রে। সেদিনই প্রথম চিনল কল্পনা। বসার ঘরের মেঝেয় শুয়ে। মামির বড়মতন ছবিটার সামনে তারপর কতবার যে মামার বিছানায় যেতে হয়েছে কল্পনাকে। দিদা ঘুমিয়ে পড়ার পর। চুপিচুপি। পা টিপে টিপে। একটু একটু করে কল্পনারও তাে নেশা ধরে গিয়েছিল। নিজেকে কেমন রানি রানি মনে হত। মামার মতাে মানুষ শেষে তারই হাতের মুঠোয়, ভাবা যায়! শরীর দিয়ে যদি মামাকে বশে রাখতে পারে, তা হলে আর চিন্তা কীসের! | অলক্ষ্যে সেই অলুক্ষুনেটা আবার বুঝি হাসছিল তখন। পেটে বাচ্চা এসে গেল কল্পনার।………

Please follow and like us:

Leave a Reply